যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে জানুন

যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় বিষয়বস্তুটি আমাদের পুরুষ জাতির জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। মিথ্যা মামলা করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদি কেউ নির্দোষ হয় এবং সেটা প্রমাণিত হয় তাহলে মামলা দারকার বিরুদ্ধে কার্যবিধি ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণের আদেশ আছে। যদি কোন এক সময় আপনি এ রকম বিপদের সম্মুখীন হন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলের তথ্যগুলো আপনার অনেক কাজে দেবে এবং আপনার জীবন পরিবর্তনে সহায়তা করবে। 
যৌতুকের-মিথ্যা-মামলা-থেকে-বাচার-উপায়
আর্টিকেলে আজকে আমরা যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব। পাশাপাশি আরও যে বিষয়গুলো জানতে পারবো সেগুলো হল তালাকের পর যৌতুকের মামলা, মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তি, যৌতুক মামলার শাস্তি কি, মামলা বাবদ খরচ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তাই আপনি যদি যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচার উপায় গুলো কি জানতে চান তাহলে এ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

প্রকৃতপক্ষে যৌতুক বলতে বিয়ের সময় বরকে কনের অভিভাবকগণ কিছু অর্থ বা মূল্যবান সামগ্রী দিয়ে থাকে আর সেটিকে যৌতুক হিসেবে অভিহিত করা হয়। কনে পক্ষের আত্মীয় কিংবা অনাত্মীয় স্বেচ্ছায় নবদম্পতিকে অনেক উপঢৌকোন দিয়ে থাকেন যেটা দ্বারা পরবর্তীতে তারা সংসার জীবনে ভালোমতো ব্যবহার করতে পারে। সাধারণত হিন্দু আইনে যৌতুককে নারী সম্পত্তির উৎস বলা হয়ে থাকে। কারণ পুরুষদের মত নারীরা হিন্দু সমাজে সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। তাই হিন্দু সমাজে নারীদের বিয়ের সময় যৌতুক দেওয়ার প্রচলন চালু হয়। 

তবে সময়ের পরিবর্তনে যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ কনে পক্ষের যদি যৌতুক দেয়ার মতো সামর্থ্য না থাকে তবুও কনে পক্ষের বাবার যৌতুক দিতে হয় যা অতি কষ্টদায়ক। তবে অনেক সময় দেখা যায় বরপক্ষ কোনো রকম যৌতুক নেয়নি তারপরও কনেপক্ষ হয়রানির প্রেক্ষিতে বরপক্ষকে যৌতুক মামলা দিয়ে থাকে। আর যদি কারো যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকে তাহলে সে অনেক বিপদের মধ্যে পড়ে যায়। 
এই যৌতুক মিথ্যা মামলা সম্পর্কে যদি সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করা যায় তাহলে ধারা অনুযায়ী প্রতিপক্ষকে অর্থাৎ মামলা দায়েরকারী ব্যক্তির বিপক্ষে ও পাল্টা মামলা দার করা সম্ভব। এবং পাশাপাশি যদি যৌতুক মামলাটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদান করা হয়েছে। এমনকি মিথ্যা মামলা দেওয়ার শাস্তি হিসেবে সাত বছরের কারাদণ্ড সহ অর্থদণ্ডের উল্লেখ রয়েছে।

তালাকের পর যৌতুকের মামলা

তালাকের পর যৌতুকের মামলা একটি সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। নারীরা পুরুষদেরকে হয়রানি করার জন্য নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা কে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যাচ্ছেন। পুরুষরা বিভিন্নভাবে নারী কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে থাকেন। কিন্তু আত্মসম্মানের ভয়ে কেউ সেটি প্রকাশ করেন না। আমাদের সমাজের আরেকটি মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে সেটি হল স্ত্রী পরকীয়া। আর এই পরকীয়ার বিরুদ্ধে যদি কোন স্বামী স্ত্রীকে শাসন করতে যায় তখন সেই স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দিয়ে থাকে। যেটা কিনা একদমই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। 

তাই যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় প্রত্যেকটি পুরুষ সমাজের ব্যক্তিকে ভালোভাবে জানা উচিত। আর সে সম্পর্কে আইনগুলো জানার মাধ্যমে এই মিথ্যা বানোয়াট যৌতুক মামলা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশে কিছু বেসরকারি সংস্থা ১৯ নভেম্বর পুরুষদের কে সোচ্চার এবং শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে “আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস” পালন করে থাকে। আমাদের বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি সংস্থা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। সংস্থাটির নাম হলো “বাংলাদেশ মেনস রাইটস ফাউন্ডেশন”। 

সমাজের অনেকেই এখন মনে করে থাকেন যে পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থা করা দরকার। কেননা বর্তমান সময়ে ৮০ শতাংশ পুরুষ নানা ভাবে নারী কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে থাকেন। আবার তারা মানসিক নির্যাতনের স্বীকারও হয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা পুরুষ জাতিরা কোনভাবে সেটি প্রকাশ করতে পারি না। আবার যৌতুকের মিথ্যা মামলার দিয়ে হয়রানি এবং প্রতারণা শিকার আমরা পুরুষ জাতিরাই হয়ে থাকি। আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কিভাবে আমরা নির্যাতিত হই এবং যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় গুলো কি কি সে নিয়ে কোন রকম গবেষণা করা হয়নি। 

পুরুষরা কেন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সে বিষয়ে আমাদেরকে খতিয়ে দেখা উচিত এবং কোন কোন কারণবশত পুরুষরা নির্যাতনের শিকার হন সেটি বিষয়ে আমাদের ধারণা রাখা উচিত। তবে স্ত্রীর পরকীয়া এর অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী। কারণ স্ত্রীদের অর্থাৎ মেয়ে মানুষের সেরকম কোন শাস্তির বিধান আইন অনুযায়ী নেই। আর এই সুযোগটি অনেক মহিলা কাজে লাগায় এবং পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চায় তখন ওই স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে তালাকের পর যৌতুক মামলা দায়ের করে থাকে। 

আর এই সমস্যার মধ্যে যখন একটি ব্যক্তি পড়েন তখন তিনি বুঝতে পারেন যে কিরকম বিপদে তিনি আছেন। কিন্তু সেই সময় যদি এই যৌতুক মামলার আদ্যপ্রান্ত সম্পর্কে তার ধারণা থাকে তাহলে তার জন্য এই মামলা নিদর্শন বিষয়টি অনেকটাই সহজ তর হয়ে যায়। তাই আসুন নিচে আমরা যৌতুক মিথ্যা মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।

যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায়

যদি কোন ব্যক্তি এরকম যৌতুকের মিথ্যা মামলায় উপনীত হয় তাহলে সর্বোত্তম তাকে যে বিষয়টি করতে হবে সেটি হল বাংলাদেশ আইন ও আদালতের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে অবশ্যই মামলাটি লড়ে যেতে হবে। যদি উক্ত ব্যক্তিটি সত্যি সত্যিই নির্দোষ হয় এবং সেটি সে প্রমাণ করতে পারে তাহলে অবশ্যই এই মিথ্যা মামলা থেকে সে নিরসন পাবে। পাশাপাশি যৌতুক মিথ্যা মামলা হওয়ার কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মামলা দায়েরকৃত ব্যক্তিরা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। আবার আমাদের দেশের প্রেমের বিয়ে গুলো বিপক্ষের কনে পক্ষের অভিভাবকগণ মেনে না নিয়ে ছেলে পক্ষের বিরুদ্ধে নারী অপহরণ, ধর্ষণ সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা প্রদান করে থাকে।

 তাই একজন পুরুষ হিসেবে যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করা দরকার। তাই মামলার মধ্যে যদি কেউ পড়ে যায় তাহলে তার পালিয়ে চলে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। সঠিক ব্যক্তিকে অবশ্যই আদালত বেকসুর খালাস দিয়ে দিবে। তাই আপনাকে উপস্থিত থেকে মামলাটি চালিয়ে যেতে হবে পাশাপাশি জামিন বিষয়ে আপনার ধারণা নিতে হবে। কেননা জামিন হলো যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায়। ফৌজদারি মামলা হলে জামিনের বিষয়টি জড়িত থাকে। সেজন্য জামিন নিতে গেলে আপনার কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। 
যদি কনে পক্ষ আপনার বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে যৌতুক মামলা প্রদান করে থাকে তাহলে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে যথাযথ সত্যতা সহ যাবতীয় দলিল আপনাকে উপস্থাপন করতে হবে। যদি পুলিশ কর্মকর্তা ইচ্ছে করে তাহলে আপনাকে গ্রেফতার না করে মামলার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত আপনি জামিনে থাকতে পারবেন। আবার যদি পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান দিয়ে দেয় তাহলে কোন একজন আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করা সম্ভব। তাই যদি সরাসরি আদালতে মামলাটি হয়ে থাকে তাহলে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। 

এবং পাশাপাশি মামলার কার্যক্রম নিজে উপস্থিত থেকে চালিয়ে যেতে হবে। মামলা যখন স্বাক্ষর পর্যায়ে উপনীত হবে তখন উপযুক্ত এবং সঠিক প্রমাণ গুলো আদালতে পেশ করতে হবে। তাই যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় মধ্যগুলোর একটি অন্যতম উপায় হল মামলা এর মধ্যে পড়ে গেলে পালিয়ে চলে না যাওয়া। কারণ আপনার বিরুদ্ধে যারা মিথ্যা মামলা করে থাকবে যদি তারা আসলেই সঠিক না হয় তাহলে সহজে আদালতে হাজিরা দিতে আসবে না এবং সেই প্রেক্ষিতে আপনি রেহাই পেতে পারেন। আর পাশাপাশি আপনি যদি উপযুক্ত প্রমাণগুলো হাজির করতে পারেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে দায়কৃত মামলা খালাস হওয়ার পাশাপাশি মামলা দায়কৃত পক্ষ থেকে অবশ্যই আপনি একটি ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকবেন।

যৌতুক মামলার জামিন দরখাস্ত

যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আমরা আরেকটি বিষয় জানলাম। সেটি হল যৌতুক মামলার জামিন বিষয়ে আপনি একজন নির্দোষ ব্যক্তি তাই আপনি শুধু শুধু কেন কারাগারে রাত্রি যাপন করবেন। আর এই যৌতুক মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনি জামিনের জন্য দরখাস্ত করবেন। আর যদি প্রতিপক্ষ কোন আদালতে মামলাটি দায়ের করে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে আদালতের নিকট আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিনের জন্য দরখাস্ত করতে হবে। তবে অনেক সময় এটি নিকটস্থ থানার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আপনাকে কথা বলে জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে।

মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তি

ফৌজদারী কার্যধারার ২৫০ ধারায় যদি কোন ব্যক্তি মিথ্যা মামলা করে থাকে তাহলে তার উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আদালত যদি বুঝতে পারে যে মামলাটি মিথ্যা ছিল তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খালাস দেওয়ার সময় বাদীকে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আবার আইন অনুযায়ী দন্ডবিধির ১৯১ এবং ১৯৩ ধারা অনুযায়ী যদি মামলাটি মিথ্যা বলে উপনীত হয় তাহলে মামলা দায়ের কৃত ব্যক্তিকে বা ব্যক্তিবর্গকে সাত বছরের কারাদণ্ড কিংবা উভয় অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। 

আবার ২১১ ধারায় বলা হয়েছে মিথ্যা দায়ের করা মামলা যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের জন্য অভিযোগ দায়ের করে এবং সেই অভিযোগ মিথ্যা বলে উপনীত হয় তাহলে ব্যক্তি দুই বছর কারাদণ্ড বা উভয় অর্থদণ্ডে দন্ডিত হবে। তাই কোন নারী যদি কোন পুরুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলা দায়ের করে থাকে এবং সেই পুরুষ কোথাও পালিয়ে না গিয়ে মামলা চালিয়ে যেতে থাকে এবং উপযুক্ত প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারে তাহলে অবশ্যই সেই নারী উক্ত ধারা অনুযায়ী অবশ্যই শাস্তি পাবে। এজন্য আমাদের এই আর্টিকেলের যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় বিষয়টি প্রত্যেকটি পুরুষের জেনে রাখা উচিত।

যৌতুক নিরোধ আইন ও যৌতুক মামলা ধারা ৪

অনেক বছর ধরে আমাদের সমাজে যৌতুক প্রথা একটি মারাত্মক ব্যাধি হিসেবে চলে আসছে। যৌতুকের জন্য নারীরা বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয় এবং পাশাপাশি আত্মহত্যা, বিবাহ বিচ্ছেদের মত ঘটনা ঘটে থাকে। আর এসবের কারণে আমাদের সমাজে বিভিন্ন সময় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই বিবাহের সময় কোনরকম উপঢৌকন না দেওয়ার লক্ষ্যে অর্থাৎ যৌতুক নিরোধ করার লক্ষ্যে ১৯৮০ সালে সময়োপযোগী করে “যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮” নামে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। 

উক্ত আইন অনুযায়ী কোন পক্ষই বিবাহের সময় পণ্য বাবদ দাবীকৃত বা প্রদানের জন্য সম্মতি প্রকাশ করতে পারবে না। তবে মুসলিম সমাজের জন্য দেনমোহর বা মোহরানা বিবাহের সময় দেওয়া যাবে এবং সেটি যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে না। আবার যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় হিসেবে নারীর পাশাপাশি পুরুষরাও নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অর্থাৎ যে কোন পক্ষই যৌতুক মামলা দায়ের করতে পারবেন। যৌতুক মামলা ধারা ৪ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে “যদি বিবাহের কোন একপক্ষ যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করেন অথবা যৌতুক প্রদান বা গ্রহণে সহায়তা করে থাকেন 

এবং সেই সময় যৌতুক প্রদান বা গ্রহণের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এটি হবে একটি জঘন্যতম অপরাধ”। এই অপরাধে শাস্তি হিসেবে পাঁচ বছর অথবা ১ বছরের কারাদণ্ড কিংবা ৫০০০০ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হবেন। আবার যৌতুক আইনের ধারা ৩ অনুযায়ী যৌতুক গ্রহণ অথবা প্রদানের পাশাপাশি যৌতুক দাবি করাও একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আর এই আইনকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সমাজের কিছু মানুষ মিথ্যা মামলা দায়ের করে থাকেন। তাই কোন পুরুষ যদি যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে অবগত থাকে তাহলে অবশ্যই সে তার মিথ্যা মামলা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে।

যৌতুক নিরোধ আইন ৩ ধারা

যৌতুক নিরোধ আইন ৩ ধারা অনুযায়ী যৌতুক প্রধান কিংবা গ্রহণের মত যৌতুক দাবি করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৯৮০ সালের পূর্বে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে শাস্তির সেরকম কোন বিধান ছিল না। যার ফলে কোন ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে অন্য ব্যক্তি মিথ্যা মামলা করে থাকতো। বর্তমান সময়ে ২০১৮ এর ধারা ৬ মোতাবেক কোন ব্যক্তি যদি মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাহলে ৫ বছর কারাদণ্ড কিংবা ৫০০০০ টাকা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে। অর্থাৎ আদালতে মিথ্যা মামলা আদায় করাও একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। 
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যৌতুক প্রদান ও গ্রহণের মত যৌতুকের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করাতেও শাস্তির বিধান রয়েছে। আবার অনেকে মনে করে থাকেন যৌতুকের ৩ ধারা কি জামিনযোগ্য। আসলে যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচার উপায় গুলোর মধ্যে একটি উপায় হল আপাতত জামিনে মুক্তি পাওয়া। কিন্তু যৌতুক মামলা ধারা ৩ আইন অনুযায়ী অপরাধ জামিন অযোগ্য। কিন্তু যৌতুক মামলায় অন্যান্য ধারার আইনগুলো তে জামিন দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। যৌতুক মামলা সাধারণত আদালতে বিপক্ষকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য বিয়ের ৭ বছরের মধ্যে যৌতুক মামলা দায়ের করা উচিত। 
আর এই যৌতুক মামলা করার জন্য নির্দিষ্ট সেরকম কোন খরচ বলা সম্ভব নয়। কারণ আপনার বিভিন্ন জায়গায় মামলা করার জন্য টাকা খরচ হবে। কিন্তু কিছু কিছু সংস্থা রয়েছে যারা মহিলাদেরকে যৌতুক মামলা অর্থাৎ যেকোনো রকম নারী নির্যাতন মামলা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ভুক্তভোগীর পক্ষে বিনা পয়সায় মামলা দায়ের করে থাকে। সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি সংস্থা হল “মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও মহিলা সহায়তা কেন্দ্র”।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আমরা আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম। যদি আমরা কেউ কখনো এরকম বিপদের সম্মুখীন হয়ে যাই তাহলে আশা করি আমাদের আর্টিকেলে দেওয়া তথ্য গুলো আপনার অনেকটাই উপকারে আসবে। আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। যৌতুকের মিথ্যা মামলা থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে আমরা যে তথ্যগুলো বর্ণনা করেছি সেগুলো বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং পাশাপাশি একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর কাছে থেকে তথ্যগুলো নিয়ে আপনাদের মাঝে পেশ করেছি। 

তবে অবশ্যই আপনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বে যে কোন আইনজীবীর সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করে নিবেন। এছাড়াও যদি আপনার আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে মনে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে জানাতে পারেন। আমরা অতিসত্বর সেটির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য নিয়ে আমাদের আর্টিকেলে পোস্ট করে থাকি। তাই আপনার প্রয়োজনীয় সব তথ্যগুলো জানার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আর আপনার বন্ধু অথবা আত্মীয় যদি এরকম কোন বিপদের মধ্যে পড়ে যায় তার উপকারের জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন। পরিশেষে সবাই বিপদ মুক্ত থাকুন এটাই আমাদের কামনা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url