ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে এই টপিকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে যারা নতুন হিসেবে ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর কাজ শিখে মার্কেটপ্লেস অথবা মার্কেটপ্লেসের বাইরে কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি। ফ্রিল্যান্সিং জগতে ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর নাম সবার প্রথমেই চলে আসে। ওয়েবসাইট তৈরি হয় মূলত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভিত্তিতে।
চলুন তাহলে আজকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভাবে জানার চেষ্টা করা যাক। উক্ত বিষয়টি বাদেও আপনারা যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে চলেছেন সেগুলো হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে এবং কোর্স সংক্রান্ত বিষয় গুলো। পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কম্পিউটার কোনটি প্রয়োজন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে বিষয়টি জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মূলত একটি ওয়েবসাইটকে তৈরি করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে লাইভ করা পর্যন্ত যে বিশেষ প্রক্রিয়াটি অবলম্বন করা হয় সেগুলোকে একসঙ্গে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলে। আবার ওয়েব সার্ভারে জমা রাখার ক্ষেত্রে তথ্য গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে দর্শনযোগ্য করার বিষয়টিকে এবং সফটওয়্যার তৈরি করার পুরো প্রক্রিয়াকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। বর্তমান সময়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একটি জনপ্রিয় পেশায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের ব্যবসা কার্যক্রম অনলাইনে মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আর অনলাইনের কথা আসলেই ওয়েবসাইটের কথা চলে আসে।
মূলত ওয়েবসাইট তৈরি হয় ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভিত্তি অনুযায়ী। যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করে তাদেরকে ওয়েব ডেভলপার বলা হয়। একজন ওয়েব ডেভলপার বিভিন্ন কোডিং এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকেন। সাধারণত ওয়েব ডেভলপাররা ওয়েবসাইটের ডিজাইন বা চিত্র অনুসারে ক্লায়েন্টের সাইট ভাষা ও সার্ভার সাইট ভাষাগুলো ব্যবহার করে ওয়েবসাইটকে ডেভলপিং করা হয়। বিষয়টি একটি জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পাদন করা হয়। এজন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে বিষয়টি একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
আবার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে এ বিষয়টিও বলা একটু কঠিন। কারণ একজন ওয়েব ডেভলপার তার দক্ষতা অনুযায়ী ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ভিত্তি অনুযায়ী যদি ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে তাহলেই ক্লায়েন্টের ব্যবসা উন্নতির দিকে অগ্রসর হবে।
ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে সকলেই ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর নাম শুনে থাকে। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর নাম শুনলেও বিষয়টি আসলে কতটা প্যাঁচানো সেটা অনেকেই জানেনা। কেউ যদি ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে জানার পর কাজে লেগে যায় সে ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় হয়তোবা সফলতা দেখা দিবে না। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যদি অধ্যবসয়ের সাথে পরিশ্রম করা যায় তাহলে অবশ্যই একজন ব্যক্তি নিজেকে প্রফেশনাল ওয়েব ডেভলপার হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
আমরা ইতিমধ্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি বিষয়টি জানতে পেরেছি। আসুন তাহলে এবার ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে জানা যাক। ওয়েব ডেভেলপমেন্টকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে এগুলো হলো ফ্রন্ট এন্ড ডেভলবমেন্ট, ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট এবং ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট।
ফ্রন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট (ওয়েব ডিজাইন)
ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট বলতে সেই বিষয়টিকেই বুঝিয়ে থাকে। যখন আমরা কোন একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য ওয়েবসাইটের ভেতরে প্রবেশ করি সেখানে প্রথম পেজে কিছু নকশা, লে আউট, ছবি, লেখা ও এর UI (User Interface)/ UX (User Experience) ডিজাইন দেখতে পাই। সাধারণত এইগুলোকেই ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট এন্ড বা ক্লায়েন্ট সাইড কোডিং বলা হয়ে থাকে। এসব ডিজাইনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল ওয়েবসাইটে যারা ভিজিট করবে তারা যেন আকর্ষিত হয়। একটি ওয়েবসাইটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভিজিটরদের আকর্ষিত করা।
যদি একটি ওয়েবসাইটে সুপরিকল্পিতভাবে ফ্রন্ট এন্ড অভিজ্ঞতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করে অর্থাৎ ভিজিটররা কি চাচ্ছে বা খোঁজার চেষ্টা করছে সেগুলো পেতে সাহায্য করে তাহলেই ওয়েবসাইটের মূল সার্থকতা। ফ্রন্ট এন্ড লোডের সময় কমিয়ে এবং পৃষ্ঠার গতি বাড়িয়ে ওয়েবসাইটের কার্যক্ষমতা উন্নত করার কাজ করে থাকে। আর এই সকল বিষয়বস্তু যদি ডেভলপাররা সঠিকভাবে করতে না পারে তাহলে সেই ওয়েবসাইট থেকে ভালো ফলাফল আশা করা যায় না।
ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে তাদের জন্য ব্যাক এন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখাটা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্ট সাধারণত সার্ভার সাইডের প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করে থাকে। কোন ওয়েবসাইটের ফাংশনাল কাজের ক্ষেত্রে সাইট এর ভিতরের অংশে যে সকল কাজ করা হয় যেমন ওয়েব ডিজাইন ও থিম ডিজাইন ব্যতীত, ব্যাক এন্ড সার্ভার ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন লজিক দ্বারা সমন্বিত এবং ওয়েবসাইট সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
ব্যাক এন্ড ডেভলপের কাজ সাধারণত ওয়েবসাইটের অদৃশ্য সার্ভার সাইটে সম্পাদন করা হয় তাই সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের ভিজিটররা সেটা দেখতে পান না। এই বিষয়টিকে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ ম্যানেজমেন্ট বা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিও বলা হয়। এগুলোর মধ্যে ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অন্যতম।
ফুল স্ট্যাক ডেভেলপমেন্ট
শুরুতেই আমরা জেনেছি একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করা থেকে শুরু করে সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়া বিষয়টিকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। এক্ষেত্রে ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট বিষয়টিও তাই। ওয়েবসাইট তৈরি করার পর ডিজাইন থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাকেই ফুল স্ট্যাক ডেভলপমেন্ট বলা হয়। সুতরাং ওয়েব ডিজাইন ফ্রন্ট এন্ড ব্যাক এন্ড ওয়েবসাইটের সার্ভার গঠন ও কাঠামো তৈরি করার পুরো প্রক্রিয়াটাই ফুল স্ট্যাগ ডেভেলপমেন্ট।
ডিবাগিং, ডাটাবেজ, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সিকিউরিটি সবকিছু একজন ফুল স্টাইক ওয়েব ডেভেলপার ম্যানেজ করে। ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলো সাধারণত ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভলপার সম্পাদন করে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে
আমরা আর্টিকেলের শুরুতেই একটি বিষয় উল্লেখ করেছিলাম সেটি হল একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়টি সম্পাদিত হয়ে থাকে। তাহলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার ক্ষেত্রেও একটু জটিলতা আসবে এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে ধৈর্য এবং পরিশ্রম সহকারে যদি কোন কাজ করা হয় তাহলে সেটা কখনোই বিফলে যায় না। সুতরাং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে এই প্রশ্নতে উত্তর হিসেবে বলা যায়, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য কমপক্ষে একজন স্টুডেন্টকে ১ বছর হাতে সময় নিয়ে আসতে হবে।
এই এক বছরে শুধুমাত্র তাকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে সকল কিছু শেখার চেষ্টা করতে হবে। কেউ যদি মনে করে আমি ছয় মাসেই ওয়েব ডেভলপিং শেখার পরে আর্নিং শুরু করে দিতে পারব তাহলে বিষয়টা ভুল। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যে সকল বিষয় নিয়ে খুব দ্রুত ইনকাম করা সম্ভব সে বিষয়গুলো আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল হিসেবে দিয়ে রেখেছি আপনারা চাইলে দেখে আসতে পারেন। কিন্তু ওয়েব ডেভলপিং বা যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করছে তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে হয়।
কোডিং থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রাথমিক ধারণা সবকিছুই আয়ত্তে রাখতে হয় একজন ওয়েব ডেভলপারের। আমরা আজকে ২ টি ধাপে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব।
Step-1
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে এমন একটি ওয়েবসাইট নির্বাচন করতে হবে যেখানে অরগানাইজিং করার মাধ্যমে ফ্রিতে সে সকল ওয়েবসাইট বিগিনারদের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। সেরকম একটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার বেস্ট প্লেস হচ্ছে freecodecamp.org। এরকম একটি অর্গানাইজড রিসোর্চ সম্বলিত ওয়েবসাইট কমই দেখা যায়। সেখানে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে মিনিমাম ৬ মাস থেকে ১ বছর ওয়েব ডেভলপমেন্ট বিষয়টি নিয়ে প্র্যাকটিস করতে হবে।
সর্ব প্রথমে Responsive web design যেখানে সুন্দর এবং সহজ কোডিং সংক্রান্ত বিষয়গুলো ধারণা দেওয়া রয়েছে। পাশাপাশি স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন ফলো করার মাধ্যমে Responsive web design ভালো করে শেষ করতে হবে। এই বিষয়টি শেষ হলে তারপর শুরু করতে হবে Javascript algorithm and data structure নিয়ে। হয়তোবা Javascript প্রথমে একটু বুঝতে সমস্যা হবে। যেগুলো বুঝতে সমস্যা হবে সেগুলো মার্ক করে রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে সেটা নিয়ে আবার প্র্যাকটিস করতে হবে।
উক্ত ওয়েবসাইটটিতে আরও অনেক বিষয় রয়েছে তবে প্রাথমিকভাবে প্রথম ধাপে এগুলো শিখলেই হবে। এরপর Front end development এর মধ্যে bootstrap, react, redux এ বিষয়গুলো নিয়ে প্যাকটিস করা যাবে।
Step-2
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে এ বিষয়টিতে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সবগুলো বিষয়কে একদিনে শেখার চেষ্টা না করে ছোট ছোট অংশ বিভক্ত করে ধীরে ধীরে শেখার চেষ্টা করা। ওয়েব ডেভেলপিং এর ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায়টি শেষ করার পর দ্বিতীয় ধাপে এসে HTML সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। HTML ভালোভাবে জানার জন্য একটি ওয়েবসাইট রয়েছে সেটি হল w3schools.com। এই ওয়েবসাইটটি যারা নতুন HTML শিখছে তাদের জন্য অন্যতম একটি ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত। এখানে একটি HTML এর সিরিজ রয়েছে ধৈর্য সহকারে আসতে আসতে করে শেখার চেষ্টা করতে হবে।
উক্ত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করার পর Learn HTML এ ক্লিক করলে সকল সিরিজের সিরিয়াল গুলো চলে আসবে। প্রথমে HTML ট্যাগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামনে চলে আসবে। একটার পর একটা বিষয়গুলো যখন আসবে তখন মাথা গুলিয়ে যেতে পারে। তাই বারে বারে রিপিট করে দেখার অভ্যাস করে তুলতে হবে। যদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বারবার কেউ ভুলে যায় সে ক্ষেত্রে HTML Tag list নামে একটি অপশন রয়েছে সেখানে গিয়ে ক্লিক করলে সকল বিষয়গুলো আবার রিপিট হয়ে চলে আসবে। এবার ঠিক একই সিস্টেমে CSS সম্পর্কে জানতে হবে।
তবে CSS শেখার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করতে হবে। পর্যায়ক্রমে CSS এর প্রত্যেকটি বিষয় সম্বন্ধে জানতে হবে। এরপর আসবে CSS REFERENCE। এখানেই CSS এর সকল নলেজ ভান্ডার। সেম যেভাবে JavaScript শেখা হয়েছে ঠিক একই ভাবে CSS পর্যায়ক্রমে ভালোভাবে শিখতে হবে। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর মধ্যে বেসিক বিষয়গুলো জানলেই হবে। Array function object বিষয়টিও খুব ভালোভাবে জানতে হবে। DOM, API, BROWSER এর ভেতরে যে বিষয়গুলো আসবে সবকিছুই ভালোভাবে জানতে হবে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে
ওয়েব ডেভলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে এই প্রশ্নে আপাতত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে শুরু করে সকল বিষয় কমপক্ষে ১ বছর সময় প্রয়োজন। উপরের বিষয়গুলো যদি ভালো করে পড়ে থাকেন তাহলে একটি বিষয় স্পষ্ট যে ওয়েব ডেভেলপিং শেখার ক্ষেত্রে অনেক জটিল জটিল বিষয় সম্বন্ধে জানতে হবে। আর অবশ্যই ইংরেজি ভাষাতে পারদর্শী সে সকল ব্যক্তি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করা উচিত। কেননা এখানে প্রত্যেকটি বিষয় ইংরেজিতে উল্লেখ থাকবে। আবার কঠিন সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানার জন্য ইংরেজি জানা খুবই জরুরী।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র যা সম্পূর্ণভাবে শিখতে হলে একজন বিগিনার কে স্কীলগুলো রপ্ত করার সাথে সাথে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার হতে গেলে অবশ্যই সর্বপ্রথম ডেভলপমেন্টের বেসিক বিষয়গুলো জানতে হয়। বেসিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে HTML, CSS এবংJavaScript। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে এই বিষয়টিতেও সর্বপ্রথমে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বেসিক বিষয়গুলো শেখার বিষয়টি উল্লেখ আছে।
যদি কেউ মনে করে আমি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখে মার্কেটপ্লেস এবং মার্কেটপ্লেস এ কাজ করব তাহলে শুধুমাত্র HTML শেখার ক্ষেত্রেই ১ মাস ব্যয় করতে হবে। পর্যায়ক্রমে আরও যে সকল বিষয়ে রয়েছে সব বিষয়ে জেনে, একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভলপার হতে ১ বছর সময় লাগবে।
ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কোর্স
ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখার জন্য অবশ্যই একটি সঠিক গাইডলাইন প্রয়োজন। আর সেজন্য বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভলপমেন্ট বিষয়ে কোর্সের ব্যবস্থা করে রেখেছে। তারা একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে স্টুডেন্টদের ডেভলপমেন্ট বিষয়ে শিখিয়ে থাকে। তবে বর্তমান সময়ে অনেক আইটি সেন্টার গঠন হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভালো মানের আইটি সেন্টার খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। আইটি সেন্টার ব্যতীত youtube থেকেও ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বেসিক ধারণা নেওয়া সম্ভব।
ইউটিউবে অনেক চ্যানেল রয়েছে যেখানে ফ্রিতে ওয়েব ডেভেলপিং সম্পর্কে বেসিক ধারণাসহ অ্যাডভান্স ধারণা গুলো দেওয়া হয়ে থাকে। তবে নিজে নিজে শিখতে গেলে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে সময় নিয়ে শিখতে হবে। আর আইটি সেন্টারের মাধ্যমে যদি শেখা হয় সেক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ মেনটর খুব দ্রুত এডভান্স পর্যায়ে শেখানোর চেষ্টা করে থাকে। ভালো মানের আইটি সেন্টার নির্বাচনের জন্য ওই আইটি সেন্টারের মেন্টাল গুলোর পেছনের সাকসেসফুল ওয়ার্ক সম্পর্কিত তথ্য নিতে হবে।
একজন ভালো মেনটর তার পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যদি ভালো সফলতা অর্জন করে তাহলে বিগিনারদের একজন প্রফেশনাল ডেভলপার বানাতে তার কোন সময়ই লাগবে না। আবার অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা অনলাইনে শুধুমাত্র ওয়েব ডেভেলপিং কোর্স বিক্রি করে। সকল কোর্সে HTML এর উপরে ৪০ টা ভিডিও,CSS এর উপরে ৮০ টা ভিডিও এছাড়া বুট স্টাফ, জাভা স্ক্রিপ্ট এর উপরে ১০১ টা ভিডিও পর্যন্ত ইনক্লুড করে থাকে। তাই ওয়েবসাইট থেকেও কম মূল্যে সে সকল কোর্স ক্রয়ের মাধ্যমে ওয়েব ডেভেলপিং এন্ড ডিজাইন শেখা সম্ভব।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কম্পিউটার
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে এই প্রশ্নটির পাশাপাশি আরও একটি বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন রয়েছে সেটি হল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করার ক্ষেত্রে কেমন রেঞ্জের কম্পিউটার প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে ডেক্সটপ এর চাইতে ল্যাপটপে কাজ করার আগ্রহ সকলেরই বৃদ্ধি পেয়েছে। ল্যাপটপ ডিভাইসটি পোর্টাবেল হওয়ার কারণে যেখানে সেখানে বসে কাজ করা সম্ভব। অন্যদিকে ডেক্সটপ কম্পিউটার শুধুমাত্র ঘরে বসেই কাজ করা যায়। তাই যেকোনো জায়গায় ক্যারি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ল্যাপটপ বেশি গুরুত্ব পাবে।
আর ওয়েব ডেভেলপিং করার ক্ষেত্রে ল্যাপটপ দিয়েও সকল কাজ ইজিলি করা সম্ভব। তবে ল্যাপটপ অথবা ডেক্সটপ যেটাই হোক না কেন একটি সঠিক কনফিগারেশন থাকার মাধ্যমে কেবলমাত্র ওয়েব ডেভেলপমেন্টের সকল কাজগুলো করা সম্ভব। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কোন কম্পিউটার বেস্ট হবে সেটাও জানা জরুরী। আসুন তাহলে এবার কম্পিউটারের রেঞ্জ কেমন হতে হয় সে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
প্রসেসর
কম্পিউটারের প্রধান একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টস এর মধ্যে হলো প্রসেসর। অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের প্রসেসর কম্পিউটারে লাগাতে হবে। বহুল জনপ্রিয় Intel প্রসেসর সঠিক বলে গণ্য করা হবে। প্রসেসরের ক্ষেত্রে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অথবা ডিজিটাল মার্কেটিং এর মত কাজগুলো core i3 6th generation নিতে হবে। তবে এর চাইতে বেশি কনফিগারেশন নিলে আরো বেশি ভালো হবে। যদি বাজেট কারো ভালো হয় তাহলে প্রসেসরের ক্ষেত্রে core i5 এবং core i7 6th জেনারেশন অথবা এর থেকে আপডেট ভার্সন নিলে কাজে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।
র্যাম
প্রসেসরের পাশাপাশি র্যাম এর ক্ষেত্রেও ভালো মানের র্যাম লাগাতে হবে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর সকল কাজগুলো করার জন্য অবশ্যই অনেকগুলো সফটওয়্যার একসঙ্গে ওপেন করতে হয়। আর এজন্য বেশি পরিমাণ র্যাম এর প্রয়োজন পড়ে। যেই ল্যাপটপ গুলোতে এক্সট্রা ভাবে র্যাম লাগানোর স্লট থাকে সেই ল্যাপটপ নেওয়া উচিত। ৪ জিবি এবং ৪ জিবি মোট ৮ জিবি র্যাম লাগানো সবচেয়ে ভালো
হার্ড ড্রাইভ
ল্যাপটপ যেটাই ক্রয় করেন না কেন সেটাতে যদি SSD লাগানো না থাকে তাহলে অবশ্যই মিনিমাম ১২৮ জিবি বা তার বেশি জিবির SSD লাগিয়ে নিতে হবে। আর SSD লাগানোর ফলে ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ দুটোই ভালো পারফরম্যান্স দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে দেয়।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ যারা ওয়েব ডেভলপিং শিখতে আগ্রহী সেই সকল ব্যক্তিদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি কি শিখতে হবে এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে বিষয়বস্তু গুলো আমরা বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি। এরপরও যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা সব সময় চেষ্টা করি আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্যবহুল আর্টিকেলগুলো
দেওয়ার জন্য। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসতে পারেন। পাশাপাশি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর লক্ষ্যে একটি শেয়ার করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url