শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার ১০টি অন্যতম উপায়

শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্পর্কে সবারই কমবেশি আগ্রহ থাকে। কারণ সকলের মনেই কোন না কোন এক সময় কোটিপতি হওয়ার মনোবল জেগে ওঠে। কিন্তু কোন বিষয়গুলো অবলম্বনে মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হওয়া যায় সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আবার অনেকে মনে করে থাকেন কোটিপতি হওয়ার জন্য বিশাল বড় ব্যবসা করতে হবে। আর সেই বড় ব্যবসা করার জন্য যেহেতু পুঁজি নেই তাই কোটিপতি হওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের মত নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকেরা কখনোই 
শূন্য-থেকে-কোটিপতি-হওয়ার-উপায়
সেই উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারেনা। আজকের আর্টিকেলে আমরা তাই শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। পাশাপাশি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আরো যে বিষয়গুলো জানতে পারবেন সেগুলো হল কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় এবং কোটিপতি হওয়ার ব্যবসার সংক্রান্ত বিষয়, শেয়ার দিয়ে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায় এবং কত টাকা বিনিয়োগ করতে হয় এ সকল বিষয়ে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই অবশ্যই ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

“কোটিপতি” বলতে সেইসব ব্যক্তিবর্গকে বোঝায় যার মোট মূল্য বা সম্পদ ১ মিলিয়ন এর সমান বা তার বেশি হয়ে থাকে। শুধুমাত্র টাকার সঙ্গে এ বিষয়টি জড়িত রয়েছে তা নয় একটি নির্দিষ্ট স্তরের প্রতিপত্তি ও জড়িত রয়েছে। কোটিপতি শব্দটির সঙ্গে কেননা বর্তমান সময়ে যদি হিসাব করা যায় তাহলে টাকার মূল্য দিয়ে কোটিপতি হওয়া কোন বিষয় নয়। কিন্তু পূর্বের হিসাব অনুযায়ী একজন কোটি টাকার সম্পদের মালিক হতে হলে তাকে অনেক কাঠ খরি পোড়াতে হয়েছে। আবার বিভিন্ন দেশের টাকার 

অংকের হিসাব বিভিন্ন রকমের কারণে সেই দেশের কোটিপতি হওয়ার জন্য তার বিশাল অংকের এমাউন্ট প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সে কোটিপতি বনে যাবে যেমন ইন্দোনেশিয়া এবং জিম্বাবুয়ে তে টাকার মান কম হওয়ার কারণে সেখানে অনেক বেশি টাকার মালিক হতে হবে। একজন কোটিপতি হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোটিপতি হতে হলে কিছু বিষয় পরিলক্ষন এবং শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে ধারণা রেখে যদি সামনে এগোনো যায় তাহলে অবশ্যই একজন ব্যক্তি কোটিপতি হতে পারবে।

শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায়

ধনী হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় কি এ প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বিভিন্ন রকম মতবাদ দিতে শুরু করবে। বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তিরা ধনী হবার সহজ উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বনের কথা বলেছেন। যেমন ভারতীয় ধন কুবের “রবি কান্ত” বলেছেন, ধনী হতে হলে সর্ব প্রথম ধনী হওয়ার রাস্তা চিনতে হবে। রবি কান্ত ছিলেন অত্যন্ত গরিব ঘরের সন্তান কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সে এখন কোটিপতি হয়ে গেছেন। আবার আরেকজন ধন কুবের বলেছেন, সঠিক অধ্যবসায় এর মাধ্যমে যে কেউ ধনী হতে পারবেন তবে ধনী হতে হলে আগে নিজেকে চিনতে হবে। 
নিজের ভেতরে কোন বিষয়টি লুকায়িত রয়েছে যা পরিলক্ষনের মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নতি করা সম্ভব। সকল ধনী ব্যক্তিগণ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেবে ব্যবসার কোন বিকল্প নেই। দেশের প্রত্যেকটি ব্যক্তি চায় চাকরি করে জীবন ভালোভাবে পার করতে। কিন্তু তাদের চিন্তাভাবনা যদি একটু ব্যতিক্রমধর্মী হয় অর্থাৎ কেউ যদি চাকরির পিছনে না ছুটে খুব ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করে এবং সেখানে সৎ ভাবে কাজ করতে থাকে তাহলে দেখা যাবে এক সময় সে কোটিপতি হয়ে গেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। 

ধনী হওয়ার জন্য বিস্তারিত জানতে হলে “টুয়েলভ ম্যান টু ওয়ান মিলিয়ন ডলার” বইটি পড়তে পারেন। সেখানে ধাপে ধাপে বলা রয়েছে একজন ব্যক্তি শূন্য থেকে কি করে ধনী হতে পারবে। চলে আসুন কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায়

রাতারাতি কোটিপতি কথাটা শুনলেই আমাদের অনেকগুলো টাকার শব্দ কানে ভাসতে থাকবে। কি করে একজন ব্যক্তি রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যায় আসলে রাতারাতি কোটিপতি হওয়া এটি একটি বিশেষ কথোপকথনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এক রাতে কেউই কোটিপতি হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি হওয়ার কারণে আমরা এ শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। তবে নিয়ম-শৃঙ্খলা অনুযায়ী সহজ ভাবে কোটিপতি হওয়ার উপায় অবশ্যই রয়েছে। 

বিগত সময়ে যারা শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় নিয়ে ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করেছেন তারাই আজকে মিলিনিয়ার বিলিনিয়ার হয়ে বসে আছেন। হবে তারা তাদের উন্নতির জন্য কখনোই বসে থাকেন নি আসুন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় সম্পর্কে পর্যায়ক্রমে জানার চেষ্টা করি।

কম বয়সে ধনী হওয়ার চেষ্টা

অল্প বয়স থেকে কোটিপতি হওয়ার চেষ্টা থাকা অনেক জরুরী। যেমন বলা হয়ে থাকে ছাত্র জীবন বীজ বপন এর শ্রেষ্ঠ সময়। এর অর্থ হল ছাত্র জীবনে যদি কেউ সঠিক অধ্যবসায় করে তাহলে পরবর্তী সময়ে সে খুব ভালো একটি পর্যায়ে যেতে পারে। ঠিক তেমনি অল্প বয়সে কেউ যদি কোটিপতি হওয়ার অনুপ্রেরণা প্রয়াস করে তাহলে কেউ তাকে আর আটকাতে পারবে না। আমাদের অল্প বয়সে প্রথম যে চিন্তা ভাবনা মনে আসে সেটি হল পড়াশোনা করে চাকরিতে ঢুকে যাওয়া এবং বাকি জীবন কোনরকম ভাবে কাটানো। 

কিন্তু এই বয়সেই যদি কেউ ছোট পরিসরে ব্যবসা করার প্ল্যান করে দেখা যাবে ১০ বছর পর তার সেই ব্যবসা একটি উচ্চ লেভেলে চলে গেছে আর তাকে কোটিপতি হতে কেউ রুখতে পারবে না। যদি অল্প বয়স থেকে কোটিপতি হওয়ার চিন্তা ভাবনা মনে না আসে তাহলে বড় হওয়ার পর সেই আগ্রহ বা জেদে জং ধরে যাবে। বড় হয়ে আর কোটিপতি হওয়ার ইচ্ছা সেভাবে থাকবে না তাই আমাদের অল্প বয়সেই কোটিপতি হওয়ার বীজ বপন করতে হবে।

কোটিপতি হওয়ার জন্য ব্যবসা

শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেবে ব্যবসার কোন তুলনা নেই। আর ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হিসেবে ব্যবসাকে সবসময়ই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এবং ইসলামী মতে, হালাল পথে ব্যবসা করার মাধ্যমে যে কেউ ধনী হতে পারবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়। পৃথিবীতে বিভিন্ন রকম ব্যবসা রয়েছে তবে সব ব্যবসার মাধ্যমেই উন্নতি করা সম্ভব। তবে ব্যবসার মূল চাবিকাঠি হলো সৎ পথে থেকে ব্যবসা করে যাওয়া। 

যদি প্রতারণা বা চুরি করে ব্যবসা করতে চান তাহলে সেটা সাময়িকভাবে হয়তো আপনাকে লাভবান করবে কিন্তু সেটা কখনোই আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী লাভ দিবে না। তাই ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই সৎ পথে থাকতে হবে আমরা আজকে এখানে দুইটি ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করব।

অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি

বর্তমান যুগ যেহেতু প্রযুক্তির যুগ এখানে পিছিয়ে থাকলে কোনভাবেই আপনি কোটিপতি বা ধনী হতে পারবেন না। যদি রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় এর তালিকাতে অনলাইন ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় বিদ্যমান না রাখেন। আপনার যদি একটি বাজারে দোকান থাকে তাহলে এখানে নির্দিষ্ট কাস্টমার আসবে। এসে আপনার কাছ থেকে মালামাল কিনে নিয়ে যাবে এখন আপনি এই ব্যবসার পাশাপাশি যদি আপনার ব্যবসার মালামাল গুলো অনলাইনে সেল করতে পারেন তাহলে আপনি দুই দিক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারছেন। আর অনলাইনে বিক্রির জন্য আপনাকে সেখানে কোন রকম ঘর ভাড়া 

প্রদান করতে হচ্ছে না সুতরাং এটি আপনার জন্য একটি ধনী হওয়ার প্রধান পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। আবার আপনার যদি কোন দোকান ঘর না থাকে তাহলেও কোন চিন্তার কারণ নেই আপনি অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। আর কাপড়ের ব্যবসা শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেব করে যদি দেখতে চান তাহলে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ধনী গুলো সকলেই কিন্তু কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে কেননা আপনি শূন্য থেকে শুরু করছেন। এখানে প্রথম অবস্থায় আপনার প্রফিট অল্প অল্প করে আসবে ধীরে ধীরে আপনার অনলাইনে 

ব্যবসার পরিধি বাড়াতে হবে। প্রথমে ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপনার প্রোডাক্টটি বিক্রি করার চেষ্টা করুন প্রথম অবস্থায় অর্গানিকভাবে বিক্রির নিশ্চিত করা যায়। কেননা আপনি যেহেতু প্রাথমিকভাবে শুরু করছেন তাই সেখানে পেইড বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে ব্যবসা করতে গেলে আপনার পুঁজি হারিয়ে যাবে। তাই সর্বপ্রথম বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ এবং স্টোরিতে আপনার প্রোডাক্টের মানসম্মত ছবিগুলো শেয়ার করুন দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার বিক্রি শুরু হয়েছে এবং ধৈর্য সহকারে যদি অনলাইনে ব্যবসা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই একদিন আপনি কোটিপতি হতে পারবেন।

শেয়ার দিয়ে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায়

শেয়ার দিয়ে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায় এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক সময় গুগলে সার্চ করে থাকি। বিনিয়োগ করলে আপনাকে কোটিপতি বানিয়ে দেবে কিন্তু সেখানে আপনাকে কিছু বিষয় জেনে বুঝে তারপরে স্টক মার্কেটে নামতে হবে। আপনি যদি শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেবে শেয়ার বিনিয়োগ শুরু করতে চান তাহলে বিষয়টি খুব একটা খারাপ নয়। তবে এখানে কিছু অনিশ্চয়তার বিষয় রয়েছে যেমন আপনি বিনিয়োগ করার পর শেয়ার মার্কেট যদি ডাউন হয়ে যায় তাহলে আপনার অনেক বড় লস হতে পারে। এজন্য মার্কেট সম্বন্ধে প্রথমে প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান লাভ করতে হবে। 

স্টক মার্কেট থেকে শেয়ারের মাধ্যমে দ্রুত অর্থ উপার্জন করার উপায় হল “ডে ট্রেডার” হওয়া। কারণ একজন ডে ট্রেডার একটি স্ট্রোকের মধ্যে একদিনেই দ্রুত প্রবেশ করে এবং সে অনুযায়ী প্রফিট আদায় করে বাইর হয়ে চলে যায়। আবার একই দিনে কয়েকবার সেখানে প্রবেশ এবং বাহির হওয়া সম্ভব। আর এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে লস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আমরা একজন শেয়ার মার্কেটের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেছিলাম যে তিনি কিভাবে শেয়ার দিয়ে কোটিপতি হয়েছেন। তিনি অনেকগুলো উপায় এর কথা বলে থাকলেও সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় সম্পর্কে বলেছেন। 
সেটি হল “ক্যাপিটাল গ্রোথ” বা “ক্যাপিটাল গেইন” এই বিষয়টি হলো আপনার শেয়ার এক মূল্য কিনে সরাসরি উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে প্রফিট নিশ্চিত করা। শেয়ার দিয়ে কোটিপতি হওয়ার জন্য স্টক মার্কেট একটি আদর্শ জায়গা। কেননা এই মার্কেট থেকে আর্থিক লাভের পরিমাণ সীমাহীন এখানে ৫০০ টাকা বা ১০০০ টাকা নয় লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করা সম্ভব। কিন্তু সেটির জন্য আপনাকে প্রথমে দক্ষতা অর্জন করতে হবে মার্কেট সম্পর্কে জানতে হবে বুঝতে হবে তারপরে আপনি ট্রেডিংয়ের ঝুঁকি নিতে পারবেন।

স্রোতের বিপরীতে চলা

শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় এবং রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় গুলোর মধ্যে আরেকটি। মূল চাবিকাঠি হল স্রোতের বিপরীতে চলা যেমন আপনি যদি শুনে থাকেন আপনার অমুক বন্ধু একটি ব্যবসায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে তাহলে আপনি কখনোই তার মত করে ব্যবসা করার চেষ্টা করবেন না। অর্থাৎ স্রোতে গা ভাসানো যাবে না। হয়তো বা আপনার ওই বন্ধু সেই বিষয়ে দক্ষ এবং সেই কারণে ওই ব্যবসাতে সে সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি গেলেও ওই ব্যবসাতে আপনি সাফল্য অর্জন করবেন। 

আপনার বন্ধুর মত পরিকল্পনা না করে একটু ব্যতিক্রম চিন্তাভাবনা করা শুরু করে দিন আর এর অর্থ হলো স্রোতের বিপরীতে চলা। এমন ক্রিয়েটিভ কিছু ব্যবসা আইডিয়া নিয়ে আসুন যাতে করে আপনি ওই বন্ধুর মতো যে ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন সেই ব্যবসাকে আপনি ছাড়িয়ে যেতে পারেন। নিজেকে সৎ রাখতে হবে এবং কঠোরভাবে পরিশ্রম করতে হবে। মেহনত করলে কোন কিছুই বিফলে যায় না। তাই কোটিপতি হওয়ার মূল বিষয় হলো ব্যতিক্রমী চিন্তা-ভাবনা করা পাশাপাশি কঠোরভাবে সময় এবং পরিশ্রম বিনিয়োগ করা।

লক্ষ্য স্থির রাখা

পৃথিবীতে যত ধনী মানুষকে শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় বিষয়ে উপদেশ দিতে বলা হয়েছে তারা সর্বপ্রথম যে উপদেশ দিয়েছেন সেটি হল ধৈর্য ধরে কায়িক পরিশ্রম করে যাওয়া এবং পাশাপাশি লক্ষ্য স্থির রাখা। ধরুন একজন শিকারি একটি পাখিকে শিকারের উদ্দেশ্যে বন্দুক ত্যাগ করল কিন্তু বন্দুকের নলের তাক অর্থাৎ লক্ষ্য ঠিকভাবে স্থির করতে পারল না তাহলে কখনোই সেই বন্দুকের গুলি দিয়ে পাখির গায়ে গিয়ে লাগবেনা। ঠিক এমনই আপনি যদি একজন ধনী মানুষ অর্থাৎ কোটিপতি হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে। 

যেমন ধরুন আপনি একটি ব্যবসা করতে চান তাহলে কোন বিষয়ে ব্যবসা করলে আপনি সেই ব্যবসাই বেশি প্রফিট নিয়ে আসতে পারবেন সে ব্যবসা আপনাকে করা উচিত। অর্থাৎ যে ব্যবসা সম্বন্ধে আপনার ব্যাপক পরিমাণে ধারণা আছে সেটা নিয়ে আপনাকে কাজ করা উচিত। আমাদের সমাজে অনেক ব্যক্তি আছে যারা কোটিপতি হতে চায় কিন্তু একটি ব্যবসা তিন মাসের বেশি করতে পারে না। হয়তো দেখে যে তার আরেক বন্ধু অন্য আরেকটি ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে তখন সে নিজের ব্যবসা ছেড়ে বন্ধুর ব্যবসা করার দিকে আগ্রহ প্রকাশ করে। 

তখন দুই নৌকাতে পা দেওয়ার ফলে কোনটাই আর টিকে না। তাই অবশ্যই আপনার দক্ষতা অনুযায়ী স্ট্রাটেজি ফিক্সড করুন এবং সে অনুযায়ী কাজে নেমে পড়ুন। দেখবেন ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে কেউ আর আটকাতে পারছে না।

সুশৃংখল জীবন যাপন

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা যেমন ঈমানের অঙ্গ। সুশৃংখল জীবন যাপন ব্যবসার ঠিক তেমনি একটি অঙ্গ। আপনি আপনার লাইফ স্টাইল যদি বাজেভাবে মেইনটেইন করেন তাহলে কোটিপতি হওয়া তো দূরের কথা আপনি ফকির হওয়ার পথে। কোটিপতি হওয়ার জন্য অবশ্যই নিজেকে সুসংগঠিত রাখতে হবে। আপনি হয়তো ব্যবসা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তাহলে অবশ্যই আপনি সৎপথে আপনার ব্যবসা পরিচালনা করবেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায় আপনার লস হতে পারে। তখন নিজেকে অবশ্যই কন্ট্রোল 

করতে হবে আর যারাই শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেবে সুসংগঠিত এবং পরিকল্পনা মাফিক জীবন যাপন করেছেন তারাই উন্নতির শিখরে পৌঁছেছেন। শুধু ব্যবসার ক্ষেত্রেই সুসংগঠিত বিষয় আসবে ঠিক তা নয় আপনার পারিবারিক বিষয় এর সঙ্গে জড়িত ব্যবসা করার পাশাপাশি পরিবারকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। আপনি যদি শুধুমাত্র ব্যবসা নিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিবারে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ইফেক্ট পরবর্তীতে আপনার ব্যবসায়ী ক্ষেত্রে চলে 

আসবে। পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে লক্ষ্য রেখে চলতে হবে সেটা হলো সুশৃংখল জীবন। আপনি যদি ধূমপান, মদ্যপান বা অন্যান্য খারাপ কাজের সঙ্গে নিয়োজিত থাকেন তাহলে আপনি কখনোই ব্যবসায়ী সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। শুধু ব্যবসায়ী নয় এসব কারণে আপনি আপনার জীবনের কাছে হেরে যাবেন। তাই শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে এসব খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

সঞ্চয় করে কোটিপতি

সঞ্চয় হল রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয়। সবাই বলে আমি কোটিপতি হতে চাই কিন্তু কোটিপতি হওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমেই সঞ্চয় এর বিষয়ে সজাগ হতে হবে। বিশ্বের বড় বড় ধন কুবেরেরা এটিই বলেছেন যে কোটিপতি অর্থাৎ শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় হিসেবে সঞ্চয় করুন। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সঞ্চয় করতে থাকুন একজন বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তি মতামত পেশ করেছেন যে আপনার মাসিক ইনকাম যতই হোক না কেন মাস শেষে যে টাকা 

থাকবে সেটি সঞ্চয় করবেন না। আপনি একজন চাকুরীজীবী মাস শেষে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পেয়ে থাকেন তাহলে বেতন পাওয়ার পরে আপনি সারা মাস খরচ করে যে টাকা থাকবে সেটা সঞ্চয় হিসেবে রাখার চেষ্টা করবেন না মাস শেষে বেতন পাওয়ার পর আপনি প্রথমেই সঞ্চয়ের টাকাটা আলাদা করুন। সঞ্চয় টাকা আলাদা হওয়ার পর বাকি যে টাকা থাকবে সেটি দিয়ে আপনি আপনার সারা মাসের সংসার খরচ চালান। বর্তমান সময়ে অনেক বড় বড় বিলিনিয়ার পূর্বের সময়ে এ পদ্ধতি অবলম্বন 

করেছেন। দেখবেন পাঁচ বছর পর আপনার একটি বড় অংকের অ্যামাউন্ট জমা হয়েছে এখন এই টাকাটি সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করুন। যদি সৎপথে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এগোতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার লক্ষ্যে একদিন পৌঁছাতে পারবেন।

যোগ্য পার্টনার নির্বাচন

আপনি যেভাবেই কোটিপতি হতে চান না কেন আপনার অবশ্যই একজন পার্টনার প্রয়োজন হবে। কারণ একা এতগুলো পথ পাড়ি দেওয়া একটু কঠিনই বিষয়। বর্তমানে আমরা যাদের মিলিনিয়র বিলিনিয়ার হিসেবে দেখি তারা তিনজন চারজন মিলে প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। আজকে তারা কোন পর্যায়ে আছে দেখলেই অবাক লাগে। যেমন ফেসবুকের অধিকর্তা মার্ক জুকারবার্গ সর্ব প্রথম তিনি এবং তার কয়েকজন বন্ধু মিলে একটি ছোট ঘরে ফেসবুক নামক অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপ চালু করেছিলেন। 

আজকে ফেসবুক কোন পর্যায়ে আছে সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ইতিহাস এটা বলে পরবর্তী সময়ে মার্ক জুকারবার্গ তার বন্ধুদের আর একসাথে রাখেননি। বিষয়টা আসলে কতটুকু সত্য আমাদের জানা নেই। এজন্য শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় অনুযায়ী নিজেকে ডেভলপ করার জন্য একজন যোগ্য পাটনার অথবা সৎসঙ্গী নির্বাচন করা খুবই জরুরী। আপনি যদি নিজেকে মিলিনিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার সৎ সঙ্গী নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে আপনার সুখের সময় আপনাকে ফেলে দিয়ে আপনার সেই বন্ধুটি সামনে এগিয়ে চলে যাবে।

আলোচনা এবং সমালোচনা

আপনি যেকোনো ধরনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন একজন কোটিপতি হওয়ার লক্ষ্যে। তবে আমরা পূর্বেই বলেছি যে আপনি যে বিষয়ে দক্ষ অথবা সেই বিষয়ের উপর আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে সেই বিষয়ে নিয়েই আপনার ব্যবসা শুরু করা উচিত। এখন ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনার যে কাস্টমার গুলো আসবে তাদের ডিমান্ড কি অর্থাৎ আপনার ক্রেতারা কোন ধরনের প্রোডাক্টগুলো পছন্দ করছে সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখা। পাশাপাশি তাদের ফিডব্যাক আপনার অবশ্যই পর্যালোচনা করতে হবে। 

যদি তারা খারাপ ফিডব্যাক দেয় তাহলে সে অনুযায়ী আপনাকে আপনার ব্যবসা অথবা সার্ভিস আরো উন্নত করতে হবে। ধরুন আপনি একটি পেস কন্ট্রোল এজেন্সি চালিয়ে থাকেন অর্থাৎ আপনার এজেন্সির লোকজন বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গিয়ে পেস কন্ট্রোলিং এর মাধ্যমে বাড়িতে থাকা আরশোলা, পোকামাকড় এগুলো মেরে থাকে। আপনার উচিত হবে প্রত্যেকটি কাস্টমারের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেওয়া। কারণ তাদের ফিডব্যাক বলে দেবে আপনার কাজের মান কেমন হচ্ছে। 
যদি ফিডব্যাক খারাপ হয় সে ক্ষেত্রে আপনাদের কাজের মান আরো উন্নত করতে হবে। আর শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে কাস্টমারের সাথে একটি বন্ডিং তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফিডব্যাক আদান প্রদানের মাধ্যমে কাস্টমারের সাথে আপনার অবশ্যই একটি সখ্যতা গড়ে উঠবে। আর এই ব্যাপারটি আপনার ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে কাজে লাগান দেখবেন আপনি একটি এজেন্সির মালিক থেকে ৫টি এজেন্সির মালিক হয়ে গেছেন।

আমরা এ পর্যন্ত শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় এবং রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারলাম। তবে অবশ্যই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা আপনাদের মূল্যবান সম্পদ অবশ্যই সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করবেন। যদি ভুল জায়গায় ভুল সময়ে টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে একসময় আপনার আক্ষেপ করা ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া অনেকটাই জরুরী।

কোটিপতি হতে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হয়

আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জানার পর আপনাদের মনে আরও একটি বিষয় জানার ইচ্ছা হতে পারে সেটি হল আসলে কোটিপতি হতে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন একটি বিষয় কারণ কোটিপতি হওয়ার জন্য কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে এই হিসাব দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তবে যারা পূর্ব কোটিপতি হয়েছেন তারা সবাই বলেছেন আমরা শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছি। এর অর্থাৎ খুব বেশি টাকা হয়তো তাদের কাছে ছিল না যা তারা বিনিয়োগ করতে পারতেন। আসুন ভারতীয় ধর্মের নাভালের কিছু কোটিপতি হওয়ার হিসাব-নিকাশ পর্যালোচনা করি। 

নাভালের মতে, আপনি আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্যে একটি প্রোডাক্ট তৈরি করুন এবং সেই প্রোডাক্টটি তৈরি করুন যে বিষয়ে আপনার খুব ভালো জ্ঞান রয়েছে। তারপর প্রোডাক্টটির কপিরাইট তৈরি করে ফেলুন যাতে আপনি ছাড়া ওয়েব প্রোডাক্ট বাজারে আর কেউ বিক্রি করতে না পারে। বছরের মধ্যে হয়তো কোথাও অবস্থায় লাভের অংক কম হবে বছরের শেষভাগে গিয়ে লাভের হিসাব বুঝতে পারবেন। তিনি তার বইতে উল্লেখ করেছেন একটি প্রোডাক্ট যদি আপনি ১০ টাকা লাভে বিক্রি করতে পারেন তাহলেও কোটিপতি হওয়া সম্ভব। 

আপনাদের মনে এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে প্রোডাক্টের মাত্র 10 টাকা লাভ করে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যাবে। তিনি তার বইতে উল্লেখ করেছেন প্রতিটি প্রোডাক্ট যদি ১০ টাকা লাভে বিক্রি নিশ্চিত করা যায় এবং সেটি যদি ১০ লক্ষ লোকের কাছে বিক্রি করা যায় তাহলে হিসাবটা কোটিতে গিয়ে পৌঁছায়। তবে অবশ্যই দশ লক্ষ লোকের কাছে আপনার প্রোডাক্টটি বিক্রি করার জন্য প্রোডাক্ট এর মান অবশ্যই ভালো হতে হবে এবং প্রোডাক্টের কপিরাইট থাকতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারলাম। কেননা সকলেই খুব সহজে কোটিপতি হতে চায় আশা করি যাদের মনে এই আশাটা ব্যক্ত রয়েছে তারা আমাদের উপরে বর্ণিত শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায়, রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ১০টি উপায় এবং পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই কোন না কোন দিন মিলিনিয়ার অথবা বিলিনিয়ার হতে পারবে। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। 

আপনাদের কাছে আবারও অনুরোধ করছি আপনার মূলধন সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করুন না হলে আপনি আপনার কষ্টের সেই মূলধন হারাতে পারেন। আজকের এই আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি পেশ করুন। আপনার বন্ধুকেও রাতারাতি কোটিপতি করার উদ্দেশ্যে আজকের এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। আর এরকম তথ্যবহুল সব পোস্ট গুলো পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url