থানায় অভিযোগ করার নিয়ম-থানায় অভিযোগ পত্র নমুনা

থানায় অভিযোগ করার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয় জানার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকি। কেননা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার দরুন আমাদেরকে থানায় যেতে হয়। সেটা হতে পারে চুরি ছিনতাই হওয়া বিরোধের কারণবশত এমনকি হত্যা বা খুনের অভিযোগ দায়ের করার জন্য থানায় গিয়ে উপস্থিত হতে হয়। আর আমরা যদি থানায় অভিযোগ করার নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত না জানি তাহলে থানায় যাওয়ার পর আমরা ভোগান্তিতে পড়তে পারি। 
থানায়-অভিযোগ-করার-নিয়ম
তাই আপনাদের কথা মাথায় রেখে আজকে আমাদের আর্টিকেলে আমরা থানায় গিয়ে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করব। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। থানায় অভিযোগ করার নিয়ম গুলো জানার পাশাপাশি আরো যেগুলো বিষয় জানতে পারব সেগুলো হলো পুলিশের কাছে অর্থাৎ ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে কিভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হয় আবার অভিযোগ করার পর সেটা কি করে বাতিল করতে হয়, থানায় অভিযোগ পত্র নমুনা লিখতে হয় এই সকল বিষয় সম্পর্কে। তাই আপনি যদি থানায় অভিযোগ করার নিয়ম জানতে চান তাহলে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র

ভূমিকা

আইনের পরিভাষায় সাধারণত অভিযোগ হল এমন একটি আনুষ্ঠানিক আইনের নথি বা তথ্য যেখানে আইনি কারণগুলো নির্ধারণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্য আরেকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে কোন রকম দাবি আনতে পারে। সে অনুযায়ী তার দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে তালিকাভুক্ত করা হয় এই পদ্ধতিটিকে বলা হয় অভিযোগ দায়ের। উদাহরণস্বরূপ “ফেডারেল রুলস অফ সিভিল প্রসিডিউর” (FRCP) যা কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দেওয়ানী মামলা পরিচালনা করে, তা প্রদান করে এবং সেই অনুযায়ী সিভিল একশন আরম্ভ করার মাধ্যম গুলো হচ্ছে একটি “অভিযোগ দায়ের” বা পরিষেবা গ্রহণ করা। 

দেওয়ানী আইন অনুযায়ী একটি “অভিযোগ” হল যেকোন রকম একটি মামলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে লিখিত নথিতে উল্লেখ থাকে যে অভিযোগ দায়ের কারীর প্রতিরক্ষার জন্য বা একটি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তির সঙ্গে দ্বন্দ্বে বা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে বা মনে করে যে তার জীবননাশের শঙ্কা রয়েছে। তাহলে সেই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করার নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের নিকট গিয়ে অভিযোগ দায়ের বা সাধারণ ডায়রি করতে পারে। দেওয়ানী মামলার মত ফৌজদারি মামলাতেও কোন মামলা শুরু হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি 

হিসেবে অভিযোগ দায়ের করাকে বোঝায়। বেশিরভাগ ফৌজদারী মামলাগুলো সরকারি কর্তৃপক্ষের নামে বিচার করা হয় যা কিনা ফৌজদারি আইন জারি করে। এবং রাষ্ট্রের পুলিশের ক্ষমতা ফৌজদারী নিষেধাজ্ঞা চাওয়ার লক্ষ্য প্রয়োগ করার জন্য কোনরকম প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রসিকিউটর দ্বারা উপস্থিত অপকর্মের অপরাধমূলক বিষয়গুলো অভিযোগের সাথে যুক্ত থাকে।

থানায় অভিযোগ করার নিয়ম

আমরা এ পর্যন্ত অভিযোগ বিষয়টি কি এবং কেন করা হয়ে থাকে সে বিষয়ে জানতে পারলাম। আমাদের প্রাথমিক জীবনে চলার পথে আমাদের পরিচিত বা অপরিচিত কোন মানুষের সাথে হঠাৎ করেই কলহ বা বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়ি। সে ক্ষেত্রে আমাদের থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। আবার যদি আমরা চুরি অথবা ছিনতাই এর কবলে পড়ি সেই ক্ষেত্রেও থানায় অভিযোগ করার নিয়ম পরিসরে পুলিশের নিকট গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। ইতিমধ্যেই আমরা জানতে পেরেছি যে কোন মামলা শুরু হওয়ার প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে অভিযোগ দায়ের করা। 
যদি এক পক্ষ আরেক পক্ষের সঙ্গে জমিজমা বিষয়ে সৃষ্টি হয় তাহলে একপক্ষের নামে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে এবং পরবর্তীতে সেটি ফৌজদারী অথবা দেওয়ানী মামলায় রূপান্তরিত হয়। যদি কখনো এরকম পরিস্থিতিতে আমরা পড়ে যাই তাহলে মুক্তি পাওয়ার একটাই পথ রয়েছে সেটি হল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা। তাহলে চলুন আমরা এখন জেনে নিব যে কিভাবে থানায় গিয়ে অভিযোগ করা যায় এবং অভিযোগ দায়ের করার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে।

থানায় অভিযোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

থানায় উপস্থিত হওয়ার পর আমাদের প্রথম যেকাল সেটি হবে থানায় ডিউটি অফিসারের রুম কোথায় সেটি নির্ধারণ করা। এবং সেখানে যাওয়ার পর তাকে নিজেদের সমস্যাটি বিস্তারিত ভাবে খুলে বলা। ডিউটি অফিসার সবকিছু শোনার পর অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করতে বলবেন। নিচে যে সকল কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন সেগুলো পয়েন্ট আকারে দেয়া হলো।
  • অভিযোগের জন্য লিখিত আবেদন পত্র (বাংলায় লেখা)।
  • উক্ত ঘটনার সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানা।
  • যদি ঘটনার প্রমাণ থাকে সেই প্রমাণ লিপি যেমন মেডিকেল রিপোর্ট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে আমরা নিচে একটি আবেদনপত্রের নমুনা দিয়ে দিচ্ছি।

থানায় অভিযোগ পত্র নমুনা

আমাদেরকে থানায় অভিযোগ করার নিয়ম এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করার সময় অবশ্যই একটি আবেদন পত্র বা অভিযোগ পত্র লিখতে হবে। তবে আবেদন পত্রটি উক্ত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে লিখা হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা যদি সেই আবেদনপত্র লিখার বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না পাই তাহলে অবশ্যই অভিযোগপত্র দায়ের করার সময় আমরা বিভ্রান্তিতে পড়ে যাব। কিভাবে অভিযোগপত্র লিখতে হয় অর্থাৎ থানায় অভিযোগ পত্র নমুনা টি নিচে দেয়া হল। আমরা উদাহরণস্বরূপ একজনের নাম এখানে ব্যবহার করেছি আপনারা আপনাদের নিজেদের নাম অভিযোগ দায়ের করার সময় নিজেদের নাম ব্যবহার করবেন।

বরাবর,
অফিস ইনচার্জ
পবা থানা
পবা, রাজশাহী

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে আমি মোঃ মাহবুব হাসান এবং আমার পিতা মোঃ রেজাউল করিম। আমি পবা থানার, দাউকান্দি গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে খুবই ভালোভাবে আমি এবং আমার পরিবার দীর্ঘদিন যাবত উক্ত এলাকায় বসবাস করে আসছি। হঠাৎ করে গত ৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে অর্থাৎ বিকেল ৬ টার দিকে একদল সন্ত্রাসীরা আমাদের বাসার টিনের ওপর পাথর ছুরাছুড়ি করে। যার ফলে আমরা সকলে অনেক আতঙ্কিত হয়ে পড়ি এবং প্রতিবাদ করতে গেলে সেই দুর্বৃত্তরা আমাদের ওপর বেশি চড়াও হয়ে ওঠে। যার কারণবশত আমি এই বিষয়টি পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট সাধারণ ডায়রির মাধ্যমে জানানোর ইচ্ছা পোষণ করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলাম।

অতএব, আমার অভিযোগটি বিবেচনায় এনে তদন্ত করার লক্ষ্যে জনাবের নিকট মর্জি হয়।

"নিবেদক"
মোঃ মাহবুব হাসান
থানা-পবা, গ্রাম-দাউদকান্দি
পবা, রাজশাহী
মোবাইল নাম্বার-***

উপরে বর্ণিত আবেদন পত্র লিখার মাধ্যমে থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসারের নিকট উক্ত লিখার কপিটি জমা দিতে হবে। এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবশ্যই বিষয়টি পরিলক্ষিত করবেন এবং থানায় অভিযোগ করার নিয়ম অনুসারে বিষয়টি আমলে নিবেন। ঘটনা টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অবশ্যই তদন্ত শুরু হবে। থানায় গিয়ে অভিযোগ করার পাশাপাশি আমরা অনলাইনে ও অভিযোগ দায়ের করতে পারি। সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে থানায় গিয়ে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। 
অনলাইনে কিভাবে জিডি বা সাধারণ ডায়েরি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের এই ওয়েবসাইটে একটি সুন্দরভাবে আর্টিকেল লেখা রয়েছে। আপনারা চাইলে নিচের এই লিংকে ক্লিক করে সেই আর্টিকেল অর্থাৎ অনলাইন জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।

পুলিশের কাছে অভিযোগ করার নিয়ম

আমরা এই আর্টিকেলের প্রথমে জানতে পেরেছি যে একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করার জন্য থানায় গিয়ে উপস্থিত হবে। এবং সেখানে ডিউটি অফিসার বা কর্মরত পুলিশ অফিসারকে তার বিষয়টি জানাবে। এবং সেই প্রেক্ষিতে পুলিশ অফিসার তার বিষয়টি আমলে নিয়ে সাধারণ ডায়েরি বা জিডি এর অন্তর্ভুক্ত করবেন। আসুন আপনাদের সুবিধার্থে একজন ডিউটি অফিসারের সাথে কথা বলার মাধ্যমে এবং কোন কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে থানায় অভিযোগ দায়ের করা যায়।

সঠিক থানা নির্বাচন: আমাদেরকে অবশ্যই সঠিক থানাটি নির্বাচন করতে হবে। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটবে বা ঘটেছে সেই এলাকা কোন থানার অন্তর্ভুক্ত সেই থানাতে গিয়ে সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করতে হবে। ঘটনা একথানায় ঘটলে আরেক থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব নয়।

অভিযোগ পত্র: পাঠকগণ আপনাদের সুবিধার্থে আমরা উপরে একটি থানায় অভিযোগ পত্র নমুনা হিসেবে কিভাবে অভিযোগপত্র বাংলায় লিখতে হয় সে বিষয়টি খুব ভালোভাবে দিয়ে দিয়েছি। আপনারা মনোযোগ সহকারে বিষয়টি পড়লে অবশ্যই যে কোন রকম অভিযোগ লিখতে পারবেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে অভিযোগের মূল কারণ ব্যক্তির নাম ঠিকানা এবং আপনার দাবিটি অবশ্যই উল্লেখ করে লিখতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: থানায় অভিযোগ করার নিয়ম অনুসারে বলতে গেলে সেরকম কোন কাগজপত্র অভিযোগ দায়ের করার প্রেক্ষিতে প্রয়োজন পড়ে না। শুধুমাত্র অভিযোগের আবেদন পত্র এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দিলেই হয়।

থানার ডিউটি অফিসারের সাথে কথোপকথন: আমরা অনেকেই থানায় যেতে ভয় পাই কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পুলিশকে আমাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। তাই কোন রকম ভয় করার দরকার নেই। থানায় উপস্থিত হওয়ার পর থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসারের সাথে গিয়ে আপনার বিষয়টি খুলে বলতে হবে। তবে তার সঙ্গে আমরা স্বল্প ভাষায় এবং পরিমার্জিত ভাষায় কথা বলব।

জিডি/মামলা: ডিউটি অফিসার আমাদের কথা শুনে আমাদের বিষয়টি একটি রেজিস্টার ভুক্ত করবেন এবং সেটি জিডি বা মামলার রজু হিসেবে থাকবে।

সাধারণ ডায়েরি বা জিডির নকল: আমরা যে কারো বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলাম সেটির একটি কপি আমাদেরকে ডিউটি অফিসার দিয়ে দিবে এবং সেটি আমাদের ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

থানায় অভিযোগ প্রত্যাহার করার নিয়ম

থানায় অভিযোগ করার নিয়ম যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি অভিযোগ দায়ের করার পর আমরা যদি মনে করি যে সেই ঘটনাটি আর ঘটবে না বা আমাদের আর জীবন নাশের শঙ্কা নেই তাহলে অভিযোগ প্রত্যাহার করা যাবে। সেটি থানায় আমাদেরকে নিজে গিয়ে করতে হবে। সাধারণত থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের বা জিডি করলেই সেটি মামলায় অন্তর্ভুক্ত হয় না। কিন্তু পরবর্তীতে যদি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয় তাহলে সেটি মামলায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এজাহার ভুক্ত হয়ে গেলে সেটি প্রত্যাহার করার আর সুযোগ নেই। 

সে ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একজন এসআইকে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়ে দেন। বিষয়টি তদন্ত করে নিশ্চিত করার জন্য তবে বাদীপক্ষ বা উভয়পক্ষ যদি মামলা আপশের জন্য মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন করে সেক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। তবে ফৌজদারী কিছু মামলা আদালত কর্তৃপক্ষ আপষের জন্য প্রত্যাহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে না। তাই আমাদেরকে জানতে হবে যে কোন অভিযোগ থানায় অভিযোগ করার নিয়ম বহির্ভূত নয়। 
তবে সাধারণ ডায়েরি বা জিডি প্রত্যাহার করার জন্য থানায় গিয়ে যদি ডিউটি অফিসার কে বলা হয় যে আমরা পূর্বে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম আমরা এখন সেটি প্রত্যাহার করতে চাই। তাহলে ডিউটি অফিসার সেই তালিকাভুক্ত জিডি টি বাতিল করে দিবেন এবং সেই তালিকা থেকে উক্ত ব্যক্তির নাম কেটে দিবেন। আরো যদি কোন কার্যক্রম থাকে তাহলে নিয়োগকৃত ডিউটি অফিসার আপনাকে সেটি করতে বলবেন।

থানায় অভিযোগ করার পর কি হয়

থানায় অভিযোগ করার নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করার পর উক্ত বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহেব একজন এসআই বা এএসআই কে হাওলা করে থাকেন। নিয়োগকৃত অফিসার দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি আমলে নেন এবং তদন্ত কার্য শুরু করে দেন। তদন্ত শুরু হওয়ার পর সব বিষয়বস্তুগুলো এ এস আই সাহেব ওসি সাহেবকে জানিয়ে দেন। যদি বিষয়টি সত্য মিথ্যা যেটাই হোক না কেন পরবর্তীতে একটি জিডি করে সেটি নিশ্চত্তি করে দেন। অর্থাৎ অভিযোগ প্রত্যাহার করে দেন আর যদি বিষয়টি একটু জটিল হয়ে পড়ে তাহলে অপরাধ অনুসারে মামলা দাখিল করা হয়।

অভিযোগের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়

আমরা থানায় অভিযোগ করার নিয়ম সম্পর্কে খুব ভালোভাবে ধারণা পেয়েছি কার নিকট এবং কোন থানাতে গিয়ে অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করতে হয় সে সম্পর্কেও জানতে পেরেছি। বাংলাদেশ সরকার জনগণের সুবিধার্থে প্রত্যেকটি থানায় অপরাধ নিরসনের জন্য পুলিশ নিয়োগ করে রেখেছেন। তাই পুলিশকে ভয় না পেয়ে আমাদের উচিত তাদের কাছে গিয়ে আমাদের ক্ষেত্রে নিয়োজিত সেবাটি গ্রহণ করা। তবে থানায় অভিযোগ করার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদেরকে আরো ভালোভাবে জানা উচিত নিচে সেগুলো দেওয়া হল।
  • থানায় গিয়ে অভিযোগ করার সময় হট্টগোল বা হৈহল্লা না করে ডিউটি অফিসারের সঙ্গে স্বল্প এবং পরিমিত ভাষায় কথা বলা।
  • আবেদনপত্রে অবশ্যই আবেদনের কারণ তারিখ এবং সময় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা।
  • যার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চান তার নাম এবং ঠিকানা সঠিকভাবে লিখা।
  • আপনি কোন দাবিতে অভিযোগ দায়ের করতে চান সেটি উল্লেখ করা।
  • অবশ্যই ডিউটি অফিসারের সাথে কোন রকম খারাপ কিছু বা অসভ্য কোন আচরণ করা যাবে না।
  • পরিশেষে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাহায্য করুন এবং নিজে সেবা নিন।

লেখক এর শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিশেষ হিসেবে থানায় অভিযোগ করার নিয়ম বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানতে পারলাম। আমাদের জীবদ্দশায় সবাই কোন না কোন ভাবে থানায় গিয়ে উপস্থিত হতে হয়। আর যদি সেখানে যাওয়ার পর সেই নিয়মগুলো সম্পর্কে আমরা না জেনে থাকি তাহলে অবশ্যই আমরা ভোগান্তিতে পড়ে যাব। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ করার বিষয়টি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আপনাদেরকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। 

আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তুগুলো একজন থানার ডিউটি অফিসারের নিকট থেকে সংগ্রহ করেছি। আপনি অবশ্যই আপনার পদক্ষেপটি গ্রহণ করার পূর্বে একজন থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলে নিবেন। তারপরেও এ বিষয়ে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্যবক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি করতে পারেন। যেহেতু এই আর্টিকেলটি সবার ক্ষেত্রেই উপকারে আসবে তাই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব অথবা আত্মীয় কে থানায় অভিযোগ করার নিয়ম বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্যে এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। এরকম আরো তথ্যবহুল পোস্টগুলো পড়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। সকলে বিপদমুক্ত থাকুন ভালো থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url