অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

মোবাইল দিয়ে তো আজকাল অনেক ধরনের মার্কেটিং কাজ করা সম্ভব। কিন্তু মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করাও যে সম্ভব এটি কি আপনারা শুনেছেন? যদি না শুনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটে ভিজিট করার জন্য স্বাগতম জানাচ্ছি। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এ বিষয়ে একদম কোনো ধারণা নেই। কিন্তু মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এটি বর্তমান যুগে পপুলার একটি পেশায় পরিণত হয়েছে। যার মাধ্যমে 
মোবাইল-দিয়ে-অ্যাফিলিয়েট-মার্কেটিং
মানুষ আজকাল লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। আজকের পোস্টে মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার চেষ্টা করব। এছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট গুলো কি কি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার উপায় সহ যাবতীয় তথ্যগুলো আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে।
পোস্ট সূচীপত্র

ভূমিকা

বর্তমানে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রতিটি কাজ মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকি। মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং তারও কোনো ব্যতিক্রম নয়। মোবাইল ফোন যেহেতু ছোট ডিভাইস তাই এটি ব্যবহার করে আপনি যেকোনো সময় মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আপনার প্রধান কাজ হলো বিক্রেতার প্রোডাক্ট ও সার্ভিস গুলোকে সম্প্রচার করা এবং সেই প্রোডাক্ট ও সার্ভিস থেকে বিক্রেতার যে পরিমান লাভ হবে বিক্রেতা সেখান থেকে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন প্রদান করবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার পূর্বে প্রথমে আপনাদের জেনে নেওয়ার জরুরী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? তাহলে আপনারা যখন মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন কাজ গুলো বুঝতে বেশ সুবিধা হবে। তো চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? সাধারণ কথায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে এমন একটি পারফরম্যান্স ভিত্তিক মার্কেটিং কৌশলকে বোঝায় যেখানে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যদ্রব্য সকল গ্রাহকদের নিকট সম্প্রচার করার জন্য তৃতীয় পক্ষের সাহায্য 
নিয়ে থাকেন। এখানে তৃতীয় পক্ষের ব্যক্তি বলতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ যে ব্যক্তি করে থাকেন তাকে বোঝানো হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে ব্যবসায়ীর তার পণ্যের উপর যে পরিমাণ লাভ হবে তার থেকে কিছু অংশ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারকে কমিশন হিসেবে দিতে হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার হতে পারে তার নির্দিষ্ট কোনো প্রকারভেদ নেই। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। নিচে প্রধান কয়েকটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

ফেইসবুক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে ফেসবুক দিয়ে পন্যসেবা মার্কেটিং করাকে বুঝায়। বর্তমানে ফেসবুক একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যেখানে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বা সার্ভিস খুব সহজেই সকল গ্রাহকদের নিকট সম্প্রচার করতে পারছে। ফেসবুক সকল মার্কেটারদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সুযোগ দিয়ে থাকে। যারা তাদের সার্ভিসগুলো ফেসবুকে সম্প্রচার করে থাকে তারা কাস্টমারদের বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান, আগ্রহ, চাহিদা অনুযায়ী সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে।

সিপিএ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

সিপিএ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি কার্যকর কৌশল যেখানে নির্দিষ্ট কোনো অ্যাকশন সম্পন্ন হলেই অ্যাফিলিয়েটরা কমিশন লাভ করতে পারে। এই অ্যাকশন গুলো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- পূর্ণ ক্রয় করার জন্য ফরম পূরণ করা, কোনো ওয়েবসাইটে সাইন আপ করা, পণ্য কিনতে কোনো লিংকে ক্লিক করা। সিপিএ মার্কেটিং বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য খুবই সুবিধা জনক কারণ তারা শুধুমাত্র সকল অ্যাকশন পূরণ করতে পারলেই অ্যাফিলিয়েটদের পেমেন্ট করে থাকে।

ইমেইল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

ইমেইল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি কৌশল যেখানে ইমেল তালিকা ব্যবহার করে পন্যসেবা সম্প্রচার করা হয়। এই তালিকায় প্রাসঙ্গিক কিছু কনটেন্ট প্রেরণ করা হয় এবং লিংক গুলো শেয়ার করা হয়। এটি পার্সোনালাইজডও হতে পারে। কারণ ইমেইল গ্রাহকদের আগ্রহের উপর ভিত্তি করে কাস্টমাইজড করা যেতে পারে। ইমেইলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করলে গ্রাহকদের সাথে বিক্রেতাদের একটি সম্পর্ক স্থাপন হয় এবং গ্রাহকদের কাছে কোনো প্রস্তাব পাঠানো সহজ হয়ে যায়।

ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

বর্তমানে ইউটিউব একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে। ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে এমন এক ধরনের মার্কেটিং প্রক্রিয়াকে বুঝায় যেখানে ভিডিও রিলেটেড কনটেন্ট তৈরি করে পণ্য ও সেবা মার্কেটিং করা হয়। ইউটিউবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য মার্কেটাররা তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে থাকে। সেই চ্যানেলে তারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট সম্পর্কে রিভিউ, টিউটোরিয়াল ও গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও শেয়ার করে থাকে। সেই ভিডিওগুলো দেখার মাধ্যমে গ্রাহকরা পণ্য 

কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। যারা ইউটিউবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজটি করে থাকেন তাদেরকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন তারা কোনো পন্যসেবা সম্পর্কে ভুল বা মিথ্যা রিভিউ না শেয়ার করে। কারণ তাদের রিভিউ এর ওপর বিশ্বাস রেখেই কিন্তু গ্রাহকরা বিভিন্ন সেবা নিতে আগ্রহী হবে।

কনটেন্ট বেসড অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

কনটেন্ট বেসড অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ব্লগ পোস্ট বা ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে পণ্য ও সেবার তথ্য প্রচার করা হয়। এখানে মার্কেটাররা পন্য সম্পর্কে রিভিউ, গাইডলাইনস, টিপস লিখার মাধ্যমে পাঠকদের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকে। পাঠকরা এই সকল ওয়েবসাইট ও ব্লগ পোস্ট সাইটে ভিজিট করে তাদের পছন্দমত পন্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। কনটেন্ট বেসড অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে সেটি হলো- এখানে দীর্ঘমেয়াদি ট্রাফিক ও র্যাঙ্কিং বেড়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

বর্তমানে অনেক মানুষ ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ করছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা অনেক ইনফ্লুয়েন্সারদের ফেসবুক লাইভ এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচারের ভিডিও গুলো দেখতে পাই. এটিও এক ধরনের ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা চলে। এ সকল ইনফ্লুয়েন্সাররা যেসকল পন্য রিভিউ দেয়ার জন্য পেয়ে থাকে নিজেরা সেই সকল পণ্য সার্ভিস ব্যবহার করে যে ধরনের রেজাল্ট পেয়ে থাকে সেগুলো গ্রাহকদের কাছে শেয়ার করে। গ্রাহকরা তাদের অবস্থা অনুযায়ী সে সকল পণ্য ক্রয় করে থাকে। এতে গ্রাহকরা কোনো পন্য সম্পর্কে পূর্ব থেকে একটি বেসিক ধারণা পেয়ে যায়।

কুপন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

কুপন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি কৌশল যেখানে নির্দিষ্ট কুপন কোড এর মাধ্যমে পন্য সেবা প্রচার করা হয়। গ্রাহকদের সাথে এমন একটি কুপন কোড শেয়ার করা হয় যে কুপন কোড ছাড়া তারা সেই ডিসকাউন্টটি গ্রহণ করতে পারবেনা।গ্রাহক যখন কুপন কোড নিয়ে সেই দোকানে বা শোরুমে সার্ভিস নিতে যাবে তখন তাকে বিক্রেতাদের কাছে কুপন কোডটি শো করতে হবে এবং তারা কুপন কোডটি দেখলেই গ্রাহককে তার প্রতিটি পণ্যের উপর কাঙ্খিত ডিসকাউন্ট প্রদান করবে। এই সকল ডিসকাউন্ট পাওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকরাও তাদের প্রয়োজনমতো ও চাহিদা অনুযায়ী অনেক ধরনের পণ্য ক্রয় করে সেটিসফাইড হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব?

অনেক দর্শকরা জানতে চেয়েছেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য বেশ কিছু মৌলিক পদক্ষেপ আপনাদের অনুসরণ করতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মৌলিক পাঁচটি পদক্ষেপ নিম্নে দেওয়া হলো:

প্রতিনিধি প্রোগ্রাম নির্বাচন

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার প্রথম ধাপ হচ্ছে প্রতিনিধি প্রোগ্রাম নির্বাচন করা। বিভিন্ন কোম্পানির এবং প্লাটফর্ম অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। আপনি যেই ধরনের পণ্য বা সার্ভিস প্রচার করতে আগ্রহী তার জন্য অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম খুঁজে বের করুন এবং তাদের সাথে জয়েন করুন। প্রোগ্রামগুলো কমিশন রেট, পেমেন্ট শর্তাবলী এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বিবেচনা করে নিন।

অনলাইন প্লাটফর্ম

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করে নিতে পারেন যেখানে ওয়েবসাইট, ব্লগপোষ্ট, ইউটিউব চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। আপনার শেয়ার করা কন্টেন্ট গুলোর মাধ্যমে পণ্য সেবা প্রচারিত হবে।

উন্নতমানের কনটেন্ট

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য উন্নতমানের কনটেন্ট তৈরির কোনো বিকল্প নেই। আপনার কনটেন্ট যত উন্নত মানের হবে ততই আপনার প্রচার করা পণ্যের প্রতি গ্রাহকদের বা কাস্টমারদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। তাই সবসময় খেয়াল রাখবেন আপনার পণ্য সেবার রিভিউ, টিউটোরিয়াল, ব্লগ পোস্ট ভিডিও প্রতিটি কন্টেন্ট যেন উচ্চমান বজায় রাখতে পারে যা দর্শকদের উপকারে আসবে।

অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার

আপনি যে কনটেন্ট গুলো তৈরি করছেন সে কনটেন্টে অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট লিংক বা কুপন কোড শেয়ার করার চেষ্টা করুন। এই লিংক গুলোর মাধ্যমে গ্রাহকরা যখন পণ্য কিনবে তখন আপনি কমিশন লাভ করতে পারবেন। খেয়াল রাখবেন যেন আপনার দেয়া লিংকগুলো সঠিকভাবে কাজ করে এবং সমস্যা না করে।

পারফরম্যান্স মনিটারিং ও অপটিমাইজেশন

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনি যে ধরনের কৌশল গুলো ব্যবহার করছেন সেই কৌশল গুলো সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে খেয়াল রাখুন। পারফরম্যান্স মনিটরিং করার ক্ষেত্রে যখন দেখবেন কিছু কৌশল কোনো কাজে আসছে না সেই কৌশলগুলোতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট আছে কিনা। মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার অনেকগুলো ফ্রি সাইট ও পেইড সাইট রয়েছে যেগুলোতে আপনি ভিজিট করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখে নিতে পারেন। মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কয়েকটি ফ্রি এবং পেইড সাইটের নাম দেয়া হলো:

ফ্রি সাইট:

  • Amazon Associates
  • ClickBank
  • Rakuten Marketing
  • CJ Affiliate
  • ShareASale
  • Impact
  • FlexOffers
  • Partnerize
  • Awin
  • MaxBounty

পেইড সাইট:

  • AdRoll
  • Skimlinks
  • VigLink
  • RevenueWire
  • Pepperjam
  • AdThrive
  • Mediavine
  • Ezoic
  • The Trade Desk
  • Outbrain
মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সময় যদি আপনি ফ্রি সাইটে প্রবেশ করেন তাহলে আপনাকে কোনো ধরনের পেমেন্ট দিতে হবে না। কিন্তু যখন আপনি পেইড সাইটে প্রবেশ করতে যাবেন তখন আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি অনুসরণ করে টাকা পেইড করে সাইটে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

যারা মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাদের মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সুবিধাগুলো কি কি জানা খুবই জরুরী। মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার কয়েকটা সুবিধা নিম্নে দেওয়া হলো:

কম খরচেই শুরু করা যায়: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি কম খরচেই শুরু করা যায়। এখানে কোনো ধরনের ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন হয় না। শুধুমাএ সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট অথবা ইন্টারনেটে একটি ওয়েবসাইট থাকলেও আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ শুরু করতে পারবেন।

ফ্লেক্সিবল কাজের সময়: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করার ক্ষেত্রে আপনি নিজের সময় অনুযায়ী কাজের স্লট নির্ধারণ করতে পারবেন। এটি অনেক সময় পার্ট টাইম কাজ হিসেবেও করা যায়।

কম ঝুঁকি: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এখানে আপনাকে কোনো ধরনের পণ্য তৈরি করতে হবে না, কোনো ধরনের স্টক অথবা শিপমেন্টের প্রয়োজন হয় না। তাই এখানে ব্যবসায়ীক কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই বললেই চলে।

এফেক্টিভ মার্কেটিং স্ট্রেটিজি: অনেক কোম্পানির বিক্রেতারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজটি একটি কার্যকর মার্কেটিং পলিসি হিসেবে দেখে। যার ফলে তারা আপনার মত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারকে তাদের কাজের জন্য হায়ার করবে এবং তাদের কাছে আপনার কাজ ভালো লাগলে আপনাকে ভালো মানের কমিশন প্রদান করতে পারে।

বিক্রয় ও মার্কেটিং স্কিল: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার আরো একটি সুবিধা হচ্ছে আপনার বিক্রয় ও মার্কেটিং স্কিল বৃদ্ধি পাবে যা আপনি ভবিষ্যতে ব্যবসায়ী উদ্যোগে কাজে লাগাতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। নিম্নে কার্যকরী কিছু উপায় ব্যাখ্যা করা হলো-

সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পপুলার সোশল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেমন- facebook, instagram, twitter, tiktok, ইউটিউব, এ সকল প্লাটফর্মে প্রফেশনাল একাউন্ট তৈরি করে সেখানে যদি আপনি অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করেন তাহলে ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।

পডকাস্ট এপিসোড

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার ক্ষেত্রে পডকাস্ট এপিসোডের গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। আপনি আপনার কাঙ্খিত পণ্য ও সেবা সম্পর্কে পডকাস্ট এপিসোডে আলোচনা করতে পারেন। একটি পডকাস্ট এপিসোডে যেকোনো পন্য সম্পর্ক সকল তথ্য শেয়ার না করে বিভিন্ন ধরনের পডকাস্টে আলাদা আলাদা করে পন্যসেবা সম্পর্কে এপিসোড শেয়ার করতে পারেন যা কাস্টমারদের পণ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে সহায়তা করবে।

পেইড এডভার্টাইজিং

বর্তমানে গুগল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে পেইড এডভার্টাইজিং করার সুযোগ রয়েছে।যেখানে কোন পন্যের এডভার্টাইজিং করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ এমাউন্ট পেমেন্ট করতে হয়। আপনার যদি গুগলেও ফেসবুকে নির্দিষ্ট কোনো প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে আপনি অন্য কারো পণ্য এডভারটাইজিং করার ক্ষেত্রে তার থেকে পেমেন্ট নিয়ে লাভ করতে পারেন।

অনলাইন কোর্স ও ওয়েবমিনার

আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে অনলাইন কোর্স ও ওয়েবমিনারের আয়োজন করতে পারেন। এখানে আপনি অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে পন্য ও সার্ভিস সম্পর্কিত সকল তথ্য গ্রাহকদেরকে প্রদান করবেন।

মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অনেকেই কনফিউশনে ভুগছেন মোবাইল দিয়ে কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করব। এই নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখন আপনাদের সঙ্গে কয়েকটি কৌশল শেয়ার করবো যেগুলো ফলো করলে মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার কাজটি আপনাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।

কুইজ ও পোল ক্রিয়েট

বর্তমানে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার এতটাই আপডেট হয়েছে যেখানে কুইজ ও পোল ক্রিয়েট করার ব্যবস্থা আছে। আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কুইজ ও পোল ক্রিয়েট করে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন।

মেসেজিং

বর্তমানে মেসেজ আদান-প্রদানের জন্য নতুন নতুন অ্যাপ্লিকেশন আবিষ্কার হয়েছে যেমন- whatsapp, টেলিগ্রাম, snapchat, instagram আরো কত কি। এখানে আপনি চাইলে অ্যাফিলিয়েট লিংকস শেয়ার করতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট এপ্লিকেশন

যেহেতু বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় পেশায় পরিণত হয়েছে তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার লিংক শেয়ার করার জন্য অ্যাফিলিয়েট এপ্লিকেশন আবিষ্কার হয়েছে যে অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা সহজে লিংকস শেয়ার করে দিতে পারবে। জনপ্রিয় কয়েকটি অ্যাফিলিয়েট অ্যাপ্লিকেশন এর নাম হলো-
  • Amazon Associates
  • ClickBank
  • ShareASale
  • CJ Affiliate
  • Rakuten Marketing
  • Awin
  • Impact
  • FlexOffers
  • PropellerAds
  • Admitad

কনটেস্ট ও গিভওয়ে

মোবাইলে দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কনটেস্ট ও গিভওয়ে পরিচালনা করুন এবং সেখানে আপনারা অ্যাফিলিয়েট লিংকস শেয়ার করুন।

কমেন্টিং

সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করার অপশন যেমন আছে তেমনি সেই পোস্টে কমেন্ট করার অপশনও আছে।আপনি চাইলে সেই কমেন্ট সেকশনে গিয়ে অ্যাফিলিয়েট লিংকস শেয়ার করতে পারেন।

অনলাইন কমিউনিটি

অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কমিউনিটিতে জয়েন করার চেষ্টা করুন। তবে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কমিউনিটির সকল নিয়ম নীতি অনুসরণ করে অ্যাফিলিয়েট লিংকস শেয়ার করতে হবে। তা না হলে তারা আপনাকে অ্যাফিলিয়েট লিংকস শেয়ার করতে অ্যালাউ করবে না।

শেষকথা

প্রিয় বন্ধুরা, এই ছিলো আমাদের আজকের পোস্টের মূল বিষয়বস্তু মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে তোমরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে। আশা করছি তোমরা যদি আমার আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ো তাহলে মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবে। তোমরা চাইলে এই পোস্টটি তোমাদের প্রিয় বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্মে শেয়ার করে দিতে পারো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url