ফেসবুক বুস্টিং কি?-ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে

ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা সবসময়ই কনফিউশনের মধ্যে থাকি। অনেকে ধারণা ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে হলে অনেক অনেক টাকার প্রয়োজন। তাদের সকল রকম ধারণা এবং সঠিক তথ্য প্রদানের লক্ষ্যেই আজকের এই আর্টিকেল। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা ফেসবুক বুস্টিং কি এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে সে বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন। 
ফেসবুক-পেজ-বুস্ট-করতে-কত-টাকা-লাগে
উক্ত বিষয়গুলো ব্যতীত আরো যে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে চলেছেন সেগুলো হল ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে। সুতরাং কিভাবে বিকাশ দিয়ে পেজ প্রমোট করা যায় এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে ধারণা পেতে অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ফেসবুক বুস্টিং কি

বর্তমান সময়ে অনলাইন বিজনেস এর ক্ষেত্রে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইন বিজনেসের পাশাপাশি অনেকে ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে বিভিন্ন রকম ইনফরমেটিভ ভিডিও আপলোড করে সেখান থেকে মাসে ভালো একটি অ্যামাউন্ট কালেক্ট করে থাকেন। যারা ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে তাদের ক্ষেত্রে ফেসবুক বুস্টিং অতটাও কার্যকরী নয়। আসুন তাহলে এবার ফেসবুক বুস্টিং কি এবং কাজের জন্য বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায়। 

ফেসবুক বুস্টিং হল ফেসবুকের অন্তর্ভুক্ত যে সকল পেজ রয়েছে সেই সকল পেজের পোস্ট এবং পণ্যের ভিডিও দর্শকদের আকর্ষণ এবং ভিউজ বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার গ্রাহকদের আচার-আচরণ, বিধি-নিষেধ সবসময় ফলো করে থাকে। আর এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে যদি ফেসবুক পেজ বুস্ট করা হয় সে ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই সকল দর্শকদের কাছে পোস্ট এবং পণ্যের ভিডিও নিয়ে যায় যাদের এই পণ্যটি এই মুহূর্তে দরকার। উদাহরণস্বরূপ বিষয়টি বুঝার চেষ্টা করা যাক। ধরুন একজনের খেলনার বিজনেস রয়েছে। 
এখন সে চাচ্ছে তার খেলনা ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি হোক এবং সেই অনুযায়ী সে তার ফেসবুকের পেজ বুস্ট করে দিল। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে। অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে প্রদান করতে হয়। আচ্ছা, এবার যখন ওই ব্যক্তি তার খেলনা বিক্রির জন্য ফেসবুকের পেজ বুস্ট করবে তখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই সকল ব্যক্তির হোম পেজে খেলনার ভিডিওটি প্রচার করবে যাদের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কিভাবে বুঝতে পারে তাদের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। 

আমরা অনেক সময় আমাদের ফেসবুক একাউন্টে আমাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ছবি পোস্ট করে থাকি, তাদের বার্থডে উইশ করে থাকি। এই সকল ইনফরমেশন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কালেক্ট করে এবং সেই অনুযায়ী ইম্প্রেশন তৈরি করার মাধ্যমে সঠিক গ্রাহকের কাছে পণ্যের ভিডিও পৌঁছে দেওয়া হয়। আর এই প্রক্রিয়াটিকেই ফেসবুক বুস্ট বা ফেসবুক পেজ বুস্ট বলা হয়ে থাকে।

ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয়

ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় এই প্রশ্নে সর্বপ্রথম যে কথাটি সামনে আসে সেটি হল অনলাইন বিজনেস এর পরিধি বৃদ্ধি পায়। কারো যদি বাজারে একটি দোকান থাকে তাহলে অবশ্যই সেখানে নিত্যদিনের মতো বেচাকেনা হয়ে থাকবে। ঠিক তেমনি কেউ যদি অনলাইনে বিজনেস করার কথা ভাবে এবং সে অনুযায়ী ফেসবুক পেজ বুস্ট করে তাহলে প্রতিদিন সেখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সেল হবে। অর্থাৎ বাজারে দোকান নিয়ে সেখানে স্কয়ার ফুটে যেমন ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করা যায়। ঠিক তেমনি কেউ যদি একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ ক্রিয়েট করে এবং সেই পেজের পণ্যের ভিডিওগুলো প্রতিদিন বুস্ট করে তাহলে প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণ সেল আসবে। 

তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এবং সেখানে টাকা ইনভেস্ট করলে অর্থাৎ ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয়। আসুন তাহলে এবার ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি কি সুবিধা পাওয়া যায় সেগুলো পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক।
  • যাদের বাজারে দোকান আছে সেক্ষেত্রে ফেসবুক বুস্ট করে যদি সেল আসে সেক্ষেত্রে দুই দিক থেকে মুনাফা আসার সুযোগ থাকে।
  • ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে সেখানে অটোমেটিক ফলোয়ার যোগ হতে থাকে এবং পরবর্তীতে পণ্যের ভিডিও আপলোড করলে সেখান থেকে রিয়াল কাস্টমার খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি পণ্য বিক্রি হতে থাকে।
  • ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে যে ট্রাফিক গুলো আসে সেগুলোই মূলত সেই পেজের সঠিক কাস্টমার হিসেবে ট্রাকিং করা যায়।
  • ফেসবুকের পোস্ট অথবা অন্যের ভিডিও বুস্টিং করার মাধ্যমে সেই পণ্যের ভিডিও বা পোস্ট সবসময় সবার উপরে রেংকিংয়ে থাকে। আর এই ক্ষেত্রে যেই পেজ সবার উপরে থাকবে সেই পেজের পণ্য সেল হওয়ার সম্ভাবনা সবসময় বেশি থাকে।
তবে ফেসবুক পেজ বুস্টিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ Facebook কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়। আর এজন্য সবার একটি অতি জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন হলো ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে। চলুন তাহলে এবার ফেসবুকের পেজ বুস্ট করার ক্ষেত্রে কত টাকা দিতে হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তুই ছিল ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় এবং ফেসবুকের পেজ বুস্ট করার ক্ষেত্রে কত টাকা পে করতে হয়। ফেসবুকের পেজ বুস্ট করার বিষয়টি নির্ভর করে ডলারের উপর। ডলারের রেট যদি বেশি হয় সে ক্ষেত্রে পেজ বুস্ট করার খরচ বেশি হয় আর ডলারের রেট যদি কম হয় তাহলে পেজ বুস্ট করার খরচ কম হয়। তাই ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা খরচ হয় সেটি হিসাব করার জন্য বর্তমান ডলারের রেট অনুযায়ী হিসাব করতে হয়। 

এরপর বেশ বুস্ট করার জন্য যত পরিমান ডলার খরচ করবেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে ১৫% ভ্যাট প্রদান করতে হয়। যদি কেউ ৫০০ ডলার ৪ দিনের জন্য বুস্ট করে সে ক্ষেত্রে ৩০০০০ এর মতো ক্লিক আসে। আবার শুধুমাত্র ৫ ডলার দিয়ে ১ দিনের জন্য পেজের পণ্যের ভিডিও বুস্ট করে ক্লিক এবং সেল আনা সম্ভব। আসলে আপনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে যত টাকা প্রদান করবেন আপনার ভিডিওতে ঠিক তত পরিমাণ ক্লিক আসবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কখনো আপনাকে গ্যারান্টি দিবে না যে এত টাকা প্রদান করলে আপনাকে এত টাকা সেল দেওয়া হবে। 

তারা শুধুমাত্র আপনার ভিডিও সেই সকল সঠিক কাস্টোমারের কাছে পৌঁছে দেবে এবং তারা সেই ভিডিওতে ক্লিক করবে। ক্লিক করার পর যদি আপনার প্রোডাক্টটি তাদের কাছে ভালো লাগে এবং মানসম্মত মনে হয় তবেই কেবলমাত্র তারা অর্ডার করবে পাশাপাশি আপনার সেল নিশ্চিত হবে। আর এজন্যই ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে একুরেট ভাবে বলা সম্ভব নয়। ফেসবুকে পেজ বুস্ট করার ক্ষেত্রে আপনি যত পরিমাণ অর্থ খরচ করবেন সেই অনুযায়ী ভিডিও এবং পোস্টের রিচ বা ইম্প্রেশন বাড়তে থাকবে। 

একটি ভিডিওর ইম্প্রেশন যত বাড়বে সেই অনুযায়ী ভিউয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। একটি হিসাব বলছে যদি ১০০০ ভিউ হয় সেক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০ জন ইজিলি আপনার পণ্য অর্ডার করে দেবে। সুতরাং এটা বলা যেতেই পারে ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে যদি অর্থ ইনভেস্ট করতে হয় তাহলে সেল করার মাধ্যমে সেটা পুষিয়ে ভালো একটি মুনাফা তৈরি করা সম্ভব। আশা করি আপনারা ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় এবং কি পরিমানে অনলাইন বিজনেস করা সম্ভব সেটা নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন।

ফেসবুক পেজ বুস্ট করার নিয়ম

আমরা সবসময় আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে একটি বিষয় আপনাদেরকে বলার চেষ্টা করি সেটি হল প্রত্যেকটি বিষয় অবলোকন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মানতে হয়। সেই অনুযায়ী ফেসবুক পেজ বুস্ট করার নিয়মগুলো ভালোভাবে যদি মানা হয় সেক্ষেত্রে সেলের পরিমাণ অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে। অনেকে আছে যারা হরহামেশা ফেসবুক পেজ এবং পেজের পণ্যের ভিডিও বুস্ট করে। কিন্তু কাংখিত ফলাফল না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। আর এজন্যই ফেসবুক পেজ বুস্ট করার নিয়ম গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করব। 
আশা করি এই কয়েকটি নিয়ম যদি একজন অনলাইন ব্যবসায়ী ভালোভাবে ফলো করে। তাহলে অবশ্যই তার পণ্যের বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তবে অবশ্যই আপনার অন্যের কোয়ালিটি ভালো হতে হবে। পণ্যের কোয়ালিটি যদি খারাপ হয় সেক্ষেত্রে যতই পেজ বুস্ট করা হোক না কেন আশা অনুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে না।
  • আমরা এখানে টাকা দিয়ে ফেসবুক পেজ বুস্ট করার পাশাপাশি টাকা ব্যতীত ১০ টি উপায় বা ট্রিক শেয়ার করলাম যার মাধ্যমে খুব সহজেই পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
  • পণ্য সেল করার জন্য অবশ্যই একটি প্রফেশনাল মানের ফেসবুক পেজ ক্রিয়েট করতে হবে এবং নিয়মিত সেই পেজে পণ্যের ভিডিও পোস্ট করতে হবে।
  • সঠিক ক্যাটাগরি এবং সঠিক কন্টেন্ট পোস্ট করা অতীব জরুরী।
  • প্রতিদিন একই ধাঁচের কন্টেন্ট পাবলিশ না করে, আলাদা আলাদা নতুন ভিডিও তৈরি করে পাবলিশ করা উচিত।
  • নিজের ফেসবুক আইডি থেকে প্রতিনিয়ত শেয়ার দেওয়া যাতে বন্ধু-বান্ধবরা আপনার অনলাইন বিজনেস এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।
  • ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টিতে মাথা নাখামিয়ে ফ্রিতে ফেসবুক পেজ বুস্ট করার জন্য বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট শেয়ার করা যায়।
  • ফেসবুক পেজের সকল সেটিংস কাস্টমাইজ করে প্রফেশনাল মানের করে তোলা।
  • ফেসবুক ব্যতীত অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রতিনিয়ত শেয়ারের মাধ্যমে পেজ প্রমোট করতে হবে।
  • উপরের কার্যগুলো করার পাশাপাশি মাঝেমাঝে অর্থ দিয়ে ফেসবুক পেজ বুস্ট করে সঠিকভাবে প্রচার করার চেষ্টা করে যেতে হবে।
  • ট্রেন্ডিং ও যেই প্রোডাক্টটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য সেই ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ভিডিও আপলোড করতে হবে।
  • ভিডিও আপলোড করার সময় অবশ্যই হ্যাশট্যাগ (#) সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
উপরের সকল নিয়ম-কানুন যদি সঠিকভাবে ফলো করা হয় তাহলে খুব সহজেই একটি পেজ গ্রো করে যায় এবং সেখানে প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক চলে আসে। আর ট্রাফিক মানে ব্যাপক পরিমাণে ভিউ। বর্ণিত বিষয়বস্তু বাদেও অর্থ দিয়ে ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে হয় সে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। সুতরাং একজন অনলাইন বিজনেস ম্যানের ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় সেটি জানার পাশাপাশি কোন কোন উপায়ে ফেসবুক পেজ বুস্ট করা যাবে সে বিষয়টিও জানা উচিত।

বিকাশ দিয়ে পেজ প্রমোট

ফেসবুক পেজ প্রমোট করার ক্ষেত্রে ডুয়াল কারেন্সি ডেভিড অথবা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন পড়ে। আবার বুস্ট করার যাবতীয় বিষয় যদি জানা না থাকে সেক্ষেত্রে একজন ডিজিটাল মার্কেটারকে হায়ার করতে হয়। সেক্ষেত্রে খরচ অনেক বেশি পরে, আর যদি নতুন বিজনেস শুরু করা হয় সেক্ষেত্রে একজন মার্কেটার হায়ার করা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিকাশ দিয়ে পেজ প্রমোট করার বিষয়টি কতটা সহজ এবং সত্য সেটা জেনে নিব। আসলে সরাসরি ভাবে বিকাশ দিয়ে কোনভাবেই পেজ প্রমোট বা ভিডিও বুস্ট করা সম্ভব না। 

বিকাশ দিয়ে পেজ প্রমোট বিষয়টিকে এভাবে বোঝানো হয়েছে যে কোন ডিজিটাল মার্কেটার যে কিনা বাংলাদেশী তাকে হায়ার করে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করে পেজ প্রমোট করার কথা বলা হয়েছে। বিকাশ কর্তৃপক্ষ সরাসরিভাবে ফেসবুকের পেজ এবং ভিডিও পোস্ট করার ক্ষমতা রাখেনা। সুতরাং বিকাশ থেকে পেজ প্রমোট করার কথা সম্পূর্ণভাবে ভুলে যাওয়া উচিত। তাহলে একটি বিষয় পরিষ্কার হলো যে ফেসবুক বুস্ট করতে কোন কার্ড লাগে এই প্রশ্নে অবশ্যই ডুয়েল কারেন্সি কার্ড প্রয়োজন। ডুয়েল কারেন্সি কার্ড গুলোর মধ্যে মাস্টার কার্ড ভিসা ইত্যাদি বহুল প্রচলিত কার্ড গুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই পেজ বুস্ট করা সম্ভব।

ভিসা কার্ড দিয়ে ফেসবুক বুস্ট

আমরা এ পর্যন্ত ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে ধারণা পেয়েছি। পাশাপাশি পেজ বুস্ট করার জন্য অবশ্যই ডুয়াল কারেন্সি কার্ডের প্রয়োজন পড়ে সেটাও জেনেছি। ক্রেডিট কার্ড দিও পেজ বুস্ট এর কাজ করা হয়ে থাকে। সাধারণত পাসপোর্টের উপর ভিত্তি করে অর্থাৎ পাসপোর্ট এর মেয়াদের উপর নির্ভর করে মাস্টার কার্ড এবং ভিসা কার্ড প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে এই সকল ডুয়েল কারেন্সি কার্ডে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার এনডোস করতে হয় তবে কেবলমাত্র পেইজ বুস্ট করার জন্য রেডি হয়ে থাকে। 

সাধারণত ১ বছরে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত ডুয়েল কারেন্সি কার্ডে এন্ডোর্স করার সীমাবদ্ধতা থাকে। একটি মাস্টার কার্ড অথবা ভিসা কার্ড দিয়ে ফেসবুক বুস্ট করার ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে সেটি নিচে দেওয়া হল।
  • সর্ব প্রথমে নিজের ফেসবুক পেজটিতে প্রবেশ করতে হবে।
  • ফেসবুকের পেজের যেই পোস্ট অথবা ভিডিওটি বুস্ট করতে চাচ্ছেন সেটির সাথে থাকা মিল রংয়ের “Bost Post” বাটনে ক্লিক করতে হবে।
  • বুস্টকৃত পোস্ট অথবা ভিডিওটি কোন ধরনের কার্যকারিতা বা ফলাফল আশা করছেন যেমন কাস্টমার থেকে অধিক মেসেজ পাওয়া, ওয়েবসাইট থেকে ভিজিটর নিশ্চিত, ফোন কল পাওয়া ইত্যাদি বিষয় সিলেক্ট করতে হবে। এছাড়া “অটোমেটিক” সিলেক্ট করার অপশন রয়েছে।
  • কাস্টমার পর্যায়ে কোন অপশন টি শো করানো হবে অর্থাৎ Order now, Call now, WhatsApp, Send message এগুলোর মধ্যে যেটি শো করাতে চান সেটি সিলেক্ট করতে হবে।
  • আপনার পণ্য অনুযায়ী অডিয়েন্স সিলেক্ট করা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অর্থাৎ আপনার পণ্য অনুযায়ী সেই ধরনের কাস্টমার সিলেক্ট করতে হবে যাদের এই মুহূর্তে প্রোডাক্টটি প্রয়োজন।
  • কোন সময়ে আপনি পোস্টটি বুস্ট করতে চাচ্ছেন সেটিও কৌশলগতভাবে নির্ধারণ করে দিতে হবে। যদি ছুটির দিনে বিকেল বেলায় পোস্টটি বুস্ট করতে চান সেটি সিলেক্ট করতে হবে।
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ বিড এবং বাজেট অর্থাৎ প্রতিদিন কি পরিমান অর্থ ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে দিতে যাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
  • শেষ ধাপে এসে ফেসবুক পেজ বুস্ট করার পুরো প্রক্রিয়াটি পুনরায় যাচাই করে “Bost Post Now” অপশনে ক্লিক করে ফেসবুক পেজ বুস্ট করার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।

ফ্রিতে ফেসবুক পেজ বুস্ট

আমরা বেশিরভাগ সময়েই ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টিতে অনেক ঘাবড়ে যাই এবং টাকা ইনভেস্ট করতে চাই না। আমরা অলরেডি ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি কি ধরনের বেনিফিট পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পেরেছি। বুস্ট ব্যতীত কখনোই ফেসবুক পেজ থেকে কাঙ্খিত ফলাফল আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। বর্তমান সময়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অর্থ দিয়ে বুস্ট না করলে খুব একটা ভালো ফলাফল দিতে চায় না। কিছু ট্রিক রয়েছে যার মাধ্যমে ফ্রিতে ফেসবুক পেজ বুস্ট করা সম্ভব। 
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো ফ্রিতে পেজ প্রমোট এবং বুস্ট করলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সেল হবে কিনা সেটা বলা সম্ভব না। তবে আমরা এখানে কিছু বিষয় উল্লেখ করলাম যেগুলো ফলো করার মাধ্যমে হয়তো কিছুটা পেজে এনগেজমেন্ট আসতে পারে এমনকি প্রোডাক্ট সেল ও হতে পারে। তবে অনেকেই অর্গানিকভাবে প্রোডাক্ট সেল করে থাকেন তবে সেটির মাত্রা খুবই কম। নিচে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো যার মাধ্যমে ফ্রিতে ফেসবুক পেজ বুস্ট করা যাবে।
  • সর্বপ্রথমে এমন একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে যেটি দেখতে অনেকটা আকর্ষণীয় এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়।
  • ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচার এর লোগোটি ব্র্যান্ড প্রকাশ করে এমন হওয়া উচিত।
  • ফেসবুক পেজ প্রমোট করার জন্য শুধুমাত্র ফেসবুকের উপর নির্ভরশীল না হয়ে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া যেমন instagram, twitter, whatsapp এগুলোতে নিয়মিত পণ্যের বিজ্ঞাপন পোস্ট করে যেতে হবে।
  • ভিডিও আপলোড করার সময় অবশ্যই হ্যাশট্যাগ (#) সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
  • অনলাইন বিজনেসের যে সকল গ্রুপ রয়েছে সে সকল গ্রুপে অ্যাড হতে হবে।
  • পণ্যের ভিডিও বা রিভিউ তৈরি করার সময় ভালো কোয়ালিটির ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে এবং অবশ্যই এডিটিং এমনভাবে করতে হবে যেন কাস্টমার আকর্ষণ বোধ করে।
  • পণ্যের ভিডিওর উপস্থাপন অবশ্যই শালিন হতে হবে যেন দর্শকরা ভিডিওগুলো সম্পূর্ণভাবে ওয়াচ করতে আগ্রহ বোধ করে।
পরিশেষে ধৈর্য হারালে চলবে না নিয়মিতভাবে কনটেন্ট পোস্ট করে যেতে হবে। এভাবে ৬ মাস থেকে ১ বছর যদি কন্টিনিউ প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা হয় এবং বিভিন্ন গ্রুপে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। তাহলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর দেখা যাবে উক্ত পেজ থেকে অর্গানিক ভাবে সেল আসতেছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় বিষয়টি যেমন গুরুত্ব বহন করে ঠিক তেমনি অর্গানিকভাবে পেজ থেকে ইনকাম করার জন্য অধ্যাবসায় এবং পরিশ্রম দুটিরই প্রয়োজন পড়বে।

শেষের কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকে অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত ফেসবুক পেজ বুস্ট করতে কত টাকা লাগে এবং ফেসবুক পেজ বুস্ট করলে কি হয় বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছি। আমরা আশা ব্যক্ত করছি যে ভবিষ্যতে কারো যদি ফেসবুক পেজ বুস্টিং অথবা ফ্রিতে ফেসবুক পেজ বুস্ট সংক্রান্ত তথ্যের প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের আর্টিকেলের প্রত্যেকটি বিষয় অনেকটাই কাজে আসবে। এরপরেও যদি ফেসবুক পেজ বুস্ট করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা মনে হয় তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। 

আশা করি আজকের এই পোস্টটি অনেকটা গুরুত্ব বহন করে, এজন্য আপনার বন্ধুবান্ধবদের এই পোস্ট সংক্রান্ত সকল বিষয়গুলো জানানোর লক্ষ্যে সকলের মাঝে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url