হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

হাটুর ব্যথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখাটা সকলেরই প্রয়োজন পড়ে থাকে। হাঁটুর ব্যথা স্বাভাবিকভাবে একটি পরিচিত সমস্যা। এ সমস্যায় যারা ভোগেন তারাই জানেন কতটা কষ্টে তাদের দিন পার করতে হয়। হাঁটুর ব্যথা কারো অল্প পরিমানে হলেও কারো আবার তীব্র আকার ধারণ করে সেক্ষেত্রে তাদের ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার পাশাপাশি অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন পড়ে। 
হাটুর-ব্যাথা-সারানোর-ঘরোয়া-উপায়
আজকে আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি আরো যে সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো হাটুর ব্যাথা কেন হয় এবং হাটুর ব্যথা সারানোর উপায়। পাশাপাশি হাটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম এবং খাবার সম্পর্কে জানতে পারবেন। হাটুর ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার বিষয় সম্পর্কে এবং হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার জন্য অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

হাটুর ব্যাথা কেন হয়

সাধারণত বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাঁটুর ব্যথা বৃদ্ধির সমস্যা ত্বরান্বিত হতে থাকে। আবার অনেক সময় কোনভাবে যদি হাটুতে আঘাত লাগে তাহলে সেক্ষেত্রেও পরবর্তীতে ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। হাঁটুর আঘাতকে সাধারণত ACL আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। উক্ত আঘাত গুলোর মধ্যে ফ্র্যাকচার, ছেড়া মিনিস্কাস, হাঁটুর বরসাইটিস এবং আরো অনেক কিছু বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রয়েছে। মূলত হাঁটুর জয়েন্টের চারপাশে যে লিগামেন্ট এবং টেন্ডনগুলি রয়েছে সেগুলো প্রবাহিত হওয়ার মাধ্যমে ব্যথা পরিলক্ষিত হয়। প্রবাহ এর পরিমাণ যত বৃদ্ধি হবে হাঁটুর ব্যথা ঠিক ততটাই বেদনাদায়ক হয়ে উঠবে। 

বৃদ্ধ বয়সে বাতজনিত কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে আবার অনেক সময় আঘাত জনিত ঘটনা ব্যতীত ক্ষয়জনিত কারণেও হাঁটুর ব্যথার সৃষ্টি হয়। যদিও আঘাত জনিত ও বাত জনিত কারণবশত হাটুতে ব্যথা হয় সেটা যে কোন বয়সে হতে পারে। কিন্তু ক্ষয়জনিত কারণে যদি হাটুতে ব্যথা হয় সেটি প্রধানত ৪০ বছর বয়সের পরে দেখা দিয়ে থাকে। সাধারণ পর্যায়ে যদি হাঁটুতে ব্যথা হয় তাহলে হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলো অবলম্বন করার সুযোগ রয়েছে। হাটুর ব্যাথা কেন হয় এই প্রশ্নটি বয়:বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে খটকা লাগতে থাকে। 
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে হাড় ক্ষয়জনিত কারণে যদি ব্যথা সৃষ্টি হয় তাহলে সেটা ৪০ বছর বয়স পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অল্প অল্প আকারে দেখা দেয়। ডাক্তাররা ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের জন্য অর্থাৎ অস্টিওআরথাইটিস প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করাকে উল্লেখ করেছেন। ওজন নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে উক্ত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি লাভ করা সম্ভব বলে ডাক্তার গন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাহলে এ থেকে আরও একটি বিষয় বোঝা গেল সেটি হল কারো যদি শরীরের তুলনায় ওজন বেশি হয় সেক্ষেত্রেও হাঁটু ব্যথা হতে পারে। 

হাঁটুর ব্যথার জন্য অনেক সময় ফিজিওথেরাপি অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে বাংলাদেশে অর্থপেডিক সোসাইটির উদ্যোগ অনুযায়ী অনেক রোগীর ফ্রি অপারেশন পর্যন্ত করানো যাচ্ছে।

হাটুর ব্যাথা সারানোর উপায়

যদি হঠাৎ করে হাঁটুতে ব্যথা দেখা দেয় তাহলে কোন ভাবেই সেটা অবহেলা বা ইগনোর করার সুযোগ নেই। কেননা এই সামান্য ব্যথা আপনার পরবর্তীতে হাড় ক্ষয় থেকে শুরু করে আরো মারাত্মক রোগ ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে। আর আমাদের উচিত হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করার মাধ্যমে উক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া। ব্যথা শুরু হওয়ার প্রথমেই বিভিন্ন রকম ওষুধ সেবন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতে আপনার শারীরিক দুর্বলতার সঙ্গে সঙ্গে আরও বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

ইতিমধ্যে আমরা অবগত হয়েছি যে একটি নির্দিষ্ট বয়স পার করার পর আস্তে আস্তে শরীরের হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যার কারণে হাঁটুতে বা শরীরে অন্যান্য অংশে ব্যথা হতে থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে পুরুষদের তুলনায় নারীরা এ ধরনের সমস্যায় বেশি ভুগতে থাকেন। সুতরাং নারীদের অবশ্যই হাঁটুতে ব্যথা দেখা দিলে সচেতন হওয়া খুবই জরুরী। প্রথম অবস্থায় যদি হাঁটুতে অল্প অল্প ব্যথা পরিলক্ষিত হয় সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় গুলো অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত। কেননা এ ধরনের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে প্রথমে আপনাকে এক্স-রে করতে বলবে। 

এরপর বিভিন্ন রকম ওষুধপত্র খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকবে। কিন্তু আমাদের মতে প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমেও এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে যদি রোগ নিরাময় করা যায় তাহলে অর্থের সঙ্গে সঙ্গে আপনার শারীরিক সমস্যা ব্যতীত খুব সহজেই আপনি আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবেন। চলুন তাহলে হাটুর ব্যাথা কেন হয় এবং কোন কোন উপায়ে হাঁটুর ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়

হাটু মানব শরীরের পুরো ওজনকে বহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি আমরা যখন খেলাধুলা করি, এমনকি হাঁটতে অথবা দৌড়ানোর ক্ষেত্রে হাঁটু ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। মূলত হাটু একটি জটিল অস্থিসন্ধি যা ফিমার, প্যাটেলা ও টিবিয়া নামক তিনটি হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। হাঁটুর জয়েন্টের ভেতরে সাইনোভিয়াল মেমব্রেন বা ঝিলি দিয়ে আবৃত থাকে। সাইনোভিয়াল মেমব্রেন সাইনোভিয়াল ফ্লাইড তৈরি করে যা হাঁটুর ঘর্ষণজনিত ক্ষয় রোধ করে। হাঁটুর চারপাশে থাকে 

সূক্ষ্ম নার্ভের জালিকা যা হাঁটুতে তৈরি ব্যথা অনুভূতি এর সিগনাল ব্রেনে পাঠিয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে আমরা ব্যথা অনুভব করি। এই প্রক্রিয়াটি কয়েক মাইক্রো মিলি সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যেহেতু আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে কড়া কড়া মানের ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করব সেহেতু পর্যায়ক্রমে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করব।

নিয়মিত ব্যায়াম

হাটুর ব্যাথা কেন হয় এই প্রশ্নতে আমরা প্রথম যে উত্তরটি পেয়েছি সেটি হল বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধির কারণে হাঁটু কিংবা শরীরে বিভিন্ন অংশে ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। আবার বাতজনিত কারণেও ব্যথা হয়ে থাকে। এগুলো থেকে পরিত্রান পাওয়ার অন্যতম একটি উপায় হল নিয়মিত শরীর চর্চা করা। আমাদের কর্ম ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময় শরীর চর্চা করার সময় বের করতে পারিনা। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে শুধুমাত্র জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করে আপনার শরীর ফিট রাখতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। ঘরে বসে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করার মাধ্যমেও শরীরকে ফিট রাখা সম্ভব। 
আর নিয়মিত শরীর চর্চা করলে হাঁটুর সিগামেন্ট গুলো সবসময় সচল থাকে। এর কারণে কোনরকম জয়েন্টের ব্যথা অনুভব পরিলক্ষিত হয় না। তাই ডাক্তাররা হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে শরীরচর্চা করাকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই হাড়ের ক্ষয় রোধ বা হাঁটুর ব্যথাজনিত সমস্যার পরিত্রাণ এর লক্ষ্যে সকলের প্রতিদিন ১ ঘন্টা এক্সারসাইজ করা প্রয়োজন। আমেরিকান কলেজ অফ রিউমাটোলিজ অ্যান্ড দ্য আর্থাইটিস ফাউন্ডেশন একটি বিষয় বারবার উল্লেখ করেছেন 

সেটি হল হাঁটুর ব্যথা দূর করার জন্য কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হলো প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার, ইয়োগা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আসুন তাহলে হাটুর ব্যথা সারানোর ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে আরো একটু ধারণা নেওয়া যাক।

হাটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং

হাঁটুর ব্যথা সারানোর ব্যায়ামগুলোর মধ্যে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ অন্যতম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এই ব্যায়ামটি করার ফলে জয়েন্ট এবং হাঁটুর লিগামেন্টের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায় যা বেদনা থেকে অনেকটাই স্বস্তিতে ফিরে আনে। দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্টেচিং ব্যায়াম করার মাধ্যমে হাঁটু ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। হিল এন্ড কাফ স্ট্রেস, কুয়াডিসেপ স্ট্রেচ, হাম ইসটিং স্টেচ করার মাধ্যমে বেশি পরিমাণে উপকার পাওয়া যায়। হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে আরও একটি এক্সারসাইজ বিদ্যমান রয়েছে সেটি হল স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ। 

হাটুতে ব্যথা হয়েছে বলে চুপ করে বসে থাকলে কখনোই এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। আর স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ করার মাধ্যমে হাড় ও পেশির জোর বৃদ্ধি হয়ে থাকে। ব্যায়াম করার ফলে হাঁটুতে বা শরীরের অন্যান্য জয়েন্টে যদি কোন ব্যথা থাকে তাহলে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ব্যথা মুক্তি পাওয়ার জন্য দিনে কমপক্ষে ১৫ মিনিট এ ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। এক্ষেত্রে হাফ স্কোয়াট, কাফ রেইজেস, লেগ এক্সটেনশন, সাইড লেগ এবং প্রন লেগ রেইজেস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

উল্লেখিত ব্যায়ামগুলো করার মাধ্যমে অবশ্যই একজন ব্যক্তি উপকার পেয়ে থাকবেন বলে আমরা আশা ব্যক্ত করছি। হাটুতে কেন ব্যথা হয় এবং ব্যথা হলে ঘরোয়া উপায় গুলো অবলম্বন করা কতটাই যুক্তিযুক্ত আশা করি আপনারা অবগত হয়েছেন।

খাদ্যাভ্যাস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ

আমাদের রোগ বালাই হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। বাহিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের এবং ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে আমাদের যেমন গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয় পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন রকম রোগবালাই সৃষ্টি হওয়ার জন্য একমাত্র বাহিরের অস্বাস্থ্য খাবার খাওয়াটাই বেশি দায়ী বলে গণ্য করা হয়। শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা পরিত্রাণ নয় সঙ্গে সকল রোগের সমাধান একমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার ফলে হয়ে থাকে। প্রতিদিন নিয়ম করে ভিটামিনযুক্ত খাবার, তরল খাবার, বেশি বেশি শাকসবজি ও মৌসুমী ফল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ক্যালসিয়াম ও 

অন্যান্য খনিজ পদার্থের ঘাটতি পূরণ করার মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। বাহিরের সকল খাবার বাদ দিয়ে ঘরে তৈরি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনার দিন শুরু করুন। রাতে খুব তাড়াতাড়ি ডিনার শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ুন এবং পরবর্তী খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে জগিং অথবা এক্সারসাইজ করুন। খাবার তালিকাতে বেশি বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখবেন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বলতে মৌসুমী শাকসবজি ও অন্যান্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে আরও একটি বিষয় সামনে এসেছে সেটি হলো ওজন সম্পর্কে। 

মোটা শরীরের অধিকারী একজন ব্যক্তি তার দৈনন্দিন জীবনে অনেকটাই হতাশ থাকেন। পাশাপাশি যদি তার হাঁটুতে ব্যথা সহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তার মত কষ্টদায়ক আর কিছু নেই। গবেষণায় উঠে এসেছে যাদের ওজন অনেক বেশি তারা কোন এক পর্যায়ে হাঁটুর ব্যথা জনিত সমস্যায় পড়েন। এজন্য তাকে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কেননা ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে তিনি শুধু হাঁটুর ব্যথা থেকে যেমন মুক্তি পাবেন ঠিক তেমনি অন্যান্য বাড়তি অসুখ থেকেও পরিত্রাণ পেয়ে যাবেন। আর ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই একটি সঠিক ডায়েট চার্ট 

এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করা খুবই জরুরী একটি বিষয়। একটি সুষম ডায়েট চার্ট ফলোআপ করার মাধ্যমে কিভাবে খুব দ্রুত ওজন কমানো যায় এ বিষয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে অনেক আর্টিকেল পেয়ে যাবেন। আপনি চাইলে সেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

হাটু ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার

হাটুর ব্যাথা কেন হয় অর্থাৎ হাটু ব্যথার কারণ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। মূলত বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাঁটুর সমস্যা বা ব্যথা তৈরি হতে থাকে। যদি কোন ভাবে দুর্ঘটনাবশত হাঁটুতে আঘাত লাগে সেক্ষেত্রেও হাটু ব্যাথার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যদি হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে হাটুতে ব্যথা হয় তাহলে সেটি ৪০ ঊর্ধ্ব তাদের বয়স তাদের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। অনেক সময় হাঁটু ফুলে যাওয়ার ফলে ও ব্যথা হতে থাকে। এর কারণ হিসেবে ধরা হয় হাঁটুর লিগামেন্ট আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া। হাঁটুর লিগামেন্ট শরীরের প্রতিরক্ষক হিসেবে কাজ করে থাকে। 

বয়সজনিত কারণে অস্থিসন্ধির ক্ষয় বা হাড়ের ক্ষয় যেটাকে অস্টিও আর্থাইটিস বলা হয়ে থাকে। সেই কারণবশত হাঁটুতে প্রথমে অল্প পরিমাণে ব্যথা হলেও ধীরে ধীরে তীব্র আকারে ব্যথা হতে থাকে। হাড়ের ক্ষয়ের পাশাপাশি যদি অস্থিসন্ধির মাঝে দূরত্ব কমে যায় সেক্ষেত্রেও ব্যথা হতে পারে। আবার স্বাভাবিকের তুলনায় যদি শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় সেক্ষেত্রেও ব্যথা হয় এবং বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রকম বাত ব্যথার কারণে ব্যাপক পরিমাণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। হাঁটু ব্যথার প্রতিকার হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে অবশ্যই একজন ব্যক্তির হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলো ফলোআপ করা 
প্রয়োজন। পাশাপাশি পদ্ধতি গুলো এপ্লাই করার মাধ্যমে কতটা রোগ মুক্তি হচ্ছে সে বিষয়ে নজরদারি করা দরকার। প্রথমেই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ সেবন না করে ঘরোয়া যে পদ্ধতিগুলো উপরে বর্ণনা করে রয়েছে সেগুলো এপ্লাই করার মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘরোয়া উপায় গুলোর মাধ্যমে যদি সেরকম কোন উন্নতি পরিলক্ষিত না হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। ডাক্তারকে হাটুর ব্যাথা কেন হয় এ বিষয়টি জানানোর মাধ্যমে প্রথমে 

আপনাকে এক্স-রে করানো হবে তারপর সে অনুযায়ী ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে বলবে। তাহলে প্রতিকার হিসেবে ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার পর যদি কোনরকম সুবিধা না মনে হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের মাধ্যমে রোগ মুক্তি লাভ করা বাঞ্ছনীয়।

হাটুর ব্যাথা সারানোর খাবার

আমরা ইতিমধ্যে আরও একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়েছিলাম সেটি হল হাঁটুর ব্যথা সারাতে আপনাকে একটি সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করতে হবে। শরীরে সকল রোগের চাবিকাঠি বলা যেতে পারে একটি সঠিক খাদ্যাভ্যাস। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করার পাশাপাশি আপনি ঘরে তৈরি পুষ্টিকর খাবার খাবেন এবং কোন খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি ক্যালসিয়াম ও খনিজ লবণের ঘাটতি পূরণ করতে পারছেন সে বিষয়ে বিশেষ নজর দেবেন। তাহলে একটি সময় পর দেখবেন আপনি হাটু ব্যথা থেকে অনেকটাই মুক্তি লাভ করেছেন। 

তাহলে আসুন এবার হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলো জানার পাশাপাশি হাঁটুর ব্যথা সারানোর খাবার গুলো কি কি হতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। যদিও প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা তে আপনার প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অর্থাৎ শাকসবজি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এগুলো বাদেও যেখান থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকবেন সে খাবার গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
  • তরকারিতে আমরা প্রতিনিয়ত রসুন ব্যবহার করে থাকি। রসুন কোন খাবারের স্বাদ পরিবর্তন করার পাশাপাশি পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই তরকারিতে রসুন খাওয়ার পাশাপাশি সরাসরি রসুন ভাতের সঙ্গে সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। কেননা রসুন শরীরের ব্যথা যন্ত্রণা দূর করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • হাঁটুর ব্যথা কমাতে আদা খুব উপকারী হিসেবে লোকোমুখে প্রচলিত রয়েছে। তাই আদা চিপে আদার রস খেতে পারেন এবং চায়ের সঙ্গে আদার রস দিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
  • যত প্রকার বাদাম রয়েছে সবগুলোতেই ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য প্রোটিনে ভরপুর। তাই কাঠবাদাম, কাজুবাদাম এগুলো আপনার খাবার তালিকাতে অবশ্যই প্রতিদিন রাখতে হবে। বাদামে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আর ওমেগা ৩ রয়েছে যা আপনার হাঁটুর ব্যথা কমাতে অন্যতম ভূমিকা পালন করবে।
মৌসুমী ফল প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। আমাদের দেশে সিজনাল সারা বছর বিভিন্ন রকম ফল পাওয়া যায়। আবার বেরি জাতীয় ফল যদি আপনি খেতে পারেন তাহলেও হাঁটুর ব্যথা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আর্টিকেলের একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আশা করি আপনারা হাটুর ব্যাথা কেন হয় এবং হাটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। এরপরও যদি আপনাদের মনে আলোচ্য বিষয় সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে সেটি জানাতে পারেন। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আমরা আর্টিকেলের বিষয়বস্তুটি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে লেখার চেষ্টা 

করেছি। আপনি আপনার সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রত্যেকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এরকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন এবং আজকের পোস্টটি সকলের উপকারের জন্য একটি শেয়ার করতে পারেন। পরিশেষে সকলে সুস্থতাই আমাদের কাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url