কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় বিস্তারিত জানুন

ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যাচ্ছে? তাহলে জানুন কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। চুল পড়া আমাদের প্রতিদিনের জীবনে একটি হতাশজনক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমন- বংশগত কারণ, স্বাস্থ্যের সমস্যাগত কারন, চুলে পুষ্টির অভাব, পরিবেশগত পরিবর্তন, পানির পরিবর্তন ইত্যাদি আরো নানান কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। যে সকল ব্যক্তিরা চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে খুবই হতাশায় আছেন তাদেরকে আমার আজকের পোস্টটি গুরুত্ব দিয়ে পড়ার 
কোন-ভিটামিনের-অভাবে-চুল-পড়ে-যায়
জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বা ইন্টারনেটে খুঁজে বেড়াচ্ছেন কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় তাহলে আপনি আজকে সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। ভিটামিনের অভাবে চুল পড়া সমস্যার সমাধান পাওয়ার পাশাপাশি আপনারা আরও যে সকল তথ্য আজকের পোস্টে পেয়ে যাবেন সেগুলো হলো- কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায়, কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতটা কার্যকরী, চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম ও উপকারিতা, কোন হরমোনের অভাবে চুল পড়ে যায় ইত্যাদি।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

চুল আমাদের শরীরের এমন একটি অংশ যেটি ছাড়া আমাদের শারীরিক সৌন্দর্য কল্পনাই করা যায় না। বর্তমানে চুল পড়া সমস্যা নিয়ে অনেকেই হতাশায় আছেন। চুল পড়া বেশিরভাগ মানুষের নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভিটামিন হচ্ছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেটি আমাদের চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং চুলকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন আমাদের ভিটামিনের ঘাটতি হতে থাকলে চুল পড়া আরো বেড়ে যাবে। 

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় সেই সকল ভিটামিনের নাম গুলো হলো- ভিটামিন ডি, বায়োটিন/ ভিটামিন বি৭, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ইত্যাদি। তাই যে সকল ব্যক্তিদের চুল পড়ার সমস্যা দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে তারা খাবার আগে অবশ্যই ভাববেন কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় সেই ভিটামিন গুলো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা রাখার চেষ্টা করবেন।

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায়

সাধারণত আমরা ভেবে থাকি বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে চুল পেকে যায়। কিন্তু বর্তমানে অনেক যুবক-যুবতী বা অল্প বয়সী মানুষদেরও চুল পেকে যাচ্ছে। চুল পাকার ফলে বাহ্যিকভাবে দেখতে অনেকটা বয়স বেশি দেখায় যার কারণে অনেকেই আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করেছেন কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায়। কিছুক্ষণ আগে আমরা জেনেছি কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। প্রিয় দর্শক এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কোন ভিটামিন গুলোর অভাবে আপনার চুল পেকে যেতে পারে।

ভিটামিন বি১২

চুল পেকে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে দেহে ভিটামিন বি১২ এর অভাব দেখা দেয়া। আমাদের দেহে যখন ভিটামিন বি১২ এর অভাব দেখা দেয় তখন দেহ থেকে মেলানিন উৎপাদন কমে যায় যার ফলে চুলের রং হারিয়ে গিয়ে সাদা রং ধারণ করে এর ফলে চুল পেকে যায়। মাছ, মাংস, ডিম ও দুগ্ধজাত খাদ্যে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ, মাংস ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন যা আপনার চুল পাকা কমাতে সহায়তা করবে।

ফোলেট/ভিটামিন বি৯

ফোলেট হচ্ছে এমন একটি উপাদান যেটি ভিটামিন বি৯ নামেও পরিচিত। ফোলেট আমাদের রক্ত ও কোষের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এমন কি ডিএনএ কার্যক্রমে ও অংশগ্রহণ করে। মানবদেহে যখন ফোলেটের অভাব দেখা দেয় তখন ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় এর ফলে চুলের কালার পরিবর্তন হয়ে চুল পেকে যায়। সবুজ শাকসবজি, ডাল ও ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি৫

ভিটামিন বি৫ মানব দেহে শক্তি উৎপাদন ও হরমোন উৎপাদনের ক্ষেএে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি৫ চুলের কোষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করেন যার ফলে চুলের রং সুরক্ষিত থাকে এবং দেখতে কালো দেখায়। মানবদেহে যখন ভিটামিন বি৫ এর অভাব দেখা দেয় চুল গোড়া থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে ও পাকতে শুরু করে। আপনি যদি ভিটামিন বি৫ এর উৎস খুজে থাকেন তাহলে মাশরুম, অ্যাভোকাডো ও মিষ্টি আলু খেতে পারেন যেটিতে পেন্টাথেনিক এসিড পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান যেটির মাধ্যমে শরীরে ক্যালসিয়াম উৎপাদন হয়। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। চুলের প্রাকৃতিক রং রক্ষায় সূর্যের আলো প্রয়োজন। তাই সূর্যের আলো থেকে যারা দূরে থাকেন তাদের চুলের রং ফ্যাকাসে হয়ে দ্রুত চুল পেকে যায়। যাদের দ্রুত চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর ছাদে/ বারান্দায় যেখানে সূর্যের আলো পাওয়া যায় সেখানে কিছুক্ষণ সময় ব্যয় করবেন। যার ফলে আপনার দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে। এছাড়া ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন- ডিমের কুসুম,ফ্যাটি ফিশ এগুলো খেতে পারেন।

কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় সেই ভিটামিন গুলোর নাম ইতিমধ্যে আমরা জেনে গিয়েছি। এখন আমরা জানবো কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে। এমন কিছু ভিটামিন আছে যেই ভিটামিন গুলো খেলে বা সেই ভিটামিন জাতীয় খাবার খেলে চুল দ্রুত গজাতে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে সেই ভিটামিন গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক:

ভিটামিন ই আমাদের মানব দেহের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যেটি চুলের ফোলিকলকে সুরক্ষিত রাখে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। এর ফলে চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ হয়ে চুলের বৃদ্ধিকে আরো সহজ করে দেয়। ভিটামিন ই এর অভাব চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বাদাম, বীজ, শাকসবজি রাখলে আপনার দেহ থেকে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। তাই চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত ভিটামিন ই গ্রহন করুন। চুল গজানোর জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
কারণ ভিটামিন সি মানব দেহের কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। কোলাজেনের মধ্যে এমন একটি প্রোটিন আছে যেটি চুলের গঠন ও শক্তি বজায় রাখে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে তোলে। যেহেতু ভিটামিন সি শরীরে আয়রনের শোষণ বাড়ায় যা চুলের বৃদ্ধি সাধন করে। এমনকি ভিটামিন সি চুলকে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে দূরে রাখে। সবুজ ফলমূল, কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, ব্রকলি,টক জাতীয় ফল এগুলো ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস।

চুলের আদ্রতা বজায় রাখতে এবং চুল গজাতে তেল জাতীয় পদার্থ প্রয়োজন। যেটি আমাদের মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখবে এবং চুল সুরক্ষিত রাখবে। এই উপাদানটি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ তে রয়েছে সেবাম নামক একটি উপাদান যেটি মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় রেখে চুলের বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। এর পাশাপাশি চুলের কোষকে উন্নত করবে। ভিটামিন এ জাতীয় খাবার যেমন- গাজর, মিষ্টি আলু, সবুজ শাকসবজি এগুলো খেলে মানবদেহে সেবামের ঘাটতি পূরণ হয়ে চুল গজানোর প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করে তুলবে। 

চুল পড়া বন্ধ করে চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে নিয়াসিনের ভূমিকা অপরিসীম। নিয়াসিন ভিটামিন বি৩ নামেও পরিচিত। যেটি আমাদের মাথার রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে। মাথার রক্ত সঞ্চালন ভালো হলে চুলের স্বাস্থ্য বজায় থাকবে। মুরগির মাংস, মাছ এবং শস্য দানা নিয়াসিন জাতীয় খাদ্যের ভালো উৎস।

চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আমরা প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন জাতীয় খাদ্য খেয়ে থাকি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শুধুমাত্র প্রাকৃতিক ভাবে ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ হয় না। তাদের জন্য বিশেষভাবে কিছু ক্যাপসুলের প্রয়োজন হয় সে ক্যাপসুল এর নাম হচ্ছে ভিটামিন ই। ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুল চুল পড়া বন্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই যে সকল ব্যক্তিদের চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া প্রয়োজন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ 

অনুযায়ী কোন ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি আপনার চুলের জন্য স্যুট করবে সেটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুল না খাওয়াই উত্তম এতে মানবদেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। নিম্নে কয়েকটি ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুল এর নাম দেয়া হলো যেটি চুল পড়া কমাতে সহায়তা করবে:
  • Evion 400
  • Genone E Cap
  • Nutracell Softgel
  • E-Cap 400
  • Neurobion Forte
  • Sunvit E 400
  • Biotrex Vitamin E
  • MuscleBlaze Vitamin E
  • Healthvit E-Vitan
  • Seven Seas Cod Liver Oil with Vitamin E
  • Now Foods Vitamin E
  • Nature Made Vitamin E
  • Cipla Vit E 400
  • St.Botanica Vitamin E
  • Puritan’s Pride Vitamin E
  • Garden of Life Vitamin E
  • Carlson Labs E-Gems
  • Solgar Vitamin E
  • 21st Century Vitamin E
  • Himalaya Wellness Vitamin E
  • Inlife Vitamin E Wheat Germ Oil
  • GNC Vitamin E
  • Swisse Ultiboost Vitamin E
  • Nature’s Bounty Vitamin E
  • Sundown Naturals Vitamin E
যারা জানতে চেয়েছিলেন কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় তাদের জন্য আমি ভিটামিন যুক্ত অনেকগুলো খাবারের নাম বলে দিয়েছি। এর পাশাপাশি আমি আপনাদেরকে বলবো দ্রুত চুল পড়া বন্ধ করতে চাইলে ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুল ব্যবহার করা শুরু করুন যেটি আপনার চুল পড়া বন্ধ করে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করবে।

চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

বর্তমানে বাজারে অথবা মার্কেটে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য অনেক ধরনের তেল তৈরি হয়েছে। আপনি চাইলে যে কোনো মার্কেট থেকে পছন্দমত ব্র্যান্ড অনুযায়ী চুল পড়া বন্ধ করার তেল কিনে নিতে পারেন। এই তেলগুলো বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় যেটি আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য যে ধরনের তেল তৈরি হয়েছে এই তেল নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া আগের তুলনায় অনেক কমে যেতে পারে। 
তাই বাজার থেকে এই তেল গুলো কেনার সময় বিক্রেতার কাছ থেকে ব্যবহারের নিয়ম-কানুন জেনে নিবেন। নিম্নে কয়েকটি চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম দেওয়া হলো:
  • আলমন্ড তেল (Almond Oil)
  • ক্যাস্টর তেল (Castor Oil)
  • ব্রাহ্মী তেল (Brahmi Oil)
  • ভৃঙ্গরাজ তেল (Bhringraj Oil)
  • পেপারমিন্ট তেল (Peppermint Oil)
  • অ্যাভোকাডো তেল (Avocado Oil)
  • কোকোনাট তেল (Coconut Oil)
  • অর্গান তেল (Argan Oil)
  • জয়ত্রী তেল (Jojoba Oil)
  • হিবিস্কাস তেল (Hibiscus Oil)
  • মরিঙ্গা তেল (Moringa Oil)
  • নিম তেল (Neem Oil)
  • ল্যাভেন্ডার তেল (Lavender Oil)
  • আমলকি তেল (Amla Oil)
  • রোজমেরি তেল (Rosemary Oil)
  • অলিভ তেল (Olive Oil)
  • কালোজিরা তেল (Black Seed Oil)
  • গ্রেপসিড তেল (Grapeseed Oil)
  • আর্নিকা তেল (Arnica Oil)
  • তিল তেল (Sesame Oil)
এগুলো ছাড়াও বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন পেজ গুলোতে বিক্রেতারা চুল পড়া বন্ধ করার তেল বিক্রি করে থাকে। আপনি চাইলে সেখান থেকেও পছন্দ মতো চুল পড়া বন্ধ করার তেল ক্রয় করতে পারেন।চুল পড়া বন্ধ করার তেল ব্যবহার করেও যদি আপনার চুল পড়া বন্ধ না হয় তাহলে অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

কোন হরমোনের অভাবে চুল পড়ে

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় এই বিষয়ক আপনাদের যত প্রশ্ন ছিল আশা করি আপনারা সেগুলোর উত্তর পেয়ে গেছেন। কিন্তু আপনাদের এটিও মাথায় রাখতে হবে কোন হরমোনের অভাবে চুল পড়ে যায়। চুল গজানোর জন্য আমাদের দেহের যেমন ভিটামিন প্রয়োজন তেমনি হরমোনেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমার দেহে হরমোনের ঘাটতি হলে চুলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এর ফলে চুল পড়ার প্রবণতা আরো বেড়ে যায়। এমন ৫টি হরমোন আছে যে হরমোনের অভাবে চুল পড়ে সে হরমোনের নামগুলো হলো-
  • থাইরয়েড হরমোন
  • প্রোজেস্টেরন হরমোন
  • টেস্টোস্টেরন হরমোন
  • এস্ট্রোজেন হরমোন
  • ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোন

থাইরয়েড হরমোন

আমাদের দেহে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড প্রধান দুটি হরমোন উৎপাদন করে একটি হলো থাইরক্সিন, আরেকটি হল ট্রাইআইডোথাইরনাইন। এই দুটি হরমোন দেহের মেটাবলিজম এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং চুলের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই থাইরয়েড হরমোনের অভাবে চুল পড়া বেড়ে যায়। থাইরয়েড হরমোনের অভাবে শুধু চুল পড়া বেড়ে যায় এখ্নেই শেষ নয়। চুল পাতলা হয়ে চুলের বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হয়। তাই আপনাদের যাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি রয়েছে তাদের দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী থাইরয়েড টেস্ট করানো উচিত।

প্রোজেস্টেরন হরমোন

প্রোজেস্টেরন হচ্ছে মহিলাদের প্রজনন হরমোন যেটি এস্ট্রোজেন হরমোনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে চুলের বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রজেস্টেরন হরমোনের অভাবে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায়। বিশেষ করে যারা গর্ভাবতী অবস্থায় আছেন তাদের প্রজেস্টেরন হরমোনের অভাব দ্রুত দেখা দেয় এর ফলে ডেলিভারির পর চুল পড়া বেড়ে যায়।

টেস্টোস্টেরন হরমোন

টেস্টোস্টেরন হচ্ছে পুরুষদের প্রধান হরমোন যেটি অল্প পরিমাণে নারীদের দেহেও থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোন চুলের বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। মানবদেহে যখন টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায় বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে তখন তাদের চুল পড়া শুরু হয়। চুল পড়ার সমস্যাটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের দেখা দেয় যার কারণে টেস্টোস্টেরনের অভাব পুরুষের তুলনায় নারীর দেহে বেশি হয়ে থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সময় মত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

এস্ট্রোজেন হরমোন

এস্ট্রোজেন হচ্ছে মহিলাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন যেটি মহিলাদের চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এটি চুলের বৃদ্ধির ফেজকে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত করে তোলে এবং চুলের সঠিক গঠন বজায় রাখে। মহিলাদের শরীরে এস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে গেলে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্রসব পরবর্তী সময়ে এস্ট্রোজেন এর মাত্রা হ্রাস পায় যার ফলে সন্তান জন্মদান করার পর অনেক মায়েদের চুল পাতলা হয়ে যায়।

ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোন

ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোন এমন একটি শক্তিশালী হরমোন যেটি চুলের ফলিসেলসে দ্রুত প্রভাব ফেলে। এই হরমোনটির মাত্রা দেহে বেড়ে গেলে চুলের ফলিসেলস ছোট হয়ে যায় এবং চুলের বৃদ্ধি ধীর গতিতে হয় যা চুল পড়া সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোন জনিত সমস্যা বেশিভাগ ক্ষেত্রে পুরুষদের বেলায় হয়ে থাকে তাই এই হরমোনটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

লেখকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় এ সম্পর্কে আপনারা পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করেছেন। আজকের এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা যদি চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে অতিরিক্ত হতাশায় ভুগে থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং মেডিকেল টেস্টের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করুন আপনার দেহে কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়া বেড়েই যাচ্ছে। তাহলে আপনি সেই অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় ভিটামিন যুক্ত করতে পারবেন। 

আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন কেউ যদি এই বিষয়ে টেনশনে থাকে কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায় তাদের কাছে আপনি আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করে দিতে পারেন। এই পোস্ট সংক্রান্ত আপনার কোনো ব্যক্তিগত মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url