প্রাকৃতিক ভাবে নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় জানুন
নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা আপনার জন্য যদি প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে নাকের সর্দি দূর করা সম্ভব। সেইভাবে শীতকাল আসলে আমাদের ঠান্ডা লেগে যায়। এ কারণে সর্দি পড়তে থাকে এমনকি নাক বন্ধ হয়ে থাকে যা আমাদের জন্য অনেকটাই অস্বস্তিকর। চলুন তাহলে আজকে নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
ভাবে ধারণা লাভ করা যাক। পাশাপাশি আপনারা আরো যে সকল বিষয়ে জানতে পারবেন সেগুলো হল নাকের পানি বন্ধ করার উপায় এবং সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত। আবার সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না সে সকল বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। আর্টিকেলের শেষে গুরুত্বপূর্ণ FAQ সম্মিলিত কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া রয়েছে। তাই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে এবং নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র
ভূমিকা
সর্দি কাশি অথবা ঠান্ডা লাগা এক ধরনের ভাইরাস ঘটিত সংক্রামক রোগ। তবে এটা বড় ধরনের কোন অসুখ বা রোগ বালাই নয়। মানবদেহের ঊর্ধ্ব শ্বাস পথ বিশেষ করে নাকে ভাইরাস আক্রমণ করার পর নাক দিয়ে পানি পড়া অথবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়াকে সর্দি হিসেবে ধরা হয়। পাশাপাশি গলাতে খুসখুসি কাশি হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার দুদিন পর বা তার আগেই এ রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ গুলি প্রকাশ পাওয়া শুরু করে। উপসর্গগুলো হতে পারে খুশখুসে কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, মাথাব্যথা এবং জ্বর। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই জ্বর, সর্দি, কাশি ভালো হয়ে যায়।
কিন্তু সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর আমরা অনেকটাই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। সবসময়ই নাক দিয়ে পানি পরতে থাকলে অনেকটা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এজন্য কেউ যদি নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করতে পারে তাহলে অনেকটাই আরাম বোধ লাভ করা সম্ভব। ঘরোয়া উপায় গুলো জানার পাশাপাশি আমাদের আরও একটি বিষয় সম্পর্কে ধারণ থাকতে হবে সেটি হলো সর্দি-কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত। কেননা প্রত্যেকটি ওষুধেরই ব্যাপক পরিমাণ সাইড ইফেক্ট রয়েছে। সর্দি কাশির জন্য সঠিক ওষুধ নির্বাচন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায়
গবেষকরা এ পর্যন্ত দুই শত এর বেশি শ্রেণীর ভাইরাস শনাক্ত করতে পেরেছেন। উক্ত ভাইরাসগুলো সর্দি-কাশি সংঘটিত করার জন্য দায়ী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভাইরাস গুলোর মধ্যে রাইনো ভাইরাস অর্থাৎ নাসা ভাইরাস সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হিসেবে দেখা গেছে। ভাইরাসগুলো সাধারণত বাতাসের মাধ্যমে রোগীর শরীরে প্রবেশ করে। আবার অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির নিঃশ্বাস থেকে বেরিয়ে অন্য একটি সুস্থ ব্যক্তির ভেতরে প্রবেশ করার পর ভাইরাস তার কার্যক্রম সংঘটিত করতে থাকে। কেননা ভাইরাস রোগীর শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ছড়ানোর একটি বিশেষ দক্ষতা বা শক্তি রয়েছে।
আর এজন্য নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে প্রথম যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত সেটি হল আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করা। আবার যে ব্যক্তি সুস্থ রয়েছে তারও বাহিরে যাওয়ার সময় অবশ্যই নাকে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি শরীর থেকে ভাইরাস বাইরে বের হতে পারবে না। আবার সুস্থ ব্যক্তি মাস্ক ব্যবহার করার ফলে তার শরীরে নতুন করে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারবে না। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি কোন বস্তুতে স্পর্শ করে এবং পরবর্তীতে সুস্থ ব্যক্তি ঐ বস্তু স্পর্শ করার পর যদি তার নিজের নাক মুখ কোন কারণবশত স্পর্শ করে তাহলেও
ভাইরাস তার সুস্থ দেহে ছড়িয়ে পড়বে এবং সে সর্দি-কাশি দ্বারা আক্রান্ত হবে। তাহলে ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে আরও একটি বিষয় সামনে আসলো সেটি হল সবসময় হ্যান্ডাইজেশন দিয়ে হাত পরিষ্কার করা। বিগত করনা মহামারীতে আমরা আরো একটি বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম সেটি হল বেশি বেশি হাত ধৌত করা। এর বিশেষ কারণ হলো একমাত্র হার যখন আমরা নাকে মুখে স্পর্শ করি ঠিক তখনই ক্ষতিকারক ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের প্রবেশ করে। তাই মহামারী প্রাদুর্ভাবের সময় ডাক্তাররা সবসময় হাত ধৌত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মৌসুমী সর্দি কাশির ক্ষেত্রেও আমাদের ঠিক
একই কাজ করা প্রয়োজন। বাইরে থেকে আসলে অবশ্যই হাতমুখ ধুয়ে ঘরে করতে হবে। পাশাপাশি ১০ মিনিট পর পর হাত ধোয়া প্রয়োজন আর এর ফলে কখনোই ভাইরাস একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না। দরকার পড়লে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে জানতে হবে সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিতএবং কোন ওষুধ খেলে শরীরে তেমন কোন সাইড ইফেক্ট করবে না। নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্বন্ধে যদি আমরা সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারি তাহলে অবশ্যই সেই পরিস্থিতিতে আমরা ভাল একটি ফল পেয়ে থাকব।
নাকের পানি বন্ধ করার উপায়
মূলত সর্দি অথবা কাশির জন্য কোনরকম টিকা নেই। যেমন যক্ষা,পোলিও অন্যান্য রোগের টিকা থাকলেও জ্বর, সর্দি অথবা কাশির জন্য কোনরকম টিকা দেওয়া হয় না। সর্দি লাগার পর নাকের নাসারন্ধ্র থেকে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। এগুলো সাধারণত ভেতরের তরল জাতীয় শেল্মা যা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর নাক দিয়ে অনবরত বের হতে থাকে। আর এরকম পরিস্থিতিতে আমরা অনেকটাই অস্বস্তি বোধ করে থাকি। প্রধানত সর্দি কাশির রোধের জন্য সকলকে সবসময় হাতমুখ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং বেশি বেশি হাত ধৌত করতে হবে। তাহলে আর সংক্রমিত ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়াতে
পারবে না। বিশেষ করে বাচ্চাদের সতর্ক রাখতে হবে যেন তারা ঘন ঘন মুখে, চোখে এবং নাকে স্পর্শ না করে। এরপর যদি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে যায় এবং সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয়। তারপর নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে তাহলে নাকের পানি বন্ধ করার উপায় রয়েছে। আমরা কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। যদিও সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এ বিষয়টি আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জানে না। ওষুধের যেহেতু সাইড ইফেক্ট রয়েছে তাই নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো প্রথমে এপ্লাই করা উচিত। তাহলে চলুন উপায় গুলো কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে জানা যাক।
গরম পানির ভাপ
বহু প্রাচীনকাল থেকে ঠান্ডা সর্দি লাগার জন্য গরম পানির ভাব পদ্ধতি বিশেষভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। সাধারণত ঠান্ডা লেগে এলার্জি অথবা সাইনাসের সংক্রমণের ফলে নাক বন্ধ হয়ে যায় অথবা নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে আর এ বিষয়টিকে যেহেতু সর্দি হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। আর নাকের অভ্যন্তরে বা সাইনাসে যদি গরম কোন কিছুর ভাব নেয়া হয় তাহলে নাক দিয়ে পানি বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি নাকের অভ্যন্তরে সেল্মা তারা বন্ধ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও গরম পানির ভাব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা দূর হয়ে যাবে। প্রথম একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে এর মধ্যে তোয়ালে
অথবা রুমাল ডুবে ভালো করে চিপে নিতে হবে তারপর সেই রুমাল নাকে মুখে দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ধরে রাখতে হবে। আবার সরাসরি গরম পানির পাত্রে অনেকটা লবণ মিশিয়ে দেওয়ার পর গরম পানি পাত্র থেকে যে ধোঁয়া উড়তে থাকবে সেই ধোঁয়া নাক দিয়ে টেনে নিতে হবে। আর এ সময় তোয়ালে দিয়ে গরম পানির পাত্রসহ নিজের মুখমণ্ডল আবদ্ধ করে রাখতে হবে যেন ধোঁয়া সরাসরি নাকে গিয়ে পৌঁছায়। নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায়টি এতটাই কার্যকর যদি আপনি কখনো এরকম
পরিস্থিতিতে পড়েন আর গরম পানির ভাব পদ্ধতি নিয়ে থাকেন তাহলে তৎক্ষণাৎ সেটির রেজাল্ট পেয়ে যাবেন। পদ্ধতি বারবার করার পর একসময় দেখবেন আপনার সর্দি অনেকটাই ভালো হয়ে গেছে। ঘরোয়া উপায়গুলো এতটাই কার্যকরী যে এগুলো এপ্লাই করার পর আপনি ভুলেই যাবেন সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত।
কুসুম গরম পানি পান এবং গোসল
পূর্বে ডাক্তারগণরা জ্বর, সর্দি,কাশি হলে গোসল করতে নিষেধ করতেন। বর্তমানে চিকিৎসকরা এটা বুঝতে পেরেছেন যে গোসল করলে জ্বর, সর্দি, কাশি বাড়ার পরিবর্তে সেগুলো কমে যায়। বর্তমানে ডাক্তাররা রোগীকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি গরম পানিতে যদি এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করা যায় তাহলে রোগী অনেকটাই সুস্থবোধ অনুভব করে থাকেন। উক্ত পানীয়টি দিনে দুবার পান করতে হবে। এত ভিনেগারে থাকে অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম যা বন্ধ না খুলতে সাহায্য করে পাশাপাশি বুকের কফ এবং
ভাইরাস দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু বুকে কফ জমে যায় তাই কখনোই এ সময় ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। প্রয়োজন পড়লে ফ্লাক্সে পানি গরম করে রাখতে হবে এবং তার সঙ্গে হালকা ঠান্ডা পানি মিশিয়ে পানিটিকে কুসুম গরম হিসেবে তৈরি করে বারবার পান করতে হবে। অনেকের মতে নাকের পানি বন্ধ করার উপায় হিসেবে গরম পানির ভাপ নাকে প্রবেশ করানো অন্যতম একটি উপায় হিসেবে গণ্য। আপনি নিজে একদিন চেষ্টা করে দেখতে পারবেন পদ্ধতিটি কতটা উপযুক্ত।
পুদিনা পাতা এবং তুলসী পাতার রস
পুদিনা পাতা এবং তুলসী পাতার সঙ্গে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে এই পদ্ধতি দুটি এতটাই কার্য করি যে তৎক্ষণাৎ রোগী সুস্থ হয়ে যায়। তাই সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এ বিষয়টি জানার পূর্বে ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে এই পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কেননা তুলসী পাতার কার্যক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা রয়েছে। একটি পাত্রে কিছুটা গরম পানি নিয়ে সেখানে পুদিনা পাতা ছেড়ে দিতে হবে। পাঁচ থেকে দশ মিনিট অপেক্ষা করার পর সেই পানি দিনে দুইবার চায়ের কাপে পান করতে হবে।
পুদিনার পাতা বুকের জমে থাকা কফ কমাতে এবং বন্ধ থাকা না খুলতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। এবার আসি তুলসীপাতার বিষয়। তুলসী পাতার গুনাগুন সম্পর্কে নতুন করে বলার আর কিছু নেই। সর্দি কাশির যমদূত হিসেবে খ্যাত তুলসী পাতা রস। প্রথমে কিছু তুলসী পাতা বেটে সেখান থেকে রস বের করে নিতে হবে। তারপর একটি মাঝারি সাইজের চামচে কিছুটা পরিমাণ মধু নিতে হবে এবং সেখানে প্রাপ্ত তুলসী পাতার রসটি মিশ্রিত করতে হবে। তুলসী পাতার রস এবং মধুর মিশ্রণটিকে হালকা গ্যাসের ফ্রেমে গরম করতে হবে।
হালকা কুসুম গরম মিশ্রণটি যদি রোগী দিনে দুইবার পান করে তাহলে সর্দি কাশি আর ধারে কাছেও ভিড়বে না। উপরে বর্ণিত নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো যদি কেউ অনুসরণ করে তাহলে অবশ্যই তৎক্ষণাৎ সে এই বিরক্তি কর সর্দি কাশি থেকে পরিত্রাণ পাবে। এগুলো পদ্ধতি ছাড়াও আরো কিছু বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো পয়েন্ট আকারে নিচে তুলে ধরা হলো।
- এক লিটার পানি ভালো করে ফুটিয়ে এখানে কয়েক ফোটা ইউক্যালিপটাস তেল নিতে হবে। তারপর তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে নিয়মিত ভাপ নিলে বন্ধ নাক যেমন খুলে যায় ঠিক তেমনি সর্দি কাশি থেকে মুক্তি মেলে।
- যেহেতু নাকের ভেতরে মিউকাস এর উপস্থিতির কারণে নাক বন্ধ হয়ে যায়। আর গ্রিন টি পান করলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায় কারণ গ্রিন টি পান করলে মিউকাস পরিষ্কার হয়ে যায়।
- হাতের তালুতে অল্প একটু গোলমরিচ গুঁড়া নিয়ে সামান্য সরিষার তেল মিশ্রিত করতে হবে। তারপর সেটি আঙ্গুলে লাগিয়ে নাকের কাছে ধরলে বেশ কয়েকবার হাঁচি হবে। আর এতে করে বন্ধ নাক এবং মাথার জমাট ভাব খুলতে সাহায্য করবে। কেননা গোলমরিচ বন্ধ নাক খুলতে খুব ভালো সাহায্য করে থাকে।
বন্ধ নাক এর সমস্যা দূর করতে আরও একটি কার্যকরী উপায় হল দেড় গ্লাস পানিতে পাঁচ থেকে ছয়টি তেজপাতা ১৫ মিনিট ধরে গরম করতে হবে। তারপর পানিটি ছেঁকে পান করে নিতে হবে। দেখবেন সর্দি কাশি অনেকটাই হারিয়ে গেছে। সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এ বিষয়টি জানার আগে অবশ্যই আমাদেরকে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করা উচিত। আর এর ফলে কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়ায় আমরা রোগ মুক্তি লাভ করতে পারব।
সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না
সর্দি কাশি মূলত সিজন বদলানোর প্রভাবে আমাদের শরীরে ঘটে থাকে। আর সিজন বদানোর সময় ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস গুলো সক্রিয় ওঠার ফলে তারা একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে দ্রুত ছড়াতে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে ঠান্ডা জনিত সমস্যায় আমরা অনেকেই ভুগতে থাকি। নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো যেমন জানতে হবে ঠিক তেমনি আরো কিছু বিষয়ে আমাদের জানা উচিত সেটি হলো সর্দি-কাশির সময় ভুলেও যে খাবারগুলো খাবেন না।
ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পর আরো কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের কিছুদিনের জন্য পরিহার করে চলতে হবে। আসুন সেই খাবারগুলো নিচে পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক।
- ডাক্তারদের মতে সর্দি কাশির সময় কফি খাওয়া নিষেধ রয়েছে। কেননা কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন যা শরীরের আদ্রতা অতিমাত্রায় কমিয়ে ফেলে। শরীরে ক্যাফেইন প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রসাবের সাথে পানি বের হয়ে যায় যা শরীর দুর্বল করে ফেলে। এর ফলে তৃষ্ণা বেড়ে যায়, গলা শুকিয়ে যায় এবং খুশখুশি কাশি হতে থাকে।
- সর্দি কাশি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর কোনভাবেই অ্যালকোহল জাতীয় পানি পান করা যাবে না। এমনকি বাজারে এনার্জি ড্রিংক, সফট ড্রিঙ্ক এগুলো পান করা সম্পূর্ণ নিষেধ। উক্ত পানীয় গুলো পান করলে ঘন ঘন গলা শুকিয়ে যেতে পারে যার ফলে কাশির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সঙ্গে নাকের অভ্যন্তরে মিউকাসের তারতম্যের কারণে নাক আরো বেশি বন্ধ হয়ে থাকে।
- জ্বর অথবা সর্দি কাশি হলে আমাদের বাহিরের ভাজাপোড়া, অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে নজর বেশি থাকে। এ সময় মনে হয় ভাজাপোড়া খেলে হয়তো একটু মুখে রুচি আসতো। কোনভাবেই বাহিরের অস্বাস্থ্যকর ওই সকল খাবার খাওয়া যাবে না। এতে করে গ্যাসের যেমন সমস্যা হতে পারে আবার চিকিৎসকরা এটাও বলছেন বাহিরের ভাজাভুজি খাওয়ার ফলে গলার খুসখুসে ভাব বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে পাশাপাশি আরো অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার জন্য একমাত্র বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াই দায়ী।
সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্বন্ধে অনেকগুলো পদ্ধতি জানতে পারলাম। পদ্ধতি গুলো যেমন আমরা অ্যাপ্লাই করব পাশাপাশি যদি আমাদের ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয় তাহলে সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত সেটাও আমাদের জানতে হবে। তবে ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই আমাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে কিছু ঔষধ এখানে সাজেস্ট করব। নিচে সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত সেগুলো তুলে ধরা হলো।
সর্দির ঔষধের নাম
- Allegra (fexofenadine)
- Atarax, Vistaril (hydroxyzine)
- Benadryl (diphenhydramine)
- Chlor-Trimeton (chlorpheniramine)
- Clarinex (desloratadine)
- Claritin, Alavert (loratadine)
- Xyzal (levocetirizine)
- Zyrtec (cetirizine)
কাশির ঔষধের নাম
- Bromfed DM
- Mucinex
- Hydromet
- Hycodan
- Tessalon (benzonatate)
উপরে বর্ণিত ওষুধগুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লিখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মতে আপনারা অবশ্যই ঔষধ সেবনের পূর্বে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। ইমারজেন্সি সময়ে ঔষধ গুলো সেবন করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
লেখকের শেষকথা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমাদের আর্টিকেলে আলোচনা সম্পূর্ণ করা হলো। আমরা আশা করছি আপনারা সিজনাল সর্দি কাশি হলে কিভাবে সেটি প্রতিরোধ করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। নাকের সর্দি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত সে সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন। আজকের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে সেটি জানাতে পারেন। পাশাপাশি আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
আমরা সবসময় আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্যবহুল পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে দেখে আসতে পারেন। সর্দি কাশি হলে কিভাবে ঘরোয়া উপায় গুলো এপ্লাই করতে হয় সে বিষয়গুলো সকলকে জানানোর জন্য আজকের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। সামনের মৌসুমগুলোতে সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এটাই আমাদের কামনা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url