ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলো জানুন

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে আমরা ঠিক তখনই জানার জন্য অধীর আগ্রহ প্রকাশ করে থাকি, যখন কিনা অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের সুস্থ লাইফস্টাইল পরিচালিত হতে ব্যাহত হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমরা অনেক সময় দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যাই। বিভিন্ন পরামর্শ অনুযায়ী আমরা ডায়েট কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে থাকি কিন্তু হিতের বিপরীতে আশানুরূপ কোন প্রকার ভালো ফল পাওয়া যায় না। 
ব্যায়াম-না-করে-ওজন-কমানোর-উপায়
তাই চলুন আজকে ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক। প্রিয় পাঠক আপনারা আজকে এই আর্টিকেলে আলোচ্য বিষয়টি জানার পাশাপাশি আরও যে সকল বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন সেগুলো হল প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় এবং লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। আরো জানতে পারবেন মধু দিয়ে এবং পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায়। পাশাপাশি প্রতিদিন এক কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। 

আমাদের আর্টিকেলের শেষ পর্যায়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ FAQ প্রশ্ন সম্বলিত উত্তর দেওয়া রয়েছে তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে, পাশাপাশি আরও বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়

পুষ্টিবিদ এবং জিমন্যাস্টিক বিশেষজ্ঞরা সবসময় ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি কন্ট্রোল করতে বলেন সেটি হল ডায়েট কন্ট্রোল। মানব দেহের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে। আসলে কেন বিশেষজ্ঞরা ডায়েটকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন? এর কারণ হিসেবে দেখা যায় মানব দেহের সকল কার্যক্রম যেহেতু খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তি অধিক খাদ্য গ্রহণ করে তাহলে মানব দেহ পরিচালিত হওয়ার পাশাপাশি সেখানে ফ্যাট, কোলেস্টেরল মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে শরীরের ওজন বৃদ্ধি দৃশ্যমান হয়ে থাকে। 

আর এ কারণে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনার ভিত্তিতে দেহের ওজন কমানো সম্ভব। কিন্তু হঠাৎ করে কোন ব্যক্তি যদি খাওয়া দাওয়া একদম ছেড়ে দেয় তাহলে তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়ে যায় যেমন মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, দুর্বল অনুভব করা ইত্যাদি। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন জিমের ট্রেনার ডায়েট কন্ট্রোল করার পাশাপাশি ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যায়াম করে ওজন কমানো একটু কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। পাশাপাশি সময় মেইনটেন করে প্রতিদিন জিমে উপস্থিত হওয়া সেটাও একটি সমস্যার বিষয়। তাই ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে কোন বিষয়গুলো অনুসরণ করার 

মাধ্যমে খুব সহজেই একজন ব্যক্তি তার ওজন কমাতে সক্ষম হবে সে বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান লাভ করাই আজকের এই আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্য। ব্যায়াম ব্যতীত যদি কোন ব্যক্তি প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে তথ্য অনুধাবন করতে পারে তাহলেই একমাত্র স্থির লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। সুতরাং একজন ব্যক্তির ওজন কমানোর মূল হাতিয়ার হিসেবে ধরা যেতে পারে তার সুশৃংখল লাইফস্টাইল। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়ার পর হালকা কিছু নাস্তা করে, দুপুরে পরিমাণ মতো খাবার এবং রাতেও পরিমাণমতো খাবার খাওয়া। 

পাশাপাশি পরিমান মত ঘুমের প্রেক্ষিতে ওজন কমানো সম্ভব। তবে অবশ্যই সারাদিনের রুটিনে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখা যেমন জরুরি ঠিক তেমনি সারাদিনের লাইফস্টাইল থেকে নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করা ঠিক তেমনি জরুরী। আসুন কোন কোন বিষয়গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে তার ডেইলি রুটিনে রাখতে পারবে সে বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ

আমরা আর্টিকেলের ঠিক প্রথমেই যে বিষয়টি সম্বন্ধে জানতে পেরেছি সেটি হল ব্যায়াম ব্যতিত কোন ব্যক্তি যদি ওজন কমানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে সর্বপ্রথম তাকে ডায়েট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রতিদিনের রুটিনে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখা খুবই জরুরী। আবার বাহিরের অস্বাস্থ্য খাবার কোনভাবেই গ্রহণ করা যাবেনা। আপনি তিন বেলা খাবার গ্রহণ করতেই পারেন তবে সেখানে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনি কত পরিমানে এবং কোন কোন খাবারগুলো খাচ্ছেন। যে সকল খাবার হজমে সাহায্য করে এবং দ্রুত হজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে 
সেই খাবারগুলো খেতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি গ্রহণ করা অতীব ও জরুরী। মৌসুমী ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় এবং পাট শাক লাউ শাক লাল শাক ইত্যাদি সকল শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে থাকে। তাই প্রতিদিনের রুটিনে অবশ্যই উপরে বর্ণিত খাবারগুলো রাখতে হবে। অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ বিশেষজ্ঞরা দাবি করে থাকেন প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে অবশ্যই একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্যকর এবং ঘরের খাবারের কোনরকম বিকল্প নেই।

সকালের খাবার

সকালে ঘুম থেকে উঠে অবশ্যই প্রথমে ফ্রেশ হয়ে নিতে হবে। একটি সুস্থ লাইফস্টাইল গঠনে অবশ্যই রাতে ঘুমানোর আগে ব্রাশ করা খুবই জরুরী। রাতে ব্রাশ করে ঘুমানোর পর সকালে ঘুম থেকে উঠে শুধুমাত্র মুখে পানি নিয়ে কুলকুচি করার পাশাপাশি মুখমন্ডল ধুয়ে নিলেই হয়ে যায়। সকালে খাবার গ্রহণের পর ব্রাশ করতে পারেন। ফ্রেশ হওয়ার পর এক গ্লাস গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেয়ে নিতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ওট মিল খেতে পারেন পাশাপাশি সেদ্ধ একটি ডিম, পাকা পেঁপে 

এবং বাদাম খাওয়া যেতে পারে। অনেকে দাবী করে থাকেন তারা সকালে গরম পানির সাথে আদা রস মিশিয়ে খেয়ে ভালো উপকৃত হয়েছেন। তাই প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে গরম পানিতে আদার রস মিশিয়ে খাওয়া যেতেই পারে।

দুপুরের খাবার

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে যেহেতু আমরা জানতে চলেছি সে ক্ষেত্রে দুপুরের খাবার খাওয়ার বিষয়ে খুবই সচেতন থাকতে হবে। যেহেতু আমাদের লক্ষ্য ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো। তাই খাবার গ্রহনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের নজরদারি করা অতীব জরুরী। যেহেতু প্রত্যেকটি ব্যক্তি দুপুরে তাদের খাবার তালিকায় বিভিন্ন রকম খাবার রেখে থাকেন পাশাপাশি অধিক খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন। যার ফলে শরীরে অধিক ফ্যাট বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি হওয়ার ফলে ডায়াবেটিসহ নানান রোগ দেখা দেয়। 

এজন্য পরিমাণমতো এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা যেহেতু মাছে ভাতে বাঙালি তাই আপাতত দুপুরের খাবার মেনুতে আমাদের ভাত এবং মাছ থাকা আবশ্যক। ভাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় যা শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো একটি উপায় হল ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমানো। প্রয়োজন হলে দুপুরের খাবারে ভাতের পরিমাণ মেপে মেপে খেতে হবে। 

যদি কেউ পূর্বে বড় প্লেটের এক প্লেট ভাত খেত তাহলে এখন তাকে মাত্র এক কাপ ভাত খেতে হবে। পাশাপাশি ভাতের সঙ্গে শাকসব্জি রাখতে হবে। শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে তাই হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সংগঠিত হবে।

রাতের খাবার

অনেকে মনে করে থাকেন রাতে খাবার খাওয়া স্কিপ করার মাধ্যমে খুব দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। কিন্তু ধারণাটি একদমই ভুল। আমরা সারাদিন বিভিন্ন রকম খাবার গ্রহণ করলেও রাতের সময়টুকু আমরা ঘুমের মধ্যে থাকি আর সে কারণে খাবার গ্রহণ করি না। যার ফলে আমাদের সকালে উঠলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন মাথা ঘোরা, দুর্বল অনুভব করা, বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি। তাই রাতের খাবারের মেনুতে আপনার অল্প পরিমাণ হলেও পুষ্টিকর খাবারগুলো রাখতে হবে। প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে রাতের খাবারে খুবই অল্প পরিমাণে খাবার রাখা জরুরি। 

আমাদের ভিতরে একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে রাতে যদি আমরা ভাত খেয়ে ফেলি তাহলে ওজন কন্ট্রোল সম্ভব নয়। বিষয়টি হলো ভাত কার্বোহাইড্রেট বৃদ্ধি করে যার ফলে আমাদের শরীরে ফ্যাটি এসিড যুক্ত হয় এবং আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ একটি বেলুনে যদি অধিক পরিমাণে হাওয়া ভর্তি করা হয় তাহলে বেলুনটি বেশি পরিমাণে ফুলবে। আবার বেলুনটিতে যদি কম পরিমাণে হাওয়া ভর্তি করা হয় তাহলে বেলুনটি কম পরিমাণে ফুলবে। ঠিক আমাদের মানব শরীরের বিষয়টিও একই রকম, আমরা যদি বিভিন্ন রকম খাদ্য (সেটা ভাত কিংবা অন্য সকল খাদ্য হতে পারে) 

অধিক পরিমাণে গ্রহণ করে থাকি তাহলে আমাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা মোটা শরীরের অধিকারী হয়ে যাব। সুতরাং আপনি রাতের খাবার মেনুতে খুবই অল্প পরিমাণে ভাত খেতে পারেন অথবা একটি আটার রুটি সঙ্গে পরিমাণ মতো শাক-সবজি খেয়ে নিতে পারেন। মনে রাখতে হবে ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলো অনুসরণ করার জন্য আপনাকে কোনভাবেই একেবারে খাদ্য পরিহার করা যাবেনা। পরিমাণ মতো এবং সময় অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ পাশাপাশি সুশৃংখল জীবন যাপনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অবশ্যই তার শরীরের ওজন কমাতে সক্ষম হবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায়

যেহেতু আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আমরা ইচ্ছে থাকলেও জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে পারি না। কিন্তু যখন আমাদের অধিক পরিমাণে ওজন বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রেও আমাদের লাইফস্টাইল পরিচালিত হতে বাধা প্রাপ্ত হয়। আর তাই প্রাকৃতিক উপায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার ভিত্তিতে ওজন কমানো সম্ভব। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হওয়ার ফলে আমরা ব্যাপক পরিমাণে চিন্তিত হই এবং কোনরকম নিয়ম-কানুন ছাড়াই ডায়েট কন্ট্রোল এবং শারীরিক কসরত করতে থাকি। তবে আমাদেরকে অবশ্যই ডায়েট কন্ট্রোল করার পাশাপাশি 
সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আমাদের শরীর উপযোগী কিনা সে বিষয়ে সম্পর্কে অবগত হতে হবে। সেজন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। শুধুমাত্র শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করেই নয় বিভিন্ন রকম নিয়ম-কানুন অনুসরণ করার মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব হয়ে থাকে। আসুন তাহলে এবার ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় গুলো কি কি হতে পারে সে বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নিব।

পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায়

আমরা সকলেই জানি পানির অপর নাম জীবন। আমাদের গ্রহের কোন প্রাণী পানি ব্যতীত বেঁচে থাকতে পারবে না। নিয়মিত পানি পান করা শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি বিষয়। ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো এবং প্রাকৃতিক ভাবে ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত পানি পান করতে হবে। একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে মিনিমাম ৪ লিটার পানি পান করা আবশ্যক। শরীরে যদি কোন রকম বর্জ্য পদার্থ বা জটিল সমস্যা থাকে তাহলে পানি পান করার মাধ্যমে সেটি নিরসন করা সম্ভব। হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি শরীরকে ঠান্ডা রাখা এবং বিপাক প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটানোতে পানি পানের ভূমিকা অপরিসীম। 
যেহেতু আমরা ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমাতে চাই পাশাপাশি ডায়েটের দিকেও সচেতনতার সাথে অগ্রসর হতে চাই। এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি পরিমাণ মতো পানি পান করে তাহলে তার ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় না যার ফলে খাবার গ্রহণ করতে হয় না। এক্ষেত্রেও আমরা পানি পান করে ডায়েট কন্ট্রোলের সুবিধা পাচ্ছি। তাই পানি খেয়ে ওজন কমানোর উপায় টি একটি ফলপ্রসূ উপায় হিসেবে উল্লেখিত রয়েছে।

চিনি যুক্ত খাবার

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলো জানার এবং অনুসরণ করার মাধ্যমে ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করে চলতে হবে। চিনিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে যা শরীরের যদি জমা হয়ে যায় তাহলে অধিক পরিশ্রম করেও ওজন কমানো সম্ভব হয় না। তাই আমরা যদি সর্ব প্রথমেই চিনি এবং চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া বাদ দিই তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমার কোন সম্ভাবনাই থাকছে না। যেহেতু আমাদের লক্ষ্য হল ব্যায়াম ছাড়া শরীরের ওজন কমানো তাই অবশ্যই আমাদের সচেতন হতে হবে যেন আমাদের শরীরে কোনরকম ফ্যাট অথবা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ 

বেশি না হয়। চিনি এবং চিনি যুক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ বৃদ্ধি পাবে এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। আর এজন্য আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা হতে চিনি এবং তিনি যুক্ত খাবার বাদ দিয়ে চলতে হবে। গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে চিনি এবং চিনি যুক্ত খাবার হজমে বাধা প্রদান করে অর্থাৎ মানব শরীরের বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয় যার ফলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাছাড়া চিনে যুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে ডায়াবেটিসের দিকে ধাবিত করা আমাদের একদমই উচিত নয়।

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় এবং মধু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে বহু বছর থেকে লেবুর ভূমিকা রয়েছে অনেক। লেবু একটি টক জাতীয় ফল সেটা আমরা সকলেই জানি। আর টক জাতীয় পদার্থ শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করবে এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। সুতরাং ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই আমাদের নিয়ম মেনে লেবু খাওয়া অতীব জরুরী। সরাসরি ভাতের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেমন শরীরের জন্য উপকারী ঠিক তেমনি ওজন কমাতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। আবার লেবুর রস চিপে সরাসরি যদি গ্লাসে করে খাওয়া হয় সেটাতেও 

অনেক উপকার রয়েছে। অনেকে দাবী করে থাকেন তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে একটি লেবুর সম্পূর্ণ রস মিশিয়ে খেয়ে ওজন কমানোর জন্য ভালো একটি ফল পেয়েছেন। তবে অবশ্যই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা কোনভাবেই চিনি অথবা চিনি জাতীয় দ্রব্য মেশাবো না। শুধুমাত্র এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিব। লেবুর সাথে পানি মিশিয়ে খাওয়ার ফল হিসেবে হজম প্রক্রিয়া ভালোভাবে সংগঠিত হওয়া এবং শরীরের বিভিন্ন রকম বিপাক প্রক্রিয়া ভালোভাবে সম্পাদন হয়ে থাকে। 

লেবু এবং লেবুর জল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে তোলে। তবে এক্ষেত্রেও আমাদের একটু সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নাই আমরা নিয়ম মেনে পরিমান মত লেবু এবং লেবুর রস খাবো। অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে যার ফলে ভেতর থেকে আমাদের দ্বার দুর্বল হয়ে যায় এবং ভবিষ্যতে সেটি নিয়ে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে পারে। তাই নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো লেবু এবং লেবুর রস খাওয়ার মাধ্যমে আমরা ওজন কমাতে সক্ষম হব।

মধু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

লেবু এবং লেবুর রস দিয়ে যেমন ওজন কমানো সম্ভব ঠিক তেমনি প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে মধু দিয়ে ওজন কমানো আরও একটি চলমান প্রথা। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে বহুকাল ধরে মানুষ মধু এর ব্যবহার করে আসছে। সুতরাং ওজন কমানোর জন্য মধুর ব্যবহার এর ক্ষেত্রে ঘুমানোর আগে এক চা চামচ সেবন করে ঘুমাতে যাওয়া খুবই উপকারী একটি বিষয়। এতে করে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, ঠিক তেমনি মধু খাওয়ার ফলে আপনার রাতের যে খাবারের চাহিদা সেটি কমে যাবে যার ফলে ডায়েট কন্ট্রোল হওয়ার 
প্রেক্ষিতে ওজন কমে যাওয়াটা একটি লক্ষনীয় বিষয়। আবার অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নেয়। যার ফলে সারাদিন তার লাইফস্টাইল অন্য লেভেলে চলতে থাকে। শরীরকে উক্ত মিশ্রণটি ডিটক্স করতে এবং শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে শক্তিশালী হিসেবে উপস্থাপন করে। মধু যেহেতু একটি মিষ্টি ষাদ যুক্ত খাবার তাই এটি খাওয়ার মাধ্যমে মিষ্টি এর চাহিদা আপনি পূরণ করতে পারছেন। এটি খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে কোনরকম গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নাই। 

মধু খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন কমানোর পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করা পাশাপাশি বিপাক প্রক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। যেহেতু মধুতে অল্প পরিমাণে এনজাইম রয়েছে তাই সকল রকম বিপাক প্রক্রিয়া সহ হজম প্রক্রিয়া খুব সহজেই সংঘটিত হয়ে থাকে। শরীরে জমে থাকা ক্যালরী পোড়াতে মধু ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কোনরকম শারীরিক কসরত এবং ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় হল নিয়মিত মধু সেবন।

প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে আমরা উপরে মোটামুটি ধারণা লাভ করতে পেরেছি। প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো ও ঠিক একই রকম। আপনাকে অবশ্যই সুশৃঙ্খল জীবনে পদার্পণ করতে হবে। কোনরকম নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করা যাবেনা। দৈনিক ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুম অতি আবশ্যকীয় একটি বিষয়। তাই দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সুষম খাবার গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ঘুমানো একটি অন্যতম উপায়। অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে ঘরের খাবারের দিকে মনোযোগী হতে হবে। বাহিরের অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে কখনই ওজন 

কমানো সম্ভব নয়। উল্টো বাইরের অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণের ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয় পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই ঘরের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। খাবারের তালিকাতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখা খুবই জরুরী। হজম প্রক্রিয়া ভালোভাবে সংঘটিত হওয়ার জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো সে সম্বন্ধে জানতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকম শাকসবজি, মৌসুমী ফল, ওটস, কমলালেবু, বিনস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

তাই প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমাতে হলে অবশ্যই উপরে বর্ণিত খাবার গুলো খেতে হবে। নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে খাওয়ার আধাঘন্টা আগে অথবা খাবার এক ঘণ্টা পরে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কোনরকম মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না কেননা সুস্থ মস্তিষ্কে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা সহজ হয়ে থাকে। আর এজন্য দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো খুবই জরুরী। আমাদের আর্টিকেলের উপরে বর্ণিত তথ্যগুলোতে বর্ণনা করা হয়েছে যে ঘরে বসে ওজন 

কমানোর উপায় হিসেবে সকালে, দুপুরে এবং রাতে কোন ধরনের খাবারগুলো কি পরিমানে খেতে হবে। সুতরাং উপরে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কেউ যদি তাদের লাইফস্টাইল পরিচালিত করে তাহলে অবশ্যই দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছি। আমরা আশা করতে পারি আপনারা আলোচ্য বিষয় ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন এবং কিভাবে একজন ব্যক্তি প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় জানার মাধ্যমে সেগুলো মেনে চলার ভিত্তিতে দ্রুত ওজন কমাতে পারে সে বিষয়ে গুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। 

আমাদের বিষয়বস্তু একজন পুষ্টিবিদ এর সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আপনি চাইলে একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবীদের সাথে আলোচনা করে আপনার ডায়েট চার্ট তৈরি করে নিতে পারেন এবং একটি সুস্থ সবল জীবনে পদার্পণ করতে পারেন। এরকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের জানানো লক্ষ্যে আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। পরিশেষে সকলের সুস্থতাই আমাদের কাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url