৬টি জনপ্রিয় রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থান সমূহ সম্পর্কে জেনে নিন। বর্তমানে উত্তরা অঞ্চলের মধ্যে সবথেকে বড় শহর রাজশাহী এটি উত্তরা অঞ্চলের মধ্যে বিভাগীয় শহর বা রাজশাহী জেলা শহর। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজশাহী বিভাগের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আলোচনা করতে চলেছি রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ 
রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ
এবং রাজশাহী বিভাগে কি কি আছে। পুরো আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন রাজশাহী জেলা সম্পর্কে এবং রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থান সমূহ সম্পর্কে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

রাজশাহী বিভাগ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়

বাংলাদেশের মধ্যে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শিক্ষা নগরী শহর হল রাজশাহী। এই রাজশাহী বিভাগটি বা জেলাটি স্থাপিত হয় ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে। রাজশাহী বিভাগের আয়তন ১৮১৫৪ বর্গ কিলোমিটার। এই বিভাগটি ৮ টি জেলা ৬৬ টি উপজেলা ও ৫৬৪ টি ইউনিয়ন গঠিত। এই বিভাগ টি বাংলাদেশের মধ্যে প্রশাসনিক বিভাগ নামে পরিচিত। 
বর্তমানে যদিও রাজশাহী বিভাগটি বাংলাদেশ এর রাজধানী ঢাকার মধ্যে অবস্থিত কিন্তু ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সেই সময়ই এটির সদর দপ্তর ভারতের মুর্শিদাবাদ ছিল। আশা করি রাজশাহী বিভাগ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর পেয়ে গেছেন এখন জেনে নেওয়া যাক রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে।

ছয়টি জনপ্রিয় রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজশাহী বিভাগ টিতে অনেক জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে। রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো তে অনেক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এর ভিতর থেকে ছয়টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে এবং সেই স্থানের ছবি সহ এই আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করব। নিচে পয়েন্ট আকারে ছয়টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো দেওয়া হল এবং সেই পয়েন্টগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
  • নওগাঁ পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ
  • পুটিয়া রাজবাড়ী
  • নাটোর রাজবাড়ি
  • নওগাঁ বলিহার রাজবাড়ি
  • বাঘা মসজিদ
নওগাঁ পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার: রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক স্থান হল পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা শ্যামপুর বৌদ্ধবিহার। এই পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার টি নওগাঁ জেলার বদরগাছি থানার পাহাড়পুর গ্রামে বৌদ্ধ বিহার টি অবস্থিত। এই পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার টি প্রতিষ্ঠা হয় ৭৭০-৮১০ খ্রিস্টাব্দে। 

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার টি প্রায় ৭০ দশমিক ৩১ একর জমির উপর অবস্থিত। বর্তমানে ভৌগোলিক কারণে এই শ্যামপুর বিহারটি ধ্বংস স্তুপে পরিণত হলেও এখনো এটি এশিয়ার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ বিহার হিসেবে গৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।

কিভাবে যাওয়া যায় পাহাড়পুর

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার যেতে হলে রাজশাহী রেলগেট থেকে বাসযোগে প্রথমে নওগাঁ এরপর নওগাঁ বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে পাহাড়পুর মোড়ে নেমে ঐখান থেকে ৫ বা ১০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে যাওয়া যায়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ: রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে সোনামসজিদ দ্বিতীয় ঐতিহাসিক প্রাচীন দর্শনীয় স্থান‌। এই সোনা মসজিদ টি রাজশাহী বিভাগের চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার পিরোজপুর গ্রামে অবস্থিত। ছোট্ট সোনা মসজিদটি স্থাপিত (১৪৯৪-১৫১৯) খ্রিস্টাব্দে। 

এই সোনা মসজিদটি নির্মাণ করেন মোহাম্মদ ওয়ালী নামের এক ব্যক্তি মসজিদের দরজার উপর এক শিলালিপি থেকে জানা যায়। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৮২ ফুট ও প্রস্থ ৫২.৫ ফুট এবং গম্বুজ ১৫ টি ইট পাথর টেরাকাটা টাইলস দিয়ে তৈরি।

কিভাবে যাওয়া যায় সোনামসজিদ

রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থান সোনা মসজিদ যেতে হলে রাজশাহী রেল গেট থেকে বাসযোগে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সরাসরি বাসযোগে সোনামসজিদ যাওয়া যায়। এটি মূলত মেইন রাস্তার সাথেই অবস্থিত তাই সরাসরি বাস থেকে নেমে মসজিদে প্রবেশ করা যায়।

পুটিয়া রাজবাড়ী: রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে সবথেকে অন্যতম জনপ্রিয় প্রাচীন জমিদারি রাজার বাড়ি হলো পুটিয়া রাজবাড়ী। এই স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয় ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে। এটি রাজশাহী বিভাগের জনপ্রিয় ও সুন্দর দেখার মত জায়গা। এখানে দেখার মত রয়েছে রাজপ্রসাদ মন্দির, পুকুর সহ অন্যান্য স্থাপনা। যা দেখার জন্য অনেক মানুষ এর সমাগম হয় এখানে।

কিভাবে যাওয়া যায় পুটিয়া রাজবাড়ী

পুঠিয়া রাজবাড়ী তে যাওয়ার জন্য প্রথমেই রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে বাসযোগে ৩২ কিলোমিটার পূর্ব দিকে পুটিয়া বাস স্ট্যান্ডে নামতে হবে এরপর ঐখান থেকে ৫ বা ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে অটোযোগে সরাসরি পুটিয়া রাজবাড়ী যাওয়া যায়।
নাটোর রাজবাড়ি: রাজশাহী বিভাগের মতে নাটোর জেলা অবস্থিত। এই নাটোর জেলাতে সুন্দর একটি রাজবাড়ী অবস্থিত নাটোর রাজবাড়ীটি ১৭০৬ ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত করা হয়। নাটোর রাজবাড়ী ১২০ একর জমি নিয়ে ছোট বড় আটটি ভবন নিয়ে নির্মিত। 

নাটোর রাজবাড়ীর সামনে মোট সাতটি পুকুর রয়েছে এর ভিতর দুটি পুকুর অনেক গভীরতা সম্পন্ন ও পাঁচটি পুকুর ছোট ছোট আছে এবং সেখানে দেখার মতো অনেক মন্দির রয়েছে রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থান সময়ের মধ্যে সৌন্দর্যের দিক থেকে নাটোর রাজবাড়ীটি অন্যতম।

কিভাবে যাওয়া যায় নাটোর রাজবাড়ি

প্রথমেই রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে বাসযোগে নাটোর মাদ্রাসা মোড়ে নেমে অটোযোগে বা রিক্সাযোগে ১০ থেকে ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে নাটোর রাজ বাড়িতে যাওয়া যায় এখানে দেখার মত অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা প্রাচীনকালের মূর্তি অনেক কিছু রয়েছে।

নওগাঁ বলিহার রাজবাড়ি: রাজশাহ বিভাগের নওগাঁ জেলায় বলিহার রাজবাড়ীটি অবস্থিত। এ রাজবাড়ীটি নির্মিত করা হয় ১৮৪৩ সালে। রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ এর মধ্যে বলিহার রাজবাড়ী অন্যতম। এখানে দেখার মত অনেক সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রাচীনকালের রাজাদের বাসা বাড়ি ও মন্দির রয়েছে 

এবং রাজবাড়ীটির সামনে একটি ছোট চিড়িয়াখানা রয়েছে। সেইখানে বাঘ ভাল্লুক বানর হরিণ সহ অনেক রকমের পশু পাখি সমাগম ছিল।

কিভাবে যাওয়া যায় বলিহার রাজবাড়ি

বলিহার রাজবাড়ী যেতে হলে প্রথমেই রাজশাহী রেলগেট থেকে নওগাঁর বাসযোগে বলিহার ইউনিয়নের কড়মুইল মোড়ে নেমে ধ্যান যোগে পাঁচ থেকে দশ টাকা ভাড়া দিয়ে রাজবাড়িটিতে যাওয়া যায়।

বাঘা মসজিদ: বাঘা মসজিদ টি রাজশাহী জেলার বাগা উপজেলায় অবস্থিত প্রায় 500 বছরের পুরনোপ্রাচীন অন্যতম নিদর্শন। বাঘা উপজেলার এই শাহী মসজিদটি নির্মিত হয় ১৫২৩ ১৫২৪ সালে। এর প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন সাহেব পুত্র সুলতান নুসরাত সাহা এই শাহী মসজিদটি নির্মাণ করে। শাহী মসজিদটিতে দশটি গম্বুজ ও ভিতরে ছয়টি স্তম্ভ রয়েছে। বাঘা মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমি নিয়ে অবস্থিত শাহী মসজিদ এর আশেপাশে বড় বড় পুকুর রয়েছে এবং এর আশেপাশে বেশ কিছু শিশু পার্ক রয়েছে তাই রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে এটি অন্যতম।

কিভাবে বাঘা মসজিদ যাওয়া যায়

বাঘা মসজিদে যেতে হলে রাজশাহী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে সরাসরি ৫০ থেকে ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে যাওয়া যায় এ মসজিদটি মেইন রাস্তার সাথে অবস্থিত তাই বাস থেকে নেমেই মসজিদে প্রবেশ করা যায়।

রাজশাহী বিভাগে কি কি আছে

বাংলাদেশের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত সবচাইতে বড় শহর বা বিভাগীয় শহর হল রাজশাহী। রাজশাহী বিভাগে দেখার মত অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এর ভিতর থেকে উপরে উল্লেখিত করা হয়েছে ছয়টি জনপ্রিয় রাজশাহী বিভাগের দর্শনের স্থান সমূহ এছাড়াও রাজশাহী শহরের মধ্যে দেশের মধ্যে নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী, রুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী, মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী কলেজ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের মধ্যে যেমন খ্যাতি অর্জন করে নিয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে বাইরের দেশগুলোতেও খ্যাতি রয়েছে রাজশাহীর বিভাগের দর্শনীয় স্থান সমূহ।

লেখকের মন্তব্য

এ পোষ্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে। বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত বিখ্যাত শহর। রাজশাহী এ শহরে ঘোরার জন্য অনেক জায়গা বা স্থান রয়েছে আপনি চাইলে এই শহরটি ভ্রমণ করতে পারেন রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থানসমূহ পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হলে আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে সোশ্যাল শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন এবং রাজশাহী সম্পর্কে আরো কোন কিছু জানতে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন তাহলে আমরা সেই পোস্টটি নিয়ে লেখার চেষ্টা করব ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url