হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন যেভাবে পাবেন
হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন পদ্ধতিগুলো জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একজন ব্যক্তি তার শখের বাড়িটি নির্মাণ করার সময় যদি কোন ভাবে অর্থের প্রয়োজন পড়ে সেই সময় বিভিন্ন জায়গায় লোনের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। তবে আপনি যদি লোন নিয়ে বাড়ি করার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আজকে আমরা হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আরো যে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চলেছি সেগুলো হল বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং লোন এবং হাউজ লোন কিভাবে পাব, সরকারি কর্মচারীদের হাউজ বিল্ডিং লোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারব। সুতরাং হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞান অর্জন করার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন
“বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন” বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখযোগ্য। দেশের গৃহায়ন সমস্যার সমাধানে জনসাধারণকে গৃহনির্মাণ ও তথা সামগ্রিক উন্নয়নের প্রেক্ষিতে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করাই উক্ত প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য। ১৯৫২ সালে দেশের গৃহ নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন তাদের যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেশের গৃহনির্মাণ ও গৃহায়ন ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক সমৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির ৭ নম্বর জারিকৃত আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (বিইচবিএফসি) পুনরায় গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পরিশোধিত মূলধনের সব টাকাই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিশোধিত হয়ে থাকে। এর অনুমোদিত মূলধনের হিসেব ১১০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের হিসেব ১১০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশের গৃহায়ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকদেরকে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন প্রদান করে থাকে। তবে হাউজ লোন কিভাবে পাব বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নয়। কিছু শর্তসাপেক্ষে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করার মাধ্যমে উক্ত লোনের আওতায় লোন গ্রহণ করা সম্ভব।
হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন
বাংলাদেশের গৃহ সমস্যা সমাধান করার পাশাপাশি সামগ্রিক গৃহায়ন ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের মূল উদ্দেশ্য। বিগত কয়েক বছর যাবত দেশের গৃহায়ন খাতে অর্থ সংস্থানের ক্ষেত্র একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন। গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদানের পাশাপাশি উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতেও ঋণ প্রদান করে থাকে। তবে এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষটি শুধুমাত্র গৃহায়নের ক্ষেত্রে অর্থাৎ হাউজ লোনের ক্ষেত্রেই বেশি পরিমাণ ঋণ প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন তাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ছয় সদস্যের পরিচালনা পরিষদ রয়েছে।
যার একজন চেয়ারম্যান রয়েছে যিনি সরকার কর্তৃক মনোনীত হয়ে থাকেন। সরকারি নির্দেশনার আলোকে হাউজ বিল্ডিং লোন প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন পরিষদের উপর বিদ্যমান থাকে। হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে হয় পাশাপাশি সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহে রাখতে হয় সেই বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়াও একজন উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ৬ জন মহাব্যবস্থাপনা পরিচালক এর মাধ্যমে লোন পাস হবে কিনা সেটি নির্ধারণ হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং লোন
আমরা ইতিমধ্যে অবগত হয়েছি যে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন এর আওতায় ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক খাতে ঋণ প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও হাউজ বিল্ডিং ঋণের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা এবং অনুদান সবচেয়ে বেশি। শুধুমাত্র দেশের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে যেন কারো কোনো রকম বাধা সৃষ্টি না হয় সেই লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে কম সুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে যাচ্ছে। হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন এর কাছ থেকে যদি লোন গ্রহণ করা হয় সে ক্ষেত্রে চক্রবৃদ্ধি সুদের বেড়াজালে পড়ার কোন সম্ভাবনা নাই।
অন্যান্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি সুদের উপরে সুর দিয়ে চক্রবৃদ্ধি মুনাফা তৈরি করে থাকে সেখানে হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন সুদ কম রাখার পাশাপাশি কোনরকম চক্রবৃদ্ধি প্রক্রিয়া অবলম্বন করে না। হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন এর আওতায় সাধারণ মানুষ সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশি কৃষকরাও শুধুমাত্র ৭% সুদের হারে লোন গ্রহণ করতে পারে। অন্যদিকে ফ্ল্যাট অথবা বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ৯% সুদের হারে ঋণ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় একটি সুবিধা হল লোন নেওয়ার পরে একটি দীর্ঘ মেয়াদী সময়সীমা এর মাধ্যমে লোন পরিশোধের সুযোগ
রয়েছে। লোনের মেয়াদ ২৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে যা ঋণগ্রহীতার পক্ষে অনেকটাই সুবিধাজনক। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে হাউজ লোন কিভাবে পাব সে ক্ষেত্রে সামান্য কিছু পদক্ষেপ অবলম্বনের মাধ্যমে খুব সহজেই হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন থেকে লোন নেওয়া সম্ভব। তবে বলাবাহুল্য যে বাড়ির নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন এর আওতায় ১১ ধরনের ঋণ সেবা প্রদান করে। প্রধান কৃত সেবাগুলো হল।
- আবাসন ঋণ
- নগর বন্ধু
- প্রভাস বন্ধু
- পল্লীমা
- কৃষক আবাসন
- ঋণ আবাসন
- মেরামত
- আবাসন উন্নয়ন
- ফ্ল্যাট ঋণ
- ফ্ল্যাট নিবন্ধন ঋণ
- হাউসিং ইকুপমেন্ট ক্রয় ঋণ
উপরে বর্ণিত বিষয়গুলোর ভিত্তিতে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশের আপামর জনগণকে ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। তবে সব ঋণের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু শর্তাবলী এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদানের মাধ্যমে ঋণ নেওয়া সম্ভব। আজকে আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং লোন এর আওতায় আবাসন ঋণ বা হাউজ লোন কিভাবে পাব এবং সরকারি কর্মচারীদের হাউজ বিল্ডিং লোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো।
হাউজ লোন কিভাবে পাব
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন মূলত হাউজ লোন নেওয়ার ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে লোন প্রদান করে থাকে। কেউ যদি তার নিজস্ব বাড়ি নির্মাণ করতে চাই অথবা ফ্ল্যাট ক্রয় করে সেখানে থাকতে চায় সে ক্ষেত্রে হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন থেকে লোন নিতে পারবে। তবে প্রতিষ্ঠানটি ফ্ল্যাট ক্রয় করার ক্ষেত্রে লোন দেওয়ার পক্ষে কিছুটা রক্ষণশীল মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। অবশ্য সরকারি কর্মচারী হলে সে ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা হিসেবে দেখা হয়। কেননা ঋণ গ্রহণ করার পর ঋণগ্রহী তার ঋণ পরিশোধ ক্ষমতার উপরেই কত টাকা এবং ঋণ দেওয়া হবে কিনা সেটি নির্ভর করে।
আর তাই সরকারি চাকরিজীবী হলে তার বেতন থেকে প্রতি মাসের ঋণের কিস্তি অটোমেটিক ভাবে কেটে নেওয়ার সিস্টেম রয়েছে। যার ফলে এই বিষয়টিতে সরকারি চাকরিজীবীরা একটু বেশি অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। আবার কোন ব্যক্তি যদি সরকারি চাকরিজীবী জীবন থেকে রিটার্নমেন্ট নিয়েছে এবং বর্তমান সময়ে পেনশনের আওতায় আছে সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের ঋণ খুব সহজেই নেওয়া সম্ভব। আবাসন ঋণের খাতে গৃহ নির্মাণ বা ফ্ল্যাট ক্রয় করার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে উত্তর প্রতিষ্ঠান। সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদের হারে ঋণ পাওয়া এবং ২০ বছর ঋণ পরিশোধের মেয়াদ অনুযায়ী
বাংলাদেশের যোগ্যতা সম্পন্ন সুনগরিক ব্যক্তি হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। অর্থাৎ ঋণ গ্রহণের পর ঋণ গ্রহীতাকে ৯ পার্সেন্ট সুদের হারে অর্থাৎ প্রতি মাসে লাখে ৯০০ টাকা সুদ প্রদান করতে হবে। এবার অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে হাউজ লোন কিভাবে পাব বা এর শর্তগুলো কি কি। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক কোন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে একজন ব্যক্তি হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন থেকে গৃহ নির্মাণ ঋণ পেতে পারে।
- অবশ্যই বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক হতে হবে।
- বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে রয়েছে এরকম ব্যক্তিরাই আবেদনের সুযোগ পাবে।
- আবাসন ঋণের ক্ষেত্রে অবশ্যই জমির পজিশন এর প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি জমির দলিল, খতিয়ান নং ইত্যাদি কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
- যে স্থানে বাড়ি নির্মাণ হবে সেখানকার জায়গা যদি ডিমান্ডেবল না হয় সে ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ কমে আসতে পারে আবার অনেক সময় ঋণ বাতিল বলে গণ্য হতে পারে।
- কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে ২৪ মাস পর্যন্ত বকেয়া কিস্তি দেওয়ার সুযোগ থাকে।
এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, জামিনদারের আইডি ফটোকপি এবং উভয়ের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। অন্যান্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন এর যে কোন শাখায় গিয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাবে।
সরকারি কর্মচারীদের হাউজ বিল্ডিং লোন
আপনারা ইতিমধ্যে একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন যে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন এর আওতায় যে সকল ঋণ সুবিধা রয়েছে, সেগুলো অন্যান্য সাধারণ ব্যক্তির থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা সহজ শর্তে এবং দ্রুততার সঙ্গে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। আমরা আরো জেনেছি যে সরকারি চাকরিজীবীদের হাউজ বিল্ডিং লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হলো, তাদের মাসিক বেতন ইএফটি (EFT) করার মাধ্যমে মাসিক কিস্তি অটোমেটিক ভাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি কর্তন করে নিবে। যেহেতু কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে আর কোন ঝামেলা থাকছে না।
তাই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি চাকরিজীবীদের হাউজ বিল্ডিং লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। সরকারি চাকরিজীবীদের ও হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাৎ হাউজ লোন কিভাবে পাব এই বিষয়টিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মাথায় রাখতে হবে। উল্লেখযোগ্য প্রমাণপত্র দাখিল করার মাধ্যমে যেমন ঋণ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ঠিক তেমনি কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো পূরণ করার মাধ্যমেই ঋণের আওতায় যাওয়া সম্ভব। আসুন তাহলে এবার চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন লোন প্রদান করে সেই বিষয়গুলো এবার জানা যাক।
- ঋণ প্রার্থী কে অবশ্যই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, কার্যালয় সমূহের স্থায়ী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারী হতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ৫৬ বছর বয়সের বেশি হওয়া যাবে না। অর্থাৎ ঋণ প্রাপ্তির বয়স সর্বোচ্চ ৫৬ বছর ধরা হয়েছে।
- রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি গুলোর নিযুক্ত কর্মচারী এ ধরনের হাউজ বিল্ডিং লোনের আওতায় লোন গ্রহণ করতে পারবেনা।
- কোন কর্মচারী যদি সরকারি কোনো অধিদপ্তরে খন্ডকালীন অথবা চুক্তিভিত্তিক হিসেবে কর্মরত থাকে সেক্ষেত্রেও হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন লোন গ্রহণ করতে পারবেনা।
- সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকুরীর প্রমাণপত্র, সেলারি শীট অর্থাৎ মাসিক বেতন ভাতার প্রমাণপত্র এর প্রয়োজন হবে।
- কোন সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে যদি মামলা-মোকদ্দমা করা থাকে এবং সেই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও হাউজ বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ কোন লোন প্রদান করবে না।
- যারা চাকরি থেকে রিটারমেন্ট নিয়েছে সেক্ষেত্রে যদি পেনশনের আওতায় থাকে তাহলে বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য বিশেষ কিছু কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
হাউজ বিল্ডিং লোন ফরম
আমরা আর্টিকেলের এই পর্যায়ে এসে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন সম্পর্কে জানার পাশাপাশি হাউজ লোন কিভাবে পাব সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণ ব্যক্তি এবং সরকারি চাকরিজীবী বিশেষ কিছু শর্তসাপেক্ষে লোন গ্রহণ করতে পারবে। পাশাপাশি অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আবেদন করার সময় দাখিল করতে হবে। তাহলে কেউ যদি হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন থেকে লোন নিতে ইচ্ছুক হয়। সে ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর সহিত তার নিকটস্থ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরেশন এর শাখায় উপস্থিত হতে হবে।
উপস্থিত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত কর্মচারীকে উক্ত ব্যক্তির চাহিদা সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানালে তিনি একটি হাউজ বিল্ডিং লোন-ফরম দিয়ে দিবে। হাউজ বিল্ডিং লোন ফরমে সঠিকভাবে ঋণগ্রহীতার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর সহ আরো অন্যান্য বিষয়গুলো পূরণ করতে হবে। অন্যান্য বিষয় যেগুলো উল্লেখ থাকবে সেগুলো সঠিক এবং সত্য হতে হবে। যদি ভুল অথবা মিথ্যা কিছু পূরণ করা হয় তাহলে পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে ঋণ আবেদনটি বাতিল বলে গণ্য
করবে। আবেদন পত্রটি সম্পূর্ণ পূরণ করার পর আবেদনপত্রের সাথে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তার নিকট জমা দিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর লোন পাস হলো কিনা সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে।
হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন শাখা সমূহ
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহরে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের শাখা রয়েছে। সুতরাং কেউ যদি হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন নিতে ইচ্ছুক হয় তাহলে তার নিকটস্থ জেলা শহরে খোঁজ করলেই হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন শাখা পেয়ে যাবে। এখানে শুধুমাত্র ঢাকার ভেতরে যেগুলো শাখা রয়েছে তার বর্ণনা দেয়া হলো।
- গুলশান শাখাঃ খ-১২/২, শাহজাদপুর, প্রগতী স্মরনী, গুলশান, ঢাকা।
- পল্লবী শাখাঃ ১২/বি, এভিনিউ-১, প্লট-৯১, কালশী রোড,পল্লবী, ঢাকা।
- মোহাম্মদপুর শাখাঃ প্লট-৬০, ব্লক-ক, পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা।
- মিরপুর শাখাঃ ২৩/এ, এভিনিউ-০৩, ব্লক- এইচ, সেকশন-২, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, জীবনের কোন এক পর্যায়ে একটি সুন্দর বাড়ি নির্মাণ করা। সবার আশাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লোন তাদের কার্যক্রম সবসময় অব্যাহত রেখেছে। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে হাউজ লোন কিভাবে পাব বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত হতে পেরেছেন। এরপরও যদি হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স থেকে লোন নেওয়ার জন্য বিশেষ কোনো তথ্যের প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আমরা সব সময় চেষ্টা করি আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্যবহুল আর্টিকেল পাবলিশ করার জন্য। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আপনার বন্ধু অথবা আত্মীয় যে কিনা বাড়ি নির্মাণ করার ইচ্ছা পোষণ করে, তার উপকারের লক্ষ্যে আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url