সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে-ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে

সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে বিষয়টি অনেকেই সর্বজনীন হিসেবে গুলিয়ে ফেলেন। এখানে বলাবাহুল্য যে সরকারি লোন সাধারণত বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীরা অর্থাৎ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর এবং কার্যালয় সমূহের কর্মচারীরা। নিতে পারেন। এ ধরনের ঋণ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সেরকম কোন জামানতের প্রয়োজন পড়ে না। 
সরকারি-লোন-কিভাবে-পাওয়া-যাবে
তবে অনেক সরকারি কর্মচারী এই বিষয়ে সম্পর্কে অবগত নয় কিভাবে তারা ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি লোনের আওতায় নথিভুক্ত হতে পারেন। চলুন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে। আলোচ্য বিষয়টি বাদে আরও যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায়, ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এবং ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাবে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করা হবে। সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে বিষয়টি জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে

আমরা ইতিমধ্যে একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি যে সরকারি লোন বলতে শুধুমাত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন যে সকল মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ অধিদপ্তর রয়েছে এবং সেখানে স্থায়ী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীবৃন্দ এ ধরনের লোনের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। সরকারি লোনের মূল সুবিধা গুলো হলো লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো জামানতের প্রয়োজন পড়ে না। তবে ক্ষেত্র বিশেষে অফিসে কর্মরত কলিগদের জামিনদার হিসেবে রাখতে হয়। 

অর্থাৎ যে ব্যক্তি যে ডিপার্টমেন্টের নিযুক্ত রয়েছে সেই ডিপার্টমেন্টের তার সাথের কলিগকে সরকারি লোনের ক্ষেত্রে জামিন না রাখতে হয়। আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক সরকারি লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন যোগ্যতা থাকলে লোন পাস হয়।
  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতায় যে সকল মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর রয়েছে সেখানে স্থায়ী পদে কর্মরত থাকতে হবে।
  • ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ঋণগ্রহিত আর বয়স সর্বোচ্চ ৫৬ বছর হওয়া যাবে।
  • আবেদনকারীর মাসিক বেতন অবশ্যই অনলাইন অথবা ইএফটি (Online/EFT) পদ্ধতির আওতায় আসতে হবে।
  • পূর্বে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন গ্রহণ করে থাকলে লোন পরিশোধের রেকর্ড অবশ্যই ভালো হতে হবে। সকল বিষয় যদি সঠিক হয় তাহলে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নে আর কোন কনফিউশন থাকে না। আসুন এবার জেনে নিব সরকারি চাকরি হলেও কারা এ ধরনের লোন আবেদন করতে পারবেন না বা আবেদন করলেও লোনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।
  • রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন কোম্পানিতে নিযুক্ত কর্মচারীগণ এ ধরনের ঋণ পাবেন না। একমাত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতায় যেগুলো দপ্তর রয়েছে তারাই শুধুমাত্র এ ধরনের ঋণের আওতাভুক্ত হবেন।
  • যেকোনো চুক্তিভিত্তিক, খন্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত যদি কর্মচারী সরকারি দপ্তরে নিযুক্ত থাকে তারাও সরকারি লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
যদি কোন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু থাকে। পাশাপাশি দুর্নীতি মামলার চার্জ শিট দাখিল করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে লোনের আওতাভুক্ত করা হবে না। তবে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর সবকিছু যদি ঠিক থাকে এবং পুনরায় কর্মস্থলে নিয়োগপ্রাপ্ত হয় তাহলে কেবলমাত্র ঋণের মাথায় আসতে পারবে।
সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এ বিষয়টিতে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসে সেটি হল কোন প্রসেসের মাধ্যমে বা কোন দিক নির্দেশনার মাধ্যমে আবেদনকারী ঋণের জন্য ফুলফিল ভাবে আবেদন করতে সক্ষম হবে। 
যদিও যেকোনো ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে নিয়োগকৃত কর্মচারীর সাথে কথা বলে সরকারি লোন এর ব্যাপারে অর্থাৎ ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে, সম্পূর্ণ তথ্য হালনাগাদ করা সম্ভব। তবে ব্যাংকে না গিয়েও আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের সকল বিষয়বস্তু যদি ভালোভাবে ফলোআপ করা হয় তাহলে ব্যাংকে গিয়ে আর কোন ঝামেলায় পড়তে হয় না। তাহলে এবার আবেদনকারীর জন্য কি প্রসেস ফলো করা প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে জানব। আমরা এখানে জনতা ব্যাংককে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করব।

সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা

  • ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রাথমিকভাবে ট্রেকিং নম্বর সংগ্রহ করার জন্য অনলাইনে আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  • যদি অনলাইন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করা হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে একটি অটো জেনারেটেড ট্রাকিং নম্বর প্রদান করা হবে যা ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করে নিতে হবে।
  • এই পর্যায়ে এসে আবেদনকারী কে জনতা ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে মূল আবেদন ফরম, ঋণের প্রাপ্যতা সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, বেতন ভাতা EFT এর মাধ্যমে প্রেরণ সংক্রান্ত প্রত্যয়ন ও চেকলিস্ট সংগ্রহ করে নিজের কাছে রাখতে হবে।
  • তারপর প্রাথমিক আবেদনপত্র (ট্রাকিং নম্বর সহ) মূল আবেদন পত্র, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ঋণের প্রাপ্যতা সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, বেতন ভাতা EFT এর মাধ্যমে প্রেরণ সংক্রান্ত প্রত্যয়ন এবং চেকলিস্টে উল্লেখিত যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো জনতা ব্যাংকের যে শাখায় ঋণের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক সেই শাখায় দাখিল করতে হবে।
  • অবশ্যই ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিটির জনতা ব্যাংকের যে শাখা হতে ঋণ নিতে ইচ্ছা পোষণ করেছে সেই শাখায় একটি হিসাব অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। পাশাপাশি ওই হিসাবে একাউন্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বেতন ভাতা, পেনশন এবং গৃহ নির্মাণ বাবদ ঋণ বিতরণ ও আদায় সংক্রান্ত সমুদয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
আশা করি সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এ বিষয়টিতে আর কোন ধরনের সমস্যা নেই। এখন যে কেউ চাইলেই উপরে তথ্যগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি অথবা বেসরকারি ব্যাংক থেকে সরকারি লোনের জন্য আবেদন করে সরকারি লোনের আওতায় আসতে পারবে।

মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায়

অনেকেই ব্যবসা করার জন্য লোনের কথা চিন্তা করে থাকেন। আর লোনের বিষয়টি মাথায় আসলেই সর্বপ্রথম চলে আসে জামানতের কথা। কিন্তু মুদ্রার লোন এমন একটি লোন সিস্টেম যেখানে কোনরকম সম্পত্তি বন্ধক রাখার প্রয়োজন নেই। জামিনদার হিসেবে থাকবে সরকার নিজেই। বিষয়টি অনেকটা অবাস্তব মনে হলেও বর্তমানে ভারত মহাদেশে এই ধরনের লোনের ব্যবস্থা করেছে ভারত সরকার। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে মুদ্রা লোনের সেরকম কোন পদ্ধতি চালু করা হয়নি। সুতরাং আর্টিকেলের এই প্যারাগ্রাফটি যারা ভারতে অবস্থান করছেন সেইসব নাগরিকদের জন্য অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হতে 

চলেছে। বাংলাদেশের মতোই ভারতীয় একটি বিশাল জনগোষ্ঠী অর্থ সংকটে সব সময় ভুগে থাকে। সেখানেও বেকার জনগোষ্ঠী থাকার পাশাপাশি রয়েছে বিশাল অর্থ সংকট। আর এ সকল বিষয়কে নিরসনের জন্য ভারত সরকার মুদ্রা লোন বা প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা লোন এর ব্যবস্থা করেছে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায় বা মুদ্রা লোনের আওতায় ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে। যারা ব্যবসা করার কথা ভাবছেন কিন্তু মূলধনের অভাবে এগোতে পারছেন না তারা মুদ্রা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

উক্ত লোনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। ভারত সরকার মুদ্রা লোনকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছে। প্রথম বিভাগ সেটার নাম দেওয়া হয়েছে “শিশু বিভাগ”। শিশু বিভাগে আবেদন করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা লোন নেওয়া যায়। দ্বিতীয় টির নাম দেওয়া হয়েছে “কিশোর বিভাগ”। কিশোর বিভাগে লোনের আবেদন করলে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় টি হল “তরুণ বিভাগ”। তরুণ বিভাগে ঋনের জন্য আবেদন দাখিল করলে ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রাপ্তি সম্ভব।

প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য শর্তাবলী আলাদা এবং ঋণ পরিশোধের জন্য সময় পাওয়া যাবে পাঁচ বছর। ঋণ আবেদন করার ক্ষেত্রে কোন রকম প্রসেসিং চার্জ নেই। যারা এঋনের আওতায় আসতে পারবে তাদের বিষয়ে কিছু তথ্য নিচে প্রদান করা হলো।
  • যেকোনো ভারতীয় নাগরিক যাদের ম্যানুফ্যাকচারিং, প্রসেসিং, ট্রেডিং বা সার্ভিস জাতীয় আয় উৎপাদনকারী ছোট ব্যবসার পরিকল্পনা রয়েছে।
  • যাদের ঋণের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকার কম তারা দিনের জন্য আবেদন করলে গ্রান্টেড হবে।
  • আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার পরেই কেবলমাত্র ব্যাংক বা MFI তে মুদ্রা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে।
  • PMMY এর অধীনে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাংকের সাধারণ শর্তাবলী গুলো মেনে চলতে হবে।
  • আবেদনকারীর পূর্বের কোন খারাপ রেকর্ড অর্থাৎ কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যদি ঋণ গ্রহণ করার পর খেলাপির রেকর্ড থাকে সেক্ষেত্রে ঋণ গ্রান্টেড হবে না।
  • সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নে যেমন আমরা কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর কথা উল্লেখ করেছিলাম। ঠিক তেমনি মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এই প্রশ্নতেও আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস লাগবে। নিচে মুদ্রা লোন গ্রহণ করতে হলে কোন ধরনের ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বে সেগুলো দেওয়া হলো।
  • নাগরিক হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, প্যান কার্ড, আধার কার্ড অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  • স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র দাখিল করার জন্য বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল অথবা টেলিফোন বিল প্রদান করতে হবে। অবশ্যই বিলগুলো দুই মাসের বেশি পুরনো হওয়া যাবে না।
  • SC/ST/OBC/Minority ইত্যাদির প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
  • ব্যবসায়িক পরিচয় ও ঠিকানার প্রমান পত্র হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স, নিবন্ধন সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা দুই কপি রঙিন সাইজ পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।

ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে

আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে কোন না কোন সময় বিশেষভাবে অর্থের প্রয়োজন পড়ে। আর সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম মাথায় আসে ব্যাংক লোনের কথা। আবার যারা সরকারি চাকরিজীবী তারাও সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নটি মনে মনে পড়ার পাশাপাশি ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকগুলো সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যারা সহজ শর্তে দ্রুত লোন প্রদান করে থাকে। দুর্ঘটনাবশত কারণ বা অন্য যেকোন কারণে লোনের প্রয়োজন পড়লে আমাদের মাথা সঠিকভাবে আর কাজ করে না। 
তাই আজকের এই আর্টিকেলের প্রত্যেকটি বিষয়বস্তু যদি আপনারা ভালোভাবে পড়েন। তাহলে আশা করি বিপদের সময় লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হয় তা অনেকটাই কাজে আসবে। সরকারি এবং বেসরকারি যতগুলো ব্যাংক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল শর্ত এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করতে হয় সবগুলোই মোটামুটি একই ধরনের হয়ে থাকে। তবে একটি বিষয় উল্লেখ করতে হবে প্রতিটি ব্যাংকের লোনের সিস্টেম এবং সে অনুযায়ী সুদের হার পাশাপাশি লোন পরিশোধের নিয়ম আলাদা হয়ে থাকে। 

আসুন তাহলে এবার জেনে নিব ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে। নিচে মোটামুটি সব ব্যাংকের চাহিদা সম্পন্ন শর্তাবলী এবং কাগজপত্রের বিবরণ দেওয়া হলো।
  • আবেদনকারী অবশ্যই একজন বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
  • ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮ এর বেশি হতে হবে।
  • লোনের আবেদন করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র, শিক্ষা সনদ এবং রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি সহ আরো অন্যান্য সকল কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে।
  • লোনের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে এ সকল কাগজপত্র দাখিল হবে সবগুলোই সত্যায়িত হতে হবে।
  • ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তি যেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাচ্ছেন সেই ব্যাংকের আওতায় হিসাব অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
  • এনওসি, জমির দলিল, খতিয়ান নামধারী রশিদ দাখিল করতে হবে।
  • ক্ষেত্র বিশেষে লোনের জন্য আবেদন করতে হলে গ্রাহকের অবশ্যই বেতনভুক্ত কর্মচারী হতে হবে।
  • জামানত হিসেবে বন্ধক দিতে পারবে এরকম সম্পদ থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সর্বশেষ আপডেটেড ট্রেড লাইসেন্স এর মূল কপি শো করতে হবে এবং জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ফটোকপি দিতে হবে।
  • মাসিক আয়ের হিসাব জমা দিতে হবে।
  • দোকানে পজিশন প্রমাণ করার জন্য দোকানের ফ্রন্ট এর ছবির প্রয়োজন পড়বে।
  • সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নে যদি চাকুরীজীবী হয় সেক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হয়েছে সেখানকার মাসিক বেতনের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
  • কৃষি লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন ফুল টাইম কৃষক হতে হবে।
  • লোন এর আবেদন করার জন্য অবশ্যই জমির দলিল প্রয়োজন পড়বে।
  • লোন গ্রহণের পর কি ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে অর্থাৎ প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে কিভাবে কৃষিকাজকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত করা যায় সেই বিষয়ের পরিকল্পনা দাখিল করতে হবে।
  • লোন গ্রহীতার বর্তমানে আয়ের উৎস কি এবং কি পরিমান মাসিক আয় হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব

আমরা এই পর্যন্ত ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে সে সম্পর্কে মোটামুটি অবগত হতে পারলাম। ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এ বিষয়টি যেমন জানা জরুরি ঠিক তেমনি ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব বিষয়টিও গুরুত্ব আকারে জানা উচিত। এর কারণ হলো কেউ যদি ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করে, তারপরে যে বিষয়টি তার সামনে আসে সেটি হল প্রতিনিয়ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা। আর এজন্য ঋণ গ্রহিতাকে অবশ্যই সঠিকভাবে লোনের ভিত্তি অনুযায়ী কি পরিমান মাসিক অথবা সাপ্তাহিক কিস্তির পরিমাণ আসে সেটা কর্মচারীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া উচিত। 

বলাবাহুল্য যে প্রত্যেকটি ব্যাংক তাদের সুদের পরিবর্তন করার অধিকার রাখে। আবার বাজেট অনুযায়ী যদি বাংলাদেশ সরকার কোন সময় সুদের হারের পরিবর্তন আনে সে ক্ষেত্রেও মাসিক কিস্তির পরিমাণ কম বেশি হবে। বাজেট অনুযায়ী যদি সুদের পরিবর্তন ঘটে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক একটি নির্দেশনা জারি করা হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের সুদের পরিমাণ বাজেট অনুযায়ী নির্ধারণ করবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গুলো মাসিক কিস্তির পরিমাণ সাধারণত কতদিন ঋণের মেয়াদ রয়েছে এবং সুদের পরিমাণ কত আছে সে অনুযায়ী হিসেব করে মাসিক কিস্তির 
পরিমাণ দিয়ে থাকে। আসুন পুরো বিষয়টিকে অর্থাৎ ব্যাংকের লোনের ভিত্তি অনুযায়ী মাসিক কিস্তির হিসাব কেমন হতে পারে সে বিষয়টি ছকের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক। আমরা এখানে উপরে উল্লেখিত ৩ টি ব্যাংকের সুদের হারের উপর নির্ভর করে, লোনের পরিমাণ এবং লোনের মেয়াদ একই রেখে মাসিক কিস্তির পরিমাণ হিসাব করব।

ব্যাংকের নাম

সুদের হার

লোনের পরিমাণ       

লোনের মেয়াদ

মাসিক কিস্তির পরিমাণ

এবি ব্যাংক

    ৭.৪৩%

    ১০০০০০

      ১ বছর

            ৮৬০২

ব্র্যাক ব্যাংক

    ৮%

    ১০০০০০

      ১ বছর

            ৮৬৪১

বেসিক ব্যাংক

    ৯%

    ১০০০০০

      ১ বছর

            ৮৬৮০

আমরা ইতিমধ্যে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই বিষয়টির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ব্যাংকের কার্যক্রম, সুদের হার এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে সম্পর্কিত সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারলাম। এ সকল লোনের বাহিরে আরও একটি লোন চলমান রয়েছে সেটি হলো প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ। এলনটির মাধ্যমেও অনেকে অনেক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে গড়ে উঠেছেন। মূলত বাংলাদেশ সরকার বেকার জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানোর খাতিরে এ ধরনের জামানতবিহীন সহজ শর্তের লোনগুলো বাস্তবায়িত করে থাকে। চলুন তাহলে এবার প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নেওয়া যাক।

প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ

“প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ” হলো মূলত ছোট পরিসরের ব্যবসা এবং নিয়োজিত ঋণ প্রদানের একটি প্রকল্প। এই ঋনের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের বেকার যুব সমাজকে উৎপাদনমুখী এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত করা। অনেক বেকার যুবক আছেন যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ঋণের খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাদের কথা মাথায় রেখে আমাদের সরকার “প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ” এর আওতায় অনেক ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পটি হল “প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ”। “প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ” 

প্রধানমন্ত্রীর লোন প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উক্ত ঋণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রহণ করা যায়। প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ একটি প্রাসঙ্গিক ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয় যা পরবর্তীতে উৎপাদন মুখী নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ এর আওতায় উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় প্রশ্নে অবশ্যই কিছু শর্ত এবং যোগ্যতার কথা উঠে আসে। নিচে সেই সকল যোগ্যতা গুলো তুলে ধরা হলো।
ঋণগ্রহীতাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • যে কাজের জন্য লোন গ্রহণ করা হচ্ছে সেই কাজে যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হয় সে ক্ষেত্রে লোন প্রদান করা হবে না।
  • প্রার্থীকে অবশ্যই বেকার হতে হবে। কোন কর্মে নিয়োজিত থাকলে ঋণ গ্রহণযোগ্য হবে না।
  • আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে হতে হবে।
  • যে প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে যাচ্ছেন সেটি পরিচালনা করার মত যোগ্যতা থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী যদি অন্য কোথাও থেকে লোন গ্রহণ করে থাকে এবং সেটি যদি ঠিকমতো পরিশোধ না করে। তাহলে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন গ্রান্টেড বলে গণ্য হবে না।
  • অবশ্যই একজন জামানতদার যার জমি জমা রয়েছে এরকম ব্যক্তি প্রয়োজন পড়বে। পাশাপাশি জামানতদারের অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করার মতো ক্ষমতা থাকতে হবে।

লেখকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আপনারা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে ধারণা পেয়েছেন। আমরা এটাও আশা ব্যক্ত করছি যে ভবিষ্যতে যদি কেউ বিভিন্ন ঋণ সম্পর্কিত তথ্য হালনাগাদ, এমনকি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে চাইলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু অনেকটাই কাজে আসবে। এরপরেও যদি ঋণ সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন আপনার মনে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। 

আমরা সবসময়ই আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্য সংবলিত আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। পাশাপাশি আপনার বন্ধু অথবা আত্মীয়দের উপকারের লক্ষ্যে আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url