কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো-নতুন ইউটিউব চ্যানেল
আপনি কি বিভিন্ন ইউটিউবারের ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার কথা ভাবছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো বিষয়টি নিয়ে আমরা আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। বর্তমান সময়ে অনেকেই ইউটিউবে চ্যানেল খুলে সেখানে নিয়মিত কোয়ালিটিফুল কন্টেন্ট আপলোড করার মাধ্যমে অনেক অনেক টাকা ইনকাম করছে।
তবে অনেকের কাছেই ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার বিষয়টি আগ্রহবশত হলেও প্রফেশনালি কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ বিষয়টি নিয়ে এখনো কনফিউশন কাজ করে। তাহলে চলুন সেই সকল কনফিউশন দূর করার জন্য ইউটিউব চ্যানেল বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাক। পাশাপাশি আজকের এই আর্টিকেলে অন্য যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো নতুন ইউটিউব চ্যানেল সম্পর্কে, মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম এবং প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম। কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো বিষয়টি জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত থাকুন।
পোস্ট সূচীপত্র
ইউটিউব চ্যানেল সম্পর্কে
আমরা যারা ৯০ এর দশকে জন্মগ্রহণ করেছি তাদের কাছে Youtube নামের শব্দটি অনেক আবেগপ্রবণ। কেননা সেই সময় আমরা যারা জন্মেছিলাম ইউটিউব, মোবাইল ফোন কোন কিছুই ছিল না। বিটিভি চ্যানেলে সপ্তাহে একদিন ছায়াছবি দেখার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে থাকতাম। পরবর্তীতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন দেশি এবং বিদেশি চ্যানেলের সাথে আমরা পরিচিত হয়েছি। এরপরে কালের বিবর্তনে স্মার্ট বাংলাদেশে সকলের কাছে যখন স্মার্টফোন সচরাচর দেখা যেতে থাকলো, তখন ইউটিউব একটি পরিচিত নাম হিসেবে উল্লেখিত হল। বর্তমানে কমবেশি আমরা সকলেই ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকি।
বলতে গেলে বর্তমান সময়ে ভিডিও প্রচারণার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইউটিউব সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। ছোট থেকে বড় সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকে। আর এই সকল ভিডিও একটি নির্ধারিত চ্যানেল থেকে আপলোড করা হয় এবং আপলোড করার পরে দর্শকবৃন্দ সেগুলো দেখতে পারে। ইউটিউব মূলত সান ব্রুনো ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি অনলাইন ভিডিও সেবার প্ল্যাটফর্ম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউটিউব প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে গুগল কর্তৃপক্ষ ইউটিউব সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ক্রয় করে নেয়।
সুতরাং বর্তমানে ইউটিউব গুগলের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। ইউটিউব তার ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ভিডিও দেখার সুযোগ প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের মালিক মূলত বিভিন্ন কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং প্রতিষ্ঠান। ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সেই সকল ইউটিউব চ্যানেলের মালিকদের গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করে থাকে। বর্তমানে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ইউটিউব চ্যানেলের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এর সংখ্যা কম নয়।
অনেকে ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে নিত্য নতুন দর্শকদের পছন্দসহি ভিডিও আপলোড করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করছে। তবে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো বা খোলার জন্য কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হয় সেগুলো জেনেই কেবলমাত্র ইউটিউব চ্যানেল খোলা উচিত।
নতুন ইউটিউব চ্যানেল
নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলতে গেলে অনেক সময় আমাদের অজ্ঞতার অভাবে প্রফেশনালি চ্যানেলটি আর খোলা হয় না। একটি স্মার্ট প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল দর্শকের কাছে আকর্ষের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। আপলোডকৃত ভিডিও এবং চ্যানেল যদি দর্শককে মুগ্ধ না করতে পারে তাহলে সেখান থেকে কোন ভিউ আসবে না। আর মূলত কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের আয়ের উৎস ইউটিউব চ্যানেল হলেও যদি সে চ্যানেলে সেরকম কোন ভিউ না হয় তাহলে সেখান থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব নয়। ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম অনুযায়ী প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলা সম্ভব।
বিশেষ করে নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুললে প্রথমে কিছু বিষয়বস্তু জেনে নিতে হয়। তা না হলে নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলে কয়েকদিন ভিডিও আপলোড করে আগ্রহ হারিয়ে যাই এবং পরবর্তীতে ওই চ্যানেলে আর কোন ভিডিও আপলোড করা হয় না। ইউটিউব চ্যানেল খোলার সাথে সাথে আরও একটি বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করতে হয় সেটি হলো Video SEO, একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর অনেক ভালো ভিডিও এডিট করতে পারে এবং তার উপস্থাপনাও ভালো। কিন্তু সে যদি সঠিকভাবে ভিডিওতে SEO না করে তাহলে সেখান থেকে আশা অনুরূপ ভিউ আসবে না।
চলুন তাহলে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ প্রশ্নটি জানার পাশাপাশি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার পরে কি কি বিষয় গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
- একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার সময় প্রফেশনালি মেইনটেইন করে চ্যানেল খোলা প্রয়োজন। অবশ্যই চ্যানেলটির প্রোফাইল পিকচার এবং ব্যানার ভালো মানের একটি লোগো দিয়ে করা উচিত।
- নতুন ইউটিউব চ্যানেলটি প্রত্যেকটি ভিডিওতে তার ক্যাটাগরি অনুযায়ী সিলেক্ট করে সেখানে উপযুক্ত ট্যাগ বসিয়ে ভিডিও SEO করা প্রয়োজন।
- নতুন ইউটিউবাররা অনেক সময় Thumbnail নিয়ে অনেকটা ভাবে না যেমন তেমন Thumbnail তার ভিডিওতে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু মজার বিষয় হল একটি ভিডিও Impression এবং র্যাঙ্ক বাড়াতে Thumbnail এর ভূমিকা অপরিসীম।
- নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুললে সব সময় উচিত হবে একটি নির্দিষ্ট টাইম অনুযায়ী নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা। পাশাপাশি ভিডিওর কোয়ালিটি যেন সর্বোচ্চ হয় সেই দিকে নজর রাখা।
- সবচেয়ে বড় সমস্যা একজন নতুন ইউটিউবারের ভিডিওতে প্রথমে কোনরকম ভিউ আসে না। তাই একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুললে কয়েকদিন ভিডিও আপলোড করে যদি ভিউ না আসে সে ক্ষেত্রে যদি ভিডিও আপলোড করা বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে সেখান থেকে টাকা ইনকাম করা তো দূরে থাক চ্যানেল পুরোপুরি ডাউন হয়ে যাবে।
- এজন্য নতুন ইউটিউবারদের ইউটিউব চ্যানেল খোলার পরে প্রথম কাজ হবে কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও তাই অনুযায়ী নিয়মিত আপলোড করা।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে ইউটিউব গুগলের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। সুতরাং কেউ যদি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চায় তাহলে অবশ্যই তার একটি জিমেইল একাউন্ট এর প্রয়োজন হবে। একটি মোবাইল ক্রয় করার পর মোবাইল চালনা করার জন্য একটি জিমেইল একাউন্ট প্রবেশ করাতে হয়। তবে সেই অ্যাকাউন্টটি প্রফেশনালি তৈরি করা হয় না। তাই কেউ যদি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চায় তাহলে উচিত হবে ইউটিউব চ্যানেল খোলার পূর্বে প্রফেশনালি একটি জিমেইল একাউন্ট ক্রিয়েট করা। সুতরাং কেউ যদি বলে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো তাহলে সর্বপ্রথম একটি প্রফেশনাল জিমেইল একাউন্ট তার সংগ্রহে রাখতে হবে।
যেহেতু ইউটিউব চ্যানেল থেকে অনেকেই টাকা ইনকাম করছে এবং অবশ্যই তারা তাদের বিষয়টিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছে। তাই আপনি যদি ইউটিউবিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান তাহলে প্রত্যেকটি কাজ অবশ্যই প্রফেশনাল ভাবে করার চেষ্টা করতে হবে। একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলতে গেলে অবশ্যই কিছু স্টেপ পার করতে হয়। কম্পিউটার এবং মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম মেনে ইউটিউব চ্যানেল খোলা সম্ভব। চলুন তাহলে এবার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার ক্ষেত্রে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় সেগুলো পর্যায়ক্রমে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথম ধাপ
নতুন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে গেলে অবশ্যই আপনাকে কম্পিউটারের গুগল ক্রোম ব্রাউজার থেকে ইউটিউব এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি এখান থেকেও সরাসরি এই লিংকে ক্লিক করে ইউটিউবের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন। যদি ওই ব্রাউজারে আপনার জিমেইল একাউন্ট লগইন করা থাকে তাহলে সরাসরি ইউটিউবে ওয়েবসাইটে আপনাকে নিয়ে যাবে। আর যদি জিমেইল একাউন্ট লগ ইন করা না থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে লগইন করার জন্য সাজেস্ট করা হবে। লগইন করার জন্য আপনার জিমেইল এবং জিমেইল এর পাসওয়ার্ড দিয়ে এন্টার চাপ দিলেই ইউটিউব এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপ
ইউটিউব এর ওয়েবসাইটে লগইন হয়ে গেলে ইউটিউব এর একটি ড্যাশবোর্ড আপনার সামনে প্রদর্শন করা হবে। ড্যাশবোর্ডের ডান দিকে একটি প্রোফাইল আইকন দেখা যাবে এবং সেখানে ক্লিক করতে হবে। এরপর একটি “Setting” নামক অপশন দেখা যাবে সেখানে ক্লিক করে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এর কার্যক্রম চালু হয়ে যাবে। সেটিং এ ক্লিক করার পর একটা নতুন পেজ সামনে চলে আসে তাতে একটি “Your Channel” নামক অপশন দেখতে পাওয়া যায়। ওই অপশনের নিচের দিকে আরও ৩ টি অপশন পরিলক্ষিত হয় অপশন ৩ টি নিচে দেওয়া হল।
- Channel Status and Features
- Create a New Channel
- View Advanced Settings
এরপর “Create a New Channel” অপশনে ক্লিক করলে “Create your channel name” নামক আরো একটি অপশন সামনে চলে আসবে। এ পর্যায়ে এসে পূর্বে সিলেক্টকৃত নাম অর্থাৎ আপনার চ্যানেলের নাম দিয়ে দিতে হবে। নাম দেওয়ার পর ক্লিক করলেই নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার ক্ষেত্রে অনেকে নিজের নাম ব্যবহার করে বা অন্য কোন ব্যান্ড নাম দিয়ে চ্যানেল প্রচারণা করতে চায়।
তৃতীয় ধাপ
নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার ক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত সকল কাজ যদি সঠিকভাবে করা হয় তাহলে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে গেছে। কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলব এ বিষয়টির তৃতীয় এবং শেষ ধাপে এসে চ্যানেলটিকে কাস্টমাইজ বা নিজের মতো করে সাজাতে হয়। প্রথমেই বলেছিলাম একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল ঠিক তখনই দর্শকের কাছে মনোনয়ন পাবে যখন চ্যানেলটি আকর্ষিত হবে। আর সেই আকর্ষণ করানোর জন্যই চ্যানেলটিকে সুন্দর করে সাজাতে হয়। চ্যানেলটিকে কাস্টমাইজ করার জন্য প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হয়।
এরপর সামনে “Your channel” নামক একটি অপশন আসে এবং সেখানে ক্লিক করতে হবে। উপরে ডান দিকে আরও একটি অপশন দেখতে পাওয়া যাবে সেটি হল “CUSTOMISE CHANNEL”। এখানে ক্লিক করলে বর্তমান থিম অনুযায়ী তিনটি অপশন সামনে আসবে। সেগুলো হল Layout, Branding এবং Basic Info।
“Basic Info” অপশনে ক্লিক করলে চ্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। পরবর্তীতে আপনার দর্শকরা যেন আপনার সাথে যোগাযোগ অথবা আপনার চ্যানেল সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানতে পারে সেজন্য এখানে যোগাযোগের জন্য ইমেইল, ল্যাঙ্গুয়েজ এবং সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট সেট করে দিতে হয়।
“Branding” অপশনে ক্লিক করলে চ্যানেল কাস্টমাইজ করার ৩ টি বিষয় সামনে আসে। সেগুলো হলো Profile Picture, Banner Image এবং Video Watermark। বিষয়গুলো নিজের মতো করে ভালোভাবে যোগ করে নিতে হবে।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এই প্রশ্নতে উপরের বিষয়গুলো যদি সফলভাবে করা যায় তাহলে একটি নতুন প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলা হয়ে গেল। এর পরের বিষয় আমরা আর্টিকেলে সর্ব প্রথমে আলোচনা করেছিলাম সেটি হল একটি ইউটিউব চ্যানেলের মূল বিষয় হলো ভিউ। আর সেই ভিউ আনতে হলে অবশ্যই চ্যানেলে ভালো মানের কোয়ালিটিফুল ভিডিও আপলোড করতে হবে। যদি ভালো মানের এবং সৃজনশীল উপায় ভিডিও তৈরি করা হয় তাহলে দর্শকদের অবশ্যই নজরে আসবে। পাশাপাশি থামনেল ভালো করে করার চেষ্টা করতে হবে।
একটি চ্যানেলে ভালো মানের চাহিদা সম্পন্ন ভিডিও আপলোড করার পাশাপাশি আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে হয় সেটি হল “Copyright Issue”। অন্য কোন চ্যানেল বা কোথাও থেকে ভিডিও ডাউনলোড করে নিজের চ্যানেলে কখনোই আপলোড করা যাবে না। এতে করে চ্যানেলে কপিরাইট ইস্যু আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
আমরা ইতিমধ্যে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এই বিষয়টিতে কম্পিউটার থেকে গুগল ক্রোম ব্রাউজারে গিয়ে একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি। ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার বিষয়টি অনেক সহজ। তবে যাদের কাছে কম্পিউটার নেই তারা কি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবে না? আসলে যাদের কাছে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই তারাও মোবাইলের মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবে। তাই কেউ যদি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে পারে তাহলে খুব সহজেই মোবাইল দিয়েও প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলা সম্ভব।
আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলের ইউটিউব চ্যানেল খোলার বিষয়টিতে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপ ভালোভাবে ফলো করেন তাহলে মোবাইল দিয়েও খুব সহজেই ইউটিউব চ্যানেল খোলা সম্ভব। শুধুমাত্র কিছু ক্ষেত্রে ফাংশান গুলো চেঞ্জ করতে হবে। চলুন তাহলে এবার মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম গুলো পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক।
- মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য ক্রোম ব্রাউজার এ গিয়ে উপরে ডান দিকে কর্নারে তিনটি ডট দেওয়া একটি অপশন দেখা যাবে। সেখানে ক্লিক করে “Desktop Mode” অন করে নিতে হবে।
- ডেক্সটপ মোড অন হয়ে গেলে উপরে বর্ণিত পদ্ধতি গুলো অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপগুলো ভালোভাবে পড়ে মোবাইলে চ্যানেল খোলার ক্ষেত্রেও অনুসরণ করতে হবে।
- একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট হয়ে গেলে ঠিক উপরের বর্ণিত বিষয়ের সাথে মিল রেখে চ্যানেল কাস্টমাইজ করে সুন্দর করে সাজাতে হবে। চ্যানেল তৈরি হয়ে গেলে সেটিংস অপশনে গিয়ে নিজের মতো করে সবকিছু সাজানো এবং ম্যানেজ করা যাবে।
- যদিও মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করা যায় তবে সেটি যদি বড় পরিসরে করতে চাওয়া হয় তাহলে ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপে তৈরি করে রাখাই ভালো।
প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ বিষয়টি আলোচনা করার মাধ্যমে আমরা ল্যাপটপের পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানতে পেরেছি। আমরা আর্টিকেলে সর্ব প্রথমে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করেছিলাম সেটি হল কেউ যদি ইউটিউবিংকে প্রফেশনাল হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে অবশ্যই প্রত্যেকটি কাজ প্রফেশনাল ক্যাটাগরিতে করা প্রয়োজন। তাই প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম বলতে গেলে আমরা জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে অর্থাৎ যেই জিমেইল একাউন্ট দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করা হবে সেটি পর্যন্ত প্রফেশনাল ভাবে তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
আরোও পড়ুনঃ আউটসোর্সিং কি? আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি
যদি একটি চ্যানেল প্রফেশনাল ভাবে তৈরি করা না হয় সে ক্ষেত্রে ওই চ্যানেলটি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা কম পায়। আর ইউটিউবের ভিডিওর ভিউ আসে একমাত্র দর্শকের গ্রহণযোগ্যতার খাতিরে। ভালো উপস্থাপনা, ভালো এডিটিং, ভালো এসিও এবং প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করলে অবশ্যই একদিন সফলতার শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার ক্ষেত্রে যে সকল বিষয় জানতে হয় সেগুলোর নিচে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো।
- সর্বপ্রথম এই নিজের ইমেইল আইডি যেটা প্রফেশনাল ভাবে তৈরি করা হয়েছে সেটা দিয়ে ইউটিউব ওয়েব ব্রাউজারে লগইন করতে হবে।
- লগইন কার্য সম্পাদন হওয়ার পর উপরে ডানদিকে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করলে কিছু অপশন চলে আসে।
- “Setting” অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে চ্যানেলের সেটিং পেজে এগিয়ে সেটিং সংক্রান্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে সেটআপ করতে হয়।
- “Setting” অপশন থেকে “Channel”অপশনে ক্লিক করে “Feature Eligibility”অপশনে গিয়ে “Eligible Option” ক্লিক করতে হবে।
- প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেলের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হলো ফোন নাম্বার ভেরিফাই করা। এক্ষেত্রে “Verify phone number” অপশনে ক্লিক করে কান্ট্রি সিলেক্ট করে, মোবাইল নাম্বার টাইপ এবং “Get Code” অপশনে ক্লিক করে পাঠানো কোড দিয়ে ভেরিফিকেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ বিষয়টি খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করার চেষ্টা করেছি। ল্যাপটপ এবং কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়বস্তু আর্টিকেলে বিদ্যমান রয়েছে। তাই কেউ যদি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চায়, তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই প্রফেশনালি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবে। এরপরেও ইউটিউব চ্যানেল খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে যদি আপনাদের কোন সমস্যা হয় তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
পাশাপাশি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের যাদের ইউটিউব চ্যানেল সম্পর্কে আগ্রহ রয়েছে তাদেরকে বিষয়টি জানানোর জন্য আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url