প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় বিষয়টি সম্পর্কে যদি বিদেশ গমন ইচ্ছুক ভাইয়েরা সঠিক ধারণা পেয়ে থাকেন তাহলে বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে অনেকটাই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যায়। কারণ বাংলাদেশে বেকার যুবক থাকার পাশাপাশি আর্থিকভাবে অসচ্ছল জনগোষ্ঠীর সংখ্যায় বেশি। এক্ষেত্রে যদি কেউ বিদেশে গিয়ে চাকরি করতে চায় সেক্ষেত্রে ভিসা প্রসেসিং থেকে অন্যান্য খরচ বাবদ অনেক অর্থের প্রয়োজন পড়ে। 
প্রবাসী-কল্যাণ-ব্যাংক-সর্বোচ্চ-কত-টাকা-লোন-দেয়
তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় বিষয়বস্তু ভালোভাবে পর্যালোচনা করা হবে। উক্ত বিষয়ে বাদে আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হল প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন এবং অন্যান্য লোন সম্পর্কে। পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুদের হার, লোন পরিশোধের নিয়ম এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র

ভূমিকা

বিদেশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ঠিক তেমনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক এবং প্রবাসে অলরেডি বসবাস করছেন তাদের কল্যাণের ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের আর্থিক সেবা প্রধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে উক্ত ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রথম অবস্থায় এক বিলিয়ন টাকা মূলধন হিসেবে নিয়ে ব্যাংকটি তাদের যাত্রা শুরু করে। মূলধনের ৯৫ ভাগ এসেছে প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ স্থান থেকে এবং বাকি ৫ ভাগ এসেছে বাংলাদেশ সরকারের থেকে। 

অভিবাসীদের সার্বি কল্যাণের লক্ষ্যে সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আইন ২০১০ অনুযায়ী প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিল। তৎকালীন সরকার ঢাকায় কলম্ব প্রসেস এর চতুর্থ সম্মেলন চলার সময় ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শুভ উদ্বোধন করেন। বিবিএস এর হিসাব অনুযায়ী প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখের বেশি বিদেশগামী কর্মীকে অভিবাসী ঋণ প্রদান করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো অনেকেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত নয়। 

অনেকে জানে না প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম সম্পর্কে। তাই সরকারের উচিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সম্পর্কে সকলকে সঠিকভাবে অবগত করা।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় লোন প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অন্যতম পজিশনে রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর মানুষ জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানোর কথা চিন্তা করে। কিন্তু অর্থের হবে অনেকের বিদেশ যাত্রা সফল হয় না। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার দেনা করে বিদেশে গিয়ে কাজ করা শুরু করে। এ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রবাস গমন ইচ্ছুকদের ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিদেশে যাত্রা করার ব্যক্তিদেরকে খুবই সহজ শর্তে 
লোন প্রদান করা যেন তারা বিদেশে গিয়ে স্বাচ্ছন্দে কাজকর্ম করে দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারে। আবার বিভিন্ন দেশে যে সকল প্রবাসী ভাই এবং বোনেরা রয়েছে তাদের কল্যাণের বা সহযোগিতার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ব্যাংক সবসময় পাশে রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য সহজ কিছু শর্ত এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর সাথে আবেদনপত্র জমা দিতে হয়। কেউ যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। তাহলে সে তার নিকটস্থ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখায় গিয়ে উপস্থিত হলে কর্মকর্তা তাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোর বিষয়ে জানাবেন। 

বর্তমান যুগ যেহেতু ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করেছে। তাই শরীরে ব্যাংকে উপস্থিত না হয়েও বর্তমান সময়ে অনলাইনে আবেদন করা সম্ভব। অনলাইনেআবেদন করার ক্ষেত্রেও অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে। আমরা প্রথমে ম্যানুয়ালি কিভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় সেটা জানব। ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হওয়ার পর কোন ব্যক্তি যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় সে সম্পর্কে জানতে চায়, 

তাহলে হেল্প ডেস্ক অথবা সরাসরি ম্যানেজারের সাথে কথা বলা যেতে পারে। আসুন তাহলে এবার কোন কোন ডকুমেন্ট প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে অবশ্যই কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে। কাগজপত্রগুলো সঠিক এবং সত্য হতে হবে যাচাই-বাছাইয়ের পর যদি কাগজপত্রে কোন ভুলভ্রান্তি থাকে তাহলে লোন বাতিল বলে গণ্য হবে। আবার আবেদন পত্রের সঙ্গে যদি কোন কাগজপত্র ছাড়া পড়ে সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আর লোন প্রদান করবে না। তাই প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট স রেডি করে রাখা এবং সঠিকভাবে জমা দেয় বুদ্ধিমানের কাজ। লোন কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
  • ঋণগ্রহীতার ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সহ পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
  • লোন প্রার্থীর পাসপোর্ট, ম্যানপাওয়ার স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি, ভিসার কপি, লেবার কন্টাক পেপার সহ সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
  • জামানতদারের এক কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা সহ ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের কপি লাগবে।
  • জামিনদারের স্বাক্ষরিত ব্যাংকের তিনটি চেকের পাতা দাখিল করতে হবে।
  • ঋণ নেওয়ার পূর্বে যে ব্যাংকে এপ্লাই করা হয়েছে সেই ব্যাংকের শাখায় সঞ্চয় একাউন্ট খুলতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম অনুযায়ী উপরে বর্ণিত কাগজপত্র এর সাথে আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করে ব্যাংকে কর্মরত ব্যক্তির কাছে জমা দিতে হবে। তবে অবশ্যই আমাদের একটি বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে সেটি হল ঋণের মেয়াদ কতদিন থাকে। কেননা এটি প্রবাসীদের পাসপোর্ট এবং ভিসার উপর ভিত্তি করে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। তাই এ বিষয়টি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছরের মেয়াদ দেওয়া থাকে। আর রি এন্ট্রি ভিসা হলে দুই বছর মেয়াদ দেওয়া হয়। 

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে তাদেরকে বিদেশ যাওয়ার পূর্বে কিছু ট্রেনিং পর্যন্ত প্রদান করেন। আপনাদেরকে অবশ্যই দালালের প্রকোপ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বর্তমানে বিভিন্ন প্রতারক চক্র বিদেশ গমন ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য ম্যানুয়ালি ব্যাংক শাখায় গিয়ে যেমন আবেদন করা যায়। ঠিক তেমনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে লোনের জন্য অনলাইন আবেদন করা সম্ভব। যেহেতু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ অনেকটাই ডিজিটাল যুগের দিকে পদার্পণ করেছে। তাই নিজে উপস্থিত না হয়েও অনেক কাজই আমরা এখন ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে করতে পারি। আরেকটি বিষয় হল ব্যাংকের অনলাইন পোর্টালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় এ বিষয়টি 

উল্লেখ করা থাকে। তাহলে আপনারা সেখান থেকে এই তথ্যটিও পেয়ে যাচ্ছেন। নিচে আবেদন করার জন্য কোন কোন পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে সেগুলো দেওয়া হলো।
  • প্রথমে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন করার জন্য, http://www.pkb.gov.bd এই লিংকে প্রবেশ করতে হবে।
  • লিংকে প্রবেশ করার পর একটি আবেদন ফরম সামনে চলে আসবে। আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  • আগেই সংগ্রহে রাখা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলোর স্ক্যানিং কপি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের পোর্টালে আপলোড করতে হবে।
  • সবকিছু কমপ্লিট হওয়ার পর আবার একবার যাচাই-বাছাই করে অর্থাৎ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করতে হবে।
  • সবকিছু সঠিক হলে কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করে আপনাকে ঋণ দেওয়া হবে কিনা সেটি অতি শীঘ্রই জানাবে।
তবে আমাদের পরামর্শ হবে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি শাখায় উপস্থিত হয়ে কর্মচারীর সাথে কথা বলে সকল ডকুমেন্টস সাবমিট করাই ভালো।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু ছিল প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা লোন পাওয়া যায়। বিদেশ যেতে ইচ্ছুক প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিভিন্ন ভিত্তিতে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করছে। আবার যারা প্রবাসে অবস্থান করছেন এমনকি প্রবাস জীবন শেষ করে দেশে ফিরে এসেছেন তাদেরকেও ঋনের আওতায় নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রবাসীদের কয়েকটি প্রকারভেদ এর উপর ভিত্তি করে ঋণের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন রয়েছে। মূলত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ৩ ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। ঋণ অনুযায়ী ঋণের সর্বোচ্চ টাকার পরিমান কত হবে সেটাও নির্ধারণ করা হয়েছে। 
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আওতায় তিন ধরনের ঋণ হলো অভিবাসন ঋণ, পুনর্বাসন ঋণ এবং অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটি ঋণের ক্ষেত্রে ভালো একটি অ্যামাউন্ট প্রদান করা হয় যার মাধ্যমে ব্যক্তিগণ বিদেশে পাড়ি জমাতে পারে। নিচে পর্যায়ক্রমে ঋণ ভিত্তিক সর্বোচ্চ কত টাকা প্রদান করা হয় সেগুলো দেওয়া হলো।

অভিবাসন ঋণ

প্রবাসীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসন ঋণের ব্যবস্থা করেছে। বিদেশ যাওয়ার জন্য কাগজপত্র নিয়ে ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে আবেদনপত্র দাখিলের মাধ্যমে অভিবাসন ঋণ প্রাপ্তি লাভ সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কাগজপত্র গুলো সঠিক হতে হবে। প্রবাসীরা অভিবাসন দিনের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

পুনর্বাসন ঋণ

যদি কেউ একজন বৈধ বিদেশ প্রবাসী হয়ে থাকে এবং বিদেশ থেকে চলে আসে সে ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করে। তবে অবশ্যই ব্যক্তিকে বিদেশে বৈধভাবে অবস্থান করতে হবে। অনেকে যদি রাজনৈতিক কারণবশত অথবা সামাজিক যে কোনো কারণে হয়রানির শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন তাহলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তাদেরকে উত্তর ঋণের আওতায় ঋণ প্রদান করে থাকে। পরবর্তীতে যেন ঋণের টাকা দিয়ে ব্যক্তিটি স্বাবলম্বী হতে পারে এটাই কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য। 

সাধারণত এ দিনের মেয়াদ থাকে ১০ বছর। ঋণগ্রহীতা পুনর্বাসন ঋণের আওতায় ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। তবে জামানতবিহীন ভাবে আবেদনকারী ৩ লক্ষ টাকা ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকে।

অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় এই প্রশ্নে সবার শেষে অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের কথা চলে আসে। বিদেশে বৈধভাবে চাকরি করার জন্য ভ্রমণ করার পরে পরিবারের যে কোন সদস্য যেমন মা-বাবা ভাই-বোন দাদা-দাদী অথবা নিকট আত্মীয় কেউ অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এই লোনের ক্ষেত্রেও মেয়াদ থাকবে ১০ বছর। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের আওতায় জামানত বিহীনভাবে ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিদেরকে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করে থাকে। ৫ লক্ষ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ করতে হলে ঋণগ্রহী তার স্থাবর সম্পত্তির রেজিস্ট্রি ডকুমেন্ট ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক উপরে বর্ণিত তিন ধরনের লোন প্রদান করলেও আরো একটি লোন প্রবাসীদেরকে দিয়ে থাকে সেটি হল প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হাউজ লোন। কোন বাংলাদেশী প্রবাসী যদি বাড়ি করার ইচ্ছা পোষণ করে। সেক্ষেত্রে অর্থের সংকলন না হয়। সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদেরকে হাউজ লোন প্রদান করছে। কোন প্রবাসী বাংলাদেশী যদি ফ্ল্যাট কিনতে চায় সেক্ষেত্রেও সরকার হাউজ লোনের আওতায় ৫০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করছে। 
প্রবাসী-কল্যাণ-ব্যাংক-সর্বোচ্চ-কত-টাকা-লোন-দেয়
আপনাদের জ্ঞাতার্থে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করছে যে হাউজ লোনের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে না। এ বিষয়টি সাধারণত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন এর কর্তৃক নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই কোন প্রবাসী ব্যক্তি যদি হাউজ লোন নিতে চায় তাহলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের শাখায় গিয়েও কথা বলতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুদের হার

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম জানার পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুদের হার সম্পর্কেও অবগত থাকা প্রয়োজন। যদিও সুদের হার বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কেউ যদি লোন গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে কত শতাংশ সুদ দিতে হবে সে বিষয়টি এখন জানানো হবে। আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ৩ ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। তবে তিন ধরনের দিনের ক্ষেত্রেই সুদের হার একই থাকবে তবে ঋণের মেয়াদ অর্থাৎ সময়সীমা পরিবর্তন হবে। 

আসুন বিষয়টিকে ছক আকারে বোঝার চেষ্টা করা যাক। আশা করি আপনারা এই ছক থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় বিষয়টি সম্পর্কে আরো স্পষ্ট ধারণা পাবেন।

লোনের প্রকার

সুদের হার

    লোনের মেয়াদ       

        লোনের পরিমাণ      

অভিবাসন লোন

    ৯%

          ২ বছর

            ১-৩ লক্ষ টাকা

পুনর্বাসন লোন

    ৯%

          ১০ বছর 

      সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা

অভিবাসী বৃহৎ পরিবার লোন

    ৯%

          ১০ বছর

      সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা

হাউজ লোন

    ৯%

          ১০ বছর

৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম অনুযায়ী লোন গ্রহণের পরে অবশ্যই সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যাহত হলে সেক্ষেত্রে জরিমানা বা বিলম্ব ফি গুনতে হবে। এজন্য লোন গ্রহণের পরদিন থেকে সাপ্তাহিক বা মাসিক চুক্তিতে সময়মতো লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোন পরিশোধ ক্ষেত্রে দুইভাবে পরিশোধ করা সম্ভব। প্রথমত ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে আপনার হিসাব নম্বর অনুযায়ী লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনেও কিস্তি পরিষদের সুবিধা করা হয়েছে। 
এক্ষেত্রে বিকাশ, নগদ অথবা রকেটের মাধ্যমে কিস্তি পরিশোধ করা যাবে। যারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন তারা সরাসরি ব্যাংকের পোর্টালে ঢুকে সেখানেও পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। তবে সকলের কিস্তির ডেট এবং কত দিন মেয়াদী কিস্তি গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোথায় আছে

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি অবশ্যই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোথায় কোথায় রয়েছে অর্থাৎ এর শাখা গুলোর অবস্থান জানাটাও জরুরী। কেননা যে কোন প্রয়োজনে অথবা তথ্য সংগ্রহের খাতিরে সে সকল ব্যাংকের ঠিকানায় যোগাযোগ করা যেতে পারে। তাহলে চলুন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোথায় কোথায় অবস্থিত সে বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। মূলত বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আমরা এখানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রধান শাখা এবং ঢাকার আরেকটি শাখা সম্পর্কে জানব।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রধান শাখা

  • ৭১-৭২, ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ঢাকা-১০০০
  • মোবাইল- ০১৭০০৭০২৭০০
  • টেলিফোন- ০২৮৩২১৭৮৭
  • ঢাকার কাকরাইল শাখা
  • ৮৯/২, বি এমআইটি ভবন, কাকরাইল, ঢাকা।
  • মোবাইল- ০১৭০০-৭০২৭০১
  • টেলিফোন- ০২৮৩০০৩১০

কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের লোন প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের আরো কিছু ব্যাংক রয়েছে যারা প্রবাসীদের বিভিন্নভাবে লোন প্রদান করে সাহায্য করে থাকে। এ সকল ব্যাংকে ম্যানুয়ালি শাখায় উপস্থিত হয়ে আবেদন করার পাশাপাশি অনলাইনেও আবেদন করার সুযোগ। প্রত্যেকটি ব্যাংকের পোর্টালে গিয়ে আবেদন করে লোনের সুবিধা ভোগ করা সম্ভব। এ ধরনের লোনের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনরকম জামানত বা সম্পদ বন্ধক রাখতে হয় না। বাংলাদেশের স্বনামধন্য ৭ টি ব্যাংকের কথা এখানে উল্লেখ করা হলো যারা প্রবাসীদেরকে লোন প্রদান করে থাকে। 

তবে একটা বিষয় খেয়াল করতে হবে সেটা হলো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় এটা তাদের ঋণের প্রকারভেদ এর উপর নির্ভর করে। ঠিক তেমনি প্রতিটি ব্যাংক তাদের ঋণের উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ কত টাকা প্রদান করবে সেটা নির্ধারণ করে থাকে। নিচে সেই উক্ত ৭ টি ব্যাংকের নাম দেওয়া হলো।
  • কর্মসংস্থান ব্যাংক
  • পূবালী ব্যাংক
  • অগ্রণী ব্যাংক
  • সোনালী ব্যাংক
  • এনআরবি ব্যাংক
  • এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
  • এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক

শেষকথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকের এই আর্টিকেলের শেষ পর্যায়ে এসে একটি বিষয় উপলব্ধি করতে পারলাম সেটি হল বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আপনি যদি বিদেশ যেতে ইচ্ছুক হন। তাহলে আমাদের আর্টিকেলের প্রত্যেকটি তথ্য আপনার কাজে আসবে। আমরা আশাবর্ত করছি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয় বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। এরপরেও এই বিষয়বস্তু সম্পর্কিত যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। 

আপনার কোন বন্ধু অথবা আত্মীয় যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণের আবেদন করতে চায়, সেক্ষেত্রে তার উপকারের লক্ষ্যে আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। আমরা সবসময় চেষ্টা করি আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্য সংবলিত আর্টিকেল পাবলিশ করার জন্য। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url