আউটসোর্সিং কি? আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি

আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি বা কিভাবে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম করা সম্ভব এ বিষয়গুলো সম্পর্কে অনেকে আমরা জানার চেষ্টা করে থাকি। বর্তমান যুগ যেমন ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করেছে ঠিক তেমনি চাকরির বিষয়গুলো ডিজিটাল হয়ে উঠেছে। আর সেই সূত্র ধরেই আউটসোর্সিং এর উৎপত্তি। আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে। 
আউটসোর্সিং-এর-কাজ-গুলো-কি-কি
উক্ত বিষয় ব্যতীত আরও যে বিষয়গুলো এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানা যাবে সেগুলো হলো আউটসোর্সিং কি এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা,আউটসোর্সিং শেখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পার্থক্য বিষয়টি আমরা আর্টিকেলের শেষে ছক আকারে উল্লেখ করে দেবো এবং আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

আউটসোর্সিং কি

আউটসোর্সিং মূলত একটি ব্যবসায়িক অনুশীলন পদ্ধতি যেখানে কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা কার্যক্রম বা প্রক্রিয়া চালানোর উদ্দেশ্যে বাহ্যিক সরবরাহকারীদের ব্যবহার করে থাকে, যারা অভ্যন্তরীণভাবে পরিচালিত হয়। সোজাভাবে বলতে গেলে আউটসোর্সিং বিষয়টি কোম্পানির অভ্যন্তরের কর্মচারীদের দ্বারা কাজকর্ম সম্পাদন না করে বাহির থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের হায়ার করে কাজ করার পদ্ধতিকেই আউটসোর্সিং বলা হয়। আউটসোর্সিং কি এ বিষয়টিকে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে তুলনা করা এবং ব্যবহার করার বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিংও মূলত কেউ যদি কোন কাজে দক্ষ হয় সে ক্ষেত্রে অন্য কোন কোম্পানির অধীনে পার্ট টাইম অথবা ফুল টাইম হিসেবে কাজ করতে পারে। আউটসোর্সিং বিষয়টিও ঠিক একই রকম হয়ে থাকে। অনেকে বলে থাকেন যে আমি আউটসোর্সিং করছি বা আউটসোর্সিং এর কাজ করছি আসলে বিষয়টি হলো যে। কাজ করছে সে আউটসোর্সিং করছে না যারা ওই ব্যক্তিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে তারাই আউটসোর্সিং করছে। বিষয়টি সহজ করে বললে এরকম হয় যেমন ব্যবসায়ীরা কোন কোম্পানি আউটসোর্সিং করে আর ফ্রিল্যান্সাররা সেই সার্ভিসগুলো প্রদান করে থাকে। 

যেগুলো ওই কোম্পানি আউটসোর্স করার চেষ্টা করছে। উদাহরণস্বরূপ একটি কোম্পানির নাম A, এখন এই কোম্পানি A এর জনশক্তির প্রয়োজন। কিন্তু সঠিক লোকের অভাবে ওই কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না, তখন সেই কোম্পানির ম্যানেজার একটি মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সার খুঁজতে থাকবে। এখানে মার্কেটপ্লেসকে আমরা B হিসেবে ধরবো, মার্কেটপ্লেস এ তারা একজন দক্ষ ব্যক্তিকে হায়ার করার চেষ্টা করবে আর সেই ব্যক্তিটি হবে ফ্রিল্যান্সার। আমরা ফ্রিল্যান্সারকে ধরছি C, তাহলে কোম্পানির ম্যানেজার A গেল B এর কাছে। 
তাহলে A কোম্পানিটি B এর মাধ্যমে C কে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সার কে আউটসোর্স করছে। আউটসোর্সিং এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক হওয়ার কারণে অনেকেই আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি বিষয়টি ভালোভাবে জেনে মাসিক চুক্তিতে অথবা অর্ডারের ভিত্তিতে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে।

আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি

বর্তমান সময়ে অনেকেই চাকরির পিছনে না ছুটে আউটসোর্সিং এর কাজগুলোর দিকে মনোনিবেশ করছে। আর এর মূল কারণ হলো আউটসোর্সিং এর কাজগুলো স্বাধীনভাবে ঘরে বসেও করা যায়। আজ সেটিকে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে তবে। ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং বিষয়টি এক হলেও কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা প্রকাশ পায়। আমরা ইতিমধ্যে একটি বিষয় অবলোকন করতে পেরেছি যে আউটসোর্সিং কাজটি মূলত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব কর্মচারী দিয়ে না করিয়ে বাহির থেকে কর্মচারী নিয়োগ করে কাজগুলো সম্পন্ন করে। 

তাহলে কেউ যদি আউটসোর্সিং করে ইনকাম করতে চায় সেক্ষেত্রে কাজ শেখার প্রথমে জানতে হবে আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি বা কোন ধরনের কাজ আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস কর্পোরেশন ( International Business Machines Corporation) এর মতে, আউটসোর্সিং এর ধারণাটা শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালে, পরবর্তীতে পুরো ৯০ এর দশক জুড়ে এই পদ্ধতিটি ব্যবহৃত হতে থাকে। কোন কাজগুলো আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করা যায় সে বিষয়টি নিয়েও ব্যাপকভাবে গবেষণা চালানো হয়েছিল। 

আর বর্তমান সময়ে আউটসোর্সিং অনেক বেশি প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটা বিজনেস স্ট্রাটেজিতে পরিণত হয়েছে। চলুন তাহলে এবার আউটসোর্সিং কি বিষয়টি জানার পাশাপাশি আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি বিষয় নিয়ে করা সম্ভব সেটা জেনে নেওয়া যাক।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডিজাইনিং
  • ওয়েবসাইট মেইন্টেনেন্স
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • রিমোট জব সেলস এন্ড মার্কেটিং
  • কাস্টমার সার্ভিস
  • কপিরাইট ওয়ার্ক
  • এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস
  • ভিডিও এডিটিং
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • অ্যানিমেশন ডিজাইনার
  • ডাটা এন্ট্রি
  • লিড জেনারেশন
  • এসইও এক্সপার্ট
উপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি বিষয়ও যদি কেউ নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, তাহলে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মার্কেটপ্লেস থেকে প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা সম্ভব। তবে বিষয়গুলো সম্পর্কে বেসিক ধারণা না থাকলে কখনোই মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা ইনকাম করা যাবে না। অবশ্যই অ্যাডভান্স লেভেলে বিষয়বস্তু শেখার পাশাপাশি বায়ার থেকে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের অর্ডার নিয়ে আসতে হবে।

আউটসোর্সিং শেখার উপায়

আমরা ইতিমধ্যে আউটসোর্সিং কি এবং আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি হয়ে থাকে সে বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারলাম। তাহলে আউটসোর্সিং শেখার বিষয়টি অনেকটাই ফ্রিল্যান্সিং শেখার সাথে গুরুত্ব বহন করে। ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি বা ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা সম্ভব জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন। মূলত আউটসোর্সিং বিষয়টাই ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। পাশাপাশি আমরা উপরে যে সকল কাজের কথা উল্লেখ করেছি সকল বিষয়েই ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিষয়বস্তু। তাহলে একটি বিষয় পরিষ্কার হলো যে কেউ যদি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে সকল কাজে দক্ষ হয়, তাহলে সে একজন কোম্পানির আওতায় আউটসোর্সার হিসেবে কাজ করতে পারবে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং যেটাই বলা হোক না কেন উপরে উল্লেখিত যে কাজের কথা বলা হলো সেগুলো আসলে কিভাবে শেখা যায়। যদিও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলো একটু জটিল হয়ে থাকে, তবে কেউ যদি সঠিক পরিশ্রমের মাধ্যমে অধ্যাবসায় করে তাহলে কোন কিছুই আর কঠিন হয় না। কেউ যদি মনে করে সে নিজেকে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বা আউটসোর্সার হিসেবে গড়ে তুলবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই কমপক্ষে ৬ মাস থেকে ১ বছর হাতে সময় নিয়ে মাঠে নামতে হবে। আউটসোর্সিং করার ক্ষেত্রে যে কোন একটি বিষয় নিয়ে শেখা উচিত। 
এখন আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসে যে উক্ত বিষয়গুলো শেখার জন্য আমরা কোথায় যাব। আমরা এখানে দুই ভাবে শেখার কথা বলব, প্রথম যে বিষয়টি হলো বেসিক ধারণা নেওয়ার জন্য প্রথমে ইউটিউবে ঘাটাঘাটি করা দরকার। যে বিষয় নিয়ে শেখার আগ্রহ সেই বিষয় নিয়ে যদি youtube এ সার্চ করা হয় তাহলে প্রচুর পরিমাণে টিউটোরিয়াল বা অনলাইন ক্লাসের ভিডিও চলে আসে। সেই ভিডিওগুলো দেখার মাধ্যমে অনেকটাই বেসিক ধারণা পাওয়া সম্ভব। তবে বলে রাখা ভালো ইউটিউব দেখে সেভাবে কোন কাজের অভিজ্ঞতা বা বায়ার থেকে অর্ডার নেওয়ার মত যোগ্যতা তৈরি হবে না। 

সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি ভালো আইটি সেন্টার দেখে নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কোর্স করা উচিত। বর্তমানে বাংলাদেশে আইটি সেন্টারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাই বুঝে শুনে ভালো একটি আইটি সেন্টার যেখানে ট্রেনাররা ভালো মানের সার্ভিস প্রদান করে থাকে, সেখানে যেই মেন্টর রয়েছেন তারা যদি অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন এবং পূর্বের রেকর্ড অনুযায়ী তাদের সফলতার বিষয় উল্লেখ রয়েছে শুধুমাত্র সেই সকল আইটি সেন্টারেই গিয়ে আউটসোর্সিং বা ফ্রীল্যান্সিং বিষয়ের উপরে কোর্স করা প্রয়োজন।

আউটসোর্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা

বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ যেমন আউটসোর্সিং কি এবং আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি হয়ে থাকে সে বিষয়ে বেকার জনগোষ্ঠীকে জানানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে, হতে পারে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অথবা যে কোন উপায়ে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিকে সকলের কাছে প্রচার করার চেষ্টা করে থাকে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশও পূর্বে থেকে বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং সেক্টরে দারুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার বিভিন্ন সময় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং টিটিসি এর মাধ্যমে শিক্ষিত যুবকদের ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করার চেষ্টা করেছে। 

এমনও অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেখানে ফ্রিতে বিভিন্ন মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীদের আউটসোর্সিং করার জন্য ট্রেনিং করানো হয়েছে। তবে বর্তমানে ফ্রিতে সরকারিভাবে কোন রকম কোর্স আর করানো হচ্ছে না। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে কেউ যদি এরকম বিজ্ঞাপন দেখে তাহলে বুঝতে হবে সেগুলো কোন আইটি ফার্ম থেকে বা আইটি সেন্টার থেকে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইটি সেন্টারগুলো এরকম বিজ্ঞাপন দেখিয়ে সেখানে স্টুডেন্ট ভর্তি করায় কিন্তু পরবর্তীতে মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা ইনকাম করানোর ক্ষেত্রে যে ট্রেনিং গুলো প্রয়োজন সেটা আর দিতে পারেনা। 

তাই এ বিষয়ে সকলের সচেতন থাকা জরুরী। প্রত্যেকটি বিষয়েরই সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে আসুন তাহলে এবার আউটসোর্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সুবিধা

  • একজন ফ্রিল্যান্সার যাকে অন্য একটি কোম্পানি আউটসোর্স করছে, তার আওতায় কাজ করার পাশাপাশি সব সময় সে অন্য আরেকটি কোম্পানিতে কাজ করার চেষ্টা করে থাকে। এভাবে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাজগুলো বারে বারে করার প্রেক্ষিতে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
  • যে সকল কোম্পানি তার নিজস্ব কর্মচারীর ব্যতীত বাহিরের ফ্রিল্যান্সার বা আউটসোর্সার দিয়ে নিজেদের কাজগুলো করিয়ে নেয়, সেক্ষেত্রে তাদের ব্যয় কমে যায়। নির্ধারিত জনবল যে পরিমাণ টাকা নিয়ে থাকে তার অর্ধেক টাকা দিয়েই ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে সে কাজগুলো করে দেয়।
  • একজন আউটসোর্সার যখন মার্কেটপ্লেস থেকে কাজের অর্ডার নেয় ঠিক তখন থেকেই একটি সময় নির্ধারণ করা থাকে যা ওই সময়ের মধ্যেই কাজ কমপ্লিট করে জমা দিতে হয়। আর এর ফলে কাজ অতি দ্রুত শেষ হয় এবং কোম্পানি লাভবান হয়।
  • ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং যেটাই বলা হোক না কেন এই সেক্টরে সেরকম বিরতির কোন সুযোগ থাকে না। যেহেতু ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসেই সবসময়ই এ সকল কাজ করে থাকে, তাই নির্দিষ্ট দিবস হিসেবে কোন বিরতি থাকে না। যার ফলে ফ্রিল্যান্সার বা আউটসোর্সার রা ভালো টাকা ইনকাম করতে পারছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো কোনরকম লোকসান না করে প্রফিট গুনে নিতে পারছে।

অসুবিধা

  • অসুবিধার কথা বলতে গেলে প্রথমে আসে কোম্পানিগুলো যেহেতু বাহিরের লোক দিয়ে তাদের কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে কোম্পানির গোপনীয় বিষয় ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বা যেকোনো তথ্য অন্য আরেকটি কোম্পানি যারা কিনা প্রতিযোগিতায় রয়েছে তারা জেনে যেতে পারে।
  • অনেক সময় মার্কেটপ্লেসে কোম্পানির কর্মকর্তারা ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে, কিন্তু অদক্ষ ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেই কাজটি ভালোমতো করতে না পারলে কোম্পানির লোকসান হয়ে থাকে।
  • আবার অনেক সময় ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন সমস্যা জনিত কারণে সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ জমা দিতে পারে না, এর ফলে ফ্রিল্যান্সারদের মার্কেটপ্লেসের আইডি বা প্রোফাইল এর রেটিং কমে যায়। এতে করে পরবর্তীতে ওই সকল ফ্রিল্যান্সারদের আইডিতে বড় ধরনের কাজ বা অর্ডার আসার সুযোগ কমে যায়। পাশাপাশি কোম্পানিরাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ বুঝে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের লোকসান বা ঘাটতি হওয়ার সুযোগ থাকে। 
উপরে উল্লেখিত সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো পর্যালোচনা করলে একটি বিষয় সামনে আসে সেটি হল যদিও আউটসোর্সিং এ অসুবিধা রয়েছে, কিন্তু সেখানে সুবিধার পরিমাণটাই বেশি। এখানে একজন ফ্রিল্যান্সার যেমন উপকৃত হচ্ছে ঠিক তেমনি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা অর্জনে সফলতা লাভ করছে। তবে যারা আউটসোর্সিং করছে অর্থাৎ কোম্পানি এবং যারা আউটসোর্সার হিসেবে কাজ করছে উভয়েরই সতর্ক থাকতে হবে। তাহলে অসুবিধা গুলো আর পরিলক্ষিত হবে না।

আউটসোর্সিং এর জনপ্রিয় সাইট কোনটি

আমরা আউটসোর্সিং কি এবং আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি জানার পাশাপাশি আউটসোর্সিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে খুব ভালো একটি ধারণা পেয়েছি। আর্টিকেলের একটি অংশে আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে একজন আউটসোর্সার কোন একটি কাজের বিষয়ে যদি দক্ষ হয়, তাহলে মার্কেটপ্লেস থেকে কাজের অর্ডার গ্রহণের মাধ্যমে ডলার ইনকাম করতে পারবে। তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে মার্কেটপ্লেস কোনগুলো হয়ে থাকে। সুতরাং আউটসোর্সিং বিষয়ে এবং কিভাবে শিখতে হয় সেটা জানার পাশাপাশি কোথায় গেলে কাজ পাওয়া যায় সে বিষয়েও জেনে রাখতে হবে। 
আউটসোর্সিং এর জনপ্রিয় সাইট বলতে সর্বপ্রথমে ফাইবারের নাম চলে আসবে। তবে বর্তমানে ফাইবার বাদেও আরো অনেক সাইট রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে কাজ করে ডলার ইনকাম করা সম্ভব। নিচে আউটসোর্সিং এর জনপ্রিয় সাইট কোনগুলো সেটা দেওয়া হলো।
  • ফাইভার (Fiverr.Com)
  • আপওয়ার্ক (Upwork.Com)
  • ফ্রিল্যান্সার ডটকম (Freelancer.Com)
  • গুরু (Guru.Com)
  • টপটল (Toptal.Com)
  • কেওয়ার্ক (Kwork.com)

আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পার্থক্য

আর্টিকেলের মাঝামাঝিতে আমরা আরো একটি বিষয়ে সম্পর্কে স্পষ্ট হতে পেরেছি যে ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং বিষয়টি একই রকমের হয়ে থাকলেও সেখানে কিছু পরিমাণ অমিল রয়েছে। যদিও আউটসোর্সিং থেকেই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টির উৎপত্তি হয়েছে। সর্বপ্রথমে কিভাবে কাজগুলো করানো যায় অর্থাৎ কোম্পানির মালিকপক্ষ তাদের বিজনেস স্ট্রাটেজি অনুযায়ী আউটসোর্সিং করলে কিভাবে কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি পাবে সেই বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন শিল্পপতিরা গবেষণা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে কোম্পানি যদি আউটসোর্সিং করে সে ক্ষেত্রে যে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে সেটি হবে আউটসোর্সার বা ফ্রিল্যান্সার। 

আউটসোর্সিং এর কাজগুলো কি কি বিষয়টি যেমন জানা জরুরি ঠিক তেমনি আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং এর মাঝখানে কি অমিল বা পার্থক্য রয়েছে সেগুলো জানা প্রয়োজন। চলুন তাহলে এবার আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি হতে পারে সেটা ছকের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক।

                          আউটসোর্সিং

                      ফ্রিল্যান্সিং 

আউটসোর্সিং বিষয়টি হল Out বা বাহিরের (Source) উৎস থেকে কাজ করিয়ে আনা। 

ফ্রিল্যান্সিং হল Free বা মুক্তভাবে  নিজে কাজ করার বিষয়টিকে বোঝানো হচ্ছে। 

আউটসোর্সিং প্রধানত কোম্পানিগুলো কোনরকম চাকরি না দিয়েই একটি চুক্তির  ভিত্তিতে ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে কাজ করিয়ে নেই। 

ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোম্পানির কাছ থেকে কাজ নিয়ে স্বাধীনভাবে করে সেটা জমা দেয়। 

আউটসোর্সিং বা কোম্পানিগুলো ফ্রিল্যান্সারদের থেকে কাজ করিয়ে একটি পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে থাকে। 

ফ্রিল্যান্সাররা কোম্পানির কাজগুলো নেওয়ার পর সেটি জমা দিয়ে সেই টাকা উক্ত পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে গ্রহণ করে। 

আউটসোর্স করার জন্য কোম্পানিগুলো প্রয়োজনীয় লোকবল মার্কেটপ্লেস বা মার্কেটপ্লেস এর বাইরে থেকে চুক্তি বা ভাড়া করে থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ফ্রিল্যান্সাররা চুক্তির ভিত্তিতে কোম্পানির আন্ডারে স্বাধীনভাবে কাজ করে। 

আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি এই বিষয়টি কোম্পানিদের খুব একটা না জানলেও চলে। শুধুমাত্র তার কোম্পানির জন্য যে সার্ভিস দরকার সেটা জানলেই হয়। 


আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি এ বিষয়টি ফ্রিল্যান্সারদের অবশ্যই ভালোভাবে জানতে হয় এবং সে অনুযায়ী নিজের স্কিল তৈরি করতে হয়। 


উপসংহার

আজকের এই আর্টিকেল থেকে একটি বিষয় সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হলো যে আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পার্থক্য যেটুকু রয়েছে সেগুলো শুধুমাত্র কাজের ভিত্তিতে অবলোকন করা যায়। অপরপক্ষে একজন ফ্রিল্যান্সার একটি কোম্পানির মাধ্যমে আউটসোর্স করছে সেটিও ভালো হবে পরিষ্কার হওয়া গেল। সুতরাং কেউ যদি নিজেকে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সেক্ষেত্রেও আউটসোর্সিং এর কাজগুলো কি কি এবং আউটসোর্সিং কি সবগুলো বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানা উচিত। আজকের এই আর্টিকেল পড়ার পরে যদি কারো আউটসোর্সিং বিষয়ে আরও জানার থাকে, 

তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য বা ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পাশাপাশি আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তুটি আপনার বন্ধু-বান্ধবকে জানানোর উদ্দেশ্যে একটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url