ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়

ইসমে আজম সম্পর্কিত হাদিস ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? সাধারণত অনেকেই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই। ইসমে আজম হল আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নাম। অনেকেই বলে থাকে যে এই আমলটি করলে দোয়া কবুল হয়।

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়

আপনি যদি আপনার মনের ইচ্ছাগুলো পূরণ করতে চান তাহলে ইসমে আজম পড়ে দোয়া করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলে ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? এই বিষয়টি সম্পর্কে জানব।

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? সাধারণত অনেকেই এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। বেশ কিছু আমল রয়েছে যেগুলো আল্লাহতালার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য সাধারণত এগুলোর মধ্যে ইসমে আজম অন্যতম একটি। আপনি যদি আপনার দোয়া গুলো আল্লাহ তাআলার কাছে কবুল করাতে চান তাহলে ইসমে আজম এই আমলটি করতে পারেন। এই আমলটি করার আগে আপনাকে ইসমে আজম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের ফজিলত - শবে বরাতের বর্জনীয় কাজ

ইসমে আজম হলো আল্লাহতালা শ্রেষ্ঠতম নাম সমূহ। আমরা জানি যে আল্লাহ তাআলার অনেকগুলো নাম রয়েছে সাধারণত এই নামগুলোর মধ্যে বেশ কিছু নাম রয়েছে যেগুলো আল্লাহতালার কাছে অনেক বেশি পছন্দের এবং এই নাম গুলোতে আল্লাহতালার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ টি নাম রয়েছে। এই নামগুলোর প্রত্যেকটিতে আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব এবং মহত্ব প্রকাশ করা হয়েছে।

বিভিন্ন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে ইসমে আজম পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ তা'আলা খুব তাড়াতাড়ি কবুল করে থাকেন। অন্যতম একটি হাদিস কাসিম রহঃ বলেন, আল্লাহর ইসমে আজম এর মাধ্যমে দোয়া করলে তা কবুল হয়। এই ইসমে আজম তিনটি সুরার মধ্যে রয়েছে সেগুলো হল সুরা বাকারাহ, সুরা আলে ইমরান ও সুরা ত্ব-হা। {ইবনে মাজাহঃ ৩৮৫৬}

কেউ যদি ইসমে আজম নিয়মিত পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে খাস মানে দোয়া করে তাহলে আল্লাহতালা তার দোয়া কবুল করবে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমরা যখন আল্লাহতালার কাছে দোয়া করব তখন অবশ্যই আমাদেরকে তওবা করতে হবে এবং আমাদের জীবনের গুনাহ গুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে মাপ চেয়ে নিতে হবে।

ইসমে আজম পড়ার নিয়ম

ইসমে আজম পড়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। যদি আমরা আমাদের দোয়াগুলো চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইসমে আজম সঠিক নিয়মে পড়তে হবে। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি ইবাদতের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যদি সঠিক নিয়ম এই ইবাদত গুলো পালন করা না হয় তাহলে কখনোই আল্লাহতালার কাছে এই ইবাদত গুলো কবুল হবে না।

ইসমে আজম পাঠ করার সময় অবশ্যই আল্লাহ তাআলার কাছে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে আত্মসমর্পণ করে দিতে হবে। সাধারণত নিজের মনের ভেতরে কোন ধরনের অহংকার এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস রাখা যাবে না। সাধারণত নিজেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আত্মসমর্পণ করে যদি ইসমে আজম করে নিজের মনের আশা গুলো আল্লাহতালাকে বলা যায় তাহলে তিনি আমাদের এই দোয়া কবুল করেন।

একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে প্রত্যেকের উচিত ইসমে আজম সম্পর্কে ধারণা রাখা। ইসমে আজম এর শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনের ঘটে যাওয়া বিপদ আপদ থেকে আল্লাহতালার কাছে প্রার্থনা চাওয়া এবং নিজের মনের সৎ ইচ্ছা গুলো আল্লাহ তায়ালাকে বলা। ইসমে আজম পড়ার সময় অবশ্যই পাক-পবিত্র থাকতে হবে এবং মনের ভেতরে কোন ধরনের হিংসা বিদ্বেষা রাখা যাবে না। তওবা করে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিপদ আপদ থেকে রক্ষা চাইতে হবে।

ইসমে আজম পড়ার উপযুক্ত সময়

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? সাধারণত এই বিষয়টি ইতিমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। যেই সময় যেই ইবাদত পালন করার নিয়ম রয়েছে সাধারণত সেই সময়েই ইবাদাত পালন করতে হবে। সাধারণত আমরা অনেকেই ইসমে আজম সম্পর্কে ধারণা রাখি কিন্তু কোন সময় এই আমলটি করতে হয় এই বিষয়ে আমাদের অনেকের জানা নেই। আপনি যদি এই গুরুত্বপূর্ণ আমল ঠিক করতে চান তাহলে উপযুক্ত সময় কখন তা জেনে নিন।

ইসমে আজম করার উপযুক্ত সময় হলো নামাজ শেষ করার পড়ে যখন যায়নামাজে বসে থেকে সাধারণত তখন। এর কারণ হলো নামাজের সময় সাধারণত আমরা আল্লাহ তায়ালার সবথেকে নিকটবর্তী হয়ে থাকি। আল্লাহ তাআলার কাছে সবথেকে গ্রহণযোগ্য ইবাদত হল নামাজ। তাই নামাজ পড়ার পরেই আমাদেরকে এই আমল করতে হবে।

বিশেষ করে ফজরের নামাজের পরে ইসমে আজম এই আমলটি করার উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এই আমলটি করতে পারবেন। তবে আপনি যদি চান আল্লাহ তা'আলা আপনার দোয়া গুলো কবুল করুন এবং আপনার মনের ইচ্ছা গুলো পূরণ হোক তাহলে ফজরের নামাজ শেষ করার পরে ইসমে আজম এই আমল গুলো পড়তে থাকুন।

কোরআনের কোন আয়াতে ইসমে আজম রয়েছে

কোরআনের কোন আয়াতে ইসমে আজম রয়েছে অনেকের এই বিষয়টি সম্পর্কে জানা নেই। সাধারণত আমরা অনেকেই পবিত্র কুরআন পড়তে জানি আবার অনেকেই জানিনা। সাধারণত এই পবিত্র কোরআনে বেশ কিছু আয়াত রয়েছে যেগুলো ছবি গুরুত্বপূর্ণ এবং এর তাৎপর্য অন্যান্য আয়াতের চাইতে অনেক বেশি। বেশ কিছু আয়াতে আল্লাহতালার গুণবাচক নাম গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

যে আয়াত গুলোতে আল্লাহতালার গুণবাচক নামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে অর্থাৎ আল্লাহতালার মুহূর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণত সেই আয়াত গুলোতেই ইসমে আজম রয়েছে। বিভিন্ন আলেমগণ বিভিন্ন রকমের মতবাদ দিয়ে থাকেন। তবে হযরত কাসিম রহঃ বলেছেন যে, আল্লাহর ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করলে সেই দোয়া খুব তাড়াতাড়ি কবুল হয়। এই ইসমে আজম সুরা বাকারাহ, সুরা আলে ইমরান ও সুরা ত্ব-হা এই তিনটি সুরার মধ্যে রয়েছে। {ইবনে মাজাহঃ ৩৮৫৬}

  • সুরা বাকারার অন্তর্ভুক্ত আয়াতুল কুরসি অর্থাৎ ২৫৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকার মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী।"
  • সুরা আলে ইমরান এর প্রথম দুই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, ।"আলিফ, লাম, মীম। আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো সত্যিকার মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী।"
  • আল মুসতাদরাক আলাস সহীহায়ন এর ১/৫০৬ মতে সুরা ত্ব-হার ১১১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, "চিরঞ্জীব চিরস্থায়ীর সম্মুখে সবাই হবে অধোমুখী।"

ইসমে আজম এর ফজিলত

ইসমে আজম এর ফজিলত জানা থাকলে আমলটি করতে খুব সহজ হয়। যে কোন আমল করার আগে অবশ্যই আমাদেরকে সে আমলের ফজিলত সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আমরা জানি যে ইসমে আজম হলো আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নামসমূহ। সাধারণত যে নামগুলোতে আল্লাহতালার প্রশংসা এবং মহত্ব প্রকাশ করা হয় সেই নাম গুলোকেই ইসমে আজম বলা হয়।

আল্লাহতালার গুণবাচক নাম গুলোর মাধ্যমে আল্লাহতালার পরিচয় এবং ক্ষমতাকে প্রকাশ করা হয়। আমরা আল্লাহ তাআলার বান্দা হিসেবে আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নাম জানি। সাধারণত আল্লাহতালার এই নামগুলোতে মানুষকে উত্তম চরিত্রবান হতে সাহায্য করে। আল্লাহতালার প্রতিটি নামে আল্লাহ তাআলার মহত্ব প্রকাশ করা হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহ তালার বড়ত্ব এবং শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করার জন্য আল্লাহ তার নাম ধরে ডাকতেন।

হযরত সুলাইমান আঃ এর কাছে একজন আসমানি কিতাবের জ্ঞানী ব্যক্তি আসেফ বিন বরখিয়া রানি বিলকিস এর সিংহাসন চোখের পলক পড়ার আগেই নিয়ে এসেছিলেন। তখন মুফাসসিররা বলেছিলেন এই ব্যক্তি ইসমে আজম জানতেন। এখান থেকে জানা যায় যে ইসমে আজমের ফজিলত কত বেশি। ইমাম আবু জাফর তাবারি রহঃ ও আবুল হাসান আশআরি রহঃ বলেন, আল্লাহ তায়ালার যে সকল গুণবাচক নাম রয়েছে সবগুলোই ইসমে আজম এর অন্তর্ভুক্ত।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ব্যক্তির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন সে বলছিল, "ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম" এ বাক্যটির অর্থ হল "হে মহিমাময় ও মহানুভব"। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তখন বললেন, এইসব শব্দ দিয়ে দোয়া করার কারণে তোমার জন্য আল্লাহতালার কাছে গ্রহণযোগ্যতার দরজা খুলে গিয়েছে। এখন তুমি যা ইচ্ছা আল্লাহ তায়ালার কাছে চেয়ে নাও। {কানযুল উম্মালঃ ১/২৯২}

ইসমে আজম দোয়া বাংলা অনুবাদ

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? আশা করি এই বিষয়টি জানতে পেরেছেন। আপনি যদি ইসমে আজম দোয়া গুলো সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। সাধারণত আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসমে আজম অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নাম গুলো সম্পর্কে আলোচনা করছি। তাই আপনাদের জন্য ইসমে আজম দোয়া গুলো বাংলা অনুবাদ সহ উল্লেখ করা হলো।

আরবিঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারিকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদিআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।

বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনার নিকট এই অসীলায় চাই যে, আমি বলি কেবল আপনারই প্ৰশংসা, আপনি ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, আপনি এক, আপনার কোন শরীক নেই, অনুগ্রহ প্রদর্শনকারী হে আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা, হে মর্যাদা ও সম্মান দানের অধিকারী। হে চিরঞ্জীব ও সর্বনিয়ন্তা।

ইসমে আজম কয়টি

ইসমে আজম কয়টি? সাধারণত আমাদের অনেকের মধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে ইবাদত পালন করতে চান অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নাম গুলো বলতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে। ইতিমধ্যেই ইসমে আজম সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে।

হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, "আল্লাহ তাআলার মহান নাম ইসমে আজম। যা দুই আয়াতের মাঝে নিহিত আছে।

একটি আয়াত হলঃ আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু। {সুরা বাকারাঃ ১৬৩}

দ্বিতীয় আয়াত হলঃ আলিফ লাম মীম, তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। {সুরা আল-ইমরানঃ ১-২}

হাদিসে বর্ণিত আরো একটি ইসমে আজম সুরা ত্বহা’র ১১১ নং আয়াতে নিহিত আছে। আশা করি এই আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন যে পবিত্র কোরআনে কোন কোন আয়াতে আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব প্রকাশ করা হয়েছে।

ইসমে আজম সম্পর্কিত হাদিস

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? এ বিষয়টি জানার জন্য আপনাকে ইসমে আজম সম্পর্কে যে সকল হাদিস রয়েছে এই হাদিস গুলো জানতে হবে। সাধারণত আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে বাণীগুলো আমাদের জন্য দিয়ে গেছেন সাধারণত এগুলোকেই হাদিস বলা হয়। আর এই হাদিস গুলো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনেক সাহাবী সংগ্রহ করে রেখেছেন।

আনাস ইবনে মালিক রাঃ বলেন, আমি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বসে ছিলাম। সাধারণত তখন একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল। যখন সে রুকু, সিজদা ও তাশাহুদ পড়ে দোয়া করতে শুরু করল তখন ওই ব্যক্তি তার দোয়ার মধ্যে বলছিল,

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়্যুম ইন্নি আসআলুকা।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস - শবে বরাতের ইতিহাস

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এই অসিলায় যে-সব প্রশংসা তোমারই, তুমি ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। তুমি পরম অনুগ্রহদাতা, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। হে মহিমাময় এবং মহানুভব, হে চিরঞ্জীব অবিনশ্বর! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। {নাসাঈঃ ১৩০০, তিরমিজিঃ  ৩৫৪৪}

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহঃ বলেন, ইসমে আজমের সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যতগুলো হাদিস বর্ণিত করা হয়েছে এগুলোর মধ্যে সবচাইতে বিশুদ্ধ হাদিস। আসমা বিনতে ইয়াজিদ রাঃ সূত্রে বর্ণিত, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, ইসমে আজম এ দুটি আয়াতে আছে এগুলোর মধ্যে একটি হলো তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি অতি দয়ালু ও মেহেরবান। {বাকারাহঃ ১৬৩}

অন্য আরেকটা আয়াত হল সুরা আলে ইমরানের প্রথমাংশ, আলিফ-লাম-মীম, তিনিই সেই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। {আবু দাউদঃ ১৪৯৬} সাধারণত এ হাদিসগুলো থেকে আমরা একটি বিষয় পরিষ্কার হতে পেরেছি যে ইসমে আজম হল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সাধারণত এই ইবাদতে আল্লাহতায়ালার মহত্ব প্রকাশ করা হয়েছে।

ইসমে আজম পড়ার গুরুত্ব

ইসমে আজম পড়ার গুরুত্ব জানা থাকলে আমরা সবাই এই দোয়াটি পড়তে চাইতাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই এই আমলের গুরুত্ব সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখেনা। সাধারণত ওপরে ইসমে আজম সম্পর্কে বিস্তারিত হাদিসগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত এখানে বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই ইসমে আজম পড়ে যদি আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি তাহলে তিনি সেই দোয়া গুলো কবুল করেন।
ইসমে আজম পড়ার গুরুত্ব
আমরা যদি আমাদের জীবনের গুনাহ গুলো মাফ করে নিতে চাই এবং আমাদের মনের আশা গুলো পূরণ করতে চাই তাহলে ইসমে আজম পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে মন থেকে দোয়া করতে হবে। তবে মনের ভেতরে কোন ধরনের হিংসা বিদ্বেষ রাখা যাবে না। কারণ আল্লাহ তায়ালা হিংসা এবং বিদ্বেষ একেবারেই পছন্দ করেন না।

লেখকের শেষ মন্তব্য

ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে কি দোয়া কবুল হয়? এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি ইসমে আজম সম্পর্কে না জেনে থাকেন এবং এই আমল গুলো করতে চান তাহলে আপনাকে আগেই বিস্তারিত ভাবে বিষয় গুলো জেনে নিতে হবে। যে কোন আমল করার আগে অবশ্যই সেই আমল সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

আশা করি আপনি আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের তথ্যমূলক এবং ইসলামিক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url