সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ২০২৪

সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে ধারণা নেওয়ার পর সোনালী ব্যাংক লোন শাখার যেকোনো কার্যালয়ে থেকে লোন গ্রহণ করা যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে হঠাৎ জরুরিভাবে আর্থিক প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কিন্তু সঠিক সময়ে আত্মীয়-স্বজনের কাছে থেকে সাহায্য পাওয়া যায় না। তাই কারো কাছে সময় নষ্ট না করে আপনি সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলে খুব সহজেই লোন গ্রহন করে বিপদ থেকে উদ্ধার হতে পারেন। 
সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আপনি যদি সোনালী ব্যাংক এর যে কোন শাখা থেকে লোন গ্রহন করতে ইচ্ছুক হন কিন্তু সঠিক ভাবে সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায় ও নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নেই তাই লোন নিতে পারছেন না তাহলে আজকে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকে আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম, লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি,সোনালী ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট এবং সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আশা করব আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়বেন।
পোস্ট সূচিপত্র

সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম 

আমাদের বিভিন্ন নানা প্রয়োজনে টাকা দরকার হয়। এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই চিন্তা করি যে কোন ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া যায় কিনা। তাই আপনি যদি সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম জানতে চান তাহলে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া অনেকেই ব্যাংক থেকে লোন নিতে  অধিক আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই সবকিছু চিন্তা করে আমি আপনাদের সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ব্যাপারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। 

আশা করি এই গুরুত্বপূর্ণ টপিক গুলো আপনি অনুসরণ করলে যে কোন ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংক থেকে সহজেই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। সে জন্য আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নিতে আগ্রহী হন তাহলে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

সোনালী ব্যাংক লোন নিতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন

সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্যতা বিচার করে আপনি লোন পাবেন কিনা সেটি আপনাকে জানাবে। জেনে রাখা ভালো আপনি যদি সোনালী ব্যাংক লোন নিতে চান তাহলে আপনার সঙ্গে অবশ্যই একজন জামিনদার লাগবে এবং লোন নেওয়ার পূর্বেই আপনাকে সোনালী ব্যাংকে একটি হিসাব খুলতে হবে। তার সঙ্গে জামিনদার কে ও অবশ্যই সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হতে হবে। আসুন এবার সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম জানার জন্য যে সব কাগজপত্র প্রয়োজন সে সম্পর্কে ধারণা নেই। 
সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন নিচে তা পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
  • আপনার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট এর ফটোকপি।
  • আপনার অবশ্যই সোনালী ব্যাংকের আন্ডারে একটি হিসাব থাকতে হবে অথবা ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডার হতে হবে।
  • যদি ছাত্র/ ছাত্রী হয়, তবে জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড এর প্রয়োজন হতে পারে। ছাত্র/ ছাত্রীর ক্ষেত্রে তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  • আবেদনকারীর লোন গ্রহণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে হবে।
  • আবেদনকারী এবং জামিনদারকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
  • ঠিকভাবে লোন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
প্রধানত লোনের ভিন্নতার উপর নির্ভর করে কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হয়। তাই আপনি কোন ধরনের লোন নিতে চান সেটি জেনে বুঝে উক্ত ফরম পূরণ করবেন এবং তার সাথে ঋণের উদ্দেশ্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন সেটি সোনালী ব্যাংক লোন শাখার উপস্থিত কর্মকর্তা আপনাকে জানিয়ে দেবে। সোনালী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় হচ্ছে এই সব ধরনের সঠিক কাগজপত্র জমা দিয়ে লোনের আওতাভুক্ত হওয়া। আপনার কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এর আওতায় আপনাকে ঋণ দেয়া হবে।

সোনালী ব্যাংক লোন সমূহ বা লোনের প্রকারভেদ

সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের মানুষদের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন খাতের লোন প্রদান করে থাকে। আর সোনালী ব্যাংকের লোন নেওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে আসুন প্রথমে জেনে নিই সোনালী ব্যাংক লোন কত প্রকার হয়ে থাকে এবং সোনালী ব্যাংক কি কি খাতের জন্য লোন প্রদান করে। সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এর আওতায় সবগুলো লোনের খাত নিচে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
  • সোনালী ব্যাংক ব্যক্তিগত লোন
  • প্রবাসী কর্মসংস্থান প্রকল্প
  • বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ঋণ প্রকল্প
  • মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মেয়াদি ঋণ
  • ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ প্রকল্প
  • বিশেষ ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি
  • সোনালী ব্যাংক সেলারি লোন
  • সোনালী ব্যাংক শিক্ষা লোন
  • সোনালী ব্যাংক শিক্ষক ও চাকরিজীবী লোন কর্মসূচি
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক উপরে উল্লেখিত খাত গুলোতে ঋণ প্রদান করে থাকে। আপনি যদি ঋণ গ্রহণ করতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করুন এবং আপনার কাঙ্খিত ঋণ গ্রহণ করুন।

সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন

সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন সাধারণত এক লক্ষ থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এই পার্সোনাল লোনটি সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এর আওতায় সর্বজনীন নয়। যারা সরকারি চাকুরীজীবী অথবা বেসরকারি কর্মচারী এবং যাদের বেতন সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা হয় একমাত্র তারাই এই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। কথাই স্থায়ী চাকরিজীবীরা একমাত্র এই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। 
আপনার একাউন্টে মাসিক জমা করা বেতনের টাকার পরিমাণ ঋণের কিস্তি থেকে কম অথবা সমান হলে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে সেই পরিমাণের দুই-তৃতীয়াংশ লোন গ্রহণ করতে পারবেন। লোন নেওয়ার পর সোনালী ব্যাংক চাইলে সুদের শতকরা হার বৃদ্ধি করতে পারে। সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
  • আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • জামিনদারের পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • বিবাহিত দম্পতির ক্ষেত্রে সংযুক্ত ছবি ও আইডি কার্ডের প্রয়োজন হতে পারে।
  • আবেদনকারী এবং গ্যারান্টারের স্বাক্ষরিত একটি ফাঁকা চেক।
  • আপনার মাসিক আয় দেখানো একটি নথি প্রদান করতে হবে।
  • আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সেটি যদি এমপিও ভুক্ত হয় তাহলে এমপিওর কপি প্রয়োজন।
এছাড়াও যদি সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে আরো কোন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে সেটা জানিয়ে দিবে। আর এই সকল কাগজপত্র প্রদান করে সোনালী ব্যাংক লোন পাওয়া সম্ভব। এভাবে সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী আপনি এক লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে সক্ষম হবেন। আর লোনের মেয়াদ হবে ১ থেকে ৫ বছর।

সোনালী ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট বা সুদের হার

সোনালী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনার অবশ্যই সোনালী ব্যাংকের সুদের হার সম্পর্কে জানা উচিত। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করেছে মাত্র 12%। তবে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় সুদের হার বৃদ্ধি করতে পারে। তাই আপনি যদি সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এর আওতায় লোন পেতে চান তাহলে আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই উক্ত ব্যাংক শাখার কর্মচারীর মাধ্যমে সুদের হার জেনে নিবেন।

সোনালী ব্যাংক লোন কিস্তি পরিশোধ কিভাবে করবেন

আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনাকে মাসিক চুক্তিতে কিস্তির মাধ্যমে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। আপনি যে পরিমাণ সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করবেন সেই ঋণের পরিমাণ অনুযায়ী হিসেব করে শাখায় উপস্থিত কর্মচারী আপনাকে জানিয়ে দিবে। এছাড়াও আপনি বিস্তারিত জানার জন্য আপনার নিকটস্থ সোনালী ব্যাংক শাখার ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে পারেন।

শেষ কথা

আপনি যদি সত্যিই সোনালী ব্যাংক লোন নিতে ইচ্ছুক তাহলে উপরে বর্ণিত পদ্ধতি এবং উপযুক্ত কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে এবং সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম মেনে সোনালী ব্যাংক থেকে আপনার ঋণটি গ্রহণ করতে পারেন। উপরে বিস্তারিতভাবে সোনালী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। উক্ত তথ্যগুলো সোনালী ব্যাংক এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা মাত্র। কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় তাদের নিয়ম-নীতি বদলাতে পারেন। 
তাই যখন আপনি লোন নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই উক্ত শাখার ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে আলোচনা করে নিবেন। প্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আমরা সবসময় আমাদের আর্টিকেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে থাকি। তাই এরকম আরো পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আর হ্যাঁ সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এই পোস্টে আপনাদের কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি দিতে ভুলবেন না। আর তার সাথে এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে যদি যথাযথ তথ্যবহুল মনে হয় তাহলে একটি শেয়ার করতে পারেন। আপনার একটি শেয়ার আমাদের কাছে একটি অনুপ্রেরণা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url