নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ - নবাব সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতি

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ ছিল পলাশীর প্রান্তরে মীরজাফর আলী খানের বিশ্বাসঘাতকতা। সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে যুদ্ধের ফলে হয়। সেখানে নবাব কোম্পানির পতন হয় এবং ধ্বংস নেমে আসে।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-পরাজয়ের-শেষ-পরিণতি
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য পরবর্তীতে ভারতে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। শুধু তাই নয় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমগ্র বাংলায় ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করে।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ কী

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণের মধ্যে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা অন্যতম। শুধু তাই নয় মীরজাফর নবাবের একজন প্রধান সেনাপতি ছিল এবং তার অধীনে অসংখ্য সৈন্য থাকত। মীরজাফর সব সময় ইংরেজদের সাথে চুক্তি করে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেন। কিন্তু পলাশীর যুদ্ধে যখনই বিজয় অতি সন্নিকটে তখন মীরজাফর নবাবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। যার ফলে ইংরেজ বাহিনীর কাছে নবাব পরাজয় বরণ করে।
আরো পড়ুনঃ জেল হত্যা দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে দেখুন 
এখানে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যেহেতু খুব অল্প বয়সে সিংহাসনে আরোহন করেছিলেন। তাই তিনি খুব অল্প সময়েই বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ পান। কিন্তু অপরদিকে সেনাপতিদের ষড়যন্ত্রের কথা নবাব সিরাজউদ্দৌলা না জানার ফলে পলাশীর প্রান্তরে পরাজিত হয়। এছাড়াও অর্থনৈতিক কারণ এবং নৌশক্তির অভাবে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের কুটকৌশল বুঝতে পারেন না।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূল কারণ কোনটি

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে কারণ ছিল কিছু ভুল পদক্ষেপ। যেহেতু তখন সে খুব অল্প বয়সে সিংহাসনে আরোহন করেছিল। তাই তার বাস্তব অভিজ্ঞতা অনেক কম ছিল। পলাশীর প্রান্তরে ঘটে যাওয়া যুদ্ধ তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যেহেতু সেই সময়ে যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর নিরব ভূমিকা পালন করেছিল। তাই সিরাজউদ্দৌলার পতনের যাত্রা তখন থেকেই শুরু হয়ে যায়। সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূল কারণ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথমত সিরাজউদ্দৌলাকে মীরজাফর, ঘষেটি বেগম, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ সহ তার নিকট আত্মীয়রা যারা ছিল তারা সকলেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।
  • পলাশীর প্রান্তরে যেই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সেখানে সিরাজউদ্দৌলার সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় পঁয়ষট্টি হাজারের মতো।
  • আর তার বিপক্ষে ইংরেজ বাহিনী অর্থাৎ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র তিন হাজার।
  • এই অবস্থায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয় যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতির কারণে। সেখানে মীরজাফরের অনুসারী ছিল পঁয়তাল্লিশ হাজার সৈন্য।
  • কিন্তু মীরজাফর পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌলা এর সাথে নীরব ভূমিকা পালন করায় সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে থাকা সৈন্যদল নিয়ে ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করাটা খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • যার ফলে যুদ্ধের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে নবাবের অনেক যুদ্ধের উপকরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • এই ঘটনার ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরলতার সুযোগ নিয়ে সকলেই তাকে যুদ্ধ বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দেয়।
  • বিশ্বস্ত সেনা ছিল মোহনলাল যার প্রবল আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধ বন্ধ করেন।
  • যখনই যুদ্ধ বন্ধ করে তারা পিছু হটে আসে তখনই ইংরেজরা নবাবের উপর হামলা চালায়।
  • সেই সাথে নবাব আক্রমণের শিকার হয়ে যুদ্ধে হেরে যায় সেই সাথে মীরজাফরের চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা প্রকাশ পায়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে কি চার হিন্দু ছিল

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে চার হিন্দু যারা ছিল খুবই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন। তারা খুবই দক্ষতার সাথে সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটিয়েছিল। সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূলে যেই চার হিন্দু ছিল তাদের মধ্যে হিন্দু উমিচাঁদ, জগৎ শেঠ, রায়দুর্লভ, মানিক চাঁদ অন্যতম। শোভাবাজার রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন রাজা নবকৃষ্ণ দেব। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ ছিল নন্দকুমারের ভূমিকা।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-১৭৫৭-সালের-২৩-জুন-কেন-পতন-হয়
কারণ মহারাজা নন্দকুমার মুসলিম সাম্রাজ্য পতন করার জন্যে মীরজাফরের সাথে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিল। এছাড়াও দেশীয় কিছু হিন্দুরা যাদের গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে। এর মধ্যে চণ্ডীচরণ সেন, পদ্মনাভ রায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস নন্দকুমার নিজেই সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেও রক্ষা পায়নি। পরবর্তীতে সামান্য চুরির অপরাধে ইংরেজরাই তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পিছনে দায়ী কে

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পিছনে দায়ী অনেকেই। তার মধ্যে মাহতাব চাঁদ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ, ঘসেটি বেগম, মাহতাব চাঁদ, মীরজাফর এবং কিছু হিন্দু ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারা সকলেই নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে যুদ্ধে নিরব ভূমিকা পালন করেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে তারা সকলেই খুব সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন যেই সকল ব্যক্তিবর্গের কারণে হয়েছিল তাদের সম্পর্কে চলুন কিছুটা জেনে আসি। বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ ছিল ঘসেটি বেগম নামে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যার প্ররোচনায় পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজয় দেখেছিল। এই ঘসেটি বেগম পরবর্তীতে ঢাকার নিকটবর্তী একটি প্রাসাদে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বন্দী অবস্থায় ছিল।

প্রাসাদে ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হয়ে পরবর্তীতে ঘষেটি বেগম বুড়িগঙ্গায় ডুবে করুণ মৃত্যুবরণ করেন। মীরজাফর পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে যেই বিশ্বাসঘাতকতা করেন তা খুবই দুঃখজনক। যার ফলে বাংলার নবাবের পতন ঘটেছিল। শুধু তাই নয় জগত শেঠ, ইয়ার লতিফ সিরাজউদ্দৌলার নিকটবর্তী আত্মীয় হওয়া স্বত্ত্বেও সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন কেন পতন হয়

নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যুদ্ধের ময়দানে পরাজিত হন। তার পরাজয় বাংলার নবাবের সমাপ্তি ঘটিয়েছিল। যদিও খুবই বিশ্বস্ত মনোভাব নিয়ে সেনা মোহনলাল নবাবের পাশে শেষ পর্যন্ত ছিল। কিন্তু নবাব সিরাজউদ্দৌলার একটি ভুল পদক্ষেপ ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন তাকে পরাজিত করতে সাহায্যে করে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ এর বিস্তারিত তথ্য আসুন জেনে নিই।

  • পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হন।
  • কিন্তু তার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর সহ প্রায় বেশিরভাগ সৈন্য যুদ্ধের ময়দানে থেকেও নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে কোনরকম সহযোগিতা করেনি।
  • নিরব ভূমিকা পালন করায় সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধের ময়দানে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েন। 
  • যুদ্ধের সময়ে বৃষ্টি হয় আর সেই বৃষ্টির কারণে নবাব এবং তার সহযোগীদের যেই ফরাসি কামান ছিল সেটি ভিজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
  • কিন্তু ইংরেজরা তাদের গান পাউডার সুরক্ষিত রাখে। যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন গোলার আঘাতে তার খুব বিশ্বস্ত সেনা নিহত হয়ে যাওয়ার ফলে নবাব ভেঙে পড়েন।
  • সেই অবস্থায় মীরজাফরের কাছে পরামর্শ চাইলে মীরজাফর তাকে যুদ্ধ বন্ধ করার পরামর্শ দেন।
  • এই অবস্থায় আক্রমণ করে বসে যার ফলে ইংরেজরা সেই সময় জয়লাভ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটায়।

২৩ জুন কি নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের দিন

২৩ জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের সময়কাল। কারণ এই সময়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুর্শিদাবাদে ঠিক পঞ্চাশ মাইল দূরে পৌঁছে যান। এই সময়ে মীরজাফর এবং রবার্ট ক্লাইভ পলাশীর প্রান্তরে পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। মীরজাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাকে নবাব থেকে সরিয়ে দেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে তলোয়ার আর ছুরি দিয়ে হত্যা করেন। মীরজাফরের ছেলে মীরান তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করেন।

তবে হত্যা করার পূর্বে সিরাজউদ্দৌলাকে ওজু করে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ২৫ বছর বয়সে হত্যা করে তার মরদেহ হাতির পিঠে চাপিয়ে গোটা শহর ঘোরানো হয়েছিল। সিরাজউদ্দৌলার ক্ষতবিক্ষত দেহ যখন হাতির পিঠে চাপিয়ে মুর্শিদাবাদের অলিতে গলিতে ঘোরানো হচ্ছিল তখন এটাই বারবার জানানোর চেষ্টা করছিল যে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়েছে।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন থেকে কিভাবে শিক্ষা নেবেন

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন থেকে চাইলে সঠিক শিক্ষা নেওয়া যায়। কারণ অতিরিক্ত সরলতা যে কাউকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই সব সময় বুঝে বিশ্বাসঘাতক এবং লোভী ব্যক্তিদের নির্ণয় করতে হয়। মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা নবাব সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতি ডেকে এনেছিল। তাহলে চলুন জেনে আসা যাক আমরা কিভাবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পারি।

  • বিশ্বাসঘাতকতায় পলাশীর প্রান্তরে বাংলার নবাব পরাজয় বরণ করেছিল।
  • ভারতীয় উপমহাদেশে তার পরাজয়ের কারণে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন শুরু হয়ে গিয়েছিল।
  • ইংরেজগণ অর্থাৎ ব্রিটিশরা প্রায়ই ২০০ বছরের মতো ভারতের শাসন চালিয়েছিল।
  • স্বাধীনতা প্রতিটি মানুষেরই একটি বড় সম্পদ। কিন্তু দেশপ্রেম দেশের সবচাইতে বড় আমানত।
  • এই সত্য বিষয়টি প্রত্যেক নাগরিককে মনে রাখতে হবে। প্রত্যেকেই যার যার জায়গায় থেকে নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা রাখতে হবে।
  • পলাশীর প্রান্তরে যেই ঘটনা ঘটেছিল সেখানে যদি বিশ্বাসঘাতকতার মত বিষয়টি না হতো।
  • সবাই যদি এক হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে পলাশের প্রান্তরে যুদ্ধ করত তাহলে অবশ্যই নবাবের বিজয় হতো।
  • পরবর্তীতে সাধারণ জনগণ যখন ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োগ করে তখন ব্রিটিশরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
  • নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ এর ফলে ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
  • তাই ঐতিহাসিকভাবে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের উপর শ্রদ্ধা রেখে তার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন পরাজিত হয়েছিল

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়েছিল তার কাছের লোকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই। যদিও ঘটনাটি খুবই আবেগপ্রবণ, গভীর ষড়যন্ত্র এবং বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে। এই পরাজয়ের কারণে ইংরেজদের হাতে বাংলার স্বাধীনতা হারিয়ে যায়। পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে পতন ঘটানোর কারণে ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন সারা বাংলা এক করুণ সময়ের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করছিল।
পলাশীর-যুদ্ধে-নবাব-সিরাজউদ্দৌলা-কেন-পরাজিত-হয়েছিল
নবাব সিরাজউদ্দৌলার বয়স ছিল মাত্র বাইশ বছর। তরুণ নবাব সিরাজউদ্দৌলা রাজ সিংহাসনে বসেন সেই সময় তার পিতামহ আলীবর্দী খানের বিশ্বস্ত সহচর ছিল মীরজাফর এবং খালা ঘষেটি বেগম। ইংরেজদের সঙ্গে তারা ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নীল নকশা আঁকতে থাকে। সময়ের সাথে সাথে নবাবকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকে।

এই ষড়যন্ত্রের মূল নায়ক ছিল মীরজাফর। মীর মদন বাহিনীর সাথে নিজের জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ইয়ার লতিফ রায়দুর্লভ, মীরজাফর কেউই যখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল না। পরবর্তীতে আক্রমণে টিকতে না পেরে মীর মদন ধীরে ধীরে ইংরেজদের হাতে নিহত হন। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয় বাংলার ইতিহাসে এক ঘৃণ্যতম এবং কলঙ্কিত অধ্যায়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের শেষ পরিণতি

নবাব সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতি কতটা দুঃখজনক ছিল এবং ইতিহাস থেকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব হারিয়ে গিয়েছিল তা মনে করলে হ্নদয়ে দাগ কাটে। আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে এই ঘটনা উপলব্ধি করলে বোঝা যায় তার আত্মজীবনী ইংরেজদের প্রতিরোধ করতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে যেই যুদ্ধ করেছিল তাতে রাজনৈতিক সচেতনতার খুবই অভাব ছিল। পলাশীর ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বাংলার সাধারণ মানুষ ঐতিহ্যকে হারিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস কি
ইংরেজরা যখন সারা বাংলাকে দখল করে নিয়েছিল তখন মানুষের মধ্যে অনেক হাহাকার চলে। পলাশীর প্রান্তরে মূল নায়ক ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। তার দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলার স্বাধীনতার শ্রেষ্ঠ প্রতীক হিসেবে আজও বেঁচে আছে। তবে যারা নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তারা শুধু তার সাথেই নয় দেশের সঙ্গে করেছিল ইতিহাস কখনোই তাদের ক্ষমা করেনি। যারা নবাব সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতির ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিল তাদের প্রত্যেককেই ভোগ করতে হয়েছে জীবনের এক করুণ মর্মান্তিক পতন। 

শেষকথা

প্রিয় পাঠক, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা এর সাথে ইংরেজদের যেই পলাশীর যুদ্ধ হয় সেখানে মীরজাফরের ষড়যন্ত্র নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ ছিল। উপরে উল্লেখিত বিস্তারিত নবাব সিরাজউদ্দৌলার শেষ পরিণতি জেনে যদি বাংলার ইতিহাস নিয়ে একটি সঠিক ধারণা হয়ে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং মূল্যবান মতামত জানাতে পোস্টের নিচে মন্তব্য করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url