গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় ও দূর করার উপায়

ধরুন আপনি কোন বিয়ে বাড়ি অনুষ্ঠান বা কোন ফাংশানে গিয়েছেন ভালো-মন্দ খাবেন বলে। কিন্তু হঠাৎ করেই আপনার বুকের ডান পাশে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হলো। চিন্তিত হয়ে পড়লেন এটা কি গ্যাসের সমস্যা নাকি অন্য কোন সমস্যা। আর এই চিন্তাগুলো নিরসনের জন্যই গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় বিষয়টি জানা খুবই জরুরী। হঠাৎ করে যদি কেউ এরকম সমস্যার মধ্যে পড়ে যায়, ঘটনাটি যদি কোন অনুষ্ঠানে গিয়ে ঘটে তাহলে পুরো অনুষ্ঠানটাই ম্লান হয়ে যায়। বিশেষ করে যাদের বয়স ৪০ এর উপর উঠে গেছে তাদের গ্যাসের সমস্যা বেশি দেখা দিয়ে থাকে। 
গ্যাসের-ব্যথা-বুকের-কোন-পাশে-হয়
আবার যারা বাহিরের ভাজাপোড়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে অভ্যস্ত তাদের ক্ষেত্রে এরকম সমস্যা ঘন ঘন দেখা দিয়ে থাকে। এ সকল ব্যক্তি যদি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল পড়ে থাকেন তাহলে আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় বিষয়টি জানার জন্য আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। উক্ত বিষয় বাদেও আরো যে সকল উষা সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এবং ব্যাথা কমানোর ওষুধ সম্পর্কে। পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যথা দূর করার উপায় এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কি পিঠে হয় সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্র

গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয়

আসলে গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এ বিষয়টি বিভিন্নভাবে উপলব্ধি করা যায়। মূলত গ্যাসের ব্যথার পেটের কোন অংশে হবে এটার কোন নির্দিষ্ট বলিরেখা নেই। ব্যথা যে কোন সময় পেটের যে কোন অংশে দেখা দিতে পারে। কিছু লোক তাদের বুকের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করে, অনেক সময় ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে এবং রোগীর মনে হয় যেন ভিতরে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। যদি এরকম হয় তাহলে অবশ্যই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কেননা এরকম ব্যথা সাধারনত হৃদপিন্ডে হঠাৎ আক্রমণের উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য আমাদেরকে উদঘাটন করতে হবে গ্যাসের ব্যথা আসলে কোনটি। 

আর ব্যথার উপসর্গীয় যদি ভিন্ন হয় সে ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা সেটাও আমাদের জানা খুবই জরুরী। তাহলে আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে গ্যাসের ব্যথাগুলো কোথায় হয় এবং এটার উপসর্গ গুলো কেমন হতে পারে। সাধারণত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাজনিত কারণে পেটের উপরের অংশে ব্যথা বা বুক জ্বালাপোড়া করে থাকে। অনেক সময় কারো কারো ক্ষেত্রে মুখে টক টক স্বাদ অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি টক ঢেকুর উঠে থাকে। এসব লক্ষণ যদি পরিলক্ষিত হয় সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে পেটে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হয়েছে। এ লক্ষণ ছাড়াও গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় সেটাও আমাদের 

জানা উচিত। কারো কারো ক্ষেত্রে গ্যাসের কারণে পিঠেও ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। তবে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রধান ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে বুকের ডানপাশে। অনেকটা খিল খোচানোর মত অনুভূত হয়ে থাকে গ্যাসের ব্যথা। ব্যথা আক্রমশ ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে এরকমও বোঝা যায়। তবে গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এরকম প্রশ্নে শুধুমাত্র যে ডান পাশেই ব্যথা অনুভূত হবে বিষয়টি তা ও নয়। অনেকের ডান পাশে প্রচন্ড ব্যথা অ্যাপেন্ডিক্স এর ব্যথার লক্ষণ হতে পারে। গ্যাসের ব্যথাটি সঠিকভাবে নির্ণয় করা আমাদের খুবই জরুরী। আসুন বিষয়টি তাহলে এবার আরো বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করা যাক।

গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয়

গ্যাসের জন্য বুকের কোন পাশে ব্যথা হয়ে থাকে সে বিষয়টি জানার পূর্বে ছোট্ট একটি ধারণা নেওয়া যাক। বিষয় হল বুকে ব্যথার কারণ সাধারণত আমরা গ্যাসের জন্য অথবা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করতে পারি। তাহলে সকল রকমের ব্যথায় কি হার্ট এটাক বা সব ধরনের ব্যথায় কি গ্যাসের ব্যথা, বিষয়টি আসলে তা নয়। হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হিসেবে সাধারণত বুকের মাঝখানে চাপ লাগার মত অনুভূত হয়ে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে বুকের মাঝখানে চাপ লাগার মতো অনুভূত হয় না, সে ক্ষেত্রে রোগীর অস্বস্তি ভাব হতে পারে। এছাড়া চোয়ালে ব্যথা, ঘাড় টেনে ধরা, 
পিঠে বা হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া এ ধরনের লক্ষণ মূলত হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাহলে আমরা গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় কিভাবে নির্ধারণ করতে পারি। ইতিমধ্যে আমরা একটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে পেরেছি সেটি হল যদি বুকের নিচের দিকে ডান পাশে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে সেটি অ্যাপেন্ডিক্স এর সমস্যা বলে ধারণা করে নিতে হবে। কিন্তু বুকের ডান পাশে যদি খিল ফোটানো বা মনে হয় ভেতর থেকে কেউ খোঁচা দিচ্ছে এরকম অনুভূতি হয় তাহলে অবশ্যই সেটি গ্যাসের ব্যথা হিসেবে ধারণা করতে হবে। 

ডাক্তারদের মতে গ্যাসের ব্যথা অনুভূত হতে পারে পেটে পূর্ণরূপে চাপ বা খোলা ভাব হিসেবে। সে ক্ষেত্রে পেটের বা বুকের ডান কিংবা বাম পাশে ধারালো ছুরিকাঘাতের মত ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। আর ব্যথা যদি তীব্র আকার ধারণ করে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। গবেষণায় আরো অনেকগুলো বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো হল প্রত্যেকটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যাথার অভিজ্ঞতা ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এমনও অনেক ব্যক্তি পাওয়া গেছে যাদের কোনরকম ব্যথা অনুভূত হয় না কিন্তু পেটের ভিতরে গ্যাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। 

তাই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় যে কঠিন যে গ্যাসের ব্যথা আপনার কাছে সেটা কেমন অনুভূতি সৃষ্টি করবে। তাহলে গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এ প্রশ্নে যে সতর্ক বার্তাটি মাথায় রাখতে হবে সেটি হল কারো বুকে যদি গ্যাস জমে যাওয়ার সাধারণ লক্ষ্য গুলির মধ্যে প্রকাশ না পায়, তবে বুকের বামে অথবা ডানে চাপ বা শক্ত হওয়ার মত অনুভূতি প্রকাশ পাচ্ছে তাহলে ধরে নিতে হবে যে এটা গ্যাসের সমস্যা।

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা যে সকল স্থানে অনুভূত হয়

গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় অর্থাৎ গ্যাসের জন্য যে ব্যথা সৃষ্টি হয় সেটি মূলত নির্দিষ্ট কিছু স্থানে অনুভূত হয়ে থাকে। তবে বুক, পেট বাদেও পিঠে অনেক সময় ব্যথা হয়ে থাকে। সেটিকেও গ্যাসের সমস্যা হিসেবে ধরা হয়। যদিও সঠিকভাবে গ্যাসের জন্য যে ব্যথা হচ্ছে তা বলা সম্ভব নয়। পেটের অভ্যন্তরীণ ব্যথা গ্যাস বাদেও অন্য বড় কোন অসুখের ইঙ্গিত বহন করতে পারে। তবে আপনাদের সুবিধার্থে কিছু নির্দিষ্ট স্থান যেখানে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি সে অনুযায়ী বর্ণনা করা হলো।
  • পেটের উপরের অংশ (ডান দিক): এটি মূলত গ্যাস্ট্রিক আলসারের সাধারণ একটি লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
  • পেটের উপরের অংশ (বাম দিক): এটিকে আবার গ্যাস্ট্রাইটিসের একটি লক্ষণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়।
  • নাভির কাছে: নাভির কাছে যদি ব্যথা অনুভূত হওয়া লক্ষণ পায় তাহলে সেটিকে, হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি (H. pylori) ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করে।
  • পেটের পুরো অংশ: মূলত এটিকেই অ্যাসিডিটি, অতিরিক্ত গ্যাস, বা অন্ত্রের প্রদাহের কারণে বলে ধরা হয়।

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার আরো লক্ষণগুলি

উপরে বর্ণনাকৃত লক্ষণ গুলোর পাশাপাশি আরো অন্যান্য কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো নির্ধারণ করার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে ধারণা পাওয়া যাবে যে আসলেই গ্যাসের ব্যথা হয়েছে কিনা। যদিও পেটে অম্বল, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ভারি ভারী লাগা, খুদা মন্দা ইত্যাদি লক্ষণগুলো গ্যাসের সাধারণ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। তবে পাঠকগণ আপনাদের সুবিধার্থে আমরা আরও বিস্তারিতভাবে জানাবো যে কোন কোন উপসর্গ গুলো চিহ্নিত করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন। নিচে গ্যাসের ব্যথার সাধারণ লক্ষণগুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।

পেটে ব্যথা: পেটে ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। তবে পেটের ব্যথাটি পেটের উপরের অংশে, বুকের নিচে, পেটের ডান বা বাম দিকে, নাভির কাছে, বা পেটের পুরো অংশে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে ব্যথার তীব্রতা হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং অনেক সময় এটি ধ্রুবক বা অন্তরায়ী হয়ে থাকে। এছাড়াও নির্দিষ্ট লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে গ্যাসের ব্যথা চিহ্নিত করা সম্ভব সেগুলো নিচে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো।
  • গ্যাসের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে রোগীর বমি হতে পারে। পেটের সামগ্রী মুখ দিয়ে বের হয়ে চলে আসে।
  • দীর্ঘদিন গ্যাসের সমস্যা যদি হয় সে ক্ষেত্রে হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হয় না। এ কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • পেটে যদি গ্যাস হয় সে ক্ষেত্রে পেট সবসময় ভারী ভারী অনুভূত হয়। আবার খাওয়ার পরে পেট ভারী বা ফোলাভাব অনুভূতির সৃষ্টি হয়।
  • খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। কোন কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে রুচি আসে না বরং বমি বমি ভাব লেগেই থাকে।
  • পেটে মারাত্মক রকমের জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি অনুভূতি হয়ে থাকে সেটাকে অম্বল হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
  • গ্যাসের মাত্রা বেশি হলে বদহজমের কত সমস্যা তৈরি হয়। এর জন্য খাবার হজম করতে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি পেটের বামে ও ডানে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা হতে থাকে। এছাড়াও মাথাব্যথা, অস্বস্তি, শারীরিক দুর্বলতা হতে থাকে যা দৈনন্দিন জীবন চালনা ব্যাহত হয়ে পড়ে।
  • অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার সাথে আরও গুরুতর লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
  • রক্ত বমি হওয়া একটি মারাত্মক লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি সাধারণত পেটের আলসার বা অন্যান্য গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হয়ে থাকে।
  • কালো পায়খানা করাও আলসারের ধাপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে এটি পেটের অভ্যন্তর রক্তপাতের লক্ষণ হতে পারে।
গুরুতর পেটে ব্যথা: এটি পেটের আলসার ছিদ্র বা অন্যান্য জরুরী অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে কোনভাবেই দেরি করা যাবে না, দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়

আমরা যদি গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় অর্থাৎ গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় বিষয়টি চিহ্নিত করতে পারি তাহলেই কেবল সে অনুযায়ী ব্যথা দূর করার উপায় গুলো এপ্লাই করতে পারব। আমরা আরো একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি সেটি হল পেটের অভ্যন্তরে ব্যথা যে শুধুমাত্র গ্যাসের কারণে হবে বিষয়টি তা নয়। বুকের ব্যথা ও অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে, তাই ব্যথার কারণ দর্শানো চিকিৎসার প্রথম ধাপ হিসেবে গণ্য করা হয়। গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যথা দূর করার 
উপায় গুলো আমরা রোগ চিহ্নিত অর্থাৎ গ্যাসের কারণে ব্যাথা হচ্ছে বিষয়টি জানার পরে কেবলমাত্র এপ্লাই করতে সক্ষম হব। আসুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যথা দূর করার উপায় সংক্রান্ত বিষয়গুলো কিভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এপ্লাই করতে পারি।
  • ব্যাথা দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর একটি উপায় হল, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা। বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো পরিহার করে ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সঙ্গে প্রচুর পরিমানে ফল, শাকসবজি, এবং খাইবার সমৃদ্ধ খাবারের অভ্যস্ত হতে হবে। ঝাল, মসলাযুক্ত এবং চর্বিযুক্ত খাবার সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলতে হবে।
  • নিয়মিত খাবার খাওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে গণ্য করা হয়। আমরা অনেক সময় কর্ম ব্যস্ত থাকার কারণে নিয়মিত খাবার গ্রহণ করি না। এর কারণেই আমাদের গ্যাসের সৃষ্টি হয়। দিনে তিনবার ছোট ছোট খাবার খেতে হবে। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা কোন ভাবেই যাবে না।
  • পানির অপর নাম জীবন। সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করুন।
  • যদি ধূমপান বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের অভ্যাস থাকে তা অতি দ্রুত পরিহার করুন। ধূমপান বা মদ্যপান পেটের আস্তরণকে জ্বালাতন করে এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • মানসিক চাপ একেবারে ঝেড়ে ফেলুন। কেননা মানসিক চাপ গ্যাস্ট্রিকের ব্যথাকে আরও খারাপ করে তোলে। যোগব্যায়াম, ধ্যান, বা গভীর শ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করে চাপ কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা শুধুমাত্র গ্যাসের সমস্যা দূর হবে বিষয়টি। নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে গ্যাসের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি শরীরকে ফিট এবং প্রাণবন্ত করার জন্য, প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
  • অনেকের রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয়না। এটিও গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। সুতরাং অবশ্যই প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কি পিঠে হয়

গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এ প্রশ্নে আমরা প্রথম যে কয়েকটি উত্তর পেয়েছি। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে গ্যাসের ব্যথা সাধারণত বুকের ডানে অথবা বামে খিল ফোটানোর মত অনুভূতি সৃষ্টি করে থাকে। গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় যেহেতু নির্দিষ্টভাবে কোন উল্লেখ নেই। আমাদের নিজেদেরকে ধারণা করে নিতে হবে আসলে সেটি গ্যাসের ব্যথা হচ্ছে নাকি অন্য কোন সমস্যা। অনেকের হঠাৎ করে পিঠের দিকে ব্যথা অগ্রসর হয়ে থাকে বা পিঠে ব্যথা সৃষ্টি হয়। ডাক্তারগণ পিঠের ব্যথাটি কেউ গ্যাসের ব্যথা থেকে সৃষ্ট সমস্যা বলে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা পিঠেও ছড়াতে পারে এতে কোন 

সন্দেহ নেই। যদিও গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা পেটের উপরের অংশে, বুকের নিচে, নাভীর কাছে, বা পেটের পুরো অংশে অনুভূত হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা পিঠেও অনুভূত হয়ে থাকে। তবে যদি পিঠে ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে কিডনি জনিত সমস্যা হচ্ছে বলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে আমাদের সচেতন থাকতে হবে ব্যথা পিঠের দিকে অর্থাৎ পেটের পেছনের অংশে যদি অঙ্গ গুলোকে প্রভাবিত করে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আসল তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক ব্যাথা গুলো পেটের পেছনের অংশে অবস্থিত কোন অঙ্গ গুলোকে প্রবাহিত করতে পারে।
  • অগ্ন্যাশয় এমন একটি গ্রন্থি যা হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি শরীরের আরো কার্যক্ষমতা সম্পাদন করে থাকে। অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ যেটিকে আমরা (প্যানক্রিয়েটাইটিস) পেটের উপরের অংশে এবং পিঠে ব্যথা সৃষ্টি হচ্ছে বলে ধারণা করে থাকি।
  • পিত্তথলি আরো একটি অঙ্গ যা পিত্ত রস ধারণ করে। পিত্তরস আমাদের হজমে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কারো যদি পিত্তথলিতে পাথর (gallstones) থাকে। তাহলে সে ক্ষেত্রে তীব্র পেটে ব্যথা এবং পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়।
  • বৃক্ক বা কিডনি যাই বলি না কেন, এটি মূলত দুটি অঙ্গ যা রক্ত ​​পরিষ্কার করে থাকে এবং প্রস্রাব তৈরি করে। কিডনিতে যদি পাথর হয় সেক্ষেত্রে, পিঠের নীচের অংশে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে, যা পেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
উপরে বর্ণিত লক্ষণগুলো যদি খুব ভালোভাবে প্রকাশ পায় এবং ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে। তাহলে কোনভাবেই আর দেরি করা উচিত হবে। সঙ্গে সঙ্গে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং ডাক্তার ব্যথার কারণ নির্ণয় করার পাশাপাশি উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করবেন। আর এ কারণে আমাদেরকে অবশ্যই গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় বিষয়টি ভালোভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

পেটে গ্যাসের ব্যথা কমানোর ওষুধ

গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় সে বিষয়টি জানার পর যদি আমরা ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করি তাহলেও ব্যথা নিরসন করা সম্ভব। আমরা উপরে বর্ণনা করেছি কিভাবে গ্যাসের ব্যথা উপশম করা যায়। তবে ব্যথার মাত্রা বা উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে অবশ্যই আমাদের তৎক্ষণাৎ ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। যদিও আমরা সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করার কথা বলে থাকি। তবে ইমারজেন্সি সময়ে আপনি চাইলে আমাদের দেওয়া কিছু ভালো ব্র্যান্ডের গ্যাসের ওষুধ সেবন করতে পারবেন এতে আশা করি কোন সমস্যা হবে না। 
তবে আমাদেরকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে কেননা কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারে সাপ্লাই করে থাকে। তাই নকল ওষুধ থেকে সাবধান থাকতে হবে এবং ভালো ব্যান্ডের ঔষধ গ্রহণের মাধ্যমে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করে যেতে হবে। আমরা এখানে ৪ টি ভালো ব্যান্ডের ওষুধের নাম উল্লেখ করলাম।

ঔষধের নাম- কোম্পানির নাম

  • Maxima Cap 20 mg- ACME Laboratories Ltd.
  • Esotid Tablet 20 mg-Opsonin Pharma Ltd.
  • MaxproTablet 20 mg- Renata Limited
  • Nexum Cap 20mg-Square Pharmaceuticals Ltd.

শেষকথা

আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তুটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেকটাই কাজে আসবে বলে আমরা আশা ব্যক্ত করছি। গ্যাসের ব্যথা কোথায় হয় এবং গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় বিষয়গুলোতে আর কোনরকম কনফিউশন থাকার কথা নয়। এর পরও যদি আপনাদের কোন কিছু জানার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে সেটি জানাতে পারেন। আমরা সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটে তথ্যবহুল আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। 

আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসতে পারেন। আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্টটি আপনার বন্ধুবান্ধব অথবা আত্মীয়দের উপকারের লক্ষ্যে একটি শেয়ার করতে পারেন। পরিশেষে সকলের সুস্থতাই আমাদের কাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url