ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি-ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য সেই সকল ব্যক্তিবর্গ খুব বেশি খোঁজা খুঁজি করেন, যারা কিনা অনলাইন আউটসোর্সিং জব করার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি একটু জটিল হলেও এই বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তিগণ বিদেশি বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাজ করে ব্যাপক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারে। 
ওয়েব-ডেভেলপমেন্ট-এর-কাজ-কি
তাই চলুন আজকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যায়। উক্ত বিষয়টি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভবিষ্যৎ, ওয়েব ডেভেলপারদের বেতন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মূলত ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার একটি জটিল প্রক্রিয়া। সংজ্ঞা অনুযায়ী বলতে গেলে “একটি ওয়েবসাইটকে তৈরি করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে লাইভ করা পর্যন্ত যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত করতে হয় সেই সকল কাজকে একসঙ্গে ওয়েব ডেভলপমেন্ট বলা হয়”। সর্বাধিক সরল স্থির ওয়েব পৃষ্ঠাগুলি থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এবং অ্যাপ্লিকেশন সমূহ ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে সামগ্রী ব্যবস্থা পর্যন্ত প্রতিদিন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহৃত সরঞ্জাম প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। 
আরো ভালোভাবে যদি বলা হয় তাহলে ইন্টারনেট বা ইন্টারনেটের প্রেক্ষিতে যে সকল ওয়েবসাইট, সফটওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয় এবং সেগুলো তৈরীর প্রক্রিয়া ধারাকেই ওয়েব ডেভলপমেন্ট বলা হয়ে থাকে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি নিয়ে যারা কাজ করে তাদেরকে ওয়েব ডেভলপার বলা হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে ওয়েব ডেভলপমেন্ট শিখে বিভিন্ন আইটি কোম্পানিতে জব করার পাশাপাশি বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সিং করেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। তবে সব কিছুরই একটি নির্দিষ্ট স্কিল আয়ত্ত করার বিষয় রয়েছে। নিজেকে একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে তবেই কেবলমাত্র কোন আইটি সেন্টারে অথবা বিদেশি ক্লায়েন্টের কাজ পাওয়া সম্ভব।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কত প্রকার

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে সকলেই ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর নাম শুনে থাকে। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর নাম শুনলেও বিষয়টি আসলে কতটা প্যাঁচানো সেটা অনেকেই জানেনা। কেউ যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে জানার পর কাজে লেগে যায় সে ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় হয়তোবা সফলতা দেখা দিবে না। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যদি অধ্যবসয়ের সাথে পরিশ্রম করা যায় তাহলে অবশ্যই একজন ব্যক্তি নিজেকে প্রফেশনাল ওয়েব ডেভলপার হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আমরা ইতিমধ্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি বিষয়টি জানতে পেরেছি। 

আসুন তাহলে এবার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কত প্রকার সে বিষয়ে কি সম্পর্কে জানা যাক। ওয়েব ডেভেলপমেন্টকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে এগুলো হলো ফ্রন্ট এন্ড ডেভলবমেন্ট, ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট এবং ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট।

ফ্রন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট

ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট বলতে সেই বিষয়টিকেই বুঝিয়ে থাকে। যখন আমরা কোন একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য ওয়েবসাইটের ভেতরে প্রবেশ করি সেখানে প্রথম পেজে কিছু নকশা, লে আউট, ছবি, লেখা ও এর UI (User Interface)/ UX (User Experience) ডিজাইন দেখতে পাই। সাধারণত এইগুলোকেই ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট এন্ড বা ক্লায়েন্ট সাইড কোডিং বলা হয়ে থাকে। এসব ডিজাইনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল ওয়েবসাইটে যারা ভিজিট করবে তারা যেন আকর্ষিত হয়। একটি ওয়েবসাইটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভিজিটরদের আকর্ষিত করা। 

যদি একটি ওয়েবসাইটে সুপরিকল্পিতভাবে ফ্রন্ট এন্ড অভিজ্ঞতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করে অর্থাৎ ভিজিটররা কি চাচ্ছে বা খোঁজার চেষ্টা করছে সেগুলো পেতে সাহায্য করে তাহলেই ওয়েবসাইটের মূল সার্থকতা। ফ্রন্ট এন্ড লোডের সময় কমিয়ে এবং পৃষ্ঠার গতি বাড়িয়ে ওয়েবসাইটের কার্যক্ষমতা উন্নত করার কাজ করে থাকে। আর এই সকল বিষয়বস্তু যদি ডেভলপাররা সঠিকভাবে করতে না পারে তাহলে সেই ওয়েবসাইট থেকে ভালো ফলাফল আশা করা যায় না।

ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট

ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট সাধারণত সার্ভার সাইডের প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করে থাকে। কোন ওয়েবসাইটের ফাংশনাল কাজের ক্ষেত্রে সাইট এর ভিতরের অংশে যে সকল কাজ করা হয় যেমন ওয়েব ডিজাইন ও থিম ডিজাইন ব্যতীত, ব্যাক এন্ড সার্ভার ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন লজিক দ্বারা সমন্বিত এবং ওয়েবসাইট সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি বিষয়টি সম্পর্কে খুবই সিরিয়াস। তাদেরকে ব্যাক এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি খুব ভালো করে বুঝে নিতে হবে। 

ব্যাক এন্ড একটি স্ট্যাটিক ওয়েবপেজ কে ডায়নামিক ওয়েবপেজে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে অনেকটাই মুখ্যভাবে কাজ করে থাকে। ব্যাক এন্ড ডেভলপের কাজ সাধারণত ওয়েবসাইটের অদৃশ্য সার্ভার সাইটে সম্পাদন করা হয় তাই সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের ভিজিটররা সেটা দেখতে পান না। এই বিষয়টিকে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ ম্যানেজমেন্ট বা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিও বলা হয়। এগুলোর মধ্যে ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অন্যতম।

ফুল স্ট্যাক ডেভেলপমেন্ট

শুরুতেই আমরা জেনেছি একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করা থেকে শুরু করে সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়া বিষয়টিকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। এক্ষেত্রে ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট বিষয়টিও তাই। ওয়েবসাইট তৈরি করার পর ডিজাইন থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাকেই ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট বলা হয়। সুতরাং ওয়েব ডিজাইন ফ্রন্ট এন্ড ব্যাক এন্ড ওয়েবসাইটের সার্ভার গঠন ও কাঠামো তৈরি করার পুরো প্রক্রিয়াটাই ফুল স্ট্যাগ ডেভেলপমেন্ট। ডিবাগিং, ডাটাবেজ, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সিকিউরিটি সবকিছু একজন ফুল স্টাইক ওয়েব ডেভেলপার ম্যানেজ করে। ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলো সাধারণত ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভলপার সম্পাদন করে।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কিভাবে কাজ করে অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজগুলো সাধারণত একটু জটিল হয়ে থাকে। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করে তাদেরকে ওয়েব ডেভলপার বলা হয়। মূলত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি এ বিষয়টিতে, একজন ওয়েব ডেভলপারের প্রধান কাজ হল একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে লাইভ হওয়া পর্যন্ত সকল বিষয় সম্পর্কে সিকিউরিটি প্রদান করা। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। 
অর্থাৎ ওয়েব ডেভলপাররা তিন ধরনের কাজে দক্ষ হলে তবেই সে একজন প্রফেশনাল সম্পূর্ণরূপে ওয়েব ডেভলপার হিসেবে গণ্য করা হবে। তবে কেউ যদি তিনটি বিষয়ের একটি বিষয়ে পারদর্শী হয় অর্থাৎ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর যেকোনো একটি বিষয়ে কাজ করলেও বিভিন্ন আইটি কোম্পানিতে জব করার সুযোগ রয়েছে। ওয়েব ডেভলপারদের সুনির্দিষ্ট কাজ ও দায়িত্ব গুলো হল ক্লাইন্ট সাইড কোডিং, সার্ভার সাইড কোডিং, ফুল স্ট্যাক বিষয়গুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা তদারকি করা। একটি ওয়েব ডেভেলপার এমন একটি পণ্য তৈরি করবে যা প্রত্যেকটি ক্লায়েন্ট ও গ্রাহকের বিশেষ 

চাহিদা সম্পন্ন হবে। ওয়েব ডেভলপমেন্টের আরো একটি বিষয় ক্রমাগত নতুন নতুন আপডেটের সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। সেগুলো হলো ওয়েবসাইটে নতুন নতুন আপডেটের সাথে অনেক বাগ চলে আসে। সেই বাগ গুলোকে পর্যবেক্ষণ করে ফিক্সিং করার কাজ একজন ওয়েব ডেভেলপারকে সঠিকভাবে করতে হয়। এই সমস্যাগুলো নিত্যদিনের তাই ওয়েব ডেভেলপিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য নিয়ে মাঠে নামা উচিত। কেননা ওয়েব ডেভেলপারদের প্রতিদিন ওয়েবসাইট থেকে এ ধরনের সমস্যা নিরসন করতে হয়, যাতে করে ওয়েবসাইট গুলো কোনরকম সমস্যা ছাড়া সহজভাবে চলতে পারে।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হবে

আপনারা অবশ্যই ইতিমধ্যে উপলব্ধি করতে পারছেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি জটিল হওয়ার পাশাপাশি যারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করেন তাদের অনেক বিষয়ে সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। একজন ডেভলপারের শুধুমাত্র ওয়েব ডেভেলপমেন্টের তিনটি বিষয় সম্পর্কে জানলেই হবে না। অর্থাৎ উপরে বর্ণিত ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট, ব্যাক এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ফুল স্ট্যাক সম্পর্কে জানার পরেও আরো কিছু দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। দক্ষতা গুলোর মধ্যে প্রথমে আসে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের কথা। প্রকৃতপক্ষে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর মাধ্যমে। তাই একজন ডেভলপারের HTML, CSS, Java, XML সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হয়।
  • HTML: HTML (Hyper text markup language) এর মার্ক আপ ট্যাক্স সমূহ ব্যবহার করে ওয়েবসাইট এর বেসিক কাঠামো তৈরি করা হয়ে থাকে। আবার ওয়েবসাইটের head, title, body, tag কোথায় বসালে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে সেগুলো জানার জন্য HTML ভাষা আয়ত্তে রাখতে হয়।
  • CSS: CSS (cascoding system sheets) এর সাহায্য নিয়ে ওয়েব পেজের বিভিন্ন উপাদান এর গঠন যেমন ডিজাইন, সাইজ কত হবে, কালার কেমন হবে, ফ্রন্ট এ কেমন সাইজ হবে ইত্যাদি যাবতীয় সকল কাজ CSS দ্বারা করা হয়। তাই ওয়েব ডেভেলপিং করতে গেলে এই CSS ভাষাটি জানাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ
  • Java: JavaScript দিয়ে ওয়েবসাইটের ইন্টার অ্যাক্টিভিটি কেমন আছে বা সেটি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন কিনা সে বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া যেমন facebook, twitter। কেউ একজন লাইক অথবা কমেন্ট করলে একটি নোটিফিকেশন যেমন প্রোফাইলের মালিকের অ্যাকাউন্টে শো হয় এ বিষয়টিকেই JavaScript সম্পন্ন করে থাকে। সুতরাং এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজটিও জানতে হয়।
  • Wordpress and SEO: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি যদি জানতে হয় তাহলে অবশ্যই Wordpress and SEO সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। Wordpress হল বিশ্বের মধ্যে একটি জনপ্রিয় CMS (content management software)। ওয়ার্ডপ্রেস একটি সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম যেটা ব্যবহার করে নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করা সম্ভব। 
আবার একজন ওয়েব ডেভলপার হতে গেলে অবশ্যই SEO (search engine optimization) সম্পর্কে অ্যাডভান্স ধারণা থাকা প্রয়োজন। একটি ওয়েবসাইটকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য seo এর ভূমিকা অপরিসীম। একটি ওয়েবসাইটের অনেকগুলো ট্যাগ থাকে আর সে ট্যাগগুলোকে অপটিমাইজ করার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনে রেংক করানো সম্ভব। যদি সঠিকভাবে ট্যাগ অপটিমাইজ না করা হয় সে ক্ষেত্রে কখনোই ওয়েব পেজটি গুগলে প্রথমের দিকে শো করবে না আর এতে করে ভিজিটর আসবেনা। 

যদি ভিজিটর সঠিকভাবে না আসে সেক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট কোন ভাবেই লাভবান হতে পারবে না। সুতরাং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এ বিষয়টি যদি পুঙ্খানুরূপে না জানা যায় তাহলে কখনোই উক্ত কাজগুলো করা সম্ভব।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ক্যারিয়ার এবং বেতন

একজন ওয়েব ডেভেলপার তার ক্যারিয়ারে তখন সফলতা দেখতে পাবে যখন সে নিজেকে ওয়েব ডেভেলপিং করার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নিজেকে সম্পূর্ণ তৈরি করতে পারবে। একজন ওয়েব ডেভেলপার শুধুমাত্র আইটি সেক্টরে নয়, বাড়িতে বসেও ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন স্কিল সম্পূর্ণ প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার পরে কেবলমাত্র তার ক্যারিয়ারে সফলতার গল্প যোগ হবে। তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ক্যারিয়ারে কোন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

আইটি সেক্টরে জব

যদি একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করা যায়। তাহলে সিভি প্রদানের মাধ্যমে যেকোনো বড় মাপের আইটি সেক্টরে খুব সহজেই চাকরি পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ায় সেই সকল সাইটে ডেভলপার নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই কেউ যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে ভালোভাবে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে তাহলে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও চাকরির সুযোগ রয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিং

আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এর নাম কোন না কোন সময় একবার হলেও শুনেছেন। ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি হল অনলাইনে আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে কাজ করে থাকা। মুক্ত পেশা হিসেবে উল্লেখিত ফ্রীলান্সিং কাজটি সাধারণত ঘরে বসে নিজের স্বাধীন মোতাবেক করা সম্ভব। আর ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি এবং কিভাবে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়, এই বিষয় নিয়ে যদি কেউ দক্ষতা অর্জন করে। সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে অনেক বড় বড় অর্ডার পাওয়া সম্ভব। 

সে ক্ষেত্রে ফাইবার, আপ ওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ইত্যাদি মার্কেটপ্লেস এ একটি পোর্টফোলিও বা গীগ তৈরির মাধ্যমে নিজের দক্ষতা প্রকাশ করাতে হবে। সেলারের দক্ষতা অনুযায়ী বায়ার এসে তার চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিসটি গ্রহণ করবে। বেশিরভাগ বিদেশি ক্লায়েন্ট উক্ত মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে ওয়েব ডেভলপার হায়ার করে থাকে। সেই সকল বিদেশি ক্লায়েন্টের কাজ করার মাধ্যমে ভালো একটি অ্যামাউন্ট ইনকাম করা।

পার্ট টাইম জব

বর্তমানে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোকে দেখাশোনা করার জন্য ডেভলপার নিয়োগ দেওয়া হয়। মূলত বড় বড় কোম্পানি অথবা ব্যক্তিগত ভাবে ওয়েবসাইট তদারকি করার জন্য লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এবং এর আদ্যপ্রান্ত সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে শিখে পার্ট টাইম জব করেও টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

ওয়েবসাইট বিক্রয়

যদি কেউ একজন নিজেকে প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ডেভলপার হিসেবে তৈরি করতে পারে। তাহলে সে প্রথমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবে। তারপর সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিউয়ার বা ট্রাফিক আনার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটিকে পপুলার হিসেবে গড়ে তুলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে। একটি ভাল মানের ওয়েবসাইট বিভিন্ন কোম্পানি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগতভাবে বিজনেসের জন্য অনেকেই ওয়েবসাইট ক্রয় করে। ওয়েবসাইট বিক্রির জন্য আবার এক ধরনের মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে ওয়েবসাইট কেনাবেচা করা হয়। সেই ধরনের একটি মার্কেট প্লেস হল flippa.com।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোর মাধ্যমে একজন ওয়েব ডেভলপার প্রতি মাসে ভালো একটি অ্যামাউন্ট কালেক্ট করতে পারবে। তবে একজন ওয়েব ডেভলপার ঠিক কত টাকা ইনকাম করবে সেটি নির্ভর করবে তার নিজস্ব স্কিল এর ওপর। আইটি সেন্টারে যদি একজন ডেভলপার চাকরি করে সেক্ষেত্রে তার বেতন কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। আবার কেউ যদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কিন প্রেস এ তার সার্ভিস সেল করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে সে ক্ষেত্রেও মাসে ৫০০ ডলার থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম হয়।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভবিষ্যৎ

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি এই বিষয় সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আরো একটি বিষয় সামনে আসে সেটি হল ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর ভবিষ্যৎ কি। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর আওতায় নিজেকে একজন ওয়েব ডেভলপার হিসেবে গড়ে তোলে তাহলে তার ভবিষ্যৎ কেমন হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবশ্যই নিজেকে একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আর কোন চিন্তা থাকেনা। ইতিমধ্যে আমরা একজন ওয়েব ডেভেলপারের ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানার সময় কি কি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এবং কত টাকা মাসিক ইনকাম করতে পারবে সেগুলো 

জানতে পেরেছি। বর্তমানে যেমন ওয়েব ডেভেলপিং এর চাহিদা রয়েছে ভবিষ্যতেও এর চাহিদা কমবে না বরং আরো বৃদ্ধি পাবে। যেহেতু পৃথিবী সব সময় আপডেটেড হয়ে চলেছে সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ওয়েব ডেভলপার যদি তার ক্যারিয়ার নিয়ে রিসার্চ করে তাহলে অবশ্যই সময়ের সাথে নিজেকেও আপডেট করতে হবে। একটি হিসেব অনুযায়ী প্রতি মিনিটে গড়ে ৫৭১ টি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। দিন দিন এর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ওয়েব ডেভলপারের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ব্যবসায় বাড়তি সুবিধা এবং অনেকে ব্যক্তিগতভাবে তাদের নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য একটি 

ওয়েবসাইটের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। আবার প্রত্যেকটি আইটি সেন্টার সেই সকল ওয়েব ডেভলপারকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ফুল স্ট্যাক সম্পর্কে দক্ষ। The bureau of labor statistics projects ভবিষ্যৎবাণী করেছে ২০২৯ সালের মধ্যে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ১৯ হাজার ডেভেলপারের চাকরি হবে। সুতরাং এটা বলা যেতেই পারে যে একজন ওয়েব ডেভেলপার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন চিন্তা না করেই তার নিজের স্কিল আরও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্স

আমরা ইতিমধ্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পেলাম। তাহলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করা যায়। মূলত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একটি জটিল বিষয় হওয়ার পাশাপাশি খুবই ধৈর্যসহকারে শিখতে হয়। আর এজন্য প্রয়োজন একটি সঠিক গাইডলাইন। একজন সঠিক মেন্টর পারেন গাইডলাইনের মাধ্যমে যে কোন স্কিলে একজন ব্যক্তিকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা। তাই আমাদের মতে অবশ্যই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার ক্ষেত্রে একজন মেন্টরের সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। 

সুতরাং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এবং এর বিস্তারিত বিষয়ে সম্পর্কে শেখার জন্য কোর্সের প্রয়োজন হবে। বর্তমান সময়ে ব্যাঙের ছাতার মতো আনাচে-কানাচে অনেক আইটি সেন্টার গড়ে উঠেছে। ভালো মানের সঠিক আইটি সেন্টারের গিয়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্স করা উচিত। তা না হলে আপনার কষ্টের টাকা কোর্সের ফি প্রদান করেই জলে যাবে। ভালো মানের আইটি সেন্টার বুঝার জন্য সেখানে কর্মরত মেইন্টরদের পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে হবে। 

একজন মেন্টর যদি প্রাথমিক অবস্থায় বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু করে অন্য কোন আরটি সেন্টারে জব করে থাকে তাহলে অবশ্যই সে একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেন্টর বলে গণ্য হবে। আর এ ধরনের ভালো মানের আইটি সেন্টারে যোগাযোগ করে সেখানে তিন মাসের কোর্স বা ছয় মাসের কোর্স করার মাধ্যমে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।

শেষকথা

আপনাদের উদ্দেশ্যে লেখকের শেষকথা হিসেবে থাকবে আপনি যদি নিজেকে একজন দক্ষ ওয়েব ডেভলপার হিসেবে দেখতে চান তাহলে অবশ্যই পরিশ্রম করুন। পরিশ্রম এর মাধ্যমে যদি চেষ্টা করে যান তাহলে কখনোই সেই পরিশ্রম বৃথা যাবে না। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে যদি সঠিকভাবে জ্ঞান অর্জন করা যায় তাহলেই একজন ব্যক্তি ওয়েব ডেভলপার হিসেবে মার্কেটপ্লেস এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবে। 

আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পাশাপাশি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধবের উপকারের লক্ষ্যে শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url