শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার ৮টি কার্যকারী উপায়

আমাদের মধ্যে অনেকের গায়ের রং শ্যামলা হয়ে থাকে। তারা তাদের শ্যামলা ত্বককে ফর্সা করতে চাই। শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আমাদের জানার অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। আজকে আমি আপনাদেরকে শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে জানাবো।
শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়
আমরা অনেক সময় আমাদের শ্যামলা ত্বকের জন্য নিজেদের কনফিডেন্ট হারিয়ে ফেলি। আমরা নিজেদেরকে সুন্দর দেখাতে পছন্দ করি। তাই আমরা আমাদের শ্যামলা ত্বক ফর্সা করতে চাই। আজকে আমরা জানাবো শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় এবং এ সংক্রান্ত আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত। তাই শ্যামলা ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ভূমিকাঃ শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়

শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার জন্য আমরা অনেক কিছুই ট্রাই করে থাকি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা ভালো ফলাফল পাই না। তাই আপনারা যাতে ভালো ফলাফল পান তার জন্য আমরা আজকে সামলা ত্বক ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এছাড়াও আমরা আলোচনা করব কি কি খাবার খেলে ত্বক ফর্সা হয়, কিভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক সামলাতে আশা করার উপায় এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত।

শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়

আমরা অনেকেই আমাদের শ্যামলা ত্বককে ফর্সা করতে চাই। কিন্তু আমাদের উচিত এই ধারণাটা পাল্টে ফেলা। এবং নিজেদের ত্বক নিয়ে কনফিডেন্ট থাকা। আসলে আমরা সবাই জন্ম থেকেই আলাদা আলাদা রং নিয়ে জন্মাই। আমাদের মধ্যে অনেকেই ফরসা কেউ বা শ্যামলা আবার অনেকে কালো রঙের হয়ে থাকে। কাল বা শ্যামলা মেয়েদের ক্ষেত্রে রোদে পোড়া দাগ বা সানবার্ন খুব জলদি চোখে পড়ে। 

কিন্তু শ্যামলা মেয়েদের তোকে বলে দেখা অনেক দেরিতে দেখা দেয়। আমরা চাইলে আমাদের এই ত্বককে সঠিকভাবে পরিচর্যা করার মাধ্যমে এবং যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে উজ্জ্বল বা সুন্দর, সতেজ এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি। সামলা তাকপা আশা করার জন্য আমাদের ত্বকের প্রতিনিয়ত যত নেওয়া উচিত। আসুন আমরা জেনে নেই শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায় গুলো সম্পর্কে।

ফেসওয়াশ ব্যবহার করা: আমাদের ত্বকের জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী। এটি আমাদের ত্বককে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

টোনার ব্যবহার করা: সাধারণত ফেসওয়াশ ব্যবহার করার পর আমাদের ত্বকে টোনার ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি। এতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, উদ্ভিজ্জ তেল এছাড়াও সেরামাইড ইত্যাদি উপাদান থাকে। যার ফলে আমাদের ত্বকে আদ্রতা বজায় থাকে। আমাদের তোকে যদি আদ্রতা বজায় না থাকে তাহলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলার ব্যবহার করলে এ ধরনের সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।

সিরাম ব্যবহার করা: ফেসওয়াশ এবং টোনার ব্যবহার করার পর ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার আগে সিরাম ব্যবহার করা হয়। সিরাম আমাদের ত্বকের গভীরে গিয়ে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বল ভাব বাড়াতে সাহায্য করে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এছাড়াও এটি আমাদের চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করে এবং হালকা হালকা ছোপ ছোপ দাগ গুলো দূর করতে সাহায্য করে। তাই এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা: ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এটি আমাদের ত্বক সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ত্বকের কোমলতা ধরে রাখতে পারি এছাড়াও এটি আমাদের বয়সের ছাপ রোদ করতে সাহায্য করে। শ্যামলা ত্বক ফর্সা বা উজ্জ্বল করার জন্য এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী। তবে আমাদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করা: শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার জন্য সানস্ক্রিন একটি অত্যন্ত কার্যকারী প্রোডাক্ট। কারণ এর মাধ্যমে রোদে পোড়া দাগ দূর হয় এবং খুব সহজে সানট্যান পড়ে না। এটি আমাদের সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচায়। সাধারণত প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের একেকজনের ত্বক একেক ধরনের হয়ে থাকে তাই আমাদের সকলের উচিত নিজেদের ত্বক অনুযায়ী সানস্ক্রিন বাছাই করা।

আপনি যদি উপরিউক্ত স্কিন কেয়ার গুলো প্রতিনিয়ত করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার শ্যামলা ত্বক দিন দিন আরো অনেক বেশি সুন্দর উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। তাই নিজেদের ত্বককে আরো বেশি সুন্দর করতে চাইলে উপরের স্কিন কেয়ার গুলো প্রতিনিয়ত করতে থাকুন।

ফেসপ্যাক ব্যবহার করে শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়

আমরা বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ ব্যবহার করে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে পারি। ফেসপ্যাক ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, রোদে পোড়া দাগ দূর হয়, চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর হয়, মুখের ছোপ ছোপ বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর হয় এছাড়াও আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা গুলো সমাধান হয়। ফেসপ্যাক আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে আমাদের শ্যামলা ত্বককে আরো অনেক বেশি উজ্জ্বল করতে পারি। তবে আমরা আমাদের সমস্যা দূর করার জন্য ফেসপ্যাক পার্লারে না যেয়ে বাড়িতেই ঘরোয়া উপাদান দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারি।চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক গুলো সম্পর্কে:
দুধ এবং বেসন: আমাদের সবার বাড়িতেই দুধ এবং বেসন এই দুটো উপাদান সবসময় থাকে। আমরা চাইলে দুধ এবং বেসন একসাথে মিশিয়ে একটি এতে এক চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে ফেলতে পারি। এতে চাইলে সামান্য পরিমাণে হলুদ গুঁড়া মেশানো যেতে পারে। এটি আমাদের মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং শুকিয়ে গেলে হালকা একটু খারাপ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বকেআর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

মধু ও অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা জেল আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান অন্যদিকে মধু ও আমাদের ত্বকে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। মধু ও অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে নিলে মধু ও অ্যালোভেরা জেল এর ফেসপ্যাক তৈরি। এই ফেস প্যাকটি তৈরি করার পর মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এরপর ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে।

মসুর ডালের ফেসপ্যাক: মসুর ডাল আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ভালো একটু উপাদান। মসুর ডালের ফেসপ্যাক তৈরি করার প্রথমেই এক কাপ পরিমাণ মসুর ডাল নিতে হবে। তারপর একটি শুকনো কাপড় দিয়ে খুব ভালোভাবে মসুর ডালগুলো মুছে নিতে হবে। মুছে নেওয়া হয়ে গেলে এটি ব্লেন্ডারের খুব ভালোভাবে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এই মসুর ডালের গুড়ো এক চামচ অথবা দুই চামচ করে প্রত্যেক দিন টক দই, মধু অথবা গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনি আপনার মুখে লাগাতে পারেন।

মুলতানি মাটি দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক: মুলতানি মাটি বিএসএস প্যাক তৈরি করার জন্য এক চামচ পরিমাণ মুলতানি মাটির গুঁড়ো, টক দই, কয়েক ফোটা লেবুর রস একসাথে করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবং এটি মুখে লাগানোর পর ১৫ মিনিট পর্যন্ত মুখে দেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি  - অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ
এই ফেস প্যাকগুলো যদি আপনারা আপনাদের ত্বকে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুই দিন ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন আপনার ত্বক আগের তুলনায় আরো অনেক বেশি ফর্সা, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যজ্জল হয়েছে। তাই নিজেদের ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখতে হলে এবং নিজেদেরকে আরও বেশি সুন্দর করতে চাইলে এই ফেসপ্যাক গুলো সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুই দিন ব্যবহার করুন।

কি কি খাবার খেলে ত্বক ফর্সা হয়

আমাদের ত্বককে সুস্থ স্বাভাবিক এবং ভালো রাখতে হলে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। আমরা যদি প্রতিনিয়ত না বুঝেই বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকে তাহলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন আমাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা, চুলকানি, এলার্জি জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের ত্বককে সুন্দর রাখতে হলে তো এ সকল সমস্যা থেকে দূরে রাখতে হলে প্রতিনিয়ত পুষ্টিকর খাবার ও পানি খেতে হবে। 
আরো পড়ুনঃ
প্রত্যেকদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ গ্লাস পানি আমাদের খাওয়া উচিত। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন আপেল, কমলা, বাদাম, কলা আমাদের খাবার তালিকায় রাখা উচিত। এগুলো আমাদের শরীরে পরিমাণ মতো পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের ত্বক ভালো থাকে। এছাড়াও আমরা কাঁচা হলুদ প্রত্যেকদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারে কারণ কাঁচা হলুদ আমাদের গায়ের ত্বককে ফর্সা ও লাবণ্যময় করে তুলতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে টমেটো খাওয়া যেতে পারে কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন সি,ই এবং বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথা ঃ শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়

আমরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে শ্যামলা ত্বক ফর্সা করার উপায়, ফেসপ্যাক ব্যবহার করে সামলাতে ফর্সা করার উপায়, কি কি খাবার খেলে তা ফর্সা হয় এছাড়াও আজও বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনারা সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url