গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি

আপনাদেরকি কোনো ধারনা আছে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি ? সুপ্রিয় দর্শক, আজ আপনাদের নতুন একটি পোস্টে স্বাগতম জানাচ্ছি। আপনাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা এখনো জানেই না গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি। আজকে আমি আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি। 
গ্রাফিক্স-ডিজাইন-এর-কাজ-গুলো-কি-কি
আশা করি আমাদের আজকের এই পোস্টটি এক্সপ্লোর করার মাধ্যমে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজগুলো কি কি এই সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা পেতে পারবেন এবং আপনি আপনার পছন্দমত রয়েছে সেগুলো শিখে নিয়ে এটি ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

গ্রাফিক্স ডিজাইন হল এমন এক ধরনের সৃজনশীল কাজ যেখানে ভিজুয়াল রিলেটেড কনটেন্ট তৈরি করা হয়।এখানে এমন একটি প্রক্রিয়ায় কাজ করা হয় যেখানে টেক্স, ইমেজ ও বিভিন্ন ডিজাইনের মাধ্যমে দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো কাজকে রিপ্রেজেন্ট করা হয়। অনেকের মনেই সাধারণত প্রশ্ন জাগতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি। সাধারণত গ্রাফিক্স ডিজাইনে যে ধরনের কাজগুলো করা হয় সেগুলো হলো- ব্র্যান্ডিং এবং আইডেন্টিটি, মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন, ওয়েব ডিজাইন, ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন, প্রিন্ট মিডিয়া, ইনফোগ্রাফিক্স, মোশন গ্রাফিক্স, প্যাকেজিং ডিজাইনিং ও টাইপোগ্রাফি।

গ্রাফিক্স কি

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার পূর্বে আপনার অবশ্যই জানা প্রয়োজন গ্রাফিক্স কি অথবা গ্রাফিক্স শব্দের অর্থ কি। তাহলে আপনার গ্রাফিক্স ডিজাইন ও এর সম্পর্কে বেসিক ধারণাটি পরিপূর্ণ হবে। গ্রাফিক্স হচ্ছে এমন একটি দৃশ্যমান ছবি বা চিএসমূহ যার মাধ্যমে যে কোনো কনটেন্টকে আকর্ষণীয় চিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় যা দেখতে যেকোনো মানুষের কাছে আকর্ষণীয় দেখায়। গ্রাফিক্স বিভিন্ন টাইপের বা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। 
যেমন- লোগো, আইকন, ডিজিটাল পেইন্টিং, পিকটোগ্রাম, ফটো এডিটিং, এনিমেশন, ভিডিওগ্রাফিক্স, ভিজুয়াল এলিমেন্ট ইত্যাদি। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা তাদের সৃজনশীলতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এই ধরনের গ্রাফিক্স তৈরি করে থাকে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পন্যের বিজ্ঞাপন, মার্কেটিং, বিনোদন, শিক্ষা, যোগাযোগ, ব্র্যান্ড প্রমোশন এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা রাখে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি এ বিষয়ে জানার পূর্বে চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক গ্রাফিক্স ডিজাইন এর সংজ্ঞা কি। অনেকেই গ্রাফিক্স ডিজাইন বলতে শুধুমাত্র কোনো কিছুকে ডিজাইন করে রিপ্রেজেন্ট করাকে বোঝায়। আসলেই কি তাই? না, আপনি ভুল ভাবছেন। গ্রাফিক ডিজাইন মূলত এমন একটি প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া যেখানে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় এমন ভাবে কন্টেন্টকে ক্রিয়েট করা হয় যেটি আপনার তথ্যকে সরবরাহ করে গ্রাহকের নিকট পৌছে দিতে সহায়তা করে। এছাড়াও গ্রাফিক ডিজাইন এমন একটি প্রক্রিয়া যা মাধ্যমে আপনার সেবা নিয়ে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কত প্রকার

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি আপনার যদি জানার আগ্রহ থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন কত প্রকার ও কি কি এই সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রধানত সাত প্রকার।যেমন-
  • লোগো ডিজাইন
  • প্রোডাক্ট বা পণ্যের ডিজাইন
  • ব্র্যান্ডিং ডিজাইন
  • ওয়েবসাইট ডিজাইন
  • প্রিন্ট ডিজাইন
  • অ্যানিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • পাবলিশিং ডিজাইন
নিম্নে এই সাত প্রকার গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

১. লোগো ডিজাইন

লোগো শব্দটিতো আপনারা অনেকেই শুনেছেন। যে কোনো ব্র্যান্ডের, পণ্যের, কোম্পানির, প্রতিষ্ঠানের নামের শুরুতেই একটি লোগো থাকে যেটি সেই ব্র্যান্ডের, পণ্যের, কোম্পানির, এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি সবার মাঝে তুলে ধরে। একটি লোগো ডিজাইন করার সময় গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। যেমন- যে ব্যান্ডের, কোম্পানির, প্রতিষ্ঠানের লোগো ডিজাইন করতে চাচ্ছে সেই ব্র্যান্ডের, কোম্পানির, প্রতিষ্ঠানের মিশন, ভিশন ও লক্ষ্য কি হতে পারে সেগুলো অবশ্যই বিচার বিবেচনা করতে হবে।

উদাহরন: অ্যাপেল একটি বিখ্যাত ব্যান্ড যা সারা বিশ্বে খুবই খ্যাতি লাভ করেছে। অ্যাপেলের লোগো অ্যাপেল ফলের সিম্বল মতো তৈরি করা যেটি দেখলে যে কেউ বুঝতে পারে এটি অ্যাপেল কোম্পানির লোগো।

লোগো ডিজাইন করার পূর্বে ব্র্যান্ড ও ব্র্যান্ডের ইতিহাস, টার্গেট অডিয়েন্স এবং প্রতিযোগীদের সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা করতে হয়। এরপর স্কেচিং এবং কনসেপ্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ শুরু হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইনার বিভিন্ন টাইপের কনসেপ্ট রেডি করে এবং ক্লায়েন্টদের মতামত গ্রহণ করে ডিজাইনগুলো কনফার্ম করে এরপর তাদের কাজ শুরু করে। লোগো তৈরি করার সময় অবশ্যই গ্রাফিক্স ডিজাইনার কে খেয়াল রাখতে হবে যেন এটি সহজ ও স্মরণীয় হয়ে থাকে।

২. প্রোডাক্ট বা পণ্যের ডিজাইন

প্রোডাক্ট অথবা পণ্যের ডিজাইন বলতে বোঝায় আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে ধরনের পণ্য ব্যবহার করে থাকি সেগুলোর পিছনেও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের অবদান রয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা পণ্যের ডিজাইন করার পূর্বে প্রোডাক্ট বা পণ্যের আকার, কার্যকারিতা, ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা নিয়ে গবেষণা করে। এছাড়াও ব্যবহারকারীর সেই প্রোডাক্টের প্রতি কতটুকু প্রয়োজনীয়তা আছে এই বিষয়েও গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে খেয়াল রাখতে হয়। প্রোডাক্ট ডিজাইন করার সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে প্রোডাক্ট সম্পর্কে গবেষণা ও সুপরিকল্পনা করা। 
কারণ গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে জানতে হবে প্রোডাক্ট গুলোর মার্কেটে বা বাজারে কি পরিমান চাহিদা আছে, কাস্টমারদের সেইসকল পন্য কেনার জন্য কতটুকু চাহিদা আছে। প্রডাক্ট অথবা পণ্যের আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি করার জন্য ডিজাইনার স্কেচিং এবং থ্রিডি মডেলিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে যার মাধ্যমে একটি প্রাথমিক নকশার ধারণা পাওয়া যায়।

৩. ব্র্যান্ডিং ডিজাইন

ব্র্যান্ডিং ডিজাইন হলো এমন একটি ডিজাইন যার মাধ্যমে বা যেই ডিজাইনগুলোর মাধ্যমে একটি ব্যান্ডের সমস্ত পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এটি কোনো লোগো ডিজাইন নয় বরং এখানে ব্যান্ডের সমস্ত কিছু জুড়ে সমন্বিত একটি ডিজাইন তৈরি করা হয়। ব্র্যান্ডিং ডিজাইনের ক্ষেত্রে যে সকল বিষয়গুলো অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হয় সেগুলো হলো- রং, প্যালেট, টাইপোগ্রাফি, আইকনোগ্রাফি ও ভিজুয়াল এলিমেন্ট। ব্যান্ডিং ডিজাইন এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে যে কোনো ব্র্যান্ডের পরিচিতি, মান বৃদ্ধি করা যা একটি ব্যান্ডের ইতিহাস, মিশন, ভিশন ও মূল্যবোধ তৈরি করে। একটি সফল ব্যান্ডিং ডিজাইন ব্যান্ডের যাবতীয় সকল লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করে।

৪. ওয়েবসাইট ডিজাইন

ওয়েবসাইট ডিজাইন হচ্ছে এমন এক ধরনের ডিজাইন যার মাধ্যমে যে কোনো ওয়েবসাইটের লেআউট, ভিজুয়াল স্টাইল, ইউজার ইন্টারফেস, ডিজাইন করে। ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়েব ডেভেলপমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে। ওয়েবসাইট ডিজাইন করার ক্ষেত্রে ডিজাইনারদের ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা উন্নত করতে কাজ করতে হয়। ওয়েবসাইট ডিজাইনের প্রথম ধাপ হচ্ছে ওয়েবসাইটের লক্ষ্য, টার্গেট, অডিয়েন্স ও কন্টেন্ট স্ট্রাকচার গবেষনা করা যেটির ফলে ওয়ারফ্রেম এবং মকআপ তৈরি হবে যা ওয়েবসাইটের লেআউট, 

ভিজ্যুয়াল স্টাইল নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে। একটি ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার জন্য ডিজাইনাররা রং, টাইপোগ্রাফি, ইমেজ ও অন্যান্য ভিজুয়াল এলিমেন্ট ব্যবহার করে থাকে যার ফলে ব্যবহারকারীরা সেই ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে।

৫. প্রিন্ট ডিজাইন

প্রিন্ট ডিজাইন এমন এক ধরনের প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়াল যেমন- ম্যাগাজিন, পোস্টার, কার্ড এগুলো বিভিন্ন ফরমেটে ডিজাইন করা হয়। প্রিন্ট ডিজাইন ভিজুয়াল যোগাযোগের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম যেখানে ডিজাইনাররা টেক্স, ইমেজ ও অন্যান্য ভিজুয়াল এলিমেন্ট এর সাহায্যে আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি করে থাকে। প্রিন্ট ডিজাইনের প্রথম কাজ হচ্ছে কনসেপ্ট ডেভেলপমেন্ট করা। ডিজাইনারকে অবশ্যই প্রিন্ট ম্যাটেরিয়াল গুলোর লক্ষ্য, টার্গেট, অডিয়েন্স, ও কনটেন্ট সম্পর্কে অবগত হতে হয়। 

এরপর সেই অনুযায়ী লেআউট ডিজাইন করতে হয়। ডিজাইনাররা প্রিন্ট ডিজাইন এর জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। যেমন- এডোবি ইন ডিজাইন, ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর। এছাড়াও প্রিন্ট ডিজাইনকে রাঙিয়ে তুলতে রং, টাইপোগ্রাফি ও ইমেজ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

৬. এনিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইন

আমরা অনেক সময় এমন কিছু কনটেন্ট দেখি যে কনটেন্ট গুলো দেখতে পুরোপুরি প্রাণবন্ত বা জীবন্ত মনে হয় যেন এগুলো আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে। এই ধরনের কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে এনিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বিশেষ অবদান রয়েছে। কারণ এনিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রধান কাজ হচ্ছে যে কোনো কনটেন্ট তৈরি করার সময় এটিকে প্রাণবন্ত ও জীবন্ত করে আকর্ষণীয় ভাবে রিপ্রেজেন্ট করা। এনিমেশন বা মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রথম কাজ হচ্ছে কনসেপ্টডেভেলপমেন্ট এবং স্টোরিবোর্ডিং করা। 

এর জন্য ডিজাইনারদেরকে একটি গল্প বা ধারণা তৈরি করে ভিজুয়াল উপস্থাপন করতে হয়। এরপর বিভিন্ন ধরনের অ্যানিমেশন সফটওয়্যার যেমন- এডোবি আফটার এফেক্টস এবং ব্লেন্ডার এর সাহায্যে চূড়ান্ত অ্যানিমেশন তৈরি করে।

৭. পাবলিশিং ডিজাইন

পাবলিশিং ডিজাইন হচ্ছে এমন একটি ডিজাইন প্রক্রিয়া যেগুলোর মাধ্যমে বই, ম্যাগাজিন, নিউজ লেটার এবং ডিজিটাল পাবলিকেশন গুলো ডিজাইন করা হয়। পাবলিশিং ডিজাইনের ফলে পাঠকরা সেই সকল বই, ম্যাগাজিন, নিউজ লেটার পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। পাবলিশিং ডিজাইনের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে কনসেপ্ট ডেভেলপমেন্ট ও কনটেন্ট এর সম্পর্কে পরিকল্পনা করা। এর জন্য ডিজাইনারকে সর্বপ্রথম প্রকাশনার বিষয়বস্তু, লক্ষ্য, অডিয়েন্স, স্টাইল এগুলো সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করতে হয়।ডিজাইনাররা এমন একটি লে আউট ও ডিজাইন তৈরি করে যাতে তাদের কাজটি করতে সুবিধা হয়। 

এছাড়াও ডিজাইনাররা পাবলিশিং ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে যেমন- এডোবি ইন ডিজাইন, ওয়ার্ক এক্সপ্রেস যা পাবলিশিং ডিজাইনকে চূড়ান্তভাবে আকর্ষণীয় করে তৈরি করতে সাহায্য করে। টাইপোগ্রাফি, ইমেজ এবং লেআউট এর সঠিক ব্যবহার পাবলিশিং ডিজাইনকে আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে সাহায্য করে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি কি শিখতে হয়

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি যদি আপনি এই বিষয়ে সত্যিই সিরিয়াস হয়ে থাকেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য কি কি বিষয় আপনাকে শিখতে হবে তা জেনে রাখা জরুরী। গ্রাফিক্স ডিজাইন এর জন্য কি কি মৌলিক বিষয় শিখতে হয় নিম্নে দেয়া হলো:

১. ডিজাইনের মৌলিক বিষয়:

  • Colour Theory
  • Typography
  • Composition and Layout
  • Balance and Proportion

২. সফটওয়্যার স্কিল :

  • Adobe Photoshop
  • Adobe Illustrator
  • Adobe InDesign
  • (Sketch) বা Figma

৩. সৃজনশীল ক্ষমতা:

  • Creative Thinking
  • Problem-Solving Skills

৪. প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট:

  • Time Management
  • Client Communication
  • Portfolio Development

৫. ব্যবহারিক দক্ষতা:

  • Freelancing platforms and client management
  • Basic understanding of using social media marketing

গ্রাফিক্স এর কাজ

এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি। গ্রাহক বা কাস্টমারদের প্রয়োজন ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। কোন গ্রাফিক ডিজাইনটি কোন কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক:

লোগো ডিজাইন: ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি অথবা যে কোনো পণ্যের বা ব্র্যান্ডের লোগো তৈরি করার জন্য লোগো ডিজাইন ব্যবহার করা হয়।

ব্র্যান্ডিং ও আইডেন্টিটি ডিজাইন: যেকোনো ব্র্যান্ডের আইডেন্টিটি বৃদ্ধির জন্য লোগো, রঙের প্যালেট, টাইপোগ্রাফি, ভিজিটিং কার্ড, লেটারহেড দরকার।এগুলো ডিজাইন করার ক্ষেএে ব্র্যান্ডিংও আইডেন্টিটি ডিজাইন ব্যবহার করা হয়।

বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন: প্রিন্টিং, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার, ফ্লায়ার, সোশ্যাল মিডিয়া গ্রাফিক্স, ইমেইল টেমপ্লেট এগুলো তৈরি করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং ম্যাটারিয়াল ডিজাইন কাজ করে।

ওয়েব ডিজাইন: যাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে বা ওয়েবসাইট এ কাজ করে থাকে তাদের ওয়েবসাইটের ভিজুয়াল লেআউট, ব্যানার, বাটন, আইকন ও গ্রাফিক ডিজাইনের ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইন ব্যবহৃত হয়।

প্রিন্ট ডিজাইন: আমরা যে সকল ম্যাগাজিন, বই পড়ে থাকি সেগুলো ডিজাইন করার ক্ষেত্রে প্রিন্ট ডিজাইন ব্যবহৃত হয়ে থাকে যার ফলে বই, ম্যাগাজিন, কভার পেজ আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

প্রোডাক্ট ডিজাইন: যে কোনো প্রোডাক্টকে সেইফ রাখার জন্য যেহেতু প্যাকেজিং করা প্রয়োজন সেই প্যাকেজিং এর কাজটি আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রোডাক্ট ডিজাইন বিশেষ ভূমিকা রাখে।

মোশন গ্রাফিক্স: বিভিন্ন রকমের প্রাণবন্ত বা জীবন্ত অ্যানিমেশন, ছবি, ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে মোশন গ্রাফিক্স ব্যাপক অবদান রাখছে।

ইনফোগ্রাফিক্স: যেকোনো তথ্যকে সহজে গ্রাহকদের নিকট উপস্থাপন করার জন্য ইনফোগ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয় যাতে গ্রাহকরা জটিল তথ্যগুলো খুব সহজেই বুঝে উঠতে পারে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর গুরুত্ব

ইতিমধ্যে আমরা জেনে গিয়েছি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইন এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে যার কারণে এটি ব্যবসা, বিপণন, পন্য সেবা, যোগাযোগ আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিশীম। গ্রাফিক্স ডিজাইন এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক নিম্নে তুলে ধরা হলো:

আইডেন্টিটি

যেকোনো ব্র্যান্ডের আইডেন্টিটি গঠনে গ্রাফিক্স ডিজাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ যে কোনো ব্র্যান্ডের লোগো, কালারফুল প্যালেট, টাইপোগ্রাফি গ্রাহকদের মনে সেই ব্র্যান্ডের প্রতি আলাদা ইম্প্রেশন জাগাতে সাহায্য করে।

বিপণন ও বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্টগুলোর সঠিক বিপণন ও বিজ্ঞাপন খুবই জরুরী। কারণ বিজ্ঞাপন ও বিপণন এর ফলেই কোম্পানির প্রোডাক্ট, সেবা, দ্রুত বিক্রয় বাড়াতে ও কাস্টমার এর উপস্থিতি বাড়াতে সহায়তা করে। গ্রাফিক্স ডিজাইন আকর্ষণীয় বিপণন ও বিজ্ঞাপন তৈরিতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

যোগাযোগ

কাস্টমার ও গ্রাহকদের সাথে তথ্য বার্তা আদান প্রদান করতে এমনকি তথ্য ও বার্তাকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে প্রেজেন্টেশন ইনফোগ্রাফিক্সের প্রয়োজন যা গ্রাফিক্স ডিজাইনের সাহায্যে করা যায়।

সৃজনশীলতা

গ্রাফিক্স ডিজাইন এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে সৃজনশীলতাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজাইন বিষয়ক নতুন নতুন ধারণা প্রকাশ করতে পারে এবং সৃজনশীলতার সাহায্যে ডিজাইন বিষয়ক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং

অনেক কিছুই জানা হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি হতে পারে। এখন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ করেও ফ্রিল্যান্সিং করা যায় অথবা গ্রাফিক্স ডিজাইন এর সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর কি সম্পর্ক আছে। আমরা সকলেই জানি ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা অথবা স্বাধীন পেশা হিসেবে পরিচিত তাই যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ করে থাকে তারা স্বাধীনভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করেও আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে। 
ফ্রিল্যান্সাররা গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বিভিন্ন সেক্টরে বা প্রজেক্টে কাজ করে থাকে যা তাদের নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।দক্ষতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে যদি ফ্রিল্যান্সাররা গ্রাফিক্সের কাজ করতে পারে তাহলে প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করে আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে এবং প্রজেক্টে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের স্কিল ডেভেলপমেন্টে ব্যাপক উন্নতি হবে যার ফলে তারা নতুন নতুন প্রজেক্টে কাজ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। 

ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা বিভিন্ন ক্লাইন্টসদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন ফলে তারা গ্রাহকদের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস দিতে সক্ষম হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা তাদের কাজগুলো upwork, fiver, freelancer সাইটে শেয়ার করতে পারবে এতে তাদের ফ্রিল্যান্সিং জগতে পরিচিতি বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন কাজ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

শেষকথা

এই পোস্টে আমরা গ্রাফিক ডিজাইন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে পারেন তাহলে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন কে আপনার প্রফেশন হিসেবে বেছে নিতে পারবেন এবং নিজেকে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে সকলের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেন। এমন কি আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আর্থিকভাবে অনেকটা লাভবান হতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url