সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় ও সেলস বৃদ্ধির কৌশল জানুন
সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় এ সম্পর্কে আমরা যারা মার্কেটিং নিয়ে কাজ করি তারা সকলেই জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেলস প্ল্যান মূলত হল একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা যা কোন প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কতগুলো পণ্য বা সেবা বিক্রি করবে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কি কি সেলস কৌশল অবলম্বন করা হবে তা নির্ধারণ করা হয়।
প্রিয় বন্ধুরা আপনি যদি সেলস প্ল্যান বলতে কী বোঝায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে আপনি সেলস বলতে কি বুঝায় সম্পূর্ণ বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। তাছাড়া বন্ধুরা আপনি এই আর্টিকেলে আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন সেগুলো হল, সেলস কত প্রকার ও কি কি এবং সেলস বৃদ্ধির কৌশল গুলো কি কি ও সেলস কল কি আর সেলস টার্গেট পূরণের উপায় বা সেলস টেকনিক কি এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক সেলস প্লান বলতে কি বুঝায়।
পোস্ট সূচীপত্র
ভূমিকা
সেলস প্ল্যান শব্দটি শুনলে অনেকে মনে করেন এটি শুধু মাত্র বিক্রয়ের লক্ষ্যে নির্ধারণের জন্য একটি কাজ। কিন্তু আসলে কি তাই? না এর গভীরতা অনেক বেশি। সেলস প্ন্যান এটি একটি ব্যবসার বিক্রয় বিভাগের রোড ম্যাপ যেখানে স্বপ্ন থেকে বাস্তবতার পদ নির্ধারিত হয় একটি সফল ব্যবসার জন্য। বিক্রয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর এই বিক্রয়কে সুপরিকল্পিতভাবে পরিচালনা করার জন্যই সেলস প্লানের প্রয়োজন। এটি একটি কার্যকারী বিশেষ পরিকল্পনা যা আপনার পণ্যকে বিক্রয় করা সঠিক দিকে পরিচালিত করে এবং ব্যবসাকে সফল করতে সাহায্য করে।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে সেলস প্ল্যান বলতে কী বোঝায় এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সেজন্য বন্ধুরা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে আপনি আপনার ব্যবসার বিক্রয়কে আরো অনেক বৃদ্ধি করতে পারবেন। আর এই তথ্যগুলো আপনার সেলস প্ল্যান সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন এবং আপনার ব্যবসার জন্য একটি সঠিক সেলস প্ল্যান তৈরি করতে সাহায্য করবে।
সেলস বলতে কি বুঝায়
মূলত সেলস বলতে কী বোঝায় আর সেলস প্লান বলতে কি বুঝায় দুটো কথা একই ভিত্তিতে আসে। যেটি হল ব্যবসার জন্য পণ্য বিক্রয় করার কৌশল কে বোঝায়। সেলস বা বিক্রয় বলতে মূলত একটি বা অসংখ্য পণ্য বা সেবা একজন ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে অন্য একজন ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি একটি ব্যবসায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ বিক্রয়ের মাধ্যমেই কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আয় করে এবং টিকে থাকে।
সহজ কথায় বিক্রয় হলো একটি পণ্য বা সেবা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর গ্রাহককে কেনার জন্য অনুপ্রাণিত করা এবং তার বিনিময়ে অর্থ বা অন্য কোন মূল্যবান বস্তু গ্রহণ করা। আশা করি সেলস বলতে কি বুঝায় এ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায়
মার্কেটিং জগতে সেলস টেকনিক বা সেলস বৃদ্ধির কৌশল সম্পর্কে যে যত বেশি ভালোভাবে জানে সে উদ্যোগতা হিসেবে তার ব্যবসার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। একজন নতুন উদ্যোগতা হিসেবে সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় এটা জানা অনেকটাই জরুরী। কেননা সেলস প্ল্যান সম্পর্কে সে যদি ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারে তাহলে আপনার ব্যবসার বিক্রয় নিয়ে আর কোন চিন্তা করা লাগে না। আর এজন্যই আমাদের আর্টিকেলে সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি নতুন উদ্যগতা হয়ে থাকেন বা আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুনভাবে সেলস প্লান তৈরি করতে চান তাহলে নিচে দেওয়া সেলস প্ন্যান গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার ব্যবসার সেলস বৃদ্ধি করতে পারেন। তাহলে চলুন সেলস প্লানের জন্য কি কি পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনি আপনার ব্যবসার সেলস বৃদ্ধি করতে পারেন সেগুলো সম্পর্কে জানা যাক।
লক্ষ্য নির্ধারণ
একটি সেলস প্লানের মূল ভিত্তি হল লক্ষ্য নির্ধারণ করা। লক্ষ্যই হল সেই সঠিক দিকনির্দেশনা যা বিক্রয় দলকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। কিন্তু একটি লক্ষ্য যেন শুধু একটি সংখ্যা না হয়ে থাকে তা যেন পরিমাপযোগ্য, বাস্তবসম্মত এবং সময়সীমার মধ্যে অর্জনযোগ্য হয়। কেননা সেলস প্ন্যানের জন্য একটি সঠিক লক্ষ্য বা ভালো লক্ষ্য আপনার সেলস বৃদ্ধি করতে অনেকটা সাহায্য করে। আর লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করা খুবই জরুরী।
সে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি সঠিক সেলস বিক্রির করার লক্ষ্যে ব্যবসার মোট লক্ষ্যের সাথে প্রাসঙ্গিক যেন হয় এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত। আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কত টাকার পণ্য বিক্রিয় করা হবে সে সকল বিষয় অবশ্যই নির্ধারণ করা উচিত। আশা করি সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় এর মধ্যে লক্ষ্য কিভাবে নির্ধারণ করতে হয় সেটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
টার্গেট মার্কেট
সেলস প্ন্যান এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো টার্গেটেড মার্কেট। নির্দিষ্ট গ্রাহক যাদেরকে উদ্দেশ্য করে কোন কোম্পানি তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে চাই। সহজ ভাবে বলতে গেলে যে সকল মার্কেটে আপনি আপনার সেলস প্ন্যান অনুযায়ী আপনার ব্যবসার পণ্য বিক্রয় করতে চান। সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় এর মধ্যে টার্গেট মার্কেট অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। টার্গেট মার্কেট এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আপনার পণ্য বিক্রির জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাস্টমারের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
এ সময় যে সকল বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী সেগুলো হলো বয়স, লিঙ্গ, আয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি বিষয় জেনে রাখা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ স্বরূপ- মনে করেন আপনার একটি স্পোর্টস শু এর ব্যবসা রয়েছে তাহলে সে অনুযায়ী টার্গেট মার্কেট হিসেবে 20-35 বছর বয়সী, সক্রিয় জীবন যাপনকারী ব্যক্তিদের নির্ধারণ করতে পারে। এভাবে আপনি আপনার সেলস প্ন্যান তৈরি করতে পারেন আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
বিক্রয় কৌশল
সেলস বৃদ্ধির কৌশল এর মধ্যে বিক্রয় কৌশল হল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিক্রয় কৌশল একটি কৌশলগত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা হয়। এটি শুধুমাত্র পণ্য সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। এটি গ্রাহকের চাহিদা বুঝতে এবং তার প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হওয়ার উপর নির্ভর করে। সফলভাবে পণ্য বিক্রয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অনুসরণ করা খুবই জরুরী। এর মধ্যে রয়েছে গ্রাহকের চাহিদা এবং প্রয়োজন কি সেগুলো বুঝতে পারা এবং তারা কেন আপনার পন্য বা সেবা কিনতে চাই এবং তাদের বাজেট কি ধরনের রয়েছে
সে সকল সম্পর্কে অনুসরণ করা এ সকল বিষয়গুলো যদি আপনি আগে থেকে কৌশল অনুসরণ করেন তাহলে আপনার ব্যবসার বিক্রয়কে আরো বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি গ্রাহকের সাথে বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে এবং তারা যা জানতে চাই সে সকল সম্পর্কে সঠিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে। সেলস প্ন্যান বলতে কি বুঝায় এর মধ্যে বিক্রয় কুশল অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল।
বাজেট
একটি সফল সেলস প্ল্যান তৈরির জন্য বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে আপনার ব্যবসার বিক্রয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ এবং কৌশলগুলো নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। একটি ভালো সেলস প্ল্যানের বাজেট আপনাকে আপনার বিক্রয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রদান করে। এটি আপনাকে আপনার অর্থকে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে এবং আপনার ব্যবসায়কে সফল করতে সাহায্য করবে। ধরুন, আপনি একটি নতুন পণ্য লঞ্চ করছেন এবং আপনার লক্ষ্য প্রথম মাসে ১০০টি পণ্য বিক্রি করা।
আপনার বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে মার্কেটিং খরচ করার জন্য, সামাজিক মিডিয়া বিজ্ঞাপন (৫০,০০০ টাকা), ইনফ্লুয়েঞ্চার মার্কেটিং (৩০,০০০ টাকা), ইমেইল ক্যাম্পেইন (১০,০০০ টাকা) এবং বিক্রয় প্রতিনিধিদের কমিশন (২০,০০০ টাকা), বিক্রয় সরঞ্জাম (৫,০০০ টাকা) আর আনুষঙ্গিক খরচ সহ অফিস খরচ (৫,০০০ টাকা) ইত্যাদি বাজেট একটি সেলস প্লানের মূল লক্ষ্য। এভাবে করে আপনি আপনার সেলস প্ন্যানের বাজেট নির্ধারণ করতে পারেন আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
বিক্রয় চ্যানেল
সেলস প্ল্যানের জন্য বিক্রয় চ্যানেল আপনার পণ্য বা সেবা পৌঁছে দেওয়ার রাস্তা। একটি সফল সেলস প্ল্যানের মূল উপাদান হল বিক্রয় চ্যানেল। এটি হল সেই মাধ্যম যার মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছায়। বিক্রয় চ্যানেলের ধরন নিচে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হল।
- কোম্পানির নিজস্ব দোকান: আপনার নিজস্ব দোকানে গ্রাহকদের সরাসরি পণ্য বিক্রি করা।
- ই-কমার্স: অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে আপনার পণ্য বিক্রি করা।
- ফোন মার্কেটিং: ফোন কলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে বিক্রি করা। এভাবে করেও আপনি অনেক পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
- ডোর-টু-ডোর সেলস: গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে পণ্য বিক্রি করা।
বিক্রয় দল
সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় ও সেলস বৃদ্ধির কৌশল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি বিক্রয় দল। একটি সফল সেলস প্ল্যানের মূল শক্তি হল একটি দক্ষ এবং প্রেরণাদায়ী বিক্রয় দল। এই দলটি আপনার পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয় এবং বিক্রয় লক্ষ্য অর্জনে সরাসরি অবদান রাখে। বিক্রয় দলের সদস্যদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা জরুরি। পাশাপাশি তাদের কার্যকর যোগাযোগ, উপস্থাপনা এবং সম্পর্ক গড়ার দক্ষতা থাকা উচিত। বিক্রয় দলের সদস্যদেরকে প্রেরণিত রাখা জরুরি।
তাদেরকে লক্ষ্য অর্জনের জন্য উৎসাহিত করতে হবে এবং তাদের সাফল্যের জন্য পুরস্কৃত করতে হবে। বিক্রয় দলের সদস্যদেরকে একটি দল হিসাবে কাজ করতে হবে। তাদেরকে পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করতে এবং তথ্য শেয়ার করতে হবে। বিক্রয় দলকে পরিচালনা করার জন্য একজন দক্ষ নেতার প্রয়োজন। নেতা দলকে প্রেরণিত রাখবে, লক্ষ্য নির্ধারণ করবে এবং দলের সদস্যদেরকে তাদের কাজে সহায়তা করবে।
সেলস কত প্রকার ও কি কি
সেলস বা বিক্রয় হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি পণ্য বা সেবা একজন ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে বিনিময় হয়। এই প্রক্রিয়াটি ব্যবসায়ের সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেলস বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং ব্যবসার ধরণ, পণ্য বা সেবার প্রকৃতি এবং লক্ষ্যবস্তু গ্রাহকের উপর নির্ভর করে। সেজন্য সেলস কে বিভিন্নভাবে প্রকারভেদ করা হয়ে থাকে। এখানে কিছু প্রধান প্রকারগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
বি2বি (B2B) এবং বি2সি (B2C) সেলস
বি2বি (B2B) এই ধরনের সেলসে একটি ব্যবসা অন্য একটি ব্যবসাকে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি কাগজের কারখানা একটি প্রিন্টিং প্রেসকে কাগজ বিক্রি করতে পারে। অন্যদিকে বি2সি (B2C) সেলস এই ধরনের সেলসে একটি ব্যবসা সরাসরি গ্রাহককে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি পোশাকের দোকান গ্রাহককে পোশাক বিক্রি করতে পারে।
পণ্যভিত্তিক এবং সেবাভিত্তিক সেলস
পণ্যভিত্তিক সেলসে মূল ফোকাস থাকে একটি নির্দিষ্ট পণ্য বিক্রি করার উপর। উদাহরণস্বরূপ, একটি মোবাইল ফোন বিক্রয়। অপরদিকে সেবাভিত্তিক সেলসে মূল ফোকাস থাকে একটি নির্দিষ্ট সেবা বিক্রি করার উপর। উদাহরণস্বরূপ, একটি কনসাল্টিং সেবা বিক্রয়। আশা করি সেলস কত প্রকার কি কি এই প্রসঙ্গে আপনাকে এ সকল উদাহরণ সাহায্য করবে।
সরাসরি এবং পরোক্ষ সেলস
সরাসরি সেলসে বিক্রেতা সরাসরি গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করে এবং পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি দোকানে গিয়ে পণ্য কেনা। পরোক্ষ সেলস বিক্রেতা এবং গ্রাহকের মধ্যে কোন মধ্যস্থতাকারী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইন শপিং।
অন্যান্য ধরনের সেলস
ইনবাউন্ড সেলস গ্রাহক যখন কোন পণ্য বা সেবার বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে কোন ব্যবসার সাথে যোগাযোগ করে তখন এই ধরনের সেলস হয়। আর আউটবাউন্ড সেলস বিক্রেতা যখন গ্রাহকের কাছে পৌঁছে পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য প্রচেষ্টা চালায় তখন এই ধরনের সেলস হয়। অপরদিকে সোশ্যাল সেলিং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা বিক্রি করাকে সোশ্যাল সেলিং বলা হয় এবং কনটেন্ট মার্কেটিং ব্লগ পোস্ট, ব্লগ ভিডিও ইত্যাদি কনটেন্ট তৈরি করে গ্রাহককে আকৃষ্ট করে এবং পণ্য বা সেবা বিক্রি করাকে কনটেন্ট মার্কেটিং বলা হয়।
উপরে উল্লেখিত আলোচনায় আপনি জানতে পেরেছেন সেলস কত প্রকার ও কি কি পাশাপাশি জানতে পেরেছেন সেলস প্লান বলতে কী বোঝায় উপরে দেওয়া তথ্যগুলো আশা করি আপনার ব্যবসার পণ্য বিক্রিতে অনেক উপকারে আসবে। এখন আমরা সেলস বৃদ্ধির কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো নিচে সেলস বৃদ্ধির কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
সেলস বৃদ্ধির কৌশল
সেলস বৃদ্ধি হলো প্রতিটি ব্যবসার স্বপ্ন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনিও নিশ্চয় চান আপনার পণ্য বা সেবা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাক এবং বিক্রয়ের পরিমাণ বাড়ুক। সেলস বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের কৌশল রয়েছে। আসুন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
গ্রাহক কেন্দ্রিক কৌশল
সেলস বৃদ্ধি করার জন্য গ্রাহকদের চাহিদা, পছন্দ, অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করুন। তারা কি চায় তাদের কি পছন্দ এবং কি ধরনের পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী সে সকল অভিজ্ঞতা গুলো জানুন। তাদের পছন্দের ভিত্তিতে পণ্য বা সেবা সুপারিশ করুন। পাশাপাশি গ্রাহকের প্রশ্নের দ্রুত ও সঠিক উত্তর দিন। তাদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করুন। গ্রাহকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুল এবং সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। এভাবে করে আপনি আপনার পণ্যের সেলস বৃদ্ধির কৌশল অবলম্বন করুন।
মার্কেটিং কৌশল
সেলস বৃদ্ধির কৌশল এর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাহায্য নিন। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা প্রচার করুন। পাশাপাশি যে পন্যের সেলস বৃদ্ধি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করতে চান সে সকল ব্লগ পোস্টগুলো কে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) বা গুগল সার্চে আপনার ওয়েবসাইটকে উপরের দিকে আনুন। এছাড়াও পেইড অ্যাডভার্টাইজিং মাধ্যমে যেমন- গুগল অ্যাডস, ফেসবুক অ্যাডস ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা প্রচার করুন।
সেলস প্ন্যান বলতে কি বুঝায় বা সেলস বৃদ্ধির কৌশল এর মধ্যে এ সকল মার্কেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও আপনি ইমেইলের মাধ্যমে আপনার গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং নতুন পণ্য বা অফার সম্পর্কে তাদের জানান। আবার আপনি ব্লগ পোস্ট, ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদির মাধ্যমে মূল্যবান তথ্য প্রদান করুন।
বিক্রয় কৌশল
বিক্রয় কৌশল সম্পর্কে যদিও আমি উপরে আলোচনা করেছি এরপরও এখানে আবার আলোচনা করলাম। আপনার বিক্রয় দলকে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে জানান এবং বিক্রয় কৌশল শেখান। আপনার বিক্রয় দলের জন্য স্পষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। বিক্রয় প্রক্রিয়াকে যতটা সম্ভব সহজ এবং গ্রাহককে আরও পণ্য বা সেবা কেনার জন্য উৎসাহিত করুন। পাশাপাশি বিক্রয় কর্মীদের জন্য বোনাস, কমিশন ইত্যাদির ব্যবস্থা করুন। তাহলে আপনার সেলস বৃদ্ধির কৌশল অনেক বেড়ে যাবে।
অন্যান্য কৌশল
সেলস বৃদ্ধির কৌশল এর জন্য বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন পণ্য বা সেবা তৈরি করুন। পাশাপাশি প্রতিযোগীদের কৌশল পর্যবেক্ষণ করে নিজের কৌশল উন্নত করুন এবং বিক্রয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে কোন কৌশল আরও কার্যকর হবে তা বোঝতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন এবং অফলাইন উভয় চ্যানেলে বিক্রয় বাড়ানো যায় কিভাবে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
সেলস টার্গেট পূরণের উপায়
এখন পর্যন্ত আপনারা উপরে সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় পাশাপাশি সেলস বৃদ্ধির কৌশল সম্পর্কে অবগত হয়েছেন এখন আমরা সেলস টার্গেট পূরণের উপায় সম্পর্কে জানব। সেলস টার্গেট পূরণের উপায় হল ব্যবসায়িক সফলতার চাবিকাঠি। সেলস টার্গেট পূরণ করা প্রতিটি ব্যবসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ব্যবসাকে টিকে থাকা এবং বৃদ্ধির জন্য অনেক অপরিহার্য। তবে, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সেলস টার্গেট পূরণ করা সবসময় সহজ হয় না।
সেলস টার্গেট পূরণের কিছু কার্যকর উপায় গুলো হল গ্রাহক কেন্দ্রিক কৌশল, মার্কেটিং কৌশল, বিক্রয় কৌশল এবং অন্যান্য কৌশল। যেগুলো সম্পর্কে উপরে সেলস বৃদ্ধির কৌশল প্যারাতে আলোচনা করেছি। তাই এখানে আবার সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলছি না। উপরে দেওয়া তথ্যগুলো ভালোভাবে মূল্যায়ন করলে আপনি সেলস টার্গেট পূরণের উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন। পাশাপাশি সেলস প্ল্যান বলতে কী বোঝায় এ সকল সমস্ত কিছু পেয়ে যাবেন।
লেখকের শেষ কথা
সেলস টার্গেট বা সেলস প্ল্যান পূরণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হলেও অসম্ভব নয়। উপরের কৌশলগুলো কার্যকরভাবে ব্যবহার করে আপনি নিশ্চিতভাবে আপনার সেলস টার্গেট বা সেলস প্ল্যান অর্জন করতে পারবেন। প্রিয় বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলের আজকের আলোচ্য বিষয় সেলস প্ল্যান বলতে কি বুঝায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অনুরোধ রইলো একটি শেয়ার করবেন। পাশাপাশি এই আর্টিকেলে আর যদি মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে নিচে দেওয়া মন্তব্য বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্য পেশ করুন। আমরা যথা শিঘ্রই আপনার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url