কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি ও কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট

কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট এবং কৃষি ব্যাংক লোন পরিষদের নিয়ম গুলো জানার মাধ্যমে আমরা কিন্তু খুব সহজেই কৃষি ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে লোন গ্রহণ করতে পারি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন সমস্যা গত কারণে অথবা ব্যবসায় বিনিয়োগের ভিত্তিতে লোন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক থেকে খুব সহজেই লোন নেওয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানা খুবই জরুরী। 
কৃষি-ব্যাংক-লোন-ইন্টারেস্ট-রেট
তাই আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে চলেছেন। আলোচ্য বিষয়বস্তু ছাড়াও আরো যে সকল বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন সম্পর্কে এবং কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি। আরো জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক সিসি লোন এবং গাভি লোন, কৃষি ব্যাংক লোন পরিষদের নিয়ম সংক্রান্ত সকল বিষয় বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। সুতরাং কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়ার লক্ষ্যে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

“বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক” যাকে সংক্ষেপে “বিকেবি” বলা হয়ে থাকে। এটি মূলত শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক। বাংলাদেশ যেহেতু একটি কৃষি প্রধান দেশ সে বিষয়টিকে লক্ষ্য রেখে কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন সময় কৃষির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম লোন নেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছে। যেহেতু কৃষি কাজ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল এবং এখানে যথেষ্ট পরিমাণ ঝুঁকি রয়েছে। সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে অনিশ্চিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ খাত হিসেবে ১৯৭৩ সালের ৩১ মার্চ (President’ Order No 27) দেশের এই বৃহত্তম বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। 

কৃষি ব্যাংক আমানত, ঋণ এবং বৈদেশিক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে সহ সব ধরনের আধুনিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে উক্ত ব্যাংকের আওতায় প্রায় ১০৩৮ টি অনলাইন শাখা বিদ্যমান রয়েছে। কৃষি ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হলো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতির বিষয়টিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিশেষ করে কৃষকদের বিভিন্ন পর্যায়ে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট সাধ্যের মধ্যে রেখে ঋণ প্রদান করা।

কৃষি ব্যাংক লোন

কৃষি ব্যাংক লোন সিস্টেমটি হল মূলত উপযুক্ত কৃষকদের কৃষি খাতে সরাসরিভাবে ঋণ প্রদান করার লক্ষ্যে বিশেষভাবে নকশায়িত একটি সুবিধা সংবলিত পদ্ধতি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের যে সকল কৃষকগণ মৎস্য চাষ, শস্য চাষ এবং গবাদি পশুর খামারের ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করতে চান কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকার কারণে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়। এসকল কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষি ব্যাংক লোন এর সিস্টেমগুলো চালু করেছে। কিছু নির্ভর দেশ হওয়াতে কর্তৃপক্ষ কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। 

বর্তমানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের লোকজন চাষাবাদের জন্য অর্থ পাবার যে দুশ্চিন্তা ছিল সেটি অনেকটাই খুঁচিয়ে এনেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন সিস্টেম। পরিসংখ্যান বলছে চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে কৃষিখাতে প্রায় ৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যার ফলে কৃষি লোনের ক্ষেত্রে স্থিতি এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। তবে তার মধ্যে ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বকেয়া হিসেবে বিদ্যমান আছে। তথ্য তে আরেকটি বিষয় উঠে এসেছে সেটি হল কৃষি ব্যাংক লোন খাতে ঋণ খেলাপি এর পরিমাণ খুবই কম। 

যা একটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জন্য খুবই শুভকর বিষয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য ব্যাংক রয়েছে যারা কৃষি খাতে লোন প্রদান করে থাকে। যেমন জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর (২০২৩-২০২৪) অর্থবছরে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৪৪৮ কোটি টাকা লোন প্রদান করেছে এবং আইএফআইসি ব্যাংক ৪৩৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৪৪৬ কোটি টাকা কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী সহজ শর্তে কৃষকদের মাঝে কৃষি ব্যাংক লোন সুশৃঙ্খলভাবে বন্টন করেছে। 
তাহলে গত ২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের সর্বমোট যতগুলো ব্যাংক কৃষি খাতে লোন প্রদান করেছে সেটির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। কৃষি ব্যাংক লোন সিস্টেমটি গ্রামের প্রত্যন্ত কৃষকদের দোরগোড়ায় গিয়ে পৌঁছানোর মূল কারণ হলো দেশের প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একটি করে শাখা গড়ে তোলা। যার ফলে গ্রামাঞ্চলের লোকজন খুব সহজেই উক্ত শাখায় গিয়ে তার প্রয়োজন মাফিক কৃষি ব্যাংক লোন নিতে পারছেন। 

কৃষি ব্যাংক লোন শুধুমাত্র কৃষিখাতেই নয় বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের লোন কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্যক্তিগত ঋণ বা কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, কৃষি ব্যাংক সিসি লোন, কৃষি ব্যাংক গাভী লোন সকল বিষয়ে কর্তৃপক্ষ শর্তসাপেক্ষে লোন প্রদান করে থাকে। আসুন তাহলে এবার কৃষি ব্যাংক লোনের বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন

কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন বিশেষ করে সীমিত আয়ের চাকুরিজীবীদের জীবন যাত্রার মান উন্নীত করার জন্য প্রদান করা হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সময় আমরা হঠাৎ করেই সাময়িক অর্থ সংকটে ভুগতে পারি। সে বিষয়টিকেও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক আমলে নিয়েছে এবং সেই সকল সীমিত আয়ের চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন সিস্টেম চালু করেছে। দেশের নাগরিকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের বিষয়বস্তুকে আরো বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাপক পরিকল্পনা ও পরিচালনা তৈরি করেছে। পরিকল্পনা ও পরিচালনা এ নিমিত্তে পরিপত্র নং ০৫/১৮ অনুযায়ী ২০১৮ 

সালের জানুয়ারি মাসে পার্সোনাল লোন স্কিম সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়েছিল। উক্ত নীতিমালাতে বলা হয়েছে দেশের সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের স্থায়ী কর্মকর্তা বৃন্দ কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোনের আওতায় ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন বিষয়টিকে বেতনের বিপরীতে অগ্রিম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এর অর্থ হল একজন চাকরিজীবী কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন আবেদন করলে লোন হিসেবে তাকে নির্ধারিত অর্থ প্রদান করা হবে এবং পরবর্তীতে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী সুদের পরিমাণ কত 

আসছে সেই অনুযায়ী প্রতিমাসের বেতন থেকে মাসিক কিস্তি কর্তন করা হবে। উপরে বর্ণিত সকল চাকুরিজীবী উক্ত ঋণের আওতায় আসবে এমনকি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কর্মচারীরাও যদি পার্সোনাল লোন নিতে চাই সে ক্ষেত্রেও আবেদন করতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে যেমন চাকুরীর মেয়াদ কমপক্ষে পি আর এল সহ ৫ বছর থাকতে হবে। আবার সকল সরকারি বেসরকারি চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলো সে সকল ব্যক্তির যদি কোন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত থাকে তাহলে লোনের আওতায় পড়বে না।

কৃষি ব্যাংক সিসি লোন

কৃষি ব্যাংক সি সি লোন মূলত ক্রেডিট কার্ড লোন হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে কৃষকদের ক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক সিসি লোন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কৃষি ব্যাংক সিসি লোন এর আওতায় কৃষকগণ উন্নত মানের কৃষি উৎপাদন যন্ত্র এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সিসি লোনের মাধ্যমে ক্রয় করতে পারে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সবসময়ই কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন পর্যায়ে লোনের ব্যবস্থা করে রেখেছে সে বিষয়টি আমরা এই আর্টিকেলের প্রথমে জেনেছি। ঠিক একইভাবে শস্য খাত, মৎস্য খাত এবং খামারের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষকদেরকে ব্যাপকভাবে লোন প্রদান 

করে থাকে। ঠিক তেমনি সেই সকল কৃষি কাজের ক্ষেত্রে শস্য উৎপাদনের জন্য উন্নত মানের সরঞ্জাম ব্যবহারের লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক সিসি লোন প্রদান করে আসছে। কৃষকগণ সিসি লোনের আওতায় আসার পর একটি নির্দিষ্ট কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট এর মাধ্যমে মৌলিক সুদ পরিশোধ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। অন্যান্য লোনের সুদের হারের তুলনায় সিসি লোনের সুদের হার অনেকাংশেই কম। এর মূল কারণ হলো যেন কৃষকগণ উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে।

কৃষি ব্যাংক গাভী লোন

কৃষি ব্যাংক অন্যান্য লোন প্রদান করার পাশাপাশি গরু মোটাতাজাকরণ করার লক্ষ্যে কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার কৃষকদের উন্নয়নের কথা বিচার-বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে লোন প্রদানের মাত্রা ২ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করেছে। কৃষি ব্যাংক গাভি লোন সার্কুলারে বলা হয়েছে যে ধান চাষ, মাছ চাষ, ফলমূল চাষ এর পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ খাতে পোল্ট্রি ও দুগ্ধ উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদেরকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের আওতায় কৃষি ব্যাংক গাভী লোন প্রদান করা হবে। 

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বাস্তবায়ন এর লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে বিভিন্ন সময় লোন প্রদানের মাধ্যমে কৃষকদেরকে বিভিন্ন ঋণ প্রদান করে থাকে। সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এর রিজার্ভের যে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল রয়েছে সেখান থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সরল সুদে কর্তৃপক্ষ কৃষকদেরকে ঋণ প্রদান করবে। সাকুল আরে আরো অনেকগুলো বিষয় নিশ্চিত করা হয় তার মধ্যে ছিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী খাদ্য দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার জন্য ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট তৈরি হতে পারে। 
আর এই সমস্যাগুলো নিরসন করার জন্য অবশ্যই কৃষকগণ বাস্তব গত ভাবে ভূমিকা পালন করবে। সে বিষয়টিকে আমলে নিয়ে কর্তৃপক্ষ কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদেরকে শস্য, মৎস্য চাষ সহ কৃষি ব্যাংক গাভী লোন এর বিভিন্ন পর্যায়ে সরল সুদে লোন প্রদান করে আসছে।

কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি

কৃষি ব্যাংক লোন সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে সেগুলো হল স্বল্প মেয়াদি ঋণ, মধ্যমেয়াদি ঋণ এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। এ তিন ধরনের লোন পদ্ধতি এর নিয়ম কানুন একই রকম হয়ে থাকে। তবে ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পরিশোধ এর সময়কাল আলাদা হতে পারে। তবে বলে রাখা ভালো উক্ত তিন ধরনের ঋণ ছাড়াও কৃষি ব্যাংকের আওতায় অনেক রকম লোন পদ্ধতি বা লোন কার্যক্রম বহাল থাকতে পারে। কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় হিসেবে আপনাকে সর্ব প্রথম আপনি যে উপজেলায় অথবা জেলায় অবস্থান করছেন সেই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে উপস্থিত হতে হবে। 

তবে তার আগে আপনি কোন খাতে লোন নিতে যাচ্ছেন সে বিষয়টি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন। তারপর শাখায় উপস্থিত হওয়ার পর নিয়োগকৃত কর্মকর্তার সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আপনার পছন্দ অনুযায়ী খাত সম্পর্কে সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। নিচে কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি এর বিষয়বস্তু হিসেবে স্বল্প মেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
  • কৃষি ব্যাংক লোন এর জন্য লোন গ্রহীতার ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি প্রয়োজন পড়বে

শস্য লোনের ক্ষেত্রে

  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা রঙিন ছবি
  • ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের চারিত্রিক সনদ অথবা সার্টিফিকেট
  • শস্য খাতে ঋণের জন্য কোনরকম জামানত বা দলিল এর প্রয়োজন পড়বে না

মেয়াদি লোনের ক্ষেত্রে

  • গ্রহীতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • ২ কপিপাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক সার্টিফিকেট এবং নাগরিকত্ব সনদ
  • যে জমির উপরে লোন নিতে আগ্রহী সেই জমির দলিল সহ খতিয়ান এর ফটোকপি
  • জমিটি যদি প্রকৃত হয়ে থাকে তাহলে মূল দলিলের ফটোকপি
জমিটি যদি ইজার মাধ্যমে নেওয়া হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে খাজনার দাখিলা সহ দানপত্র জমা দিতে হবে।
উপরে বর্ণিত সকল কাগজপত্র এর সহিত কোন ব্যক্তি যদি কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে উপস্থিত হয় এবং যেই খাতে লোন নিতে ইচ্ছুক সেখানে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মাধ্যমে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট এর সরল সুদে সফলভাবে লোন পেয়ে যাবে।

কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট

কৃষি ব্যাংক লোন সুদের হার বিষয়টি সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। কেননা একজন কৃষক অথবা কোন ব্যক্তি যদি লোনের জন্য আবেদন করে তাহলে কোন খাতে কেমন হারে সুদ প্রদান করা হচ্ছে সে বিষয়টি জানার মাধ্যমে লোনের আবেদন করতে পারবে। যেহেতু কৃষি ব্যাংক লোন ৩ ভাগে দেওয়া হয়ে থাকে স্বল্প মেয়াদী লোন, মধ্যম মেয়াদী লোন এবং দীর্ঘমেয়াদি লোন। এই তিন ধরনের লোনের ইন্টারেস্ট হার একটু আলাদাভাবে প্রদান করা হয়।

স্বল্প মেয়াদী ঋণ এর সুদের হার

স্বল্প মেয়াদী ঋণ সাধারণত শস্য খাতের ঋণসমূহকে বাস্তবায়ন করে থাকে। যদি কোন ব্যক্তির জমি থাকে এবং সেই জমিতে ফসল করার জন্য ঋণের প্রয়োজন হয় তাহলে কৃষি ব্যাংক স্বল্প মেয়াদী ঋণের আওতায় কৃষি ঋণ প্রদান করে। ১ বছর থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত ঋণের মেয়াদ বিদ্যমান। স্বল্প মেয়াদী ঋণের জন্য কৃষকগণ ভুট্টা, ডাল, সবজি, রেনু উৎপাদন, মৎস্য চাষ, চিংড়ি চাষ, বোরো ধান চাষ, আমন ধান চাষ, আলু, বাদাম, সরিষা, গম, তিল, গ্রীষ্মকালীন সবজি সহ সকল ফসল আবাদের জন্য স্বল্প মেয়াদী 

কৃষি ঋণ নিতে পারবে। এ সকল ঋণের জন্য তেমন কোন কাগজপত্র অথবা জামিনদারের প্রয়োজন হয় না যা একজন কৃষকের জন্য খুবই সহজ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। স্বল্প মেয়াদী এ সকল ঋণের জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৮% হারে ইন্টারেস্ট রেট নিয়ে থাকে।

মধ্যম মেয়াদী ঋণ এর সুদের হার

মধ্যম মেয়াদী ঋণ এর খাত গুলো হল গরুর খামার, গ্রামীণ যানবাহন, ফলবাগান, রেশম চাষ, পুকুরে মৎস্য চাষ, চিংড়ি চাষ যদি বড় আকারে করা হয় সে ক্ষেত্রে কৃষক উক্ত ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। এছাড়াও সামুদ্রিক মৎস্য চাষ, কৃষি যন্ত্রপাতি, খামার যন্ত্রপাতি, হাঁস মুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ এর ঋণগুলো সাধারণত মধ্যম মেয়াদী ঋণের আওতায় পড়ে। স্বল্প মেয়াদী ঋণ এর ক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট যেমন ভিন্ন মধ্যম মেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রেও ইন্টারেস্ট রেট 

আলাদা হয়ে থাকে। মধ্যম মেয়াদী ঋণ গুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাড়তি কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে নিয়োগকৃত কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত কাগজপত্র আবেদন করার সময় দাখিল করতে হবে। তবে মধ্যম মেয়াদী ঋণ গুলোর মধ্যে যেগুলো শস্য খাতের মধ্যে পড়েছে সেগুলোর ইন্টারেস্ট আসবে ৮ শতাংশ এবং শস্য খাতের বাহিরে যদি কোন খাত গুলোর ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট হবে ৯ শতাংশ।

দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের সুদের হার

দীর্ঘ মেয়াদী খাত গুলোর মধ্যে সাধারণত দুগ্ধ খামার, ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন, চা বাগান, রাবার চাষ অথবা রাবার বাগান, বড় পরিসরে গবাদি পশুর খামার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রয়েছে। কৃষি ব্যাংক ঋণের আওতায় দীর্ঘ মেয়াদী লোনের জন্য ৫ বছর সময় প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে সময়কালের ভিত্তিতে ঋণের সুদের হার কম বেশি হতে পারে। স্বল্প মেয়াদী, মধ্যম মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শস্য খাতে যেগুলো ঋণ প্রদান করা হবে সেগুলো হবে ৮% ইন্টারেস্ট রেট। এছাড়া বাকি সকল খাতের জন্য ৯ শতাংশ ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী মাসিক কিস্তি প্রদান করতে হবে।

কৃষি ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম

আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা কৃষি ব্যাংক লোন সিস্টেমগুলো সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। পাশাপাশি সুদের হার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং শস্য খাত বাদে অন্য খাতগুলোতে পারসেন্টেস কেমন হতে পারে সে বিষয়ে সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। একজন ব্যক্তি কৃষি ব্যাংক থেকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী কোন খাতে যদি লোন গ্রহণ করে তাহলে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী কিভাবে মাসিক কিস্তি পরিশোধ করবে সে বিষয়টি জানাও খুবই জরুরী। আমরা আজকের এই পোষ্টের প্রথমেই একটি কথা জানতে পেরেছি সেটি হল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৃষকদের উন্নয়নের বিষয়টি 
আমলে নিয়েই বিভিন্ন রকম লোন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করে রেখেছে। আর এখানেও কৃষকদের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ঋণ প্রদানের পর সরাসরি মাসিক হিসেবে কিস্তি প্রদান করতে হয় না। অর্থাৎ একজন কৃষক যদি কোন খাতে ঋণ গ্রহণ করে তাহলে সেই জমিতে ফসল ফলানোর পর ফসল বিক্রির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। তবে বলে রাখা ভালো ফসল বিক্রির পর যে পরিমাণ জমি চাষের জন্য অর্থ লোন হিসেবে গ্রহণ করেছে সেই অর্থ সুদসহ ফসল বিক্রির পর একবারে ফেরত দিতে হবে। 

যদি আমরা সময়কাল নির্ধারণ করতে চাই সে ক্ষেত্রে একটি জমির ফসল রোপন থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত যেতে সময় লাগে তিন থেকে চার মাস। তাহলে বলা যেতে পারে একজন কৃষক কৃষি ব্যাংকের আওতায় যদি কৃষি লোন গ্রহণ করে তাহলে তিন থেকে চার মাস পর সুদ সমেত সর্বমোট লোন কৃত অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য থাকিবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আপনারা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন। এখন একজন ব্যক্তি যদি কৃষি ব্যাংকের আওতায় কোন লোন নিতে আগ্রহী হয় তাহলে আমাদের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে জানার মাধ্যমে খুব সহজেই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। সঠিক কাগজপত্র দাখিল করার মাধ্যমে যদি ঋণগ্রহীতা হিসেবে যোগ্য হয় তাহলে অবশ্যই কর্তৃপক্ষ ঋণ প্রদান করবে। আমরা আমাদের আর্টিকেলের সকল তথ্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি। 

আপনি আপনার পদক্ষেপ গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্তটি নিবেন এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শাখার নিয়োগকৃত কর্মচারীবৃন্দের সঙ্গে আপনার ঋণ নেওয়ার বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে নিবেন। আপনাদেরকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি পেশ করুন। এরকম তথ্যবহুল পোস্টগুলো পড়ার লক্ষ্যে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। পাশাপাশি আজকের এই আর্টিকেলটি যদি যথাযথ মনে হয় তাহলে একটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url