গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নিন

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে যেমনটা জরুরী ঠিক তেমনি পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জানাটাও বিশেষ জরুরী। কারণ একটি মহিলার জীবনে‌‌ গর্ভধারণের সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গর্ভে পালিত ভ্রুনের সাথে সাথে গর্ভবতী মায়ের ও বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। সে কারণে গর্ভবতী মায়ের খাবারের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কোন খাবারগুলো গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর অন্তর্ভুক্ত সেই সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। একমাত্র খাদ্যাভ্যাসের কারণেই গর্ভবতী মায়েরা বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। 
গর্ভবতী-মায়ের-নিষিদ্ধ-খাবার-তালিকা
প্রিয় পাঠক আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব কোন কোন খাবারগুলো গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত।তাছাড়া আপনি এই পোস্টে আরো জানতে পারবেন যে সকল বিষয় তা হল গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা, ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা,২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, 4 মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, ৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং ৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
পোস্ট সূচিপত্র

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর আওতায় অনেকগুলো খাবার রয়েছে যে সকল খাবার গর্ভবতী মায়ের জন্য খাওয়া নিষিদ্ধ। সেজন্য এ সকল খাবার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলায় আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। তাই নিচে পর্যায়ক্রমে গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ মাছ

গর্ভবতী মায়ের রান্নার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকা জরুরী। এই সময়টাতে সাধারণত কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ মাছ খাওয়া চলবে না। অর্ধ সিদ্ধ মাছে থাকতে পারে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। এসব ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুর কারণে গর্ভবতী মায়ের বিশেষ ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি ভ্রুনের ও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে এবং ভাইরাসজনিত কারণে মায়েদের শরীরে নোরো ভাইরাস বিব্রীয় সালমোনেল্লা লিস্ট এরিয়া জাতীয় রোগ বাসা বেধে থাকে। 
তাই গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর অন্তর্ভুক্ত কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। মাছ রান্না করার সময় ভালো করে ধুয়ে সেটি সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে খেতে হবে।

অর্ধ সিদ্ধ মাংস অথবা প্রক্রিয়াজাত মাংস

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর অন্তর্ভুক্ত আরেকটি খাবার হচ্ছে অর্ধ সিদ্ধ মাংস অথবা প্রক্রিয়াজাত মাংস। ঠিক অর্ধ সিদ্ধ মাছের মতই অর্ধ সিদ্ধ মাংস খাওয়াটা ও বেশ ঝুঁকির কারণ হয়ে থাকে। কেননা অর্ধ সিদ্ধ মাংসে আরো মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া যেমন প্যারা সাইটস, টকসোপ্লাজমা ই-কলি, সালমোনেল্লা লিস্ট এরিয়া সহ আরো মারাত্মক ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান থাকে। আর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া কারণে মায়েদের মৃগী রোগ, চোখের সমস্যা, স্নায়ুর সমস্যা, স্টিল বার্থ ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে। 

তাই গর্ভবতী মায়েদের অর্ধ সিদ্ধ মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। বাজার থেকে টাটকা মাংস কিনে এনে সেটি ভালো করে ধুয়ে সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে গর্ভবতী মায়েদের খেতে হবে।

অর্ধ সিদ্ধ ডিম

অর্ধ সিদ্ধ ডিম গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা অনুযায়ী আরেকটি নিষিদ্ধ খাবার। ডিমে সাধারণত অনেক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য এবং গর্ভে পালিত ভ্রুনের জন্য অবশ্যই ভালো। অনেকের ধারণা গর্ভবতী মায়েদের অর্ধ সিদ্ধ ডিম খেলে বেশি পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আপনার একটি ভুল ধারণার কারণে গর্ভবতী মা এবং শিশু উভয়েই বিপদের মুখে পড়তে পারে। গর্ভবতী মা যদি অর্ধ সিদ্ধ ডিম খায় তাহলে তার শরীরে সালমোনেল্লা নামক ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। 

আর এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে পরবর্তী মায়ের বমি পায়খানা বা পেটে ব্যথা হতে পারে। অতিরিক্ত বমি বা পায়খানার কারণে গর্ভবতী মায়ের পাশাপাশি গর্ভে পালিত বাচ্চার ও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই অর্ধ সিদ্ধ ডিম না খেয়ে গর্ভবতী মায়ের জন্য সম্পূর্ণ সিদ্ধ করা ডিম খাওয়া উচিত।

অতিরিক্ত চা অথবা কফি পান

আমরা অনেকেই সকালে উঠে সর্বপ্রথম চা অথবা কফি দিয়ে দিন শুরু করে থাকি। ঠিক তেমনি গর্ভবতী মায়েরাও অনেক সময় চা অথবা কফি পান করে থাকেন। কিন্তু ডাক্তারদের মতে, গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা তে চা এবং কফিও জায়গা করে নিয়েছে। চা এবং কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন যা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যদি গর্ভবতী মায়েদের প্রচুর পরিমাণে চা পানির নেশা থেকে থাকে তাহলে সেটা পরিহার করতে হবে। তবে দিনে ২০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত একজন গর্ভবতী মা চা পান করতে পারবে। 

তবে অতিরিক্ত পরিমাণে চা পান করা যাবে না কারণ চা অথবা কফিতে থাকা ক্যাফেইনের কারণে গর্ভে থাকা বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি ও গ্রোথে সমস্যা হয়। তাই গর্ভবতী মায়েরা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন দিনে ছোট কাপে ১-২ কাপের বেশি চাপান না করা হয়।

মদ্যপান বা অন্যান্য নেশা

মদ্যপান সবসময়ই খুব খারাপ একটা অভ্যাস। আমরা অনেক সময় পশ্চিমা দের অনুসরণ করতে গিয়ে মদ্যপান করে থাকি। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও মদ্যপান করে থাকে। আর গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এর মধ্যে মদ্যপান বা ধূমপান করা গর্ভবতী মায়ের জন্য এবং গর্ভে পালিত বাচ্চার জন্য খুবই মারাত্মক। যদি কোন গর্ভবতী মা গর্ভকালীন সময়ে মদ্যপান বা ধূমপান করে থাকে তাহলে বাচ্চার প্রথম যে সমস্যা হবে সেটি হল ভ্রুনের বিকাশ ঘটবে না। 

তাছাড়া ভ্রুনের অ্যালকোহল সিনড্রোম হতে পারে যার কারণে গর্ভের ভিতরেই ভ্রুনের হার্টের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এমনকি শিশু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে ভূমিষ্ঠ হতে পারে। তাই যদি কোন গর্ভবতী মায়ের এ ধরনের খারাপ অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা পরিহার করা উচিত।

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমরা উপরে গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে এবং গর্ভবতী হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত না সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করি এই আর্টিকেল যদি কোন গর্ভবতী মা পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তিনি সম্পূর্ণ অবগত হয়েছেন যে গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা অনুযায়ী কোন কোন খাবারগুলো তার খাওয়া উচিত হবে না। আসুন পাঠক বৃন্দ এবার গর্ভবতী মায়েদের কোন কোন খাবার খাওয়াটা বিশেষ জরুরি সেটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 
আমরা নিচে পর্যায়ক্রমে গর্ভবতী মায়ের কোন মাসের জন্য কোন খাবারগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটি বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রথমে গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় একজন নারী বিচিত্র রকমের সময় পার করে থাকে। তবে যদি একজন গর্ভবতী মা সুস্থ সবল থাকে তাহলে তার সময়টা একটু ভিন্ন রকম কাটে। আর সেজন্য গর্ভবতী মায়েদের খাদ্যাভাস সম্পর্কে বিশেষ সচেতন থাকতে হয়। গর্ভকালীন সময়ে একজন মা বিভিন্ন রকমের খাবার খেয়ে থাকেন। আর এই সময়টাতে যে কোন ধরনের খাবার খেতে মন চায় তবে গর্ভবতী মায়েদের সবকিছু খেতে মন চাইলেও সব খাওয়ার খাওয়া ঠিক না। যদি কারো এলার্জি সমস্যা থাকে বা ওই খাবার খেলে অন্য কোন সমস্যা হয় তাহলে সেসব খাবার পরিহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। 

আর তাছাড়া আমরা উপরে গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছি। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের দৈনিক খাবার তালিকায় রঙিন ফল রাখা উচিত। তবে অনেকের ধারণা বেশি ফল খেলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু ডাক্তারের মতে, সেই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। একজন মায়ের দৈনিক বিভিন্ন রকম সিজনাল ফল খাওয়া উচিত। আমাদের দেশে সিজনাল বিভিন্ন রকমের ফল পাওয়া যায় যা পুষ্টিগুণে ভরপু। গর্ভবতী মায়েরা এই সময় প্রচুর টক খেতে পছন্দ করেন। আর সেজন্য বড়ই এর সিজনে টক বড়ই খেতে পারেন আবার এক ধরনের টক আঙ্গুর বাজারে পাওয়া যায় যেটি গর্ভবতী মায়েরা খেতে পারেন। 

তাছাড়া গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে সিজনাল আনারস কামরাঙ্গা কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি ফল খেতে পারেন। আসুন আমরা আরো উপকারী ফলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই নিচে সিজনাল ফল গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কলা

গর্ভকালীন সময়ে প্রতিদিন একটা করে কলা খাওয়া উচিত। কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে পটাশিয়াম দেহের ইলেক্ট্রোলাইটস এর ভারসাম্য রক্ষা করে যার ফলে শরীরের স্নায়ুতন্ত্র ও মাংসপেশীর কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। তাছাড়া কলা শরীরের রোগ প্রতিরক্ষমতা বৃদ্ধি করে যার ফলে যে কোন রকম রোগ বালাই হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

কমলা

ডাক্তারদের ভাষ্যমতে, গর্ভবতী মায়েদের শরীরে ফলিক এসিডের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ফলিক এসিডের ঘাটতি পূরণ করার জন্য কমলা খাওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ফলিক এসিড। তাই গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে প্রতিদিন একটি বা দুটি করে কমলা রাখা উচিত।

পেয়ারা

দেশি ফল হিসেবে পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। পেয়ারা কে ডাক্তারেরা আপেলের সঙ্গে তুলনা করে। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং হাতের নাগালে পাওয়া এই ফলটির উপকারিতা অপরিসীম। তাই গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে অবশ্যই প্রতিদিন পেয়ারা রাখা উচিত।

আপেল

যদি গর্ভবতী মায়ের কারো এলার্জি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তার উচিত প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়া। কারণ আপেলে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা গড় অবস্থায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ করে। সাধারণত গর্ভাবস্থায় মায়েদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় তাই প্রতিদিন গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকা তে একটি করে আপেল খাওয়া উচিত।

এছাড়াও আরো অনেক প্রকার ফল রয়েছে যেগুলো খাওয়ার মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েরা সুষ্ঠুভাবে বাচ্চা প্রসব করতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে কিউই অ্যাভোকাডো, ডাবের পানি, জাম, কাঁঠাল, আম ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য আমরা এতক্ষন পর্যন্ত গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা জানার পাশাপাশি কোন কোন খাবার গর্ভবতী মায়েদের খাওয়া প্রয়োজন সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এখন জানব মাসিক ভিত্তিতে গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা আসুন পর্যায়ক্রমে সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করি।

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়েদের প্রথম এক মাস ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম দৈনিক প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। তাই গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকায় প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডিম, মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি রাখতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের যে প্রধান সমস্যা হয়ে থাকে সেটি হল কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করার জন্য ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াটা অতি জরুরী। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গুলো হচ্ছে ভেজানো কাঁচা ছোলা, সবুজ মটর, ভুট্টা, সবুজ শাকসবজি এছাড়া ইসবগুলের ভুষি।

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

প্রথম মাস অতিবাহিত করার পর গর্ভবতী মায়েদের দ্বিতীয় মাসে যে সমস্যাটি হয় সেটি হচ্ছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি। ভ্রুনের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মায়েদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য গর্ভবতী মায়েদের খাবারের মেনুতে দুধ, দই, পনির, ব্রকলি, ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, পালং শাক, ডিম, তিল, আলমন্ড, ডুমুর রাখা উচিত। আবার ক্যালসিয়াম উৎপাদনের সাথে সাথে সেটি শোষণের প্রয়োজন রয়েছে। আর তাই ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি ও পূরণ করতে হবে। আর সেজন্য প্রতিদিন সকালে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য গায়ে রোধ লাগাতে হবে।

৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

দ্বিতীয় মাসের মতো তৃতীয় মাসেও খাবার তালিকা একই রকম থাকবে। এই মাসেও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয় যার কারণে উপরে বর্ণিত খাদ্যগুলো বেশি বেশি খেতে হবে।

4 মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

চতুর্থ মাসে গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা একটু ভিন্ন হবে। কারন গর্ভে বাচ্চা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়েদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে শুরু করে। তাই এই সময়টাতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অতি জরুরী। সুতরাং 4 মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে আইরন সমৃদ্ধ খাবারগুলো রাখা উচিত। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল ডিম, বীজ জাতীয় সবজি, ভেজানো কাঁচা ছোলা, মুরগির মাংস, মাছ, সবুজ শাক-সবজি (বিশেষ করে কচু শাক), আখরোট, বাদাম, ছানা ইত্যাদি।

৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

পঞ্চম মাসে পদার্পণ অর্থাৎ একজন গর্ভবতী মহিলা তার বাচ্চা প্রসবের অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। তাই এ সময়ে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা আরও একটু জোরদার করতে হবে। এ সময়টাতে উপরে বর্ণিত প্রচুর পরিমাণে ফলগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত এবং তার সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা অতি জরুরী। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গুলো খাওয়া তার সাথে সালাড এড করতে পারেন।

৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়েদের বাচ্চা প্রসবের শেষ ধাপ বলা হয়। অষ্টম মাস এ মাসে মায়েদের নানা রকম সমস্যা দেখাতে পারে। যেমন বুক ধরফর, অনিদ্রা, একটু নড়াচড়া করলে হাঁসফাঁস হওয়া তাছাড়া আরও যেটি জটিল আকার ধারণ করে সেটি হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য অবশ্যই ৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা তে উপরে বর্ণিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গুলো সব সময় খেতে হবে। তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফলিক অ্যাসিড আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট নিয়মিত খেতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলে অনেকগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহ আলোচনার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করলাম। একজন গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা এবং পাশাপাশি কোন খাবারগুলো খেলে তার শরীরের জন্য উপকার হবে সেই গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তবে পাঠকগণ আমরা উপরে বর্ণিত তথ্যগুলো বিভিন্ন চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা আমাদের এই তথ্যগুলো অনুসরণ করার পাশাপাশি অবশ্যই গর্ভকালীন সময়টাতে একজন ভালো ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন। 

আর তার পরামর্শ অনুযায়ী আপনার প্রসবকালীন সময়টা সুন্দরভাবে পরিচালনা করবেন। আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। পরবর্তী সময়ে আমরা আরো চিকিৎসা বিষয়ক আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করব। তাই এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আর আপনার এই আর্টিকেল বিষয়ে যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য বক্সে মন্তব্য করুন। তথ্যগুলো যথাযথ মনে হলে অবশ্যই একটি শেয়ার করুন আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url