ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে জানুন

আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে মোটামুটি সময় একটিভ থাকেন তাহলে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি শুনে থাকবেন। বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আবার অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এটি নিয়ে উদ্বেগে থাকেন। অনেকে ধারণা এই মুহূর্তে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করা গেলেও ভবিষ্যতে হয়তোবা এই প্লাটফর্মটি টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে আর থাকবে না। 
ফ্রিল্যান্সিং-এর-ভবিষ্যৎ-কি
চলুন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাক। উক্ত বিষয়টি বাদে আজকের আর্টিকেলে আরো যে সকল বিষয়ে জানতে চলেছেন সেগুলো হল ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন এবং ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এই সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত থাকুন।
পেজ সূচিপত্র

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি

ফ্রিল্যান্সিং মূলত ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের ভিত্তিতে অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পন্ন করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠী কর্মসংস্থানের চাহিদা মেটানোর জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো সম্পর্কে অবগত হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যেখানে অফিস টাইম এর মত কোন ধরাবাঁধা নিয়ম থাকে না। মূলত একটি স্বাধীন এবং মুক্ত পেশা হিসেবে উল্লেখিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তরুন সমাজ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো খুব স্বাচ্ছন্দ সহকারে করে থাকে।
তবে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট একটি দক্ষতা অর্জন করতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যদি কেউ অদক্ষ হিসেবে আসে তাহলে কখনোই টাকা ইনকাম করতে পারবে না। কমিউনিকেশন স্কিল থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্সিং এর যে সেক্টর নিয়ে কাজ করবে সেই কাজ সম্পর্কে এ টু জেড ধারণা থাকতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা একটি উদাহরণ প্রয়োগ করব। ধরুন আমির সাহেবের বাজারে একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। এখন তিনি প্রাক্টিক্যালি বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনেও তার প্রোডাক্টগুলো সেল করতে চাই। 

কিন্তু আমির সাহেব অবশ্যই অনলাইনে কিভাবে কাপড় সেল করতে হয় বা করার মত সময় কোন টাই নেই। তাহলে এক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে একজন ডিজিটাল মার্কেটার। যে কিনা অনলাইনে তার কাপড় গুলো বিক্রি করার ক্ষেত্রে এবং প্রচার প্রচারণা করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। আর এটি মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর আওতায় একজন ডিজিটাল মার্কেটারের কাজ। ফ্রিল্যান্সিং এর আওতায় আরো অনেক কাজ রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং এর আওতায় যে সকল কাজ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি স্কিল যদি ডেভেলপমেন্ট করা যায়।

সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে এটা নিয়ে আর কোন চিন্তা থাকে না। চলুন তাহলে এবার ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এই প্রশ্নতে আরো অন্যান্য যে ধরনের কাজগুলো রয়েছে নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web Development)
  • ফটো এডিটিং (Photo editing)
  • ভিডিও এডিটিং (Video Editing)
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design)
  • ওয়েব ডিজাইন (Web Design)
  • কোডিং (Coding)
  • অ্যানিমেশন তৈরি (Animation Making)
  • ব্লগিং (Blogging)
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
উপরে বর্ণনাকৃত কাজগুলোই প্রধানত একজন ফ্রিল্যান্সাররা করে থাকে। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এবং আরো অন্যান্য হচ্ছে সকল ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজ রয়েছে সেগুলো সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন। তবে আপনি যে সেক্টর নিয়েই কাজ করুন না কেন আপনাকে দক্ষ হতে হবে এবং কমিউনিকেশন স্কিল খুবই ভালো হতে হবে। 

কেননা ফ্রিল্যান্সিং এর বেশিরভাগ কাজ গুলো দেশের বাইরের ক্লায়েন্টের সাথে করতে হয়। এজন্য কমিউনিকেশন স্কিল ভালো থাকা খুবই জরুরী।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় এ প্রশ্নে সর্ব প্রথমে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিভাবে দক্ষতা অর্জন করতে হয় সে বিষয়টি আগে জানতে হবে। একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার তার সফলতা অর্জনের পর ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা নিয়ে আর চিন্তিত থাকে না। অনেকেই কনফিউশনে থাকে যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আসলে আদেও কি সে এখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবে কিনা। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় বা কোন প্রসেস ফলো করলে খুব সহজেই মার্কেটপ্লেস গেইন করা যাবে সেই বিষয়টি আমাদের জানা উচিত। 

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হলে সর্বপ্রথম একটি নিশ পছন্দ করতে হবে। নিশ বলতে আমরা ইতিমধ্যে উপরে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহ জানতে পেরেছি। সেগুলোই মূলত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের নিশ। ধরুন আপনার গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে তাহলে আপনার নিশ হবে গ্রাফিক্স ডিজাইন। নির্দিষ্ট নিশ পছন্দ করার পর এর পরের ধাপে এসে সেই বিষয়টি নিয়ে প্রচুর রিসার্চ এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যেহেতু আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে যাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডিজাইনিং বিষয়ে আপনাকে পারদর্শী হতে হবে। 

কারণ গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টরে ব্যানার, কভার পেজ, লিফলেট, পোস্টার, লোগো এগুলো ডিজাইন করতে হয়।তাহলে আপনার এখন উচিত হবে বেসিক লেভেলের ডিজাইনিং শেখার জন্য youtube এর বিভিন্ন গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ক টিউটোরিয়াল গুলো দেখা। কিছুদিন টিউটোরিয়াল দেখে মোটামুটি জ্ঞান অর্জন করার পর একটি ভালো মানের আইটি সেন্টার দেখে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর কোর্স করতে হবে। আমরা এখানে গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়টি উদাহরণস্বরূপ দেখাচ্ছি। আপনি আপনার পছন্দমত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে নিবেন। 

কোর্স কমপ্লিট হওয়ার পর আপনাকে ঢুকতে হবে মার্কেটপ্লেসের দিকে। সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেট প্লেস গুলোর নাম নিচে তুলে ধরা হল। 
  • Fiverr
  • Up work
  • freelancer.com
  • Guru.com
  • Kwork.com
  • People per hour.com
মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এই প্রশ্নতে এ সকল মার্কেটপ্লেস বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা নির্ভর করবে মার্কেটপ্লেসের পারফরম্যান্সের ওপর। এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে যে দক্ষতা অর্জন করলেন সেই বিষয়ে একটি পোর্টফলিও সহকারে প্রফেশনাল মানের অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পরবর্তীতে যদি আপনার পোর্টফোলিও দেখে বায়ারগুলো আকৃষ্ট হয় তাহলে আপনাকে কাজের অর্ডার দিয়ে দেবে।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন

বর্তমান সময়টি তথ্যপ্রযুক্তির যুগ হিসেবে উল্লেখিত করা হয়। ভবিষ্যতে আরো যত দিন আসবে প্রযুক্তি গত দিক দিয়ে বিশ্ব আরো আপডেট হবে। তখন দেখা যাবে অনলাইনের যত ধরনের কাজের বিষয়গুলো রয়েছে সবগুলোই ফ্রিল্যান্সার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। শুধু ভবিষ্যতের নয় বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেটপ্লেস এর দিকে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন বিশ্বে প্রতিদিন কত লক্ষ লক্ষ ডলার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হতে হলে অবশ্যই ধৈর্য, পরিশ্রম এবং দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে।

এমনও হতে পারে আপনি এক বছর ধরে ফ্রিল্যান্সিং এর কোন একটি সেক্টরে রয়েছেন।কিন্তু একটি কাজেরও অর্ডার পাননি। অনেক সফল ফ্রিল্যান্সারদের গল্পে উঠে এসেছে তারা দুই বছর যাবত কোন কাজ পান নাই, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং জগত ছেড়ে দেননি। সুতরাং আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন হবে সেটি নির্ভর করবে অনেকটা আপনারই ওপর। ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কিভাবে উন্নত হবে সেটি নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে আপনি করার চেষ্টা করছেন। ধরুন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন।
একজন ক্লায়েন্ট তার প্রোডাক্টের এড ক্যাম্পেইন রান করার জন্য আপনাকে হায়ার করলো। আপনি ফেসবুকে এড ক্যাম্পেইন রানিং করার জন্য Ad Manager ব্যবহার করা মোটামুটি জানেন। কিন্তু Audience Target এবং Location এর বিষয়ে আপনি অতটা অভিজ্ঞ নন। তাহলে যে ক্লাইন্ট তার প্রোডাক্ট সেল অথবা প্রচারণার জন্য আপনাকে হায়ার করল, আপনি এড ক্যাম্পেইন রান করার পর সেই প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন চলে যাবে ভুল দর্শকের নিকট। উদাহরণস্বরূপ ক্লায়েন্ট আপনাকে একটি বাস্কেটবল বিক্রি এবং প্রচারণার জন্য হায়ার করেছে।

আপনি বাস্কেটবলের বিজ্ঞাপনটি এমন কিছু দর্শকের সামনে নিয়ে গেলেন যারা এ বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে না। সেক্ষেত্রে এড ক্যাম্পেইন এর জন্য নির্ধারিত বিড এবং বাজেট পুরোটাই জলে চলে যাবে। আর এরকম পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে আপনার পরবর্তীতে সকল ধরনের কাজের অর্ডার পাওয়া সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন হবে এটি নির্ভর করবে আপনার দক্ষতার উপরে। 

যদি আপনি সঠিক দক্ষতা এবং ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রফেশনাল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার অনেক ভালো হবে বলে আমরা আশা ব্যক্ত করছি।

ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বর্তমান অবস্থা বলতে গেলে ২০২৪ সালে এসে এই সেক্টরে ব্যাপক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং এর ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কত প্রকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে চান তাহলে  লেখাটিতে ক্লিক করুন। বর্তমান সময়ে বায়ারের চাইতে সেলারের সংখ্যা অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সারে সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।যার ফলে মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ পাওয়ার বিষয়টি অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

উদাহরণস্বরূপ আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে যদি একটি কাজের অর্ডার আসে সেখানে হাজার হাজার লোক বিড করে বসে। পূর্বে দেখা যেত একটি কাজের আন্ডারে গুটিকয়েক মানুষ বিড করত। পাশাপাশি সেই সময় আপ ওয়ার্ক মার্কেট প্লেসে বিট করার জন্য কোনরকম কানেক্ট ক্রয় করতে হতো না। এখন একটি কাজের সার্কুলার দিলে সেখানে অনেক লোক টাকা ইনভেস্ট করে কানেক্ট ক্রয় করে এবং বিড করে। যার ফলে কাজ পাওয়া বিশেষ করে যারা বিগিনার ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এসেছে তাদের জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। 

তবে কেউ যদি ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে এটি চিন্তা না করে। তার নিজের কাজগুলো অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি কি হয়ে থাকে সে বিষয়টি রিসার্চ করে কমপক্ষে ৬ মাস অথবা ১ বছর সময় নিতে হবে। উক্ত সময়ের মধ্যে অবশ্যই তাকে স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং কমিউনিকেশন স্কিল ডেভলপ করার জন্য পুরোদমে কাজ করতে হবে। তাহলে আশা করা যায় ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা যতই কঠোর হোক না কেন আপনি সফলতার সিঁড়িতে পৌঁছে যাবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু ছিল ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি। একজন নতুন ফিন্যান্সার যে কিনা মাত্র ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনুপ্রবেশ করেছে তার ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কেমন হবে এটা জানা খুবই জরুরী। যদি একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের দক্ষতা অনুযায়ী মার্কেটপ্লেস দখল করতে পারে তাহলে বলাই যায় সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের যারা ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন তারাও যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর গুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। তাহলে তাদেরও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলময় হবে।

হিসেব অনুযায়ী ৫৯ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে যুক্তরাষ্ট্রে, ভারতে আছে ১৫ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার, ২.৭ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে কানাডায়, ২২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে ইউরোপে এবং ২.২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে যুক্তরাজ্যে। হিসেব দেখে আন্দাজ করা যেতেই পারে একজন ফ্রিল্যান্সারের ভবিষ্যৎ কেমন হবে। যেহেতু গোটা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে লক্ষ লক্ষ লোক রয়েছে সুতরাং এই সেক্টর কখনোই ডাউন হওয়ার সুযোগ নেই। আর যেহেতু অনলাইন ব্যবসায়িক কার্যক্রম সকল কিছুই ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন কিছু নেই।

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয এ কোন কাজে চাহিদা বেশি এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা খুব কঠিন। কেননা ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যে সকল কাজ রয়েছে সবগুলোই একে অপরের সঙ্গে সম্পূরক। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজগুলো একটি ব্যতীত অন্য আরেকটি গ্রহণ করে অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই কোন কাজের চাহিদা বেশি হবে এটি বলা মুশকিল। আসুন বিষয়টিকে একটু বোঝার চেষ্টা করা যায়। মনে করুন একজন ব্যক্তি যিনি প্র্যাকটিক্যাল লাইফে একজন ব্যবসায়ী।

এখন তিনি অনলাইনে তার ব্যবসা পরিধি বিস্তার করতে চাচ্ছেন। তাহলে তার প্রোডাক্টগুলো সেল করার জন্য অবশ্যই একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রয়োজন হবে। সর্ব প্রথমে প্রোডাক্ট সেল করার জন্য অবশ্যই একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের দরকার পড়বে। আর ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে হায়ার করতে হবে একজন ওয়েব ডেভলপারকে যে কিনা তাকে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে দেবে। পাশাপাশি ওয়েবসাইটটি ডিজাইন করার জন্য প্রয়োজন পড়বে একজন ওয়েব ডিজাইনারের।
ওয়েবসাইট প্রস্তুত হওয়ার পর প্রয়োজন পড়বে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনের যে কিনা তার প্রোডাক্টের ছবিগুলো সুন্দরভাবে আকৃষ্ট করে তৈরি করবে। প্রোডাক্টগুলোর ছবি আকৃষ্ট করতে পারলে তবেই ক্রেতাগণ প্রোডাক্টের অর্ডার করবে। সবকিছু প্রস্তুত হওয়ার পর অর্থাৎ ওয়েবসাইট তৈরি থেকে প্রোডাক্টের ছবি তৈরি সকল কিছু সম্পূর্ণ হওয়ার পর প্রয়োজন পড়বে একজন মার্কেটারের। একজন মার্কেটার ব্যতীত তার প্রোডাক্ট বাজারে বিক্রি অথবা প্রচারণা কখনোই সম্ভব নয়। 

আর এই ধরনের কাজগুলো করবে একজন ডিজিটাল মার্কেটার। ডিজিটাল মার্কেটার প্রোডাক্টের ছবি, ওয়েবসাইট লিংক ব্যবহার করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, যেমন ফেসবুকে অ্যাড ক্যাম্পেইন এবং google এ এড ক্যাম্পেইন রান করবে। যার ফলে প্রোডাক্টের বিক্রি এবং প্রচার প্রচারণা নিশ্চিত করা যাবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর যতগুলো সেক্টর রয়েছে সবগুলোরই প্রয়োজন আছে। তাই আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যে কোন একটি বিষয় 

অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি কি আছে সে বিষয়ে জেনে বুঝে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি হবে এটি নিয়ে আর কোন ভাবার বিষয় থাকবে না।

শেষের কথা

বন্ধুগণ আমরা আজকে আর্টিকেলের একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আশা করি আপনারা আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত হতে পেরেছেন। নিজেকে একজন প্রফেশনাল মানের ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করতে হলে অবশ্যই দক্ষতা, সময় অর্থ সব কিছুই বিনিয়োগ করতে হবে। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে সেটি হল ফ্রিল্যান্সিং কখনো এক দিনে করা সম্ভব নয়।

ধরুন আপনি আজকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলেন কালকে সফলতা অর্জন করবেন এরকম হবে না। নির্দিষ্ট একটি সময় পর দেখবেন আপনি সফলতার শিখরে পৌঁছে গেছেন। আপনাদেরকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার। আজকের বিষয়বস্তুটি আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না। পাশাপাশি আজকের পোস্টটি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url