ব্রাক ও আশা এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় ২০২৪

এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষের কোন না কোন সময় লোন এর প্রয়োজন হয়ে থাকে। পাঠক বৃন্দ আপনারা অনেক সময় জানার চেষ্টা করেন কোন এনজিও থেকে কোন প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া যায়। কিন্তু একে একে করে প্রত্যেকটি এনজিও শাখায় যাওয়া সম্ভব হয় না। আপনি যদি এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন তাহলে আপনার জন্য লোন পাওয়ার বিষয়টি সহজতর হয়। 
এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায়
আমাদের দেশের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলের মানুষের এনজিও থেকে লোন নিতে হয়। বাংলাদেশে আজকাল অনেক এনজিও প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে আজকে আমি বাংলাদেশের প্রথম সারির দুইটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে লোন পাওয়ার উপায় এবং এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনাদেরকে বিশেষ অনুরোধ করবো আপনি যদি এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় এর উত্তর জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র

কোন কোন এনজিও লোন দেয়

বর্তমানে বাংলাদেশে ২,৪৯৮টি এনজিও আছে। এদের মধ্যে ২৪০টি বৈদেশিক সংস্থা পরিচালিত। এতগুলো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় সবগুলো এনজিও প্রতিষ্ঠান লোন দিয়ে থাকে। তবে সবগুলো এনজিও নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। তাই বিশ্বস্ত এবং ভালো মানের দুইটি এনজিওর কথা আজকে তুলে ধরব। এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় জানতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের বিশ্বস্ত এনজিও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানাটা জরুরী। নিম্নে দুইটি এনজিওর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

আশা এনজিও

আশা এনজিও বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আশা বা ASA এর এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Association for Social Advancement ১৯৭৮ সালে মোঃ সাইফুল হক চৌধুরী আশা এনজিও টি প্রতিষ্ঠা করেন। মূলত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে।

আশা এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায়

এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় হচ্ছে তাদের কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। তবে শর্তগুলো এমন কোন কঠিন না নিম্নে শর্তগুলো উল্লেখ করা হলো।
  • আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছর থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • আবেদনকারী অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে।
  • আপনাকে আশা এনজিওর গ্রাহক হতে হবে।
  • ৪৫ কিস্তির মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকতে হবে।
  • লোন নেওয়ার সময় অবশ্যই একজন জামিনদার লাগবে।
  • পূর্বে যদি কোন লোন নেওয়া থাকে এবং সেটি পরিষদ না করে থাকে তাহলে ঋণ পাবে না এবং অবশ্যই নিজের একটি বাড়ি থাকতে হবে।
  • আশা এনজিওর যে ব্রাঞ্চ থেকে লোন নেবেন সেই অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

আশা এনজিও লোনের প্রকারভেদ

আপনি যে কোন প্রয়োজনে আসা এনজিও থেকে লোন নিতে পারেন। তবে আশা এনজিওর লোন তিন প্রকার হয়ে থাকে অর্থাৎ তিন ধরনের লোন জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়।
  • প্রাথমিক লোন
  • বিশেষ লোন
  • এস এম ই লোন

আশা এনজিওর প্রাথমিক লোন

আশা এনজিওর এই প্রাথমিক লোনের স্কিম টি অধিকতর জনপ্রিয় প্রাথমিক লোনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কিছু লোন হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি লন, মৌসুমী লোন শিক্ষা লোন স্যানিটেশন লোন ইত্যাদি। এই স্তরের লোন সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এছাড়াও ১৫ হাজার টাকা শিক্ষা লোন দেওয়া হয় যা এক বছর মেয়াদী হয়ে থাকে। এই লোন সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। আর মৌসুমী লোন দেওয়া হয় সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ 70 হাজার টাকা মৌসুমী লোন পরিষদ সময়কাল ৬ মাস। ৬ মাস পরে সুদসহ লোনের টাকা পরিশোধ করতে হয়। 
লোন দেওয়া হয় সর্বনিম্ন 10 হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই লোন পরিষদের সময়সীমা এক বছর সাপ্তাহিক কিস্তি মাধ্যমে মোট 44 কিস্তিতে লোন পরিশোধ করতে হয়।

আশা এনজিও বিশেষ লোন

আশা এনজিও বিশেষ লোন হিসেবে গ্রাহকদের ১ লক্ষ টাকা থেকে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে। যদি কোন উদ্যোক্তা গরুর খামার, মৎস্য চাষ বা বাণিজ্যিক আকারে বড় কিছু করতে চান তাহলে এই বিশেষ লোনটি নিতে পারেন। এই বিশেষ লোন পরিষদের সময়সীমা এক বছর, দেড় বছর এবং দুই বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আশা এনজিও এসএমই লোণ

আশা এনজিওর এসএমই লোন অনেক বড় অংকের হয়ে থাকে। এ ধরনের লোন সাধারণত ৫ লক্ষ টাকা থেকে 50 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এই লোন পরিষদের সময়সীমা থাকে দুই বছর।

আশা এনজিও লোন পদ্ধতি

আমরা উপরে আশা এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানলাম এবার আমরা জানব আশা এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে। আশা এনজিওর লোন পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ যেন এ লোনের আওতায় ভুক্ত হয়। তাই প্রতিটি উপজেলায় আশা এনজিওর একটি করে শাখা রয়েছে। তবে আপনার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে উপরে বর্ণিত লোনের মধ্যে আপনি কোন লোনটি নিতে চান। নিশ্চিত হওয়ার পর যে লোনটি নিতে চান সে লোনের আবেদনের জন্য নিকটস্থ আসা এনজিওর ব্রাঞ্চে যেতে হবে। সেখানে কর্তব্যরত কর্মচারীগণ আপনাকে লোনের বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানাবে। 

এবং তাদেরকে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনি খুব দ্রুত লোনের আওতাভুক্ত হবেন। আসুন এবার জেনে নিই আশা ব্যাংক এনজিও থেকে লোন নিতে কি কি কাগজপত্র লাগে। 
আশা এনজিও থেকে লোন নিতে যেসব কাগজপত্র লাগে তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো
  • আশা এনজিও থেকে যে আবেদন ফরম দিবে সেটি সংগ্রহ করে পূরণ করতে হবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • জমির দলিল অথবা খতিয়ান কপি জমা দিতে হবে।
  • ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিকত্ব সনদ জমা দিতে হবে।
  • আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সেটির আইডি কার্ড এবং স্যালারি সিটের ফটোকপি জমা দিতে হবে এবং বিদ্যুৎ বিলের একটি কপি জমা দিতে হবে।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্টে ফটোকপি থাকলে ভালো হয় আর ব্যাংক একাউন্ট থাকলে বিগত এক মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
আশা এনজিও থেকে লোন পাওয়ার জন্য উপরোক্ত কাগজপত্র জমা দেয়া প্রয়োজন হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে সবগুলো কাগজ নাও লাগতে পারে সেটির জন্য আপনাকে আশা ব্রাঞ্চ এ গিয়ে কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে হবে। কর্মকর্তা কর্তৃক যে সব কাগজপত্র লাগবে সেটি আবেদন ফরম এর সাথে জমা দিলে আপনার লোন পাস হয়ে যাবে।

আশা এনজিও লোনের সুদের হার

পাঠক আমরা উপরে আসা এনজিও লোন পাওয়ার উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হলাম। আসুন এবার জেনে নিই আশা এনজিও লোনের সুদের হার কত। আশা এনজিও তে যেমন বিভিন্ন ধরনের লোনের সুবিধা আছে ঠিক তেমনি লোন অনুযায়ী সুদের হারটাও একটু ভিন্ন। পূর্বে আমরা জেনেছি আশা এনজিও তিন ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। আশা এনজিও প্রাথমিক লোনের সুদ ১৩% নিয়ে থাকে, বিশেষ লোনের সুদের হার ১০% থেকে ১২.৫% হয় এবং এস এম ই লোনের সুদের হার ১৩% থেকে ১৪% হয়ে থাকে। 
তবে মনে রাখতে হবে সুদের হার সব সময় পরিবর্তনশীল যে কোন সময় সুদের হার বাড়তে পারে। তাই লোন নেওয়ার সময় অবশ্যই কর্মকর্তার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।

ব্র্যাক এনজিও

ব্রাক এনজিও বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় একটি নন গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন এনজিও প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলাগুলোতে ব্রাক এনজিও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের প্রায় 13 টি দেশে ব্যাপক কাজ করছে। ব্রাক এনজিও মূলত অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে থাকে। এটি এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার দশটিও বেশি দেশে কাজ করে যাচ্ছে।

ব্র্যাক এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায়

আমরা ব্রাক এনজিও লোন পাওয়ার উপায় ও পদ্ধতি জানার আগে ব্যাক এনজিও থেকে আসলে কারা কারা লোন পাবেন সে সম্পর্কে জেনে নিই। ব্র্যাক এনজিওর ঋণ প্রকল্পের বেশিরভাগ দেশের যেকোনো নাগরিকই পেতে পারেন। তবে কিছু কিছু ঋণ আছে যেগুলো শুধুমাত্র নারীরা নিতে পারবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আবার ব্রাক এনজিও প্রবাসীদেরকেও ঋণ দিয়ে থাকে। তবে স্থান ভেদে শর্তগুলো আলাদা হয়। ব্র্যাক এনজিও কর্তৃক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পর সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের পরে ঠিক থাকলে আপনি লোনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।

ব্র্যাক এনজিও থেকে কি ধরনের লোন পাওয়া যায়

এনজিও কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষদেরকে বিভিন্ন ধরনের লোন দিয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন লোনের জন্য যোগ্যতা এবং কাগজপত্র আলাদা হয়ে থাকে। নিচে ব্র্যাক এনজিও কর্তৃক সব ধরনের লোন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ

আপনি যদি একটি ছোট ব্যবসা চালু করতে চান কিন্তু আপনার মূলধনের অভাবে সেটি চালু করতে পারছেন না তাহলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে আপনি সহজেই লোনটি পেতে পারেন। যাদের মূল ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার সুযোগ কম তাদেরকেই ব্র্যাক এনজিও লোন প্রদান করে থাকে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ঋণ কে আবার প্রগতি ঋণও বলা হয়। ব্র্যাক এনজিও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ এর এই ঋণটি নারী ও পুরুষ উভয় নিতে পারে। আপনি এক লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। তবে লোনের পরিমাণ অবশ্যই আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা ও সামাজিক অবস্থার উপর নির্ভর করবে।

ব্রাক এনজিও থেকে নারী ঋণ

ব্র্যাক এনজিও কর্তৃক এই ঋণটিকে নারী ঋণ অথবা দাবি বলা হয়। সাধারণত বাংলাদেশের গ্রামীণ হতদরিদ্র নারীদেরকে এই ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এই ঋণ প্রদান করা হয়। এই ঋণের জন্য কোন রকম জামানত রাখতে হয় না। যদি কোন হতদরিদ্র নারী কোন ছোট ব্যবসা বা সম্পদের বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে উপযুক্ত কাগজপত্র আবেদন স্বরূপ দাখিলের মাধ্যমে পেতে পারে। ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ব্রাক এনজিও থেকে প্রবাসী ঋণ

ব্র্যাক এনজিও কর্তৃক এই ঋণটিকে অভিবাসী কল্যাণ ঋণ বলা হয়। প্রবাসী ঋণ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যথা মাইগ্রেশন লোন এবং রেমিটেন্স লোন।

মাইগ্রেশন লোন

বাংলাদেশের একটি আয়ের বড় অংশ বিদেশে যারা অবস্থান করছেন তাদের রেমিটেন্সের মাধ্যমে যোগ হয়। সেই উদ্দেশ্যটিকে সামনে রেখে ব্র্যাক এনজিও লোন প্রতিষ্ঠানটি যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক তাদেরকে এই লোন প্রদান করে থাকে। তবে স্থানভেদে এই দিনের কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই। সঠিক কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে সেই অনুযায়ী বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিটি ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।

রেমিটেন্স লোন

অভিবাসী পরিবারগুলোর খরচ চালানোর জন্য ও বড় কোন খরচে সহায়তা করতে এ লোন প্রদান করা হয়। বিদেশে পাঠানো ব্যক্তি রেমিটেন্স পাঠানো পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে সাধারণত এ লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে যে ব্যক্তি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং লোন নিতে চান তাকে উপযুক্ত প্রমাণ স্বরূপ সম্পূর্ণ কাগজপত্র ব্যাংকের শাখায় জমা দিতে হবে।

ব্র্যাক এনজিও থেকে কৃষি ঋণ

বাংলাদেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। আর প্রায় ৮৭ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। যাদের কৃষিজমি আছে অথবা অন্যের জমি লিজ নিয়েছে কিন্তু মূলধনের অভাবে জমিতে ফসল চাষ করতে পারছে না সেই সকল কৃষক ভাই উপযুক্ত কাগজপত্র এনজিও এর শাখায় জমা দিলে ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবে। ঋণের পরিমাণ সাধারণত ১৫ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ব্র্যাক এনজিও থেকে নির্ভরতা ঋণ

ব্র্যাক এনজিও কর্তৃপক্ষ মূলত নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা করেছেন। যাদেরকে মূলধারার ব্যাংক অথবা এনজিও থেকে ঋণ দেওয়া হয় না সাধারণত ব্র্যাক এনজিও এই ঋণ প্রদান করে থাকে। এই লোন পেতে আবেদনকারীর কোনরকম জামানত অথবা ক্রেডিট প্রোফাইলের প্রয়োজন পড়ে না এবং তার সাথে ঋণের নির্দিষ্ট কোন সীমা উল্লেখ নেই।
আসুন এবার জেনে নিই ব্র্যাক এনজিও লোন পাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন। ঋণ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো নিম্নে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
  • আবেদনকারীরভোটার আইডি কার্ড কিংবা পাসপোর্টের ফটোকপি এবং আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • যদি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি রত হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং স্যালারি সিটের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • ব্যবসায়ী হলে ব্যবসার ডিটেলস প্রয়োজন পড়তে পারে আর ব্যাংক একাউন্ট থাকলে ছয় মাসের ব্যাংকিং স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।

ব্র্যাক এনজিও ঋণের সুদের হার

উপরে উল্লেখিত আলোচনায় এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনেছি এখন আরো জানবো ব্রাক এনজিওর সুদের হার কত। ব্র্যাক এনজিও কর্তৃক সুদের হার সর্বোচ্চ ২৪.০০% হয়ে থাকে, তবে স্থানভেদে আপনার লোন যদি ১ লক্ষ হতে ৫ লক্ষের কম হয় তাহলে সুদ হবে ২৪%। আরো পরিলক্ষিত হয় যে ৫ লক্ষ হতে ১০ লক্ষ কম হলে আপনার সুদ হবে ২২%। লোন ১০ লক্ষের বেশি হলে ২০% সুদ। মনে রাখা ভালো আপনি যত কম সময়ে আপনার লোনের ঋণ পরিশোধ করবেন সুদের হার তত কম হবে। 

অনুমোদনের জন্য আপনার কাছ থেকে 15 থেকে 20 দিন কর্মদিবস সময় নিবে। ব্র্যাক এনজিও আপনাকে কত টাকা লোন দিবেন সেটা আপনার বেতনের উপর কিছুটা নির্ভর করবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনারা ইতিমধ্যে এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে এবং এনজিও থেকে লোন পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে আশা এনজিও ও ব্রাক এনজিও থেকে লোন পাওয়ার উপায় কি আর কি ধরনের লোন প্রদান করে এবং সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আপনি যদি লোন নিতে ইচ্ছুক হন তাহলে উপরে বর্ণিত সঠিক কাগজপত্র সহকারে আপনার নিকটস্থ এনজিও শাখায় যোগাযোগ করুন। 

পাঠক আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আমরা পরবর্তীতে আরো এনজিও এবং ব্যাংকের লোন সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং তার সঙ্গে এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য টি আমাদের মন্তব্য বক্সে পেশকরুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url