চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সীড এক ধরনের বিশেষ বীজ যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চিয়া সিড এর বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আসুন আজকের আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ার মাধ্যমে আপনারা চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা ও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড নিয়মিত সেবনের ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করতে পারব। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি বীজ। চিয়া সিড সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে চিয়া সিড এর উপকারিতা অপকারিতা ও এ সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা: চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড এক ধরনের বিশেষ আমাদের শরীরের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।সাধারণত চিয়া সিড সালভিয়া নামক উদ্ভিদের এক ধরনের মরুভূমিতে জন্মে। এতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ও উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে এটি সেবন করলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান হবে। 

চিয়া সিড অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। আজকের এই পুরো পোস্ট জুড়ে আমরা চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, চিয়া সিট চেনার উপায়, চিয়া সিড এর দাম এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব যা আপনাদের উপকারে আসবে। তাই আর দেরি না করে এ সকল তথ্য সম্পর্কে জানতে আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড এর উপকারিতা:
আমরা অনেকে চিয়া সিড গ্রহণ করলেও এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নয়। আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা চিয়া সিড এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
  • চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ক্লোরজেনেটিক অ্যাসিড, কোয়ের সেটিন এসিড সহ ওমেগা 3 এবং দ্রবণীয় ও দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ রয়েছে।
  • এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে কারণ এইচএসসিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
  • চিয়া সিডে ডিমের তুলনায় তিনগুণ বেশি উচ্চ মাত্রার প্রোটিন এবং দুধের থেকে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং উপকারী উপাদান।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে চিয়া সিডে স্যালমন মাছের তুলনায় 8 গুণ বেশি ওমেগা 3 এসিড থাকে। যা মানব দেহের হৃদরোগের ঢুকে কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সহায়তা করে।
  • আমাদের শরীরে শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চিয়া সিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • এতে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করে তোলে।
  • চিয়া সিট গ্রহণ করার ফলে এটি আমাদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিট আমাদের হাঁটু ও জয়েন্ট এর ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিড পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে তা আমাদের ত্বক চুল ও নখ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকাই এটি আমাদের দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • চিয়া সিড আমাদের ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখতে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • নিয়ম অনুযায়ী চিয়া সিড গ্রহণ করলে তা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিডে গ্রহণ করার ফলে এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। এছাড়াও যদি কারো হজমের সমস্যা হয়ে থাকে বা পেটের কোন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে সেটি সারাতেও এই চিয়া সিড সাহায্য করে থাকে।
  • চিয়া সিট আমাদের রক্ত পরিশোধন করতে সাহায্য করে। চিয়া সিড এ প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় আমাদের যাদের গাইনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে সেক্ষেত্রে এটি গ্রহণ করলে অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা পালন করে এবং আমাদের শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ করে।
চিয়া সিড এর অপকারিতা:
যেকোনো জিনিসের যেমন বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা থাকে তেমনি এর অতিরিক্ত ব্যবহার বা অতিরিক্ত গ্রহণ আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমরা অনেকেই চিয়া সিড এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলেও চিয়া সেট এর অপকারিতা সম্পর্কে অবগত নেই। তাই এখন আমরা আলোচনা করব চিয়া সিড এর অপকারিতা সম্পর্কে:
  • একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, চিয়া সিড এর অতিরিক্ত সেবন প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। সুতরাং আমাদের উচিত অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড গ্রহণ না করে স্বল্প পরিমাণে নিয়ম অনুযায়ী সেবন করা।
  • এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে জিয়া সিড সেবন করলে তা আমাদের পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • চিয়া সিড সেবন এর ফলে এটি আমাদের শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দিতে পারে।
  • চিয়া সিড অতিরিক্ত সেবন করলে এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
  • গর্ভবতী নারীদের অতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয় কারণ এটি তাদের গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
  • চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এর অতিরিক্ত সেবন আমাদের হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এবং এর ফলে পেট ফুলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
চিয়া সিড একটি প্রাকৃতিক উপাদান হলেও এর অতিরিক্ত ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সঠিক সময়ে সেবন না করার ফলে এর উপকারিতা গুলো আমাদেরকে ভোগ করতে হবে। সুতরাং ভালোর কথা চিন্তা করে আমাদের সকলেরই উচিত ভাল মানের এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সঠিক সময়ে চিয়া সিড গ্রহণ করা। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনারা ইয়াসের এর অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই উপরিউক্ত সমস্যাগুলো থেকে রেহাই পেতে হলে সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়ম অনুযায়ী চিয়াসের সেবন করুন তাহলে তা আপনার অপকারে নয় বরং উপকারে আসবে।

চিয়া সিড চেনার উপায়

বর্তমান সময়ে আমরা অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিক। আমাদের মাঝে খাবারের পুষ্টিগুণ এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়তই। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা যারা স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের তালিকায় রয়েছে তাদের খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার হয়ে উঠেছে।
চিয়া সিড মূলত একটি মিন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের বেদ যা সাধারণত তোকমার দানার মত দেখতে। এই বীজগুলো সাধারণত সাদা ও কালো রংয়ের তিলের মত ছোট ছোট আকারের হয়ে থাকে। এতে কমলার থেকে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি এবং পালং শাকের তুলনায় তিনগুণ বেশি আয়রন ও দুধের থেকে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। তাই আমাদের সঠিক চিয়া সিড চীনে তা গ্রহণ করা উচিত।

চিয়া সিড এর দাম

বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ পরিস্থিতির এবং অঞ্চল ভেদে এক এক জায়গায় চিয়া সিডের দাম এক এক ধরনের হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের এক কেজি চিয়া সিড ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে এই চিয়া সিড এর প্রচুর পরিমাণে চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। তবে এই চিয়া সিড কিনতে হলে কাস্টমারদেরকে কেজি প্রতি অনেক টাকা গুনতে হয়। 

বাংলাদেশের বাণিজ্যিকভাবে চিয়া সিড এর উৎপাদন খুব একটা বেশি লক্ষ্য করা যায় না। তাই এর দাম অন্যান্য বীজের তুলনায় একটু বেশি হয়ে থাকে। আপনারা চাইলে বিভিন্ন বড় বড় সুপার শপ সহ অনলাইন এর বিভিন্ন প্লাটফর্মে এই চিয়া সিড খুব সহজেই কিনতে পারবেন।
চিয়া সিটের গুনাগুন এর উপর ভিত্তি করে একে সুপার ফুডও বলা হয়ে থাকে।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিট খাওয়ার নিয়ম এবং কোন সময়ে চিয়া সিড খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। যার ফলে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আসুন জেনে নেই আমরা কি কি উপায়ে চিয়া সিড খেতে পারি:
  • প্রতিদিন রাতে অথবা সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ পরিমাণ চিয়া সিড ১ থেকে ২ ঘন্টা ভিজিয়ে তা আমরা খেতে পারি। এভাবে সেবন করার ফলে চিয়া সিড আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এর সাথে চাইলে আমরা দুই চা চামচ পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারি তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
  • চিয়া সিড এর নিজস্ব কোন ধরনের স্বাদ না থাকায় এটি বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে আমরা খেতে পারি। বিভিন্ন ধরনের শরবত যেমন লেবুর শরবত পুদিনা পাতার শরবতের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে আমরা খেতে পারি।
  • এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সালাদ কাস্টার্ড বা স্মুদি এর সাথে এক চা চামচ পরিমাণ চিয়া সিড এর বীজ মিশিয়ে খেতে পারি।
তবে আমরা চিয়া সিড যেই উপায়েই খাই না কেন আমাদের এদিকে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কোনভাবেই আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড গ্রহণ না করি। অতিরিক্ত চিয়া সিড গ্রহণ আমাদের শরীরের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং আয়রন রয়েছে তাই আমাদের উচিত স্বল্প পরিমাণে নিয়মিত এটি সেবন করা। এটি আমাদের খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে অন্তত তিন চার দিন রাখতে পারি।

শেষ কথা: চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকের আর্টিকেলে আমরা চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url