ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিস্তারিত জানুন
ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় সম্পর্কে আপনি কোন না কোন এক সময় জানার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে যারা কমার্সের স্টুডেন্ট তারা হাই স্কুল লেভেলে এই সম্পর্কে কোন এক পাঠ্য বইয়ে অবগত হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনেও ডেবিট ও ক্রেডিট বিষয়টি আমূল প্রভাব ফেলে। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ডের জুড়ি নেই। পকেটে কোনরকম টাকা পয়সা না থাকলেও এখন অনায়াসেই যে কোন শপিং মলে
ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করা সম্ভব হয়ে থাকে। আর এজন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টিকে নিদর্শন করা হয়েছে। উক্ত বিষয়ে সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আরও যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হল ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি ডেবিট ক্রেডিট চেনার উপায় বিশাখাটো মাস্টার কার্ডের পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নেওয়ার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র
ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি
একটি “ডেবিট কার্ড” যা ব্যাংক কার্ড প্লাস্টিক কার্ড বা নোট কার্ড হিসেবেও বহুলভাবে পরিচিত একটি নাম। ডেবিট কার্ড মূলত এক ধরনের প্লাস্টিক কার্ড যা ইস্যু করার পর থেকে বিভিন্নভাবে পেমেন্টের মেথড হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। টাকার পরিবর্তে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা হয় বিশেষ করে কেনাকাটা অর্থাৎ পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড গ্রাহকরা ব্যবহার করে। গ্রাহকদের অবশ্যই ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি ভালো ধারণা রাখা দরকার। কেননা একজন ব্যক্তি যে জিনিসটা ব্যবহার করছে সে সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানে তাহলে তার সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে অবগত হতে পারবে।
ডেবিট কার্ড দিয়ে কার্ডের মালিক তার ব্যাংক একাউন্টে থাকা অর্থ সরাসরি ব্যবহার করতে পারে। ইউরোপ দেশের মতো বিশ্বের প্রায় অনেক দেশে বর্তমানে ডেবিট কার্ডের ব্যবহার এতটাই ব্যাপক আকার ধারণ করেছে যে ধারণার বাইরে। ২০০০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল ডেবিট কার্ডকে অন্য দেশে ব্যবহার করার অনুমতি হিসেবে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে তাদের ইন্টারনেট ও ফোন কেনার জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
ডেবিট কার্ডের লেনদেন সম্পর্কিত বিষয়ে তিনটি উপায়ে সিস্টেম চালু রয়েছে EFTOPS (অনলাইন ডেবিট বা পিন ডেবিট হিসেবে পরিচিত), অফলাইন ডেবিট (স্বাক্ষর ডেবিট হিসেবে পরিচিত) এবং বৈদ্যুতিন পাশ কার্ড সিস্টেম। আসুন তাহলে এবার ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় এই প্রশ্নে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
“ক্রেডিট কার্ড” হলো একটি বিশেষ ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থা যার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড যা ওই পরিশোধ ব্যবস্থা ব্যবহারকারীদেরকে ইস্যু করা হয়। মূলত ক্রেডিট কার্ডের ধারক এবং বাহক, পণ্য ও সেবা ক্রয় করার জন্য মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ কোনরকম অর্থ ছাড়াই যেকোনো পণ্য ক্রয় করার ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তা পরিশোধ করা সম্ভব। সাধারণত স্থানীয় ব্যাংক অথবা ক্রেডিট ইউনিয়ন ভোক্তাদের নিকট এ ধরনের কার্ডগুলো ইস্যু করে থাকে। ক্রেডিট কার্ডগুলোর আকার আকৃতি আইএসও এবং আইইসি ৭৮১০ আইডি-১ আদর্শ মেনে চলে।
অনেকে চার্জ কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ডকে গুলিয়ে ফেলেন। কার দুটি সিস্টেম এক হলেও চার্জ কার্ড প্রতিমাসে বা প্রত্যেক চক্রের শেষে পুনরায় টাকা ভরতে হয় যা ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ভরতে হয় না। আবার ক্রেডিট কার্ডে ব্যবহারকারীদের ঋণ নেওয়ার সুবিধা দেওয়া থাকে অবশ্য তা সুদসহ ফেরত দিতে হয়। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি ঋণ গ্রহণ করতে চায়, সেক্ষেত্রেও ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তোলার নিয়ম ফলোআপ করার মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। ক্রেডিট কার্ড ক্যাশ কার্ডের চেয়েও ভিন্ন কেননা ক্যাশ কার্ডের মত এখানে টাকা বা অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করা হয় না।
ক্রেডিট কার্ডে তৃতীয় পক্ষ কাজ করে যারা বিক্রেতাদের অর্থ দেয় এবং ক্রেতাদের অর্থ পরিশোধ করে। ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা ও অসুবিধা অবশ্যই রয়েছে। এরপরেও পরিসংখ্যান বলছে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১.১১২ বিলিয়ন কার্ডের প্রচলন ছিল। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের পরিমাণ আরো বেশি পরিমাণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমান সময়ে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড দুটোই ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেহেতু কার্ড দুটো ব্যবহারের ফলে যে কোন সময় অর্থ বহন ছাড়াই পণ্য ক্রয়
থেকে শুরু করে টাকা উত্তোলন সবই সম্ভব হয় ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে, তাই বহিঃ বিশ্বসহ বাংলাদেশেও বর্তমানে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপক প্রচলন সৃষ্টি হয়েছে।
ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায়
হাই স্কুল লেভেলে হিসাববিজ্ঞান সাবজেক্টে ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টি বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। ডেভিট ও ক্রেডিট নির্ধারণ ব্যতীত কোন রকমের হিসাব প্রস্তুত করা সম্ভব নয়। আর এই হিসাবে উপর নির্ভর করেই ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি এবং কিভাবে পরিচালনা করতে হবে সেটা ঠিক করা হয়েছে। এজন্য আমাদের সকলেরই ডেভিট এবং ক্রেডিট সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা খুবই প্রয়োজন। ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কোন হিসাবের বামদিকে ডেভিট এবং ডানদিকে ক্রেডিট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। শব্দ দুটি হিসাবে নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।
ডেবিট শব্দের অর্থ বাম ও ক্রেডিট শব্দের অর্থ ডান। তাই হিসাবের বাম দিক ডেবিট এবং ডান দিক ক্রেডিট হিসাববিজ্ঞানের একটি রীতি হিসেবে পরিচিত। আর এই বিষয়গুলো যদি কেউ বুঝতে পারে তাহলে ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে আর কোন জটিলতা থাকে না। দু তরফা দাখিলা পদ্ধতিতে উল্লেখ রয়েছে যে- প্রতিটি লেনদেন দুইটি বিপরীতমুখী সমপরিমাণ পরিবর্তন আনায়ন করে। এক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন ডেভিট এবং অন্যটি ক্রেডিট হিসেবে গণ্য। প্রতিটি লেনদেনের ক্ষেত্রে অন্তত দুইটি হিসাব খাত প্রভাবিত হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে একটি লেনদেনের দ্বারা দুইটি হিসাব কখনোই একই দিকে প্রবাহিত হবে না। অর্থাৎ মূল কথা দাঁড়ালো ডেভিট ও ডেভিট বা ক্রেডিট ও ক্রেডিট কখনই হওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি লেনদেন সম্পূর্ণ হওয়ার পর হিসাব সমীকরণের উভয় দিক থেকে সর্বদা সমান থাকবে। পাশাপাশি হিসাবের মোট ডেভিট টাকা মোট ক্রেডিট টাকার সমান হবে। মূলত এই দুইটি তথ্য হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ে ব্যাপক পরিমাণ সাহায্য করে থাকে।
ডেবিট ক্রেডিট চেনার উপায়
ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই ডেবিট ক্রেডিট চেনার উপায় সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানতে হবে। মূলত পণ্য বিক্রয়ের ফলে নগদ অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া সেটাকে ডেভিট হিসেবে গণ্য করা হয়। আবার অন্যদিকে বিক্রয়ের ফলে যে আই বৃদ্ধি পেল সেই বিক্রয় হিসাবকে ক্রেডিট হিসেবে ধরা হয়। যেমন বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা ডেবিট, অন্যদিকে ব্যাংক থেকে টাকা পরিশোধ করায় সম্পদ কমে যাওয়ার বিষয়টিকে ক্রেডিট বলা হয়। কমিশন নগদেপ্রাপ্ত হয় নগদ সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে তাই নগদান হিসাব ডেবিট হিসেবে ধরা হবে।
ডেবিট ইনকামিং মানি রেকর্ড করে, যখন কিনা ক্রেডিট আউটগোয়িং মানি রেকর্ড করে। ডেবিট সাধারণত একটি অ্যাকাউন্টিং জার্নাল এন্ট্রি বাম দিক থেকে রেকর্ড করে। একটি ক্রেডিট একটি দায়, ইকোয়ালিটি, লাভ বা রাজস্ব একাউন্টের ভারসাম্য বাড়ায় এবং একটি সম্পদ প্রতিভা ব্যয় একাউন্টের ভারসাম্য কমিয়ে ফেলে। ক্রেডিট একটি জার্নাল এন্ট্রি যেটা কিনা ডান দিকে রেকর্ড করা হয়, পাশাপাশি সম্পদ ব্যয় এবং ক্ষয়ক্ষতির হিসাব উল্লেখ করে। যদি বিষয়টিকে অর্থাৎ ডেবিট ক্রেডিট কেনার উপায়টিকে আরো সহজ ভাবে উপস্থাপন করা হয় তাহলে বিষয়টি এমন দাঁড়ায়।
যে সুবিধা ভোগ করে তাকে ডেভিটর বা ডেভিট যে সুবিধা ট্যাগ করে তাকে ক্রেডিটর বা ক্রেডিট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। লেনদেনের ক্ষেত্রে জড়িত এ সকল হিসেব বা পক্ষ সুবিধা ভোগ করে তাকে ডেভিটর এবং যে হিসাব বা পক্ষ সুবিধা ত্যাগ করে তাকে ক্রেডিটর বলে। আবার যে পক্ষে সুবিধা ভোগ করে সেই পক্ষ বা হিসাবকে ডেভিট হিসাব এবং যে পক্ষে সুবিধা ত্যাগ করে করে সেই পক্ষকে ক্রেডিট হিসাব বলা হয়। এটি সাধারণত দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির মূলনীতি পর্যালোচনা করে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেবিট ও ক্রেডিট এর মধ্যে পার্থক্য কি
ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি এবং ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টি সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে ধারণা পাওয়ার জন্য ডেভিট ও ক্রেডিটের মধ্যে পার্থক্য যেগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যেহেতু হিসাবের দুইটি দিক হল ডেবিট এবং ক্রেডিট। তাই এদের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকবে এবং দুটি বিষয় বস্তু আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়। হিসাববিজ্ঞান অনুযায়ী প্রতিটি লেনদেন সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অবশ্যই ২ টি পক্ষ বা হিসাব থাকবে। আর সেই পক্ষ দুটি হলো ডেবিট এবং ক্রেডিট। মূলত ডেবিট শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো খরচ এবং ক্রেডিট শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো
জমা। অর্থাৎ লেনদেনের ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রহণকারী পক্ষই হলো ডেবিট আর প্রধানকারি পক্ষই হলো ক্রেডিট। কোন হিসাবের ক্ষেত্রে দায় অথবা ঋণ কে ক্রেডিট হিসেবে ধরা হয়। আধুনিক হিসাববিজ্ঞান সেটাই বলছে যে, দায় বা ঋণের পাশাপাশি সুবিধা প্রদান বা ত্যাগ করাকেও ক্রেডিট বলা হয় যা একটু আগে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আবার হিসাবের যে পক্ষ সুবিধা প্রদান বা ত্যাগ করে তাকে ক্রেডিটর বলা হয়ে থাকে। যে পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করছে সেটাকে ডেবিট হিসাব বা ডেবিটর বলা হয়ে থাকে।
ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের তত্ত্ব
- হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট ক্রেডিনয়ের ক্ষেত্রে দুটি তত্ত্ব বিদ্যমান রয়েছে যা নিচে দেওয়া হল।
- A= L+E (asset = liability + equity)
- দুতরফা পদ্ধতি অনুযায়ী, লেনদেন সম্পূর্ণ হবার পর দুটি পক্ষই সর্বদা সমান থাকবে অর্থাৎ হিসাবে মোট ডেবিট এবং মোট ক্রেডিটের পরিমাণ সব সময় সমান থাকবে।
ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র
যারা ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি এ প্রশ্নটি করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এই সূত্রগুলো অনেকটাই কাজে আসবে। আবার হাই স্কুলের যারা কমার্সের স্টুডেন্ট রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র অনেক ক্ষেত্রে কাজে আসবে। তাই অবশ্যই সূত্রগুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র নিচে উল্লেখ করা হলো।
- সম্পদ = দায় + মালিকানা স্বত্ব + আয় ব্যয়
- সূত্রটি বিশ্লেষণ করলে যে বিষয়গুলো পাওয়া যায় সেগুলো হল।
- ডেবিট = সম্পদ
- ক্রেডিট = দায় + মালিকানা স্বত্ব + আয় ব্যয়
সুতরাং ডেভিট = ক্রেডিট, সর্বদা সমান হবে সমান না হলে হিসাবে ভুল বিদ্যমান হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টি আরো একটু পরিষ্কার হওয়ার ক্ষেত্রে এদের পার্থক্যের একটি ছক নিচে দেওয়া হল।
ভিসা ডেবিট কার্ড কি
ভিসা ডেবিট কার্ড সাধারণত ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক কার্ড হিসেবে গণ্য। বাড়ির বাহিরে পা রাখার পর যদি আপনার অর্থের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে অর্থ বহনের কোনো দরকার পড়ে না। যদি আপনার কাছে একটি ভিসা ডেবিট কার্ড থাকে। ভিসা কার্ডগুলোর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তাৎক্ষণিকভাবে যে কোন মুহূর্তে এটিএম বুথ থেকে কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করা যায়। পকেটে টাকা বহনের চেয়ে ভিসা কার্ড ব্যবহার বা বহন করা অতি সুরক্ষা হিসেবে দাবি করা হয়। বর্তমানে ভিসা ডেবিট কার্ড বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং লক্ষ লক্ষ পোর্টাল গৃহীত হচ্ছে।
কেউ যদি অনলাইনে দ্রুত লেনদেন করতে চায় সেক্ষেত্রেও ভিসা কার্ড ব্যবহার করা যায়। ই-কমার্স ব্যবসা এবং অনলাইন খুচরা বিক্রেতার জন্য সরাসরি অর্থ প্রদানের চেয়ে ভিসা ডেবিট কার্ড খুবই সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ। ভিসা কার্ড অতি জনপ্রিয়তা হওয়ার পেছনে কারণ হলো এর পেমেন্ট গেট ওয়েগুলি সরাসরি গ্রাহক এবং বনিককে এক দৃষ্টান্তে সংযুক্তি স্থাপিত করে। পাশাপাশি সারাবিশ্বে একটি নিরাপদ পেমেন্ট নেটওয়ার্ক তাই কোনরকম প্রতারণামূলক কার্যকলাপে প্রশ্ন ওঠেনা বিধায় ভিসা কার্ড দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
ভিসা কার্ড মূলত যেকোনো ব্যাংকের আওতায় ইস্যুকৃত একটি প্লাস্টিক কার্ড যা ব্যবহার করে গ্রাহকরা যেকোনো সময় টাকা উত্তোলন করে থাকে। যদি কেউ ভিসা কার্ড সংগ্রহ করতে চায় সেক্ষেত্রে যে কোন ব্যাংকে গিয়ে প্রথমে সেখানকার সঞ্চয় একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর নিয়োগকৃত কর্মকর্তাকে ভিসা কার্ড এর জন্য আবেদন করার কথা বলতে হবে। কর্মকর্তা একটি আবেদন ফরম দেবে যেখানে ডিটেলস পূরণ করার পর আপনাকে ইনস্ট্যান্ট ডেবিট কার্ড অথবা নির্দিষ্ট সময় পর কার্ডটি প্রদান করবে।
বাংলাদেশের সাধারণত তিন ধরনের ভিসা কার্ড প্রদান করা হয়। সেগুলো হল ভিসা ক্লাসিক কার্ড, ভিসা গোল্ড কার্ড এবং ভিসা প্লাটিনাম কার্ড।
ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ডের পার্থক্য
যাদের ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি সম্পর্কে জানার আগ্রহ রয়েছে তারা আশা করি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোর দ্বারা ভালোভাবে অবগত হতে পেরেছেন। আমরা ইতিমধ্যে ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয়টিকে উপলব্ধি করার জন্য ডেবিট ও ক্রেডিটের পার্থক্য গুলো পর্যালোচনা করেছি। আসুন তাহলে এবার ভিসা কার্ড ও মাস্টারকার্ডের পার্থক্যগুলো কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নিব। ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি ভিসা কার্ড মূলত কি এবং কোন কোন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভিসা কার্ড মূলত ভিসা কর্তৃক ব্র্যান্ডেড ও ভিসা নেটওয়ার্ক দ্বারা চালিত একটি পেমেন্ট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে এর যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে ডেবিট, ক্রেডিট এমনকি গিফট কার্ড সার্ভিসের প্রদান করছে ভিসা কার্ড। সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো ভিসা ব্র্যান্ডেড হলেও ভিসা কার্ডগুলো মূলত ভিসা নয় কারণ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভিসা কার্ডগুলো ইস্যু করে থাকে। ভিসা সাধারণত একটি স্বীকৃত প্রেমেন্ট প্রসেসিং নেটওয়ার্ক যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গুলো পরিচালনা করে থাকে। বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত ভাবে ভিসার মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করে থাকে। মাস্টার কার্ড হল ভিসা কার্ডের মতোই একটি পেমেন্ট গেটওয়ে যেটা কিনা দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।
মাস্টার কার্ড ব্র্যান্ডেড পেমেন্ট কার্ডগুলি সরবরাহের ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ড তাদের অধিকাংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে একজোট হয়ে কাজ করে থাকে। নিজেদের মালিকাদিন গ্লোবাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মাস্টার কার্ড পেমেন্ট লেনদেনের কাজ সম্পন্ন করে। এই পেমেন্ট প্রচেষ্ট ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে পরিচালনা করা হয়। মূলত ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ড ইস্যু করে থাকে মাস্টার কার্ড। ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ডের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য উল্লেখ করা যাবেনা। কেননা প্রত্যেকটি অনলাইন বা ফিজিক্যাল মার্কেটে ভিসা ও
মাস্টার কার্ড একই ভাবে এবং একই পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটি বিক্রেতা যদি উল্লেখিত ভিসা কার্ড গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে মাস্টারকার্ড গ্রহণ করতে পারবে এতে কোন সমস্যা তৈরি হয় না। তাহলে ব্যবহার এবং গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ডের এমন কোন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সকল দেশে ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ড একইভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ডের আলাদা কিছু অনলাইন প্রটেকশন লক্ষ্য করা যায়।
মাস্টার কার্ড “সিকিউরড কোড স্কিম” নামে এক ধরনের সুরক্ষা প্রকল্প তৈরি করেছে তাদের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে ভিসা একই ধরনের “ভেরিফাইড বাই ভিসা স্কিম” নামেও তাদের সিস্টেম ব্যবহার করে যাচ্ছে।
লেখকের শেষকথা
আজকের বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার প্রধান দুটি কারণ হলো যারা হাই স্কুল লেভেলে কমার্স গ্রুপে পড়াশোনা করছে তাদের ক্ষেত্রে তথ্যগুলো অনেকটাই কাজে আসবে। আবার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানার প্রয়োজন ছিল আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তা অনেকটাই অর্জন করা সম্ভব হলো। আশা করি আপনাদের ডেবিট ক্রেডিট কার্ড কি এবং ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় বিষয় সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা তৈরি হয়েছে।
এরপরেও যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আজকের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর উদ্দেশ্যে একটি শেয়ার করতে পারেন। আমরা সবসময় আমাদের ওয়েবসাইটে এরকম তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url