ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় জানুন

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অনেক সময় উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকি। মোটামুটি সকলেরই ধারণা রয়েছে ক্যালসিয়াম শরীর থেকে যদি কমে যায় তাহলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আবার শরীর থেকে যদি ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমে যায় সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম রোগ বালাই দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ থাকে। বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে 
ক্যালসিয়াম-ও-ভিটামিন-ডি-এর-অভাবে-কি-হয়
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বা মানব শরীরে কেন ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। আলোচ্য বিষয়টি ছাড়াও আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ এবং ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়। ভিটামিন ডি এর উৎস এবং ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ

আমাদের সকলেই কমবেশি জানি যে ভিটামিন ডি শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। শুধুমাত্র শারীর িক সুস্থতার জন্য নয় মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রেও শরীরের জন্য ভিটামিন ডি এর উপস্থিতি খুবই জরুরী। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এটিকে “ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড” বলে আখ্যা দিয়েছেন। এর কাজ হচ্ছে ইন্টিস টাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। ক্যালসিয়াম শোষণের পাশাপাশি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে থাকে। শারীরিক গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর যে কত মাত্রায় প্রয়োজন রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। 

ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে ধীরে ধীরে শরীরের হাড় গুলো প্রথমে দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনটি হওয়া মানেই আর্থাইটিস এর মত রোগ সৃষ্টি হওয়া। ভিটামিন ডি মূলত শরীরের হারকে শক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। এগুলোর বাদেও দাঁতের সুস্থতার জন্য ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন অফুরন্ত। যদি শরীরে ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম হয় সে ক্ষেত্রে শরীরের ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সুযোগ থাকে। আর এজন্যই আমাদেরকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় এবং 

সেই ঘাটতি গুলো কিভাবে পূরণ করতে হয় সে সম্পর্কে সচেতন হওয়া। আসুন ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলোর মধ্যে প্রথম যে লক্ষণ প্রকাশ পায় সেটি হল শারীরিক দুর্বলতা। ভিটামিন ডি এর অভাবে মাংসপেশীর দুর্বলতা ভাব পরিলক্ষিত হতে থাকে। মাংসপেশি বেড়ে যায় এবং মাংসপেশি কাঁপার মতো সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়। শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যা যেমন বিষন্নতার সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। কোন কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষন্নতায় ভুগতে থাকে রোগী, পাশাপাশি মেজাজ মারাত্মক আকারের খিটখিটে হয়ে যায়।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়

ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি একে অপরের সাথে সম্পূরক হিসেবে কার্যকলাপ সম্পাদন করে থাকে। ক্যালসিয়াম আর মজবুত করতে সাহায্য করে। আর ক্যালসিয়াম শরীরে শোষণ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে ভিটামিন ডি। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বিষয়টি আমরা অনেকেই জানি এবং হাতের কাছেই ফার্মেসির দোকানগুলো থাকার ফলে সেখান থেকে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি ট্যাবলেট গুলো কিনে খাই। কিন্তু আসলেই কি ট্যাবলেট গুলো খাওয়ার ফলে আমাদের চির মুক্তি লাভ হয় বা বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে ওষুধগুলো খাওয়া কি আদেও সঠিক কিনা সেটা আমরা জানিনা। 
গবেষণায় উঠে এসেছে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি প্রয়োজন পড়ে। তবে গর্ভবতী মায়েদের অথবা স্তন দানকারী মায়েদের এর পরিমাণ আরো একটু বেশি। গবেষণায় আরো উঠে এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের দেশের লোকজন প্রায় অর্ধেকের কম ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। ওষুধ ব্যতীত আমরা প্রাকৃতিক উপাদান থেকেও ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারি সে সম্পর্কে আমরা 

আর্টিকেলের নিচের অংশে জানতে পারবো। আসুন তাহলে এবার ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বা কি কি শারীরিক সমস্যা গুলো পরিলক্ষিত হতে থাকে সেটি জানা যাক।

শারীরিক এবং মানসিক দুর্বলতা

ভিটামিন ডি এর অভাবে মাংসপেশী যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে তার সঙ্গে মানসিকভাবেও রোগী দুর্বল হতে থাকে। কোন কারণ ছাড়াই মেজাজ খারাপ হওয়া এবং সব সময় মেজাজ খিটমিটে হয়ে থাকা একমাত্র ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে হয়ে থাকে। মাংসপেশীগুলো অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আক্ষরিক অর্থে ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। মাঝে মাঝে মাংসপেশী কাঁপতে থাকে যা খুবই অসহনীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। শারীরিক সমস্যাগুলো হওয়ার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাগুলো ত্বরান্বিত হয়। ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। বিষন্নতা বাড়তে থাকে এবং এমনি এমনি রাগ চলে আসে।

দাঁতের সমস্যা

ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত লক্ষণ গুলোর মধ্যে আরও একটি বড় সমস্যা সেটি হল দাঁতের সমস্যা। ভিটামিন ডি এর অভাবে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে থাকে। দাঁতের ক্ষমতা ধীরে ধীরে দুর্বলতার দিকে ধাবিত হয়। শক্ত কোন কিছু খাওয়া যায় না যেমন শক্ত হাড় বা মাংস। অনেক সময় ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে দাঁতের যেমন ক্ষয় হয়ে থাকে পাশাপাশি অনেক সময় দাঁত ভেঙেও যায়।

ওজন বৃদ্ধি

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলোর মধ্যে ওজন বৃদ্ধি একটি অন্যতম লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ভিটামিন ডি এর অভাবে মাংসপেশীগুলো বেড়ে যায়, যার ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই ডাক্তাররা সবসময় খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডিম সমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। ওজন বৃদ্ধির ফলে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি কর্মজীবনেও ব্যাপক সমস্যা তৈরি হতে থাকে। যেহেতু ভিটামিন ডি এর জন্য ওজন বৃদ্ধি হতে পারে তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।

উচ্চ রক্তচাপ

ডাক্তাররা আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন যে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় এ বিষয়টি আপনারা ভালোভাবে জানুন এবং অবশ্যই উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা সেটি জানার জন্য সচেতন থাকুন। ভিটামিন ডি এর অভাবে উচ্চ রক্তচাপ এর মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। আর এজন্যই শুরুতেই ডাক্তারগণ সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন এবং পাশাপাশি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলো খাওয়ার উপদেশ দেন। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে রোগী ধীরে ধীরে ক্লান্ত অনুভব করতে থাকে। 

কোন কাজে মন বসে না একটু কাজ করলেই ক্লান্তি অনুভব হয় এবং ঘুম চলে আসে। আর এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই ভিটামিন ডি এর উৎস খুঁজে বের করতে হবে এবং সে অনুযায়ী খাদ্য তালিকা সেট করতে হবে।

ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়

আমরা ইতিমধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। আবার ভিটামিন ডি এর অভাবে কি কি সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় সে সম্পর্কেও জানতে পেরেছি। আসুন তাহলে এবার ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয় সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। ডাক্তারদের মতে মূলত আমিষ খাবার কম খাবার ফলে এরকম সমস্যা অর্থাৎ ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হতে পারে। এছাড়াও জিনগত অসুখের কারণেও ভিটামিন শরীরের কাজ করতে পারে না। আবার দীর্ঘদিন যদি সূর্যের আলো শরীরে যদি না পড়ে এক্ষেত্র ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। 

ডাক্তাররা সবসময় আমি যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এজন্য মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি খেতে হবে। আর সূর্যের আলোতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট থাকতে হবে। এছাড়াও সয়াবিনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি এর উৎস পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় জানার পর যদি আমরা ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করা উদ্দেশ্যে খুব বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে থাকি সেক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কোথায় রয়েছে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। এক্ষেত্রেও বিষয়টি ঠিক তেমনি। শরীরে ভিটামিন ডি এর মাত্রা বৃদ্ধির ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আর এই পরিস্থিতিকে হাইপারক্যালসিয়ামিয়া বলে আখ্যায়িত করা হয়। যার ফলে বমি বমি ভাব এবং শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়। হাইপারক্যালসিয়ামিয়া থেকে কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। 
পাশাপাশি কিডনি জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়। এজন্য ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। আবার অতিরিক্ত ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে হৃদরোগ এমনকি ক্যান্সারের মতো মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। অনেকে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণের জন্য বিভিন্ন রকম সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেন যা শরীরের জন্য আরো মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনবে। প্রাকৃতিক উপায়ে সূর্যের আলো থেকে প্রতিদিন ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করাই শ্রেয়। ভিটামিন ডি যেহেতু ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ করতে সাহায্য করে যার ফলে হাড় শক্ত এবং মজবুত হয়। 

ভিটামিন ডি এর অভাবে হারে যন্ত্রণা হয়। কিন্তু যখন ভিটামিন ডি এর মাত্রা অতিরিক্ত আকার ধারণ করে, তখন হাড়ের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে থাকে। এ কারণে হাড়ের যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায় এবং হাড়ের ক্ষয় সম্ভাবনা তৈরি হয়।

ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন ডি ৩ হার্ট এবং কোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যদি এই ভিটামিনের মাত্রা কোনভাবে কমতে থাকে তাহলে শিশুদের মধ্যে রিকেটস নামক রোগ দেখা দেয়। আবার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অস্টিওপোরোসিসের অবস্থার কারণ হিসেবে ভিটামিন ডি ৩ এর ঘাটতিকে দায়ী করা হয়েছে। উক্ত এই ভিটামিন সঠিক শোষণ ও রক্তের মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের বিপাকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় এ প্রশ্নতে আমরা হাড়ের ক্ষয় সম্বন্ধে জানতে পেরেছি। 

ঠিক তেমনি ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে হাড়ের ক্ষয় থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়ে থাকে। ভিটামিন ডি ৩ এর চাহিদা পূরণ করার জন্য সাপ্লিমেন্টের চাইতে মাছ, দুধ, মাশরুম, সামুদ্রিক মাছ গ্রহণের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব। যদি প্রতিনিয়ত আমরা চাহিদা মেটাতে অপারগ হই সে ক্ষেত্রে এর অভাবে হাড়ের ফাটল, ভঙ্গুর হাড়, মানসিক সমস্যা, হাড়ের ক্যান্সার, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, সংক্রমনের উচ্চ ঝুঁকি, ক্লান্তি এবং দুর্বলতা সহ নানান সমস্যায় ভুগতে হয়। 

চিকিৎসকরা সাধারণত রোগীর বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে কোন ধরনের ওষুধ দেওয়া প্রয়োজন সেটি নির্ধারণ করে থাকেন। ব্যক্তিভেদে ওষুধের পরিমাণ এবং ওষুধের প্রকার আলাদা হয়ে থাকে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোনভাবেই কোনরকম ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণযোগ্য নয়।

ভিটামিন ডি ৩ এর উপকারিতা

শরীর সুস্থ রাখার জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভিটামিন ডি ৩ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি। ভিটামিন ডি ৩ যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকে তাহলে হাড় মজবুত করা থেকে শুরু করে, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা সবকিছুই ভালোভাবে পরিচালিত হয়। যদি শরীরে ভিটামিন গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে তাহলে ক্যান্সারের মতো রোগ ও ব্যক্তিকে স্পর্শ করতে পারবে না। ভিটামিন ডি ৩ এর উপকারিতা সমূহ নিচে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
  • শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি ৩ এর উপস্থিতি শরীরকে যেমন রোগ বালাই থেকে দূরে রাখে ঠিক তেমনি হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। এছাড়াও সিজনাল বিভিন্ন ফ্লু বা অন্যান্য অসুখ থেকে সকলকে দূরে রাখে।
  • গবেষণা অনুযায়ী ভিটামিন ডি ৩ আমাদের মানসিক প্রশান্তিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের মেজাজকে ঠান্ডা রাখার থেকে শুরু করে কাজে মনোযোগ সকল কিছুতেই ভিটামিন ডি ৩ এর উপস্থিতি লক্ষণীয়। অবশ্যই সাপ্লিমেন্ট এর চেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে ভিটামিন গুলোর ঘাটতি পূরণ করা সবচেয়ে ভালো উপায়।
  • ওজন কমাতে ভিটামিন ডি ৩ ভালো একটি ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় যারা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় এই ভিত্তিতে নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ৩ ট্যাবলেট গুলো সেবন করে থাকেন। আর ট্যাবলেটগুলো খাওয়ার ফলে ওজন ত্বরান্বিত হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রয়েছে ভিটামিন ডি ৩ এর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন রকম সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উক্ত ভিটামিন টি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে শরীরে ভিটামিন ডি ৩ ইনসুলিনের স্তরকে সাধারণের তুলনায় বাড়িয়ে দেয় যার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি ক্যান্সার বিরোধী হিসেবেও ভিটামিন ডি ৩ ভালোভাবে কাজ করে। শরীরের ক্যান্সার জাতীয় টিউমার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করতে ভিটামিন ডি ৩ এর তুলনা নেই।

ভিটামিন ডি এর উৎস

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলো যখন প্রকাশ পায় তখন আমাদের আর চিন্তার শেষ থাকে না। তখন ভিটামিন ডি এর উৎস আমরা হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকি। বিভিন্ন ফার্মেসির দোকান থেকে ভিটামিন ডি এর সাপ্লিমেন্ট অর্থাৎ ভিটামিন ডি ট্যাবলেট গুলো সেবন করি যা কোনভাবেই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কাম্য নয়। ঔষধ ব্যতীত প্রাকৃতিক উপায়ে ভিটামিন ডি এর উৎস খুঁজে পাওয়া সম্ভব। আর কোনরকম অর্থ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ব্যতীত প্রাকৃতিক উপায়ে যেমন সূর্যের আলু থেকে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। 
ডাক্তারদের মতে সূর্যের আলো হলো ভিটামিন ডি এর অন্যতম একটি উৎস। সূর্যের করার রোদে না গিয়ে হালকা রোদে অর্থাৎ সকাল আটটা থেকে নয়টার ভেতরে রোদে গিয়ে দাঁড়ানোর মাধ্যমে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। তাই সকলের উচিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় বিষয়টিকে চিন্তার বিষয় হিসেবে না নিয়ে প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করা এবং উক্ত সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া। সূর্যের আলো ব্যতীত আরো কিছু খাবার রয়েছে যার মাধ্যমে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি 

পূরণ করা সম্ভব যেমন চিজ, মাশরুম, তেলযুক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছ, দুধ, ডিম ইত্যাদি। তাহলে সূর্যের আলো গ্রহণের মাধ্যমে এবং উক্ত খাবারগুলো গ্রহণের মাধ্যমে আমরা ওষুধ ব্যতীত খুব সহজেই ভিটামিন ডি এর চাহিদা মেটাতে পারি এবং সুস্থ জীবন যাপনে অগ্রসর হতে পারি।

ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলো যদি পরিলক্ষিত হয় তাহলে আমাদের অবশ্যই সর্বপ্রথম যে করণীয় বিষয় সেটি হল ভিটামিন ডি এর উৎসগুলো খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী খাদ্য তালিকা সেট করা। আমরা ইতিমধ্যে উপরে উল্লেখ করেছি সূর্যের আলো এবং আরো কিছু খাবার রয়েছে যার মাধ্যমে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করা সম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে ভিটামিন ডি এর অভাব যদি আমাদের ভিতরে পরিলক্ষিত হয় তাহলে কোনভাবে সেটিকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কেননা পরবর্তীতে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির অভাবে হাড়ের ক্ষয় রোগ থেকে শুরু করে হাড়ের ক্যান্সার পর্যন্ত 

হতে পারে। প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করার পর যদি দেখা যায় সেরকম কোন উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রোদে দাড়িয়ে থাকতে হবে। সকালে, দুপুরে, রাতে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কোনগুলো সেগুলো নিয়মিত খেতে হবে। আর তাহলে আমরা এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি।

লেখকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম। আমরা আশা ব্যক্ত করছি এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনারা ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলো, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় এবং ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় কি সে বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আজকের এই পোষ্ট সংক্রান্ত যদি আপনাদের কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে সেটি জানাতে পারেন। 

আমরা সবসময় চেষ্টা করি আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন তথ্যবহুল পোস্টগুলো পাবলিশ করার জন্য। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। পাশাপাশি আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে যথাযথ মনে হয় তাহলে এটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url