কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে

হাত পা জ্বালাপোড়া করা বা বার্নিং ফিট সিনড্রোম সমস্যাটিকে কোনভাবেই সহজ ভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। বর্তমান সময়ে অনেকেই এই সমস্যাটিতে ভুগে থাকেন তবে এর জন্য কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে সেই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। গবেষণায় উঠে এসেছে মূলত যারা ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে তারা এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আপনার যদি এরকম হঠাৎ করে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে এবং সেই বিষয়টি নিয়ে আপনি চিন্তিত হয়ে 
কোন-ভিটামিনের-অভাবে-হাত-পা-জ্বালা-পোড়া-করে
থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে সে বিষয়টি জানার জন্য অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আলোচ্য বিষয়টি জানার পাশাপাশি আরও যে সকল বিষয় সম্বন্ধে অবগত হতে পারবেন সেগুলো হলো হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় এবং ঔষধ সম্পর্কে, পাশাপাশি পায়ের তলা জ্বালাপোড়া করলে কি করতে হয় এবং এর ঘরোয়া চিকিৎসা কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্র

হাত-পা জ্বালাপোড়া করার কারণ

আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা হতে পারে যে হাত-পা জ্বালাপোড়া করা একটি বড় ধরনের রোগ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা কোন ধরনের রোগ নয়। কিন্তু ডাক্তারদের মতে যদি কারো হঠাৎ করে হাত-পা জ্বালা পোড়া শুরু হয় সেক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। কেননা তাদের মতে এ ধরনের সিনড্রোম বড় কোন রোগের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তাই এ ধরনের সিনড্রোম উপলক্ষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের শরণাপন্ন অথবা ঘরোয়া চিকিৎসাগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন। আপনার শারীরিক কিছু ঘাটতি অথবা সমস্যার কারণে এ ধরনের হাত-পা জ্বালাপোড়ার মতো সিনড্রোম 
তৈরি হয়ে থাকে। বিশেষ করে আমাদের উক্ত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন যেমন: কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এবং হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আমরা বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অবশ্যই জানার চেষ্টা করব আসুন ভিটামিনের ঘাটতি বা অন্যান্য কোন কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে সে বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।
  • অনেক সময় যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের মাঝে মাঝে বিশেষ করে রাতের বেলা হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে শর্করা এর মাত্রা বৃদ্ধির ফলে এ ধরনের সিনড্রোম উপলক্ষিত হয়।
  • বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে হাত-পা জ্বালাপোড়া করার কারণ হিসেবে অনিয়মিত ঋতুস্রাবকে দায়ী করা হয়েছে। তাদের নিয়মিত মাসিক হয় না সে ক্ষেত্রেও হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে।
  • ভিটামিনের ঘাটতি বলতে মূলত ভিটামিন বি এর অভাবে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। এছাড়া ভিটামিন বি ৬, বি ১২ এবং নিকটানিক এসিডের অভাবে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর অভাবেও হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে।
  • যদি কেউ অনেকদিন যাবত কেমোথেরাপীর ওষুধ এইচআইভির ওষুধ সেবন করেন সেক্ষেত্রে পুরো শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • আরো একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো যদি কেউ প্রয়োজনে তুলনায় প্রতিদিন কম পানি পানে অভ্যস্ত থাকে সেক্ষেত্রেও তার হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। তাই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পানি অভ্যস্ত থাকা প্রয়োজন।
  • কারো যদি কিডনিজনিত রোগ থাকে সে ক্ষেত্রেও তাদের হাত-পা জ্বালাপোড়া করে কেননা তাদের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হয়। আর ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
  • কারো যদি নার্ভের কোন সমস্যা থাকে অর্থাৎ নার্ভ জনিত কোন রোগে আক্রান্ত হয় পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রেও হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
মূলত উপরে বর্ণিত এ সকল কারণে হাত পা জ্বালা পোড়া করে। আসুন তাহলে এবার কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এবং হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় গুলোকে আমলে নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানা যাক। নিচে আমরা অনেকগুলো ভিটামিন এর উপাদান এর ঘাটতির কারণে এ ধরনের সিনড্রোম দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে

বর্তমান সময়ের সকলেই যেহেতু স্বাস্থ্য সচেতন, সেহেতু আজকের উল্লিখিত বিষয়টি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। নার্ভের সমস্যা বা নিরুপাতি বৃহত্তম ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যাদের রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা রয়েছে তারা সবসময়ই উল্লেখিত সিনড্রোম দ্বারা অর্থাৎ জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়ে থাকেন। বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২ এর হবে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এলার্জির কারণবশত পুরো শরীর চুলকানির পাশাপাশি জ্বালাপোড়া করতে পারে। ভিটামিন বি১২ মূলত শরীরের স্নায়ুতন্ত্র গুলোকে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য সাহায্য 

করে থাকে। ভিটামিনটির অভাবে শরীরের স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আসুন তাহলে এবার পর্যায়ক্রমে কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক।

ভিটামিন বি ১২: চিকিৎসা বিজ্ঞান এর গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি যদি দেখা দেয় তাহলে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিক অবস্থার সৃষ্টি হয়, যা থেকে হাত-পা জ্বালাপোড়ার মত সমস্যা তৈরি হতে থাকে।

ভিটামিন বি ৬: ভিটামিন বি ৬ এর অভাব জনিত কারণে মানবদেহে “পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি” নামক স্নায়ুতন্ত্রের রোগ হতে পারে। উক্ত সমস্যার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া, অবশতা, সুঁই ঝিনঝিনানি, ব্যথা, এবং দুর্বলতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ভিটামিন ডি: সাধারণত ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়ামের তাপমাত্রা বজায় রাখে। কোনো কারণে শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পড়ে যায় সে ক্ষেত্রে অস্টিওম্যালাসিয়া রোগ হয়ে থাকে। আর এ জন্য হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া হয়।

ভিটামিন বি: ডাক্তারদের মতে ভিটামিন বি এর অভাবে মূলত “বেরিবেরি” রোগ হয়ে থাকে। আর এই বেরিবেরি রোগের কারণে পুরো শরীর বিশেষ করে হাত এবং পায়ের তালু প্রচুর পরিমাণে জ্বালাপোড়া করে।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি এই পুষ্টি উপাদানটির সাথে আমরা কমবেশি সকলে পরিচিত। বিশেষ করে টক জাতীয় ফল যেমন লেবু কমলা আপেল আঙ্গুর ইত্যাদি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি যুক্ত ফলে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত করে তোলে। অভাবে ত্বক বিশেষ করে মুখমন্ডল হাতের তালু এবং পায়ের তালু জ্বালাপোড়া করতে পারে।
ভিটামিন বি ৩: ভিটামিন বি৩ বা নায়াসিনের অভাবে “পেলেগ্রা” নামক রোগ হয়ে থাকে। এর প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া সহ ত্বকের লালভাব, ডায়রিয়া, এবং মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি করা।
ভিটামিন ই: মানবদেহের অন্যতম একটি উপাদান হলো ভিটামিন ই। আর ভিটামিন ই এর অভাবে “স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি” নামক স্নায়ুতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি হয়। এই সমস্যাটির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাত পা জ্বালা করা এবং হাত-পায়ে দুর্বলতা, পেশীর ক্ষয়, এবং হাঁটতে অসুবিধা হওয়া।
পাঠক বৃন্দ আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে শুধুমাত্র উপরে বর্ণনাকৃত সমস্যাগুলোর কারণেই অর্থাৎ কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে বিষয়টি তা নয়। শারীরিক অন্য কোন সমস্যার হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে। এ ধরনের সমস্যা খুব বেশি কন্টিনিউ ভাবে হতে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায়

আপনারা ইতিমধ্যে অবগত হতে পেরেছেন হাত-পা জ্বালাপোড়া বিষয়টিকে একটি বার্নিং ফিট সিনড্রোম রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রোগটি কম বেশি সকলেরই হয়ে থাকে বিশেষ করে ৪০ বা ৫০ বছরের উর্ধ্বে যাদের বয়স তাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা দেয়। আর এ ধরনের সমস্যা হলে অশান্তির আর শেষ থাকে না। এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা গ্রহণ এর প্রয়োজন পড়ে। একজন ব্যক্তি যদি সারাদিন কাজকর্ম সম্পাদন করার পর যদি রাতে ঘুমাতে যায় এবং হঠাৎ করে তার হাত-পা জ্বালাপোড়া শুরু করে তাহলে রাতের ঘুম তো হারাম হয় 

পাশাপাশি অন্য বড় কোন রোগ এর ইঙ্গিত কিনা সে বিষয়েও চিন্তিত হয়ে যায়। তাদের মতে হাত পা জ্বালাপোড়া এর কারণ মূলত বিভিন্ন ভিটামিন বা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর কারণে হয়ে থাকে। হাত-পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে তেল চর্বি রয়েছে বিশেষ করে বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার কোনভাবে গ্রহণ করা যাবে না। হাত-পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। মূলত প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছু নিয়ম-কানুন এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি 

পাওয়া সম্ভব। আর কেউ যদি মনে করে যে আমি ওষুধ পত্র সেবনের মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই সে ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধপত্র সেবনের মাধ্যমে হাত-পা জ্বালাপোড়া থেকে অবসান পেতে পারে। তবে আমাদের মতে ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই প্রাকৃতিক উপায়ে সমস্যা নিরসন করা প্রয়োজন। কেননা প্রত্যেকটি ওষুধের একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার ফলে পরবর্তীতে রোগবালাই দূর হওয়ার পরিবর্তে অন্য কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যদি কেউ ঘরোয়া পদ্ধতি অনুযায়ী উক্ত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চায় তাহলে কোন ভিটামিনের অভাবে হাত 

পা জ্বালা পোড়া করে সে বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভাবে অবগত হতে হবে। পাশাপাশি কোন ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বনে মাধ্যমে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সে সম্পর্কেও জানতে হবে। আসুন তাহলে এবার হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় অর্থাৎ ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব সে বিষয়টি জেনে নেওয়া যায়।

হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা

আপনাদের জ্ঞাতার্থে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করছি যে মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে যদি কারো এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তাহলে কেবলমাত্র ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো এপ্লাই করবেন। যদি হাত পা জ্বালাপোড়া এর পরিমাণ অতিথি তীব্র এবং ধৈর্যসীমার বাহিরে চলে যায় তাহলে এ ধরনের ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো আর কাজে আসবে না। এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। মনে রাখতে হবে যদি খুব বেশি পরিমাণে হাত পা জ্বালাপোড়া করে তাহলে অবশ্যই কোন বড় ধরনের অসুখের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাই দেরি না করে অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়া খুবই জরুরী। নিচে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে দেওয়া হল।

ঠান্ডা সেঁক: প্রথমে একটি পরিষ্কার কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে ১০-১৫ মিনিটের জন্য আক্রান্ত স্থানে অর্থাৎ মুখমণ্ডল, হাতে এবং পায়ে রাখুন। ধীরে ধীরে ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।

অ্যালোভেরা জেল: অনেকের মতে অ্যালোভেরা জেলে প্রদাহ কমানোর শক্তি এবং ব্যথানাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে জ্বালাপোড়া উপশম করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করতে পারে।

নারকেল তেল: আমাদের সকলের ঘরে এবং হাতের কাছে পাওয়া যায় নারকেল তেল। ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করার ক্ষেত্রে নারিকেল তেলের ভূমিকা নেই। পাশাপাশি জ্বালাপোড়া সারাতেও সাহায্য করে থাকে।
হলুদ: হলুদ একটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে বহু কাল ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদের প্রদাহ-বিরোধী অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার কারণে জ্বালাপোড়া সারাতে সাহায্য করতে পারে। হলুদের গুঁড়া দিয়ে কাঁচা হলুদের তৈরি পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগান, দেখবেন নিমিষেই জ্বালাপোড়া বন্ধ হয়ে গেছে।

চা পাতা: চা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা জ্বালাপোড়া নিরসনে সাহায্য করে। ঠান্ডা করা কালো চা পাতা আক্রান্ত স্থানে লাগান, দেখবেন অনেকটাই আরাম বোধ করছেন। এ সকল ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করার পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় আনতে হবে আমূল পরিবর্তন। জানতে হবে কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে, সে অনুযায়ী প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিনযুক্ত সকল খাবার রাখা অতীব জরুরী।

হাত পা জ্বালাপোড়া ঔষধ

আমরা ইতিমধ্যে হাত হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি। অনেকে যদি মনে করেন ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে চান না বা হাত-পা জ্বালাপোড়া এর পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ঔষধ গ্রহণ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। তবে ঔষধ সেবনের থেকে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুযায়ী সেবা গ্রহণ করলে অনেকটা আরাম বোধ হয়। তবে সেভাবে বাজারে প্রচলিতভাবে হাত-পা জ্বালাপোড়া করার ঔষধ পাওয়া যায় না। 
কিছু মলম রয়েছে যেগুলো লাগালে সাময়িকভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া কমে। যাদের অ্যালার্জি গত সমস্যা রয়েছে তাদের মলম না লাগানোই ভালো। এখানে কিছু কোম্পানির হাত পা জ্বালাপোড়া করার ঔষধ দেওয়া হল। ওষুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।

                      ঔষধের নাম (Tablet)

                          কোম্পানির নাম

                        Miotrol (2.5 mg)

                      Drug International Ltd.

                          Nomi (2.5 mg)

                Square Pharmaceuticals Ltd.

                        Nomiten (2.5 mg)

                Rephco Pharmaceuticals Ltd.

                          Zolmit (2.5 mg)

                Beximco Pharmaceuticals Ltd.

                          Zomitan (2.5 mg)

                Incepta Pharmaceuticals Ltd.

পায়ের তলা জ্বালাপোড়া করলে কি করতে হবে

পায়ের তলা জ্বালাপোড়া করা একটি পরিচিত সমস্যা বলে অভিহিত। সকলের কাছে একটি সাধারণ সমস্যা মনে হলেও যারা এর ভক্তিভোগী তারাই জানেন কতটা কষ্ট পোহাতে হয় এ সমস্যার কারণে। সাধারণত রাতের বেলা পায়ের পেছনের দিকে, গোড়ালিতে এবং পায়ের তালুতে প্রচুর পরিমাণে জ্বালাপোড়া করতে থাকে। অনেক সময় ডায়াবেটিস রোগীদের এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কারো যদি কোষ্ঠকাঠিন্য বা অনুশূন্যতা দেখা দেয় সেক্ষেত্রেও হাত পা জ্বালাপোড়া বিশেষ করে পায়ের তালুতে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়। 

1/ যদি কোন অপারেশনের রোগী বা অন্য কোন সমস্যাতে এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা হয় সেক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এর রূপ হিসেবে পায়ের তালু জ্বালাপোড়া করে। আসুন তাহলে এবার পায়ের তলা জ্বালাপোড়া করলে কি করা উচিত সে বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নিব।

2/ যেহেতু পায়ের তালুতে জ্বালাপোড়া হচ্ছে তাই হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার এর ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে অনেক দিন যাবত। অনেকটা প্রাচীনকালের পথ্য হিসেবে গণ্য করা যায় এই বিষয়টিকে। তাই পায়ের বিভিন্ন সংক্রমণ এবং জ্বালাপোড়ার ক্ষেত্রে এই উপাদানটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

3/ ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে যদি পায়ের তালুতে রাখা হয় সেক্ষেত্রে অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়। আর কেউ চাইলে ঠান্ডা পানিতে সুতির কাপড় ভিজিয়ে পায়ে জড়িয়ে রাখতে পারে। পানির সঙ্গে কিছুটা যদি লবণ মিশিয়ে ঠান্ডা পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে জ্বালাপোড়া অনেকাংশেই কমে যায়।

4/ পূর্বে এ ধরনের সমস্যার জন্য অনেকে মাছের তেল ব্যবহার করে ছিলেন। যেমন কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রিক মাছ খাওয়ার মাধ্যমে ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করার সম্ভব। মাছের তেল যেমন আমাদের অভ্যন্তরীণ সুস্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহার করা হয় ঠিক তেমনি বাহিরের কোন সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি পায়ের তালু জ্বালাপোড়া সহ অনেক ধরনের সমস্যার জন্য মাছের তেল খুবই উপকারী। তাই জ্বালাপোড়ার সময় মাছের তেল পায়ের তালুতে ব্যবহার করুন দেখবেন জ্বালাপোড়া অনেক কমে গেছে।

5/ হলুদ একটি ভেষজ উপকারী উদ্ভিদ হিসেবে বেশ পরিচিত। আমাদের রান্নার কাজে হলুদের গুরুত্ব যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি আমাদের শারীরিক উপকারেও হলুদের বিকল্প নেই। তাই কাঁচা হলুদ বেটে হাতের তালু এবং পায়ের তালুতে যদি দেওয়া হয় তাহলে জ্বালাপোড়া অনেকাংশে কমে যায়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এবং হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায় সংক্রান্ত বিষয়গুলো আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। আশা করি ভবিষ্যতে যদি আপনারা এ ধরনের কোন সমস্যা দ্বারা আক্রান্ত হন তাহলে আমাদের আর্টিকেলের প্রত্যেকটি বিষয় আপনাদের কাজে আসবে। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো এপ্লাই করার পর যদি আপনি মনে করেন ঔষধ সেবনের মাধ্যমে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ 

নিবেন। এ ধরনের তথ্যবহুল পোস্টগুলো পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। পাশাপাশি আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের উপকারের উদ্দেশ্যে আজকের আর্টিকেলটি তাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url