ঋণ কত প্রকার ও কি কি এবং ক্ষুদ্র ঋণ বলতে কি বুঝায়

ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি সম্পর্কে তারাই বিভিন্ন সময় জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন যারা ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে চান। আবার অনেক সময় দারিদ্রতা বিবর্তনের লক্ষ্যে এবং সমস্যা জনিত কারণে ঋণ নেওয়ার কথা ভেবে থাকেন। একজন ব্যক্তি যদি ঋণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারে তাহলে কিসের প্রেক্ষিতে কোন ঋণটি গ্রহণ করলে তার জন্য সুবিধা হবে সে বিষয়টি খুব সহজেই বুঝা যায়। তাই আপনাদের বিষয়টি অবলোকন 
ঋণ-কত-প্রকার-ও-কি-কি
করে আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। উক্ত বিষয়টি জানার পাশাপাশি আপনারা আরও যে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো খেলাপি ঋণ কি এবং ক্ষুদ্রঋণ কত প্রকার, ব্যাংক ঋণ বলতে কি বুঝায় বা ক্ষুদ্র ঋণ বলতে কি বুঝায় এবং ব্যাংক ঋণ ঝুঁকি কি পাশাপাশি ঋণ বিশ্লেষণ কাকে বলে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। সুতরাং ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে জানার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

“ঋণ” শব্দটি সাধারণত ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ “ক্রেডিট”। ইংরাজীতে "ক্রেডিট" অর্থাৎ “ঋণ” শব্দটি ১৫২০ সালে প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে শব্দটি মধ্যযুগীয় ফরাসী শব্দ (১৫শ শতাব্দি) হিসেবে প্রচার হতে থাকে। বিশ্বাস, আস্থা যা অন্যকে বিশ্বাস করে দেওয়া হয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে যা অবশ্যই ফেরত যোগ্য। একজন ব্যক্তি অপর একজন ব্যক্তিকে বিশ্বাসের মাধ্যমে কোন অর্থ বা সম্পদ দিয়ে থাকলে, তৎক্ষণাৎ উক্ত ব্যক্তিটি গ্রহণ কৃত অর্থ অথবা সম্পদ ফেরত দিতে পারেনা। 

যার ফলে অর্থ অথবা সম্পদ গ্রহণ কৃত ব্যাক্তিটি যার কাছ থেকে অর্থ অথবা সম্পদ গ্রহণ করলেন সেই ব্যক্তির নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভাবে থেকে যান। আর এই বিষয়টিকে “ঋণ” হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ঋণের সংজ্ঞা হিসেবে বলতে গেলে “ঋণ” হচ্ছে সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে আদান-প্রদান এর বিষয় পরিলক্ষিত হয় এবং আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক পাশাপাশি তা অনেক সংখ্যক সম্পর্কহীন মানুষের ভেতরে প্রসারিত ভাবে বিস্তার করে।

ঋণ কত প্রকার ও কি কি

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই ঠিক তেমনি প্রয়োজন অনুসারে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি। একজন ব্যক্তির যদি গাড়ি-বাড়ির স্বপ্ন থেকে থাকে তাহলে দেখা যায় অন্য আরেক জনের ব্যবসায়ী বিনিয়োগের চিন্তা মাথায় ঘুরছে। আর এ সকল বিষয় নিরসনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী ঋণ প্রদান করে থাকে। যদি কেউ ঋণ গ্রহণ করতে চায় তাহলে সর্বপ্রথম সেই ব্যক্তির ঋণ সম্পর্কে ধারণা থাকা খুবই জরুরী। ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি জানার মাধ্যমে ব্যক্তিবর্গ তার প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ গ্রহণ করতে পারে। 

হোম লোনের মাধ্যমে যেমন একজন ব্যক্তি তার বাড়ি ঘর করার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে ঠিক তেমনি একজন স্টুডেন্ট তার পড়াশোনা কমপ্লিট করার প্রেক্ষিতে স্টুডেন্ট লোন গ্রহণ করতে পারে। সকল ধরনের আর্থিক সহায়তার জন্য বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক প্রতিষ্ঠান সব সময় বদ্ধপরিকর। বর্তমান সময়ে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের পূর্ববর্তী কোন ঋণ আছে কিন্তু পরিশোধ করার মতো সামর্থ্য নেই সেই ক্ষেত্রেও উক্ত ঋণটি পরিশোধ করান জন্য নতুন করে ঋণ প্রদান করে থাকে। আসুন তাহলে এবার ঋণের প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিই। 
ঋণের বিভিন্ন বিষয়ের উপর যেমন ঋণের পরিমাণ, ঋণের সুদ এবং মেয়াদ এর উপর নির্ভর করে এর প্রকারভেদ তৈরি করা হয়েছে। উক্ত বিষয়ের উপর বিশাল বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঋণ কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো সিকিউরড ঋণ, নন সিকিউরড ঋণ এবং কৃষি ঋণ। ঋণের এই তিনটি প্রকারভেদ এর আবার আরো অনেকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। নিচে তালিকা আকারে ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি পর্যালোচনা করা হলো।

            সিকিউরড ঋণ

          নন সিকিউরড ঋণ

              কৃষি ঋণ

                হোম লোন

              ব্যক্তিগত ঋণ

              শস্য ঋণ

            অটো/কার লোন

              স্টুডেন্ট লোন

              মৎস্য ঋণ

সম্পত্তি ঋণ অথবা বন্ধকী ঋণ

            ক্রেডিট কার্ড ঋণ

        পোল্ট্রি ও ডেইরি ঋণ

ক্ষুদ্র ঋণ বলতে কি বুঝায়

সাধারণত ক্ষুদ্র ঋণ হচ্ছে স্বল্প পরিমাণ ঋণের বাড়তি অংশ। যে সকল ব্যক্তিরা দরিদ্র সীমার নিচে অবস্থান করছে পাশাপাশি কোন ব্যক্তি যদি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে উন্নত করতে চায় সেই বিষয়টিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে থাকে। দরিদ্র বলতে এখানে ভূমিহীন ব্যক্তিদের কে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ভূমিহীন ব্যক্তি বলতে যার পরিবার ৫০ শতাংশের কম চাষযোগ্য জমির মালিক অথবা যার পরিবার এরূপ স্থাবর অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তির মালিক, 

সে সকল ব্যক্তিকে ভূমিহীন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ক্ষুদ্র ঋণ গুলো প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সহজ শর্তে বিনা জামানতে প্রদান করে। বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক বিনা জামানতে ক্ষুদ্রঋণ এবং বেকার ঋণ প্রদান করে।

ক্ষুদ্র ঋণ কত প্রকার

অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক কিন্তু অর্থের জন্য শুরু করতে পারছেন না সে সকল ব্যক্তিকে সহজ শর্তে কোম্পানিগুলো ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। কোম্পানিগুলোর লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। অবশ্যই দরিদ্র বলতে ভূমিহীন এবং বীত্ত হীন ব্যক্তি সমষ্টিকে বলা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তির অবস্থানের উপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানগুলো কত টাকা ঋণ প্রদান করবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিআরডিবি বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক সংস্করণে লক্ষ্যে সরকারি খাতের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। 

উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য সকল সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড বা বিআরডিবি বহু আগে থেকেই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চালু রেখেছে। পরিসংখ্যান বলছে বিআরডিবি এর ঋণ আদায়ের হার ৯৮%। যা অন্য সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থাপনার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে। আবার আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন অংশীদার হিসেবে সংযুক্ত ২৫৭টি এনজিও এর মাধ্যমে প্রায় ৮৫ লক্ষ ঋণ গ্রহীতাকে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করেছে। 

ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি আসুন তাহলে ক্ষুদ্রঋণ কত প্রকার হতে পারে সে বিষয় সম্পর্কে জেনে নিব। ক্ষুদ্র ঋণ সাধারণত তিন প্রকারের হয়ে থাকে। সেগুলো হলো গ্রামীণ ক্ষুদ্র ঋণ, নগর ক্ষুদ্রঋণ ও কৃষি খাত ক্ষুদ্র ঋণ। এ সকল খাতে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকদের প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের আওতায় নিয়ে আসে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল লক্ষ্যই হলো দারিদ্র বিমোচন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা আর ওই সকল ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে একজন বেকার লোক যেমন স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে ঠিক তেমনি একজন দরিদ্র সীমার নিচ অবস্থান কারি ব্যক্তি সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারে।

খেলাপি ঋণ কি

খেলাপি ঋণ কি এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গেলে যে বিষয়টি প্রথমে চলে আসে সেটি হল চুক্তির শর্ত অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পর যদি ঋণগ্রহীতা ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে এবং উক্ত ঋন পরিশোধ না করার লক্ষ্যে সবসময় তার জায়গা পরিবর্তন করে সে বিষয়টিকে খেলাপি ঋণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সাল থেকে ঋণ খেলাপিদের নানা ধরণের সুবিধা ও বড় বড় ছাড় দিয়ে আসছে সরকার। উক্ত কারণবশত প্রতিনিয়ত ঋণ খেলাপিদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। 
বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গরা বিভিন্ন খাতে ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ গ্রহণ করে থাকে কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই ঋণ আর পরিশোধ করেনা বা করতে পারে না। তখন সে সকল ব্যক্তিকে ঋণ খেলাপির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঋণ খেলাপির কমানোর উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসারে যোগ্য পদক্ষেপ অনুসারে বর্তমানে অনেকটাই ঋণ খেলাপির পরিমাণ কমে গেছে।

এনজিও লোন কত প্রকার

আমরা ইতিমধ্যে ঋণ কত প্রকার ও কি কি এই বিষয়ে ধারণা পেয়েছি। বাংলাদেশের নাগরিকদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক উন্নয়ন এর লক্ষ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেমন বিভিন্ন খাতে ঋণ প্রদান করা ব্যবস্থা রেখেছে। ঠিক তেমনি দেশের এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্নভাবে তাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের লোনের ধরন বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে। স্থান, কাল এবং সময় ভেদে ঋণের ধরন যেমন ভিন্ন হয় ঠিক তেমনি এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর লোনের চাহিদা অনুসারে সুদের হার কমবেশি হয়ে থাকে। তবে সকল এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাথমিক লোন একই রকম হয়। 

আসুন তাহলে এনজিও লোন কত প্রকার হতে পারে সে সম্পর্কে জানব। এনজিও লোন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লোন হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি লোন, মৌসুমী লোন, শিক্ষা লোন, স্যানিটেশন লোন ইত্যাদি। এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের লোকজনকে সহজ শর্তে উক্ত লোনগুলো প্রদান করা হয়।

ব্যাংক ঋণ বলতে কি বুঝায়

আমরা এনজিও ঋণ কত প্রকার ও কি কি হতে পারে সে বিষয়ে অবগত হয়েছি। দেশের নাগরিকদের এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন ঋণ প্রদান করে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিভিন্নভাবে তাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্যাংক ঋণ বলতে সাধারণত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সুদসহ ধার করা অর্থকে বুঝায়। একটি ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়নের আওতায় উক্ত ব্যক্তি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হিসেবে উল্লেখ থাকে। ব্যাংক ঋণ ঋণগ্রহীতা কে স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী দুইভাবে ঋণ প্রদান করতে অভ্যস্ত। 

তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঋণের উদ্দেশ্য এবং ঋণ গ্রহিতার যোগ্যতার উপর মেয়াদের বিষয়টি নির্ভর করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জামানতের ভিত্তিতে সুদের হার হিসাব করে গ্রহিতাকে ঋণ প্রদান করে। একটি সুরক্ষিত ব্যাংক ঋণ এর উদাহরণ হিসেবে বন্ধক ঋণ কে ধরা যেতে পারে।

ঋণ ঝুঁকি কি

ঋণ ঝুঁকি কি এ বিষয়টি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। ঋণ পরিশোধে ঝুঁকির মূল্যায়ন (ইংরেজি: Credit rating) মূলত কোন ঋণগ্রহীতার (ব্যক্তি, ব্যবসা, কোম্পানি বা সরকার) ঋণ পরিশোধের ঝুঁকির (Credit risk) বা ঋণপ্রাপ্তিযোগ্যতার হিসেবের পরিপ্রেক্ষিতে (Creditworthiness) এক ধরনের মূল্যায়নকে বুঝিয়ে থাকে। যার দ্বারা ঋণ পরিশোধে তার সক্ষমতার অর্থাৎ পরবর্তীতে আসলেই ঋণগ্রহীতা ব্যক্তিটি ঋণ পরিশোধে সফল হবে নাকি ব্যর্থ হবে সেটির পূর্বাভাস প্রদান করা হয়। 

আবার “ঋণ ঝুঁকি” এর সংজ্ঞা যদি বলা হয় সে ক্ষেত্রে একটি ঋণ গ্রহীতার ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতার কারণে চুক্তি গত বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে ক্ষতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়াকে “ঋণ ঝুঁকি” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

ঋণ পণ্য বলতে কি বুঝায়

ঋণ পণ্য অনেকটা ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টির সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। অর্থাৎ ঋণের যতগুলো প্রকারভেদ রয়েছে সে সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আর্থিক পণ্য অথবা ব্যবসার মূলধন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ গ্রহণ করা হয় সেটিকে আর্থিক পণ্য বা ঋণপন্ন হিসেবে অভিহিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ সাধারণ ঋণের ঋণ উপকরণ গুলি বা ঋণ পণ্য হল ব্যবসায়িক ঋণ। ব্যক্তিবর্গরা তাদের ব্যবসার কার্যক্রম এবং অর্থ সম্প্রসারণের জন্য যে সকল পরিকল্পনার ভিত্তিতে অর্থায়ন এবং সঞ্চয় অর্জন করতে সক্ষম হয় সেটির মূল ভিত্তি হলো ঋণ পণ্য। 

এনজিও প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ পণ্য গুলো নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ঋণ ক্যাটাগরিতে ঋণ গ্রহিতাদের অফার করে থাকেন। বিষয়টি মূলত ঋণের ধরন এবং অফারকৃত পরিমাণের পরিসীমা পাশাপাশি মেয়াদের পরিসীমা নির্দিষ্ট করে থাকে। একজন ঋণ দাতা হিসেবে বাজারের বিভিন্ন বিভাগের ক্ষেত্রে একাধিক ঋণ পণ্য তৈরি করা উচিৎ হিসেবে গণ্য হয়।

ঋণ বিশ্লেষণ কাকে বলে

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের আমানতের ভিত্তিতে বিভিন্ন হাতে মুনাফা অর্জন করে। একটি সঠিক ঋণ ব্যবস্থাপনার উপরে ব্যাংকের মুনাফা এবং পরবর্তীতে ঋণ প্রদান ব্যবস্থার অস্তিত্ব রক্ষা অনেকটাই নির্ভর করে থাকে। ঋণের বিপরীতে বাণিজ্যিকভাবে লভ্যাংশের একটি বড় অংশ রিটার্ন আসলেও ঋণদান বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। কোন কারণবশত যদি ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি দেউলিয়া হয়ে যায় অথবা খেলাপি ঋণের আওতাভুক্ত হয়। তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটিকে বড় একটি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আর এই ক্ষতি নিরশন এর লক্ষ্যে ঋণের অর্থ যাতে নির্দিষ্ট সময়ে সুদসহ ব্যাংক অথবা 
এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো ফেরত আনতে পারে, সেই লক্ষ্যে ঋণদানের পূর্বেই ঋণগ্রহীতার প্রকৃতি বিশ্লেষণ, আর্থিক সামর্থ্য, লেনদেনের পূর্ব ইতিহাস, ঋণ গ্রহণের উদ্দেশ্য সকল বিষয় বিচার, বিশ্লেষণ করার প্রক্রিয়াকে ঋণ বিশ্লেষণ বলা হয়ে থাকে। ঋণ গ্রহিতার যেমন ঋণ গ্রহণের পূর্বে ঋণ কত প্রকার ও কি কি জানার পাশাপাশি সকল শর্ত সমূহ ভালোভাবে জানতে হয়। ঠিক তেমনি ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঋণ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার সকল বিষয় সম্পর্কে জেনে বুঝে তারপর ঋণ প্রদান করে থাকে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আপনারা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের আর্টিকেলের সকল তথ্য উইকিপিডিয়া এবং বিভিন্ন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আপনি যদি আপনার ব্যক্তিগত কাজের লক্ষ্যে ঋণ গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই উপরের অংশে বর্ণিত ঋণ কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়টি সম্পর্কে পুনরায় ভালোভাবে জানুন। পাশাপাশি যে প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সঙ্গে সর্বপ্রথমে ঋণ সম্পর্কে সকল আলোচনা সেরে ফেলুন। 

আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আজকের এই পোষ্ট সংক্রান্ত যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি পেশ করুন। এরকম আরো মূল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু আপনার কাছে যদি উপযুক্ত মনে হয় তাহলে একটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url