জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক বিস্তারিত জানুন

জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক আবার জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন পাস করতে হলে কোন কোন বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে, এ প্রশ্নগুলো আমরা হর হামেশাই করে থাকি। আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে অনেক সময় জমি বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে কোন কোন ব্যাংকের আওতায় এই সিস্টেমটি চালু রয়েছে সেটা জানা খুবই জরুরী। 
জমি-বন্ধক-রেখে-লোন-দেয়-কোন-ব্যাংক
তাই আজকের এই আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানার, পাশাপাশি আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হল কোন কোন ব্যাংক মর্টগেজ লোন দেয়, জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন, সিসি লোন কোন কোন ব্যাংক দেয় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। সুতরাং জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হলে অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত করুন।
পোস্ট সূচিপত্র

কোন কোন ব্যাংক মর্টগেজ লোন দেয়

আর্টিকেলে শুরুতেই একটি বিষয় আপনাদের মনে ঘুরপাক খেতে পারে। সেটি হল মর্টগেজ লোন আবার কি। মর্টগেজ লোন হলো একজন ব্যক্তি ব্যাংক বা আর্থিক পরিস্থান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জামানত রেখে তার বিপরীতে লোন নিলে তাকে বন্ধকী ঋণ বা মর্টগেজ লোন বলা হয়ে থাকে। এই লোনটির একটি বৈশিষ্ট্য হলো সাধারণত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই লোনের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি মর্টগেজ লোনের আওতায় লোন গ্রহণ করে তাহলে ৫ থেকে ২০ বছর বা তারও বেশি ঋণ পরিশোধের সময় পেয়ে থাকেন। 

তবে মর্টগেজ লোনের জন্য অবশ্যই ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট তার স্থায়ী সম্পদ জামানত হিসেবে রাখতে হয়। উক্ত লোনটি গ্রহণ করার জন্য বন্ধকি স্থায়ী সম্পত্তির মূল্যের পরিপেক্ষিতে ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত লোন গ্রহন সম্ভব। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে সেটি হল, কোন স্থায়ী সম্পত্তির মূল্য পূর্ব থেকে নির্ধারিত থাকে না। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি সম্পত্তির মূল্য যাচাই-বাছাই করে যে পরিমাণ মূল্য স্থির হবে সেই অনুযায়ী লোন ইস্যু করা হয়ে থাকে। আশা করি মর্টগেজ লোন বিষয়টি কি আপনারা এখন বুঝতে পেরেছেন। 

আসুন তাহলে এবার জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক জানার পূর্বে কোন কোন ব্যাংক মর্টগেজ লোন দেয় সেই বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। বাংলাদেশে যত ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে সবগুলো প্রতিষ্ঠানই মর্টগেজ লোন প্রদান করে থাকে। সাধারণত ঋণ গ্রহিতারা বিভিন্ন কাজের ভিত্তিতে এ ধরনের লোন গ্রহণ করে। কারো যদি ইমারজেন্সি অর্থের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই বন্ধকী ঋণ বা মর্টগেজ লোনের আওতায় লোন গ্রহণ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। 

প্রত্যেকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোনের সিকিউরিটি হিসেবে ঋণগ্রহীতার কাছে থেকে সম্পত্তির কাগজপত্র এমনকি পাওয়ার অফ এটনি নিয়ে রাখেন। এর অর্থ হল কোন কারণবশত যদি উক্ত ব্যক্তি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উক্ত সম্পদের মালিক হয়ে যাবে। নিচে যে সকল ব্যাংক মর্টগেজ লোন প্রদান করে তাদের নাম দেয়া হলো।
  • সোনালী ব্যাংক
  • অগ্রণী ব্যাংক
  • কৃষি ব্যাংক
  • ইসলামী ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক
  • ব্র্যাক ব্যাংক
  • আইএফআইসি ব্যাংক
  • এবি ব্যাংক
  • এনআরবিসি ব্যাংক
উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ব্যাংক থেকেই মর্টগেজ অর্থাৎ জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন পাওয়া সম্ভব। যেহেতু প্রত্যেকটি ব্যাংকের মর্টগেজ লোন বিষয়ে বলতে গেলে অর্থাৎ সকলের লোন সিস্টেম একই রকমের হয়ে থাকে। তাই সবগুলো ব্যাংকের পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা না করে আমরা আজকে শুধু সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন

সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ব্যাংক। অন্য সকল ব্যাংকের মতোই সোনালী ব্যাংকেও মর্টগেজ লোনের ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী না হওয়ার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ব্যাংকগুলো বিভিন্ন শর্তাবলী অনুযায়ী লোন সিস্টেম চালু করে রেখেছে। আর মর্টগেজ লোন পদ্ধতি কর্তৃপক্ষ গুলো এজন্য চালু করেছে যেন ঋণগ্রহীতা কোনভাবে যদি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ যেন ঋণের অর্থের বিনিময়ে সম্পদে দখলদারিত্ব করতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হিসেব বলছে ব্যাংকগুলো যত পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে তার ৬৪% 
আবাসন বা রিয়েল এস্টেট সম্পদ বন্ধক রেখে লোন সিস্টেম পরিচালনা করা হয়। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ব্যক্তিগত বা পার্সোনাল লোনের জন্য নিশ্চয়তা হিসেবে গ্যারান্টার নিযুক্ত করার বিষয়টি। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বড় ব্যবসায়ী, বাড়িওয়ালা এবং সরকারি চাকরিজীবী যাদের সম্পদ রয়েছে। সেই সম্পদ বন্ধক রাখার ভিত্তিতে মর্টগেজ লোন পাস করে থাকে। আবার সহজ কথায় বলতে গেলে জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক এই প্রশ্নটিতেও সোনালী ব্যাংকের নাম চলে আসে। আমরা ইতিমধ্যে অবগত হতে পেরেছি যে মর্টগেজ লোন সাধারণত জমি বন্ধক হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছে 

রাখার বিপরীতে জমির মূল্য অনুযায়ী ৫০% থেকে ৭০% ঋণের সুবিধা ভোগ করে থাকে। সোনালী ব্যাংক ও এই সিস্টেমের বাহিরে নয়। তারাও ঋণ গ্রহিতাদের সম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করে থাকে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এবং চাকরিজীবীরা ঋণ নেওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চাকরিজীবীরা যদি মর্টগেজ লোন নিতে চাই তাহলে চাকরির বিস্তারিত, মাসিক বেতন, অন্যান্য আয়, ঋণ খেলাপি আছে কিনা এগুলোর প্রমাণপত্র দাখিল করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে থাকে। 

তবে মর্টগেজ লোন পাওয়ার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরম পূরণের সাথে জমা দিতে হয়। সোনালী ব্যাংক থেকে মর্টগেজ লোন অর্থাৎ জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে সেগুলোর নিচে তুলে ধরা হলো।
  • ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
  • পূর্বের এক বছরের ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
  • বিদ্যুৎ বিল অথবা পানির বিলের ফটোকপি লাগবে।
  • গত ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করতে হবে।
  • যে জমি বন্ধক রাখবে সেই জমির খতিয়ান, সি এস রেকর্ড, এস এ রেকর্ড, আর এস রেকর্ড, বিএস রেকর্ড সহ সকল দলিল পত্র এবং খারিজের পেপার জমা দিতে হবে।
  • যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে অবশ্যই মালিকানা সাপেক্ষ সকল প্রমান পত্র শো করতে হবে।
  • চাকুরিজীবী হলে অবশ্যই চাকুরীর বর্ণনা এবং মাসিক বেতনের প্রমাণপত্র লাগবে।
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে গত তিন বছরের ব্যবসার আপডেটেড ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন পড়বে।
উপরে বর্ণিত এ সকল কাগজপত্র আবেদন ফরম এর সাথে সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় গিয়ে জমা দিলেই বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ লোন প্রদান করবে। তবে যেকোনো লোন নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই ব্যাংকে নিয়োগকৃত কর্মচারীর সাথে আরো ভালোভাবে আলাপ-আলোচনা সেরে নিতে হবে।

জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক

আমরা ইতিমধ্যে একটি বিষয়ে সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম সেটি হল মূলত কোন ব্যাংক থেকে মর্টগেজ লোন দেয় এবং জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক বিষয়টি মোটামুটি একই ধরনের। কেননা মর্টগেজ লোন সাধারণত জমি, ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বন্ধক রাখাকে বলা হচ্ছে। তাই কোন ব্যাংকগুলো জমি বন্ধক রেখে লোন প্রদান করছে আর মর্টগেজ লোন দিচ্ছে বিষয়টি একই দাঁড়ায়। অলরেডি আমরা জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় বা মর্টগেজ লোন প্রদান করে এরকম ব্যাংক অর্থাৎ সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছি। 

শুধু সোনালী ব্যাংক নয় বাংলাদেশের যতগুলো সরকারি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে সব ব্যাংকগুলোই জমি বন্ধক রেখে লোন প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জমি বন্ধক রেখে ঋণ প্রদানে অনেকটাই এগিয়ে। জামানত হিসেবে জমি বন্ধক রেখে কৃষকদেরকে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি বা সেচ কাজের জন্য সহায়তা করার ক্ষেত্রে ঋণ প্রদান করে থাকে। জমির দলিল জমা দিয়ে ঋণ নিতে হলে অবশ্যই সর্বপ্রথম ব্যাংক নির্বাচন করা খুবই জরুরী। বিশেষ করে যে সকল ব্যাংকে সুদের হার কম ধরা হচ্ছে সেই সকল ব্যাংকেই ঋণের জন্য আবেদন করতে হয়। 
আর এ ধরনের তথ্য জানার জন্য প্রত্যেকটি ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে কথা বললেই বর্তমান সময়ে তারা কত শতাংশ হারে সুদের হার হিসেব করছে সেটি জানা যাবে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর সাথে আবেদনপত্র জমা দিলেই সকল ব্যাংক থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ঋণ দেওয়া হবে কিনা সেটা জানানো হয়। আসুন তাহলে এবার কোন বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে অথবা কোন যোগ্যতার বলে জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে সেটি জানা যাক।

জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন পাওয়ার যোগ্যতা

জমি বন্ধক রেখে লোন পাওয়ার জন্য যে কোন ব্যক্তি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহকারে আবেদন পত্র দাখিল করতে পারবে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ বিচার বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে ঋণগ্রহীতাকে ঋণ প্রদান করা হবে কিনা সেটি নির্ধারণ করে থাকে। তাহলে ঋণ পাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং সঠিক বয়স হতে হবে। নিচে জমি বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা কি কি হতে পারে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
  • ঋণ নিতে আগ্রহী ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ২১ বছরের বেশি হতে হবে।
  • ঋণের পরিবর্তে জমির মালিক হওয়ার পাশাপাশি উপার্জনে সক্ষম বলে গণ্য হতে হবে।
  • মর্টগেজ বা জমি বন্ধক রেখে লোন দেয়ার সকল সিস্টেম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে।
  • ইনকাম সোর্স থাকতে হবে এবং ইনকাম সোর্স এর প্রমাণ পত্র লিপিবদ্ধ করতে হবে।
  • ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদনপত্রে যে সকল কারণ দর্শানো হয়েছে সেগুলো সত্য বলে প্রমাণিত হতে হবে।
  • বন্ধকী জমির সঠিক মালিকানা এবং মালিকানা প্রমাণপত্র বিচার বিশ্লেষনের সময় সঠিক হতে হবে।
  • পূর্বে যদি লোন ভঙ্গ, ব্যাংক কেলেঙ্কারি এজাতীয় কোন রেকর্ড থাকে তাহলে লোন বাতিল বলে গণ্য হবে।
  • আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশের একজন স্থায়ী এবং সুনাগরিক হতে হবে।
আশা করি আপনারা জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক অথবা জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন নিতে হলে কোন বিষয়গুলোর উপর জ্ঞান থাকতে হবে সেগুলো জানতে পেরেছেন। ভবিষ্যতে আপনি যদি এ ধরনের লোন নিতে আগ্রহী হন তাহলে উপরে বর্ণিত যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো দরকার পড়বে।

সিসি লোন কোন কোন ব্যাংক দেয়

মর্টগেজ লোন বা বন্ধকী লোন বিষয়টির সাথে সিসি লোনের অনেকটাই মিল রয়েছে। বন্ধকি লোনের ক্ষেত্রে যেমন কিছু সম্পদ জামানত হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। ঠিক তেমনি সিসি লোনের বেলাতেও উপযুক্ত কিছু সম্পদ বা অলংকার বন্ধক হিসেবে রাখতে হয়। ক্রেডিট লোন বা জামানতের ভিত্তিতে লোন নেওয়া কে সিসি লোন বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তবে মর্টগেজ লোনে সাধারণত সম্পদ বন্ধ হোক রেখে লোন গ্রহণের বিষয় উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সিসি লোনের বেলায় সম্পদ বন্ধকের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফ্ল্যাট, অলংকার এ যাবতীয় জিনিসপত্র ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে 

বন্ধক হিসেবে রাখা যায়। তবে মনে রাখতে হবে এ সকল লোনের জন্য যেসব সম্পদ বন্ধক রাখা হচ্ছে সেগুলো অবশ্যই বৈধ হতে হবে। যদি লোনের আবেদন করার পর কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখে সম্পদের মালিকের কাগজ বা সম্পদ বৈধ নয় তাহলে লোন বাতিল বলে গণ্য হবে। বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি অনেকগুলো ব্যাংক যেমন মর্টগেজ লোন প্রদান করে থাকে। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটি ব্যাংকের আওতায় সিসি লোন গ্রহণেরও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক ডকুমেন্টস এবং যোগ্যতা অনুযায়ী সঠিক বলে গণ্য হলেই ঋণ প্রাপ্তি সম্ভব। 

আসুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক সিসি লোন কোন কোন ব্যাংক দেয় সেটির তালিকা। নিচে ব্যাংকগুলোর নাম পর্যায়ক্রমে দেয়া হলো।
  • ইসলামী ব্যাংক
  • পূবালী ব্যাংক
  • অগ্রণী ব্যাংক
  • সোনালী ব্যাংক
  • উত্তরা ব্যাংক
  • কৃষি ব্যাংক
  • জনতা ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক
  • এবি ব্যাংক
  • ব্র্যাক ব্যাংক

গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন

প্রত্যেকটি মানুষেরই একটি স্বপ্ন থাকে যেন শেষ বয়সে হোক আর যখনই হোক না কেন তার যেন একটি সুখের নিবাস থাকে। তবে স্বপ্ন থাকলেও অর্থের অভাবে অনেক সময় সেটি আর পূরণ হয় না। ঠিক তখন মনের মধ্যে চিন্তা আসে আমার তো এক টুকরো জমি আছে। যদি জানতে পারতাম জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক গুলো। তাহলে জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন যদি নিতে পারতাম তাহলে আমার শখের বাড়িটি হয়ে যেত। সেই সকল স্বপ্নবাজ মানুষদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাড়ি করার জন্য লোন প্রদান করে থাকে। 
মূলত বাড়ি করার জন্য এ ধরনের লোনকে হোম লোন বলা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র গ্রামের নয় বাংলাদেশের আপামর জনগোষ্ঠীর হোম লোনের সুবিধা করা হয়েছে। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে হোম লোনের জন্য একমাত্র যোগ্য হলেই কেবলমাত্র লোন গ্রহণযোগ্য হবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটি হল যে জায়গায় আপনি বাড়ি করতে ইচ্ছুক সেই জায়গার পজিশন আসলে ডিমান্ডেবল কিনা। আবার হোম লোনের জন্য যদি ব্যাংকের কাছে জমি বন্ধক রাখতে চান সেক্ষেত্রে আপনার জমির কাগজপত্র সঠিক হওয়ার পাশাপাশি আপনার নিজে জমিটির মালিক হতে হবে। 

একটি পরিসংখ্যান বলছে গৃহঋণ প্রদানে শীর্ষে আইএফআইসি ব্যাংক রয়েছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও গ্রামের এবং শহরের লোকজনদের হোম লোনের ব্যবস্থা করে রেখেছে। আমরা আজকে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে গ্রামে বাড়ি করার জন্য লোন নিতে হলে কি কি বিষয়ে উপর জ্ঞান অর্জন করতে হবে সেটি জানব। অনেকে আছে যারা শহরে চাকরির সুবাদে বসবাস করছে ভাড়া হিসেবে। সে যদি তার পৈতৃক নিবাসে একটি পাকা বাড়ি করতে চায় তাহলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে উক্ত ব্যক্তিটিকে ঋণ প্রদান করবে। 

আবার কেউ যদি গ্রামের বাড়ির দিকে পুনরায় সংস্কার করতে চায় সেক্ষেত্রেও গৃহঋণ পেয়ে যাবে। আসুন তাহলে কোন যোগ্যতা বা বিষয়ের ভিত্তিতে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক গ্রামে বাড়ি করার জন্য লোন বা গৃহঋণ প্রদান করে থাকে।
  • আবেদনকারীর বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে।
  • ঋণগ্রহীতাকে অবশ্যই সচ্ছল হতে হবে অর্থাৎ ইনকাম সোর্স ভালো থাকতে হবে।
  • মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাখা আছে এরকম জায়গায় সম্পত্তি হতে হবে।
  • সম্পত্তি অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় হতে হবে।
  • সম্পত্তি নিষ্কর হতে হবে

ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি

আমরা এ পর্যন্ত জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন এবং জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারলাম। শুধু লোন নিলে তো হবে না সেটা পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকতে হবে। কেউ যদি লোন নেওয়ার পর পরিশোধ করতে না পারে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এজন্য সর্বপ্রথমে আমাদের নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে লোন নেওয়ার পর আমরা সেটা পরিশোধ করতে পারব কিনা। যদি নিজেকে সচ্ছল এবং পরিষদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনে হয় তাহলেই কেবলমাত্র ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা শ্রেয়। 

পবিত্র কুরআনে পর্যন্ত উল্লেখ রয়েছে “যেন মৃত ব্যক্তির সম্পদ বন্টন ওসিয়ত পালনের পূর্বেই তার ঋণ পরিশোধ করা হয”। এছাড়া ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ পরিশোধ না করলে আরো কিছু শাস্তির বিধান রেখেছে। সেগুলো নিচে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো।
  • ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বিলম্ব ফি বা জরিমানা গুনতে নতে হয়। কিস্তি বা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে যতদিন না পর্যন্ত দিতে পারবে সেই অনুযায়ী বিলম্ব ফি ধরা হবে।
  • আবার যতদিন না পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করবে সেই অনুযায়ী সুদের হার বাড়তেই থাকবে। যার ফলে প্রকৃত যে সুদের হার ছিল তার থেকে অনেক গুণ বেশি শুধু শুধু টাকা দিতে হবে।
  • যারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তারা যদি টাকা ঋণ নেওয়ার পর দিতে ব্যর্থ হয় সে ক্ষেত্রে সুদের হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার ক্রেডিট কার্ড স্কোর কমতে থাকে। ফলে পুনরায় ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়।
  • শেষ পর্যায়ে যদি ঋণ পরিশোধ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় তাহলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশ্যই আইনের আশ্রয় গ্রহণ করবে। আইন অনুযায়ী ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলা করবে। মামলার রিট অনুযায়ী ব্যক্তিকে অর্থদণ্ড সহ সাজা প্রদান করা হবে।
সুতরাং ঋণ নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভেবেচিন্তে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে টাকা তো পরিশোধ করতে হবে তার সঙ্গে থাকবে কারাদণ্ড। টাকার সঙ্গে সঙ্গে মানসম্মান ও ধুলোয় মিশিয়ে যাবে। এজন্য অবশ্যই আমাদেরকে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

লেখকের শেষকথা

আজকের বিষয়বস্তু আমাদের দৈনন্দিন এবং পারিপার্শ্বিক উভয় বিষয়েই প্রভাব ফেলবে। ভবিষ্যতে জমি বন্ধক রেখে লোন দেয় কোন ব্যাংক এবং জমির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন নেওয়ার পরে যদি ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে কি রকম সমস্যায় পড়তে হয় সে বিষয়গুলো সম্পর্কে আশা করি সকলে বুঝতে পেরেছেন। সুতরাং ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার এবং কর্মচারীর সাথে ভালোভাবে কথা বলে জেনে বুঝে তবেই ঋণের জন্য আবেদন করুন। 

আমরা সবসময় আমাদের ওয়েবসাইটে এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। পাশাপাশি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর উদ্দেশ্যে একটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url