ডায়েট ছাড়াই ৭ দিনে ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়

ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়া অথবা গুগল এ সার্চ করে জানার চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য উপাত্তের বিশ্লেষণ এর সহিত কেউই সঠিক পরামর্শ প্রাপ্তি লাভ করে না। তাই আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করব। 
ওজন-কমানোর-ঘরোয়া-উপায়
আজকের উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনারা আরও যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হল ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায় এবং দ্রুততার সহিত ১০কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। ৩০ দিনে ১০ কেজি এবং ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার জন্য আর্টিকেলটির শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়

আমরা অনেকেই আছি যারা ওষুধপত্রের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে থাকি। বলাবাহুল্য যে ওষুধপত্র থেকে ঘরোয়া প্রাকৃতিক জিনিসপত্রের মাধ্যমে যদি রোগ বালাই দূর করা সম্ভব অথবা সমস্যা দূরীকরণ সম্ভব হয় তাহলে সবচেয়ে সেটাই শ্রেয়। আমাদের আজকের যে বিষয়টি সামনে এসেছে সেটি হল ওজন কমানোর বিষয়টি। আমাদের সমাজে যদি কেউ মোটা শরীরের অধিকারী হয় তাহলে সবাই তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে পছন্দ করে। সেই ব্যক্তিটি বুঝতে পারে মোটা শরীরের অধিকারী হওয়ার জন্য কতটা কষ্ট তাকে 

পোহাতে হয়। কিন্তু শুধুমাত্র শরীরে দোষ দিয়ে চলে গেলে হবে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটা বনে যাওয়ার জন্য অনেকটা আমরা নিজেরাই দায়ী। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, বিশৃংখল জীবন যাপন মোটা বনে যাওয়ার অন্যতম কারণ। একবার যদি কোন ব্যক্তি মোটা হয়ে যায় তাহলে আগের পর্যায়ে অর্থাৎ আবার সেই সুদর্শন স্লিম বডিতে ফিরে যাওয়াটা অনেকটাই কষ্টদায়ক। চলুন তাহলে এই সমস্যা থেকে নিরসন পাওয়ার জন্য অর্থাৎ ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো কিভাবে অবলম্বন করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার বডি সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করা যাক। 
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা মানব শরীর পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন রকম খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। শুধুমাত্র এই খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস অর্থাৎ ডায়েট কন্ট্রোল করে কিন্তু ওজন কমানো সম্ভব। যে ব্যক্তি যত বেশি অস্বাস্থ্যকর এবং বেশি পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করবে তার শরীরে ঠিক তত পরিমাণে ফ্যাট জমা হতে থাকবে। শরীরে যখন অতিরিক্ত ফ্যাট অথবা চর্বি জমে যায় তখন শরীরটাকে অনেক মোটা বলে মনে হয়। ঠিক তখন আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না আমরা বাজারে তখন বিভিন্ন রকম ওষুধপত্র অথবা সাপ্লিমেন্টের খোঁজ করতে থাকি। যা কিনা আমাদের স্লিম করার পরিবর্তে কিডনি ড্যামেজ এর মত 

মারাত্মক রোগ তৈরি করতে পারে। সুতরাং আমাদের উচিত প্রাকৃতিক জিনিসের উপর আস্থা রেখে কোনরকম ওষুধ না খেয়ে কিভাবে মোটা শরীর থেকে স্লিম বডিতে রূপান্তরিত হওয়া সম্ভব সেই বিষয়ে সঠিক জ্ঞান লাভ করা। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় বলতে গেলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি সামনে আসে সেটি হল খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন। পাশাপাশি যদি কোন নেশাজাতীয় দ্রব্যের সাথে সম্পর্ক থাকে তাহলে সেটি ত্যাগ করা। তেলজাতীয় পদার্থ অবশ্যই পরিহার করে চলতে হবে, খাবার রান্না করার সময় অল্প পরিমাণে তেল ব্যবহার করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করতে হবে। 

বাহিরের খোলা পরিবেশে তৈরিকৃত খাবার কোনভাবে খাওয়া যাবে না। এরপর ঘরোয়া উপায়ে কোন কোন খাবার আসলে খাওয়া উচিত সে বিষয়টি জানার জন্য আমরা পর্যায়ক্রমে নিচে কত দিনে কত কেজি ওজন কমানো সম্ভব হয়ে থাকে সে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

৭ দিনে ওজন কমানোর উপায়

যখন আমাদের শরীরে মেদ জমতে শুরু করে আমাদের তখন দুশ্চিন্তার আর কোন সীমা থাকে না। কিন্তু শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি না করার কারণে আমরা কখনোই আমাদের শরীর আর কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারি না। বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তারদের মতে আপনি যতই সুস্থ থাকুন না কেন আপনার শরীর যদি মোটা হয় তাহলে অবশ্যই আপনার শরীরকে কন্ট্রোল করতে হবে। ডাক্তাররা আরো দাবি করে থাকেন আপনার শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যখন চর্বি জমতে শুরু করবে তখন স্বাভাবিক গত ভাবেই আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। হতে পারে হৃদরোগ থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস বিভিন্ন 

রকম মারাত্মক রোগ। তাই সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী একটি বিষয়। যখন আমরা এরকম পরিস্থিতিতে পড়ে যাই তখন আমরা চাই খুব দ্রুত ওজন কমাতে এজন্য আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনে পরামর্শ খুঁজতে থাকি। ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায় গুলো যদি জানা থাকে তাহলে অবশ্যই একজন ব্যক্তি খুব সহজেই তার ওজন কন্ট্রোল করতে সম্ভব হবে। আপনাদের কথা মাথায় রেখে আজকে আমাদের আর্টিকেলে ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে ৭ দিনে কিভাবে একজন ব্যক্তি তার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সম্ভব হবে সে বিষয়টি নিয়েই ব্যাপকভাবে আলোচনা 

করা হবে। তবে আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে কখনই ইচ্ছেমতো সঠিক গাইডলাইন ব্যতীত ওজন কমাতে যাবেন না। অনেকে মনে করেন আমরা শুধুমাত্র না খেয়ে থাকলেই ওজন কমে যাবে এজন্য অনেকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত না খেয়ে থাকেন এমনকি দুপুরে হালকা কিছু খেয়ে রাতেও না খেয়ে শুয়ে পড়েন। এতে করে আপনার ওজন তো কমবেই না বরং আপনি বিভিন্ন রকম রোগ বালাই দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন পাশাপাশি শরীর খুব বেশি দুর্বল অনুভব করতে পারেন। পরবর্তীতে বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া লাগতে পারে। 

তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মূল্যবান সকল উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর উপরে ওজন কমানোর চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অনেকে আছেন যাদের সামনে কোন একটি বড় অনুষ্ঠান রয়েছে যেখানে নিজেকে ফিট এবং সুদর্শন হিসেবে উপস্থাপন করতে চান তাহলে তারা ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায় গুলো খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করে নিবেন। আমরা এখানে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর টার্গেট নিয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু করব। আসুন তাহলে এবার ৭ দিনে কিভাবে খুব সহজে ওজন কমানো যায় সে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করা যাক।

৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে গিয়ে আমরা সর্বপ্রথম যে বিষয়টি সম্পর্কে উপলব্ধি প্রাপ্ত হয়েছি সেটি হল ওজন কমানোর হাতিয়ার হিসেবে ডায়েট কন্ট্রোলকে ধরা হয়। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে অবশ্যই একজন ব্যক্তি তার চাহিদা অনুযায়ী ওজন কমাতে পারবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়। এখানে আমরা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার পাশাপাশি আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দেব সেটি হল প্রতিদিন শরীরচর্চা করা। খাদ্যাভ্যাস রুটিন অনুযায়ী চালিত করার পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিদিন মিনিমাম এক ঘন্টা এক্সারসাইজ করা খুবই জরুরী একটি বিষয়। 

এক্সারসাইজ ব্যতীত শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে ওজন কমানো অতটা সহজ হবে না। কেননা আমাদের শরীরে যখন অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের কারণে মেদ জমে যায় সেই মেদ ঝরানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে শরীরচর্চা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই যখন আমরা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করি তখন হয়তো নতুন করে শরীরে আর কোন মেদ জমে না। কিন্তু পূর্বের জমাকৃত মেদ শরীরচর্চা ব্যতীত কখনোই নিঃসরণ সম্ভব নয়। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় বলতে গেলে সর্ব প্রথম খাদ্যাভ্যাসে কথা বার বার চলে আসছে। এর কারণ হলো বেশ কিছু গবেষণায় এটা প্রমাণ পাওয়া গেছে যে কোন ব্যক্তি 

যদি অল্প পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করে এবং সেই খাদ্যগুলো যদি স্বাস্থ্যসম্মত হয় তাহলে অবশ্যই তার শরীরে কোনরকম ফ্যাট জমতে পারবে না। আর সেজন্য হজম শক্তি বৃদ্ধি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শর্করার মাত্রা ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ সকলকে উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবার অর্থাৎ বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। ওমেন্স ওয়ার্ল্ড এর ডাক্তার “মাইকেল গ্রেগার” তার একটি ডায়েট চার্ট সকলের মাঝে পাবলিশ করেছিলেন। যেখানে শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ কমানোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন খাদ্য তালিকাতে শাকসবজি রাখার গুরুত্ব অতিমাত্রায় প্রকাশ পেয়েছে। 
তিনি তার ডায়েট চাটে আরো উল্লেখ করেছিলেন যে একজন ব্যক্তি যদি নিয়মিত উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য গ্রহণ করে পাশাপাশি নিয়মিত এক্সারসাইজ করে। তাহলে সেই ব্যক্তির ওজন কমানোর জন্য কোনরকম ঔষধ সেবনের প্রয়োজন নেই। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলোতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সমস্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য তালিকা তৈরি করা খুবই জরুরী। সহজ ভাবে বলতে গেলে ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে একদম না খেয়ে থাকা যাবে না। শরীরে প্রয়োজনমতো প্রোটিন,ভিটামিন, খনিজ, সকল কিছুর ঘাটতি পূরণ করার মাধ্যমে কেবলমাত্র ওজন কমানো সম্ভব। 

আর সেজন্য প্রয়োজন একটি সুষম ডায়েট চার্ট। তাই আসুন পুষ্টিবিদদের মতে কিভাবে সকল রকম খাদ্যের ঘাটতি পূরণ করার মাধ্যমেও একজন ব্যাক্তি ৭ দিনে তার ওজন কমাতে সক্ষম হবে সে তালিকাটি দেখে নিব।

ডায়েট চার্ট DAY 1 - DAY 7

সকালের খাবার

দুপুরের খাবার

বিকালের হালকা নাস্তা

রাতের খাবার 


DAY - 1

একগ্লাস গরম পানিতে দুই চামচ মধু ও লেবু। 

এক বাটি যে কোন ফল এবং সাথে ১ থেকে ২ গ্লাস পানি। 

চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি এবং এক ঘন্টা এক্সারসাইজ 

একটি আটার রুটি এবং একটি কলা। 


DAY - 2

এক সেদ্ধ আলু এবং দুই গ্লাস। 


শসা, টমেটো, আদা সেদ্ধ বিট অথবা পেঁপে এক বাটি। 

এক বাটি বাঁধাকপি অথবা লাল লেটুস (কাঁচা)

সামান্য লবণ ছিটিয়ে আধা সেদ্ধ ব্রকলি অথবা ফুলকপি। 


DAY - 3

১টি আপেল অথবা কমলা সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। 

লেটুস শসা এবং আধা সেদ্ধ টমেটো এক বাটি। 

ফল অথবা ফলের রস সঙ্গে এক ঘন্টা এক্সারসাইজ। 

আধা সেদ্ধ ফুলকপি, কাঁচা পেঁপে এক বাটি।  

DAY - 4

গরম দুধ এক গ্লাস এবং দুটি কলা। 

এক বাটি ভেজিটেবল স্যুপ। 

একটি কলা। 

এক বাটি ভেজিটেবল স্যুপ এবং কলা। 

DAY - 5

অল্প পরিমাণে মুরগির মাংস এবং স্যুপ। 

টমেটো এবং মাংস দিয়ে কম তেলে রান্না সবজি। 

এক গ্লাস গ্রিন টি সাথে এক ঘন্টা এক্সারসাইজ। 

এক বাটি চিকেন সুপ সাথে বিট রুটের জুস। 

DAY - 6

এক বাটি বিভিন্ন সবজির সালাদ। 

মিশ্র সবজি তেল ব্যতীত এবং চিকেন অথবা গরুর মাংস অল্প পরিমাণে। 

ভেজানো ছোলা এবং একটি খেজুর সাথে পর্যাপ্ত পানি। 

মিশ্র সবজির তরকারি সাথে একটি আটার রুটি। 

DAY - 7

একটি আটার রুটির সাথে একটি খেজুর। 

অল্প পরিমাণে ভাত সাথে পর্যাপ্ত তেলবিহীন শাকসবজির তরকারি। 

একটি আপেল অথবা কমলা এবং সাথে এক ঘন্টা এক্সারসাইজ। 

অল্প পরিমাণে ভাত অথবা একটি আটার রুটি সাথে পরিমাণ মতো সবজি। 

উপরে বর্ণিত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো যদি কেউ DAY 1 থেকে DAY 7 পর্যন্ত ভালোভাবে ফলোআপ করে তাহলে অবশ্যই ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। পরবর্তীতে আপনি তালিকাটি আবার রিপিট করতে পারেন। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে উপরে বর্ণিত খাবার তালিকা অনুসরণ করার সময় যদি কোন রকম শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়

আমরা ইতিমধ্যে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট প্লানটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছি। আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে বন্ধুদের হাসি-ঠাট্টার খোরাক হওয়ার চাইতে নিজেকে প্রস্তুত করুন সঠিক ডায়েট প্ল্যান অবলম্বন এর মাধ্যমে নিজেকে সুদর্শন এবং হিট করে তুলুন। আপনি ফিট হওয়ার পর বন্ধুবান্ধবদের চোখ উঠবে কপালে। ফেসবুকে ছবি আপলোড করার জন্য আর নিজের ছবি এডিট করার প্রয়োজন পড়বে না। সঠিক ডায়েট প্ল্যানটি ফলো করার পরে যখন নিজেকে ঠিক মনে হবে তখন একটি ছবি তুলে আগের ছবির সাথে তুলনা করে দেখতে পারেন। 

১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসেবে আমাদের উপরে বর্ণিত ডায়েট চার্ট অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। যদিও সেখানে ৭ দিনের কথা উল্লেখ রয়েছে আপনি সেটি আরো ৭ দিন রিপিট করবেন। তবে এখানে যেহেতু আমরা আরও ৭ দিন বেশি সময় পাচ্ছি তাই খাবারের মেনুতে খাবারের পরিমাণ অল্প পরিমাণে বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন খাবারে কোনভাবেই তেল এর পরিমাণ বেশি না হয়। খাবার যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে থাকে সেদিকে নজর দেওয়া খুবই জরুরী। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে আরও একটি বিশেষ কথা বারবার চলে আসে। 

সেটি হল পর্যাপ্ত ঘুম, একজন ব্যক্তির ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ৭ ঘন্টার কম নয় ৮ ঘন্টার বেশি নয় এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত ডায়েট প্ল্যান অনুযায়ী এক্সারসাইজ করতে হবে। তাহলে ১৫ দিন পর দেখা যাবে আপনার শরীর থেকে ৫ থেকে ৭ কেজি ওজন নিমিষেই কমে গেছে। তবে মনে রাখতে হবে কোন কিছুই সহজভাবে প্রতিফলিত হয় না। আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং পরিশ্রমের সহিত কাজ করতে হবে তাহলে দেখবেন আপনি আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছেন।

৩০ দিনে ওজন কমানোর উপায়

আমরা অনেকেই মনে করে থাকি ২০২৪ সালে অথবা এই বছরের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। সামনের বছর থেকে ইনশাল্লাহ শুরু করব। কিন্তু সামনের বছর যখন আসে তখন সেই আগ্রহটা আর থাকে না। তাই নিজেকে প্রস্তুত করুন আজ থেকে শুরু করার জন্য। সামনের ৩০ দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তুলুন এবং সে অনুযায়ী ডায়েট চার্ট ফলোআপ করার মাধ্যমে অবশ্যই আপনার অতিরিক্ত ওজন ঝরে ফেলুন। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমাদের শরীর পরিচালনা করার জন্য শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে। 
মানবদেহে শর্করার প্রোটিন ও চর্বি সবগুলো উপাদানেরই প্রয়োজন রয়েছে। যদি কেউ একবারে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে কখনোই সে ওজন ঝরাতে পারবে না। হয়তো এক থেকে দুই দিন না খেয়ে থাকতে পারবে তারপরে সে ঠিক আগের পর্যায়ে খাওয়া শুরু করে দিবে। ফলাফল দেখা যাবে আগে যে ওজন ছিল তার থেকে আরও দু কেজি ওজন হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই একটি সঠিক গাইডলাইন ফলোআপ করা এবং ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সঠিকভাবে পালন করার মাধ্যমেই কেবল ওজন কমানো সম্ভব।

৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়

আসুন তাহলে এবার ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে বিশেষ ধারণাগুলি লাভ করা যাক। যদিও আমরা উপরে ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায় এবং ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর চার্ট দিয়েছি। যেহেতু আমরা এখন ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমাবো সে ক্ষেত্রে প্রতি ওয়াক্তের খাবারের পরিমাণ একটু বৃদ্ধি পাবে। আমরা সময় নিয়ে আমাদের ওজন ধীরে ধীরে কমানোর চেষ্টা করব। তাহলে চলুন এবার দেখা যাক ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর জন্য কোন ডায়েট চার্টটি ফলো করা প্রয়োজন।

ডায়েট চার্ট

DAY 1 - DAY 3

সকালের খাবার

দুপুরের খাবার

বিকালের হালকা নাস্তা

রাতের খাবার 




DAY - 1

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ ওট মিলের সাথে হালকা কুসুম গরম পানি তারপর এক ঘন্টা এক্সারসাইজ 


এক কাপ ভাত এবং পরিমাণ মতো সবজি। ভাতের বদলে রুটিও খাওয়া যেতে পারে

সামান্য পরিমাণে মুড়ি সাথে গ্রিন টি

এক থেকে দুইটি আটার রুটি সাথে তেল বিহীন সবজি খেতে হবে। ( রাতে ভাত খাওয়া নিষেধ)




DAY - 2


 



চার থেকে পাঁচটা কাঠবাদাম


ভাতের সঙ্গে হাফ বাটি ডাল অথবা পরিমাণ মত সবজি নিতে হবে।

এক টুকরো মাছ 

অবশ্যই রান্নায় তেলের পরিমাণ কম দিতে হবে

ভেজানো কাঁচা ছোলা সাথে কিসমিস ও খেজুর অল্প পরিমাণে 




রুটি সঙ্গে অল্প পরিমাণে সবজি। 





DAY - 3

এক গ্লাস পানিতে ৩০ মিনিট আগে ভিজিয়ে রাখা ইসবগুলের ভুষি খেতে হবে 

 সিজিনাল ফল এক থেকে দুইটি 

যে কোন রকম সালাদ সেটা হতে পারে শসা, খিরা, মূলা ইত্যাদি।

দশ দিনের মধ্যে দুই দিন যেকোনো মাংস অল্প পরিমাণে খেতে পারবে 

ফল অথবা ফলের রস তবে অবশ্যই ফলের রস চিনিমুক্ত হতে হবে।

বিকেলে অবশ্যই এক ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস চিপে পান করতে হবে

 এছাড়া সারাদিন প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে প্রতিদিন মিনিমাম চার থেকে পাঁচ লিটার পানি পান করা উচিত 

আমরা এখানে ৩ দিনের ডায়েট চার্ট উল্লেখ করেছি। প্রতি ৩ দিন পর আপনি আপনার খাবারের মেনুতে কিছু খাবার বদলাতে পারেন অথবা এড করতে পারেন। আর এভাবে আপনি আগামী ৩০ দিন উপরে বর্ণিত ডায়েট চার্ট ফলো করবেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন খাবারগুলো তেল বিহীন এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়। পাশাপাশি আগামী এক মাস বাহিরের কোন রকম খাবার খাবেন না। নিয়মিত এক্সারসাইজ করবেন পর্যাপ্ত ঘুমাবেন এবং উপরে বর্ণিত রুটিন অনুযায়ী সকল খাদ্য গ্রহণ করবেন তাহলেই দেখবেন ৩০ দিন পর আপনার ১০ কেজি ওজন সত্যি সত্যিই কমে গেছে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা এই পর্যায়ে এসে উপলব্ধি করতে পেরেছি যে একজন মোটা শরীরের ব্যক্তি যদি সঠিক গাইডলাইন ফলো করেন তাহলে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময় পর তার অতিরিক্ত ওজন ধরাতে সক্ষম হবে। আমরা আরো একটি বিষয়ে উপনীত হয়েছি যে একমাত্র খাদ্যাভ্যাস এবং সঠিক ভাবে এক্সারসাইজ করার মাধ্যমে কেবলমাত্র নিজেকে সুদর্শন এবং ফিট হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব। এরপরেও যদি আপনাদের মনে ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় সংক্রান্ত বিষয়ে এবং ৭ দিনে ওজন 

কমানোর উপায় সম্বন্ধে আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে সেটি জানাতে পারেন। আপনাদেরকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। এরকম তথ্যবহুল পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন এবং আজকের এই বিষয়টি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। পরিশেষে সকলের সুস্থতা কামনা করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url